নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
পদ্মাতীরের নির্জন ফেরিঘাট........
কিছু আসে, কিছু চলে যায়। কেউ যখন প্রথম পা রাখে পৃথিবীতে, তখন তারই খুব কাছের কেউ হয়তো হারিয়ে যায় চিরদিনের জন্য। একসঙ্গে হাঁটতে পারত, গাইতে পারত। কিন্তু দেখা হল না দুজনের।
সমস্ত কিছু ব্যাখ্যাহীন, আকাশের বা পাহাড়ের রং পাল্টানোর মতো।
এই অনুভূতিটা সবারই হয়েছে কোনও না কোনও সময়। হতে বাধ্য। স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর মুহূর্তে, দেশজোড়া উৎসবের মাঝে কার্যত একাকী হয়ে গেল ফেরিঘাটগুলো।
একাকী।
স্বজনহীন।
অবসাদগ্রস্ত।
বিষণ্ণ।
আমরা একটা কাজে কেরানীগঞ্জ গিয়েছিলাম। ওখান থেকে মাওয়া ঘাট, অর্থাৎ পদ্মা সেতুর দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার....হাতে যথেষ্ট সময় ছিলো। তাই পদ্মা সেতু ঘুরে দেখার জন্য গিয়েছিলাম। পদ্মা সেতু আমাকে যতটা আকৃষ্ট করেছে ততটাই মর্মাহত হয়েছি- একদা কোলাহল মূখর মাওয়া ঘাটের বর্তমান অবস্থা দেখে। পদ্মা সেতু সম্পর্কে যেহেতু সবাই লিখেছেন- আমি নাহয় "প্রদীপের নিচে অন্ধকার" মাওয়া ঘাট সম্পর্কেই লিখি।
পদ্মা সেতুর চাকচিক্যের কাছে বড্ড মলিন হয়ে গিয়েছে আগের সেই কোলাহল মুখরিত মাওয়া ঘাট। বৃহত্তর বরিশাল, ফরিদপুর-খুলনা-যশোর জেলায় যাওয়ার ঘাটগুলো জনশূন্য। এতদিন কত লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাড়ির পথে এগিয়ে দিয়েছে এই পথ। আর এ পথে হাঁটে না অত মানুষ। ঘাটের ধারে সারি সারি রেস্তোরাঁ, দোকান- সব শূন্য আজ। হোটেল মালিকরা করোনার সময়ের ছবি মনে করছেন। ভাবছেন ভবিষ্যৎ। কী হবে এই বড় ছোট লঞ্চ-স্পীডবোট মালিকদের, কী হবে হকারদের?
পদ্মা সেতু চালু হবার পর, পাটুরিয়া ঘাটের ব্যবসায়ী আজম খানের কলা, বিস্কুট চা বিক্রি হয়েছে তিনদিনে ২৯০ টাকা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে দৈনিক বিক্রি হতো দেড়-দুই হাজার টাকা! প্রায় ২৫টি হোটেলের কর্মীদের চাকরি যাচ্ছে। চার নম্বর ঘাটে ৬৭ বছরের নাজিমুদ্দিন চা সিগারেট বিক্রি করেন। দিনে ১৫/১৬ শত টাকা বিক্রি হত, তা নেমে এসেছে ৬০ টাকায়। প্রতিবন্ধী লিটন মিয়া দিনে হাজার টাকার চিপস, ড্রিংকস, বিস্কুট করতেন। এখন তা নেমে এসেছে দুইশো টাকায়। সফিউদ্দিন আনারস বিক্রি করতেন ঘাট এলাকায়। বলছেন, ‘আগে বিক্রি হত একশো তিরিশ, একশো চল্লিশ পিস। আজ মাত্র তিন হালি। যে ট্যাকা বেচচি, তা দিয়ে কী করমু?’
খারাপই লাগে এসব পড়ে। সেতুর দুই পাড়ে এখন সেলফি তোলার ঢল। এক অসভ্য সেতুতে প্রথম দিন উঠে প্রস্রাব করেও একজন সেখান থেকে ফেসবুক লাইভ করেছে। সেতুতে দুই মোটরসাইক্লিস্টের প্রথম দিনই মৃত্যুতে বন্ধ করা হয়েছে মোটর সাইকেল- (এখন পর্যন্ত পাঁজ জনের মৃত্যু হয়েছে)। বাংলাদেশে আবেগ পদ্মার মতোই দিগন্ত বিস্তৃত। সেতুর নীচের ফেরিঘাটের ছবি শুধু নির্জনতা। এসব জায়গায় শুধু ভারী কিছু ট্রাক পারাপারের জন্য হয়তো আসবে। আর অসংখ্য মাস্তুল, যন্ত্রপাতি পড়ে থাকবে শঙ্খচিলদের বসার জায়গা হয়ে। উড়ে আসবে বক, উড়ে আসবে পায়রা। তাদের খেলার জন্য এখন ডানা মেলে দিয়েছে পদ্মাপারের অজস্র হাট।
মানুষ তো থেমে থাকে না। থামবেই বা কেন? পদ্মাপারের ফেরিগুলোর কথাও অধিকাংশ মানুষ আর ভাববে না। মনে থাকবে নদী পেরোনোর আতঙ্ক, নদী পেরোনর ভয় ও যন্ত্রণা। ঈদের সময় গিজগিজে বাড়ি ফেরার অসহনীয় অভিজ্ঞতা।
বুড়িগংগায় যা হয়েছে, যমুনাতে যা হয়েছে, পদ্মাতেও তাই হবে।
কিছু আসে, কিছু চলে যায়।
উন্নয়ন ও গতিই শেষ পর্যন্ত জীবনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জিতে যায়।
নদী সব দেখে।
নদী শুধু চুপচাপ দেখে।
কোনও একদিন হয়তো নিশ্চয়ই প্রতিক্রিয়া দেবে।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: ঈশ! ওদের করুণ আর্তী হৃদয় ছুঁয়ে যায়!
২| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:২১
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
ফেরীঘাট ট্যুরিজম স্পট করা যায়?
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: অবশ্যই করা যায় এবং করা উচিত। এব্যাপারে বাংলাদশ পর্যটন কর্পোরেশনের এগিয়ে আসা উচিত।
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৩২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
এটাই হবার ছিলো, এটাই হলো, এমনটাই হয়।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: এগুলো দেশের ছোট বড় সকল ফেরীঘাট/খেয়াঘাটের চিরন্তন গল্প।
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ফেরীঘাট নিয়ে আপনার আবেগ দেইখা আমিও আবেগে কাইন্দালাইছি!!!
একটু মজা করলাম ভাইজান, মনে কিছু নিয়েন না আবার! আসলে এসবই হলো উন্নয়নের বাই প্রোডাক্ট। কারো কিছুই করার নাই। যাদের ব্যবসা কমে গিয়েছে, যাদের চাকুরী চলে গিয়েছে বা যাবে, তাদের জন্য সরকার চাইলেই কিছু করতে পারে। এ'জন্য যে বিশাল অংকের টাকার দরকার তা কিন্তু না, শুধু সদিচ্ছাটাই দরকার।
আর সব শেষে কিছুই যদি না হয়, তাহলে রিজিকের মালিক আল্লাহ.........এই চিন্তা করা ছাড়া আর কোন গতি নাই।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০৫
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের বৃহত্তর পরিবারের মালিকানায় একদা একটা বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান ছিলো। নানাবিধ কারণে সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়েছিলো। তখন আমার পরিচিত কয়েকজনকে অন্য প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত করতে অনুরোধ করলে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমার কাজীন বললেন- "আমাদের কিছুই করতে হবেনা, দেখে নিও ওরা সবাই নিজ নিজ পথ খুঁজে নেবে"। সত্যিই আমি যাদের জন্য সুপারিশ করেছিলাম- ওরা কেউ বেকার নেই। বরং প্রত্যাশার অনেক আগেই ওরা কাজ খুঁজে পেয়েছিলো।
আমিও বিশ্বাস করি- রিজিকের মালিক আল্লাহ।
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ঘাটের ব্যবসায়ীদের জন্য কষ্ট হয় আবার রাগও হয় কারণ ওরা কেউ কেউ জুলুমবাজ ছিল।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ভালো মন্দ মিলিয়েই আমরা মানুষ। আমি নিজেই ফেরীঘাটের অনেক অপ্রীতিকর ঘটনার স্বাক্ষী।
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭
মোগল সম্রাট বলেছেন: পেশা পরিবর্তন করার পরিকল্পনা তাদের আরো আগে করা উচিৎ ছিলো। অনেকে আরো আগে সেটা করেছে। এতোদিন কাচা পয়শা কামাই করছে। এখন কষ্ট করে কামাই করতে হবে।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০৭
জুল ভার্ন বলেছেন: কেউ থেমে থাকবেনা। নিশ্চয়ই প্রত্যেকে পথ খুঁজে পাবে। হয়তো আরও ভালো কিছু হবে।
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০০
মোগল সম্রাট বলেছেন: @দেশ প্রেমিক বাঙ্গালী শুধু জুলম না রিতিমতো নির্যাতন করছে এতোকাল।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও তা বিশ্বাস করি।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৫০
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ব্রিজ হওয়ার কারণে ঘাটের ব্যবসায়ীরা অনেক সমস্যায় পরেছে।