নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুলকে যে নামেই ডাকি.........

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৪৫

ফুলকে যে নামেই ডাকি.........

ঢাকা শহর এখন অনেকটাই রুক্ষ মরুময় মনে হলেও একদা ঢাকা শহর ছিলো সবুজে ঢাকা একটা অত্যাধুনিক আধুনিক গ্রাম। নিউ মার্কেট থেকে পিলখানা তিন নম্বর গেট পর্যন্ত ছিলো বিশাল রেইন্ট্রি গাছের সাড়ি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পলাশীর মোড়, ফুলার রোড সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছিলো সবুজের সমারোহ- বাড়তি আকর্ষণ ছিলো পাখির কলতান। পুরনো ঢাকার অনেক এলাকায়ই ছিলো ফলজ ও ফুলেল বৃক্ষে ঢাকা। পরবর্তীতে বনানী এলাকার অনেক বাড়িই ছিলো ফুলেল এবং সবুজ বৃক্ষ শোভিত।
ফুল গাছপালা প্রেমিক আমি। মনে পড়ে ছেলে বেলায় সাইকেল চালিয়ে গোটা ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বাড়ি বাড়ি ফুল খুঁজতাম। কখনো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে ফুল দেখে দাঁড়িয়ে যেতাম। এক সময় ঢাকার রাস্তা রমনা পার্কের আশপাশ দখল করে রেখেছিলো রক্তপলাশ। এখন আর সেই ফুলের দেখা নেই।


সন্ধ্যার আকাশে তারাদের মতো ফুলেরাও আস্তে আস্তে ফোটে। একটা দুটো করে। তারপর একটা সময়, অজান্তেই ঝাঁকে ঝাঁকে হাজির হয়ে যায় আচমকা। সারাক্ষণ গাছের দিকে তাকিয়ে বসে থাকলেও বোঝা যায় না, কী ভাবে আচমকা ফুলগুলো চলে এল গাছে। যেমন আন্দামানের কোনও দ্বীপে বিকেল থেকে বসে থাকলে ধরা যায় না, কী করে আচম্বিতে আকাশ ভরে গেল তারায়।
মনে পড়ে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা একটি বিখ্যাত গান। গায়ক দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়।
"একটি দুটি তারা করে উঠি উঠি
মনকে দিলাম ছুটি তাই গো এই সন্ধ্যায়
একটি দুটি ফুল করে ফুটি ফুটি
যেথা খুশি মুঠি মুঠি পাই গো সেথা মন ধায়"।


গত ডিসেম্বরে ধানমন্ডির ১১ নম্বর রোড দিয়ে যাওয়ার সময় একটা বাড়ির গেট দেখেছিলাম এক অচেনা ফুলে ভরে আছে বাড়িটার বিশাল প্রাচীর। এই ফুল আমি আগেই অন্য কোনো দেশে দেখেছিলাম মনে পরে। দূর থেকে মনে হবে, অজস্র কমলা যেন ছেয়ে রয়েছে গাছের ওপর। কাশ্মিরে কমলালেবুর গভীর বনও এত রোমান্টিক হয় না। অলপক তাকিয়ে থাকি একঝাঁক ফুলের দিকে। এখন একেবারে সবুজ গাছ দেখাই যায় না। শুধু ফুল। পুরো জানুয়ারি- এক মাসের মধ্যে অবিশ্বাস্য পুষ্প বিবর্তন।

১১ নম্বর রোডে ঢুকে কিছুদূর এগিয়ে ডানে মোড় নিতেই বাঁ দিকে দেওয়ালজুড়ে কমলা রঙের ফুল। অসহ্য রূপ! দেখলে মাথা ঘুরে যায়। ছবি তোলার জন্য বাড়ির মালিকের অনুমতি নিতে সিকিউরিটি গার্ডকে বলতে বাড়ির কেয়ারটেকার বললো- "বাড়ির ওয়ালের ছবি তোলা যাবে বাড়ির ছবি তোলা নিষেধ"! অনুমতি পেয়ে আমি বারবার আসি মোবাইল নিয়ে, ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে। রাতে, ফজরের নামাজ আদায় করে হেটে হেটে কাকভোরে, দুপুরে, বিকেলে....সময় সময় ফুলের রঙ বদলানো ক্যামেরা বন্দী করতে। যত রকম অ্যাঙ্গল থেকে ছবি তোলা যায়- ছবি তুলি। প্রথম যখন একটা দুটো করে ফুল ফুটছিল, পিছনে লেকের পাড়ে একটা রক্তপলাশ গাছে উঁকি দিচ্ছিল একটা দুটো কুঁড়ি। রক্তপলাশকে ছাপিয়ে বসন্তকাল স্বাগত জানাতে তৈরি এই ফুল।
নাম না জানা অচেনা ফুল!

কী নাম তোমার?

গুগল খুঁজে দেখি, ফুলের নাম অরেঞ্জ ট্রাম্পেট ক্রিপার। কেউ বলে গোল্ডেন ফ্লাওয়ার। ফ্লেম ভাইন নামটা অনেকের পছন্দ। অনেকে ডাকেন ফ্লেমিং ট্রাম্পেট, অরেঞ্জ ট্রাম্পেট ভাইন। কেউ বা ভেনাস্তা। বোটানিকাল নাম পাইরোসতেজিয়া ভেনাস্তা। গ্রিক ভাষায় পাইরোস মানে আগুন। সত্যিই এই ফুলগুলো আগুন জ্বালিয়ে দেয় চোখে, মনে, হৃদয়ে।

অরেঞ্জ ট্রাম্পেট ক্রিপার ফুলের আদি নিবাস- দক্ষিণ ব্রাজিল, বলিভিয়া, উত্তরপূর্ব আর্জেন্তিনা, প্যারাগুয়ে। ব্রাজিলেই বেশি। এখন মেলে আফ্রিকা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে। ফুলের এই জাত প্রথম পর্যবেক্ষণ করেছিলেন জন মিয়ার্স নামে এক ভদ্রলোক। সে অনেক দূরের ব্যাপার। ১৮৬৩ সাল। মিয়ার্স ছিলেন ব্রিটিশ বোটানিস্ট। চিলি ও আর্জেন্তিনার ফুল নিয়ে কাজ করতেন ভদ্রলোক। দক্ষিণ আমেরিকার ফুল নিয়ে অনেক বই রয়েছে তাঁর। ওই মহাদেশের অনেক ফুলের সঙ্গে জড়িয়ে তাঁর নাম।

বাংলায় কী বলে এই চমকপ্রদ ফুলকে?
বাংলাদেশে এই ফুলের তিনটি নাম। তিনটেই জোর করে দেওয়া। তাই অত জনপ্রিয় নয়। এক এক জন এক এক নামে ডাকে। কমলা ঢাক লতা, সোনাঝুরি লতা, অগ্নি লতা। মজা হচ্ছে, সোনাঝুরি ফুল আবার একেবারে আলাদা। অগ্নিশিখা বলেও যে ফুল প্রচলিত, সেটাও সম্পূর্ণ আলাদা। তিনটেই নামেই লতা শব্দ যোগ করা। নাম যা-ই হোক যথেষ্ট রোমান্টিক ফুল।

একদা ঢাকা শহরের রক্ত পলাশ-কৃষ্ণচুড়ার কথা আমি ভুলে যাই অরেঞ্জ ট্রাম্পেট ক্রিপার দেখে। শীতের সঙ্গেই এই ফুলের বেশি সম্পৃক্ততা, বসন্তের সঙ্গে নয়। শীত চলে যেতে থাকলে এও চলে যায় দ্রুত। রক্তপলাশের মতো বেশিদিন থাকে না।
ভাবতে ভাবতে আরও ঝরে যেতে থাকে ফ্লেম ভাইন। শুকিয়ে যায়। ভাবছি- পরের শীতে এই আগুনমাখা রোমান্টিকতাকে আরও ভালো কোন নামে ডাকা যায়!
কতক কথা কিংবা বুনো শব্দ চয়নে,
তোমার প্রতি প্রেম নিবেদনে,
আমি প্রেমিক হয়ে উঠবো।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চমৎকার লেখা
চমৎকার ছবি
Golden shower নামেই এটি বেশী পরিচিত

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০৮

জুল ভার্ন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় দস্যু।
আমি এই ফুলের একটা ডাল সংগ্রহ করে ছাদের টবে লাগিয়েছিলাম। কিন্তু গাছটা বাড়ছিলোনা। পরে গুগল ঘেটে দেখি- এই গাছ ছোট টবে তেমন বাড়ে না- কারণ এই লতানো গাছের রস শোষণ ক্ষমতা খুব বেশী, যা টব থেকে পাওয়া যায়না। তাই গতমাসে টব থেকে চারাটা বাড়ির গেইটে মাটিতে লাগিয়েছি- এখন তরতড়িয়ে বাড়ছে।

২| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই ধরণের ফুল তো ঢাকা শহরে বিরল মনে হচ্ছে।

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:১৬

জুল ভার্ন বলেছেন: আমি ঢাকায় আর কোথাও দেখিনি। দুর্লভ ফুল ও গাছের সমাহার যেখানে সেই বলধা গার্ডেনেও খুঁজে পাইনি। আমি বাড়ীর মালিককে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি- তিনি ৮ বছর আগে এই ফুল গাছের চারা সংগ্রহ করেছিলেন কোলকাতা থেকে। ধানমন্ডির উল্লেখিত বাড়ি থেকে অনেকেই চারা(ডাল) সংগ্রহ করে ফুল ফুটিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে দেখলাম- ধানমন্ডি মাঠ(শেখ জামাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স)এর উত্তর দিকে পাশাপাশি দুটো বাড়িতে এই ফুলের সমাহার। আশা করি- আমার চারাও একদিন ফুলেল হবে।

৩| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০৭

কাছের-মানুষ বলেছেন: ভাল লাগল ফুলগুলো। ঢাকা শহর এখন বসবাসের আর যোগ্য নয়, অপরিকল্পিত দালানকোঠা দিয়ে ভরপুর!
এক সময় ছোট বেলায় অনেক পাখি দেখতাম আমাদের এলাকায়, এখন সেই পাখিগুলো আর দেখি না, নামও ভুলে গেছি!

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:১৯

জুল ভার্ন বলেছেন: সত্যিই ঢাকা শহর এখন বসবাসের জন্য মোটেই স্বস্তির নয়। যেখানে গাছই নাই-সেখানে পাখি আসবে কিভাবে। ঢাকা শহরে এখন কাক এবং চড়ুই পাখিরও আকাল!

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:৩৫

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: খুব সুন্দর এক ফুলের পরিচয় দিলেন দাদা সত্যই খুব সুন্দর লাগছে

২০ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:২২

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ লিটন।

৫| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:২৩

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমিও অসহ্য রকমের ফুল আর পাখি প্রেমী মানুষ। আমার বাহির টা মানুষের মতো হলেও ভেতরটা ফুল কিংবা পাখি।
ভাল লিখেছেন, ফুলকে যে নামেই ডাকি ফুল ফুলই।

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২২

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:৫৭

জটিল ভাই বলেছেন:
বর্ণনা ফুলের মতোই সুন্দর। তাই ফুলটির প্রেমে পরে গেলাম প্রিয় ভাই :)

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২২

জুল ভার্ন বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।

৭| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:২৯

ককচক বলেছেন: সুন্দর ফুল

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৩

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:২৮

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



কমলা ফুল।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৫৪

জুল ভার্ন বলেছেন: কমলা রঙের ফুল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.