নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
অ্যারামিন্টা রস্........
দাস প্রথার আধুনিক সংস্করণ হচ্ছে আমাদের দেশের চা শ্রমিক। চা শ্রমিকদের এই দাস প্রথা থেকে মুক্তির জন্য চাই একজন অ্যারামিন্টা রস্........
নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে - মেয়েটার নাম অ্যারামিন্টা রস্। কুচকুচে কালো। কুৎসিত। আমেরিকার ক্রীতদাস পরিবারে জন্ম। তাই ইতিহাসে ওর জন্মের কোনো দিন নেই, জন্মের কোনো সালও নেই। তারপরও সাদা প্রভূরা বেজন্মা দাসদের একটা জন্ম তারিখ, সন দিয়ে দাস/দাসী হিসেবে নিবন্ধন করে হিসাব মেলাতে। জন্ম যখন যেখানে যেভাবেই হোক, অ্যারামিন্টা রস্ এর বাপ-মা-ভাই-বোন সবাই কোনো-না-কোনো সাদা প্রভুর দাস। অ্যারামিন্টাও বিক্রি হয় এ হাত থেকে ও হাতে। ছোটবেলায়, সাদামালিকের ছোঁড়া এক ধাতব বলের আঘাতে ওর মাথা ফেটে যায়। তারপর থেকে ওর শুধু ঘুম পায়। ঘুম পায় বলে নিরন্তর চাবুক খায়। তাও ঘুম পায়। শীত হোক কী গ্রীষ্ম, অ্যারামিন্টা মোটা-মোটা জামা পরে, তাতে যদি চাবুকের মারগুলো একটু কম লাগে!
কিন্তু ওই মাথায়-আঘাতের পর থেকে ও কীসব যেন চোখের সামনে দেখে। কেমন আলো-আলো, ধোঁয়া-ধোঁয়া। ইনিই কি ঈশ্বর হয়ে তাকে দেখা দেন? এই ‘Oppressed, Heartless, Soulless’ পৃথিবীতে এইটুকু ঈশ্বরকে অ্যারামিন্টার বড্ড দরকার।
হওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু নানা ঘটনার ফেরে অ্যারামিন্টার বিয়ে হতে পারল এক ফ্রি-ব্ল্যাক পুরুষের সঙ্গে। বিয়ের পর যেমন সব মেয়েরই পদবী বদলায়, তেমনি, ‘রস’ বদলে হয় টুবম্যান’। কিন্তু অ্যারামিন্টা নিজের নামটাও ঘষে-ঘষে তুলে দেয় যেন। নিজের নতুন নাম নেয়, ‘হ্যারিয়েট’। এবার মুক্তি, এবার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন। কিন্তু ও কীসের স্বপ্ন দেখবে? হ্যারিয়েট সমস্ত কালো-মানুষের, সমস্ত ক্রীতদাসের মুক্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ওর চোখে তখনও কেমন আলো-আলো, ধোঁয়া-ধোঁয়া।
কিছুদিন পর থেকেই দেখা যায়, আমেরিকা-জুড়ে সাদাপ্রভুদের খামার থেকে একের-পর-এক উধাও হয়ে যাচ্ছে বন্দী কালো ক্রীতদাসেরা। আমেরিকার আইনে এ কাজ তখন কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পুলিশ তোলপাড় করে ফেলছে দেশ, কিন্তু উধাও হওয়া থামছে না। কেউ বলে, প্রোফেট মোজেস এসেছেন আর একবার। কেউ বলে, খামারবাড়িগুলোয় ভূত দেখা গেছে, নিজের চোখেই নাকি দেখেছে তারা!
টুবম্যানের গল্প আপনারা সবাই জানেন। তাও, মনে হল, এক কালো মেয়ের আরাধনার দিনে আর-এক কালো মেয়ের স্মৃতি আজ আমাদের পাশে থাক। হ্যারিয়েট টুবম্যান (১৮২০- মৃত্যু ১০ মার্চ, ১৯১৩) ছিলেন একজন ক্রীতদাস নারী, স্বাধীনতাকামী, আন্ডারগ্রাউন্ড রেলপথ কন্ডাক্টর, উত্তর আমেরিকার ১৯ শতকের কৃষ্ণাঙ্গ কর্মী , গুপ্তচর, সৈনিক এবং নার্স যিনি গৃহযুদ্ধের সময় এবং তার সমর্থনের জন্য তার সেবার জন্য পরিচিত। নাগরিক অধিকার এবং নারীর ভোটাধিকার।
টুবম্যান ইতিহাসের সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী আফ্রিকান আমেরিকানদের মধ্যে একজন এবং তার সম্পর্কে অনেক শিশুর গল্প রয়েছে, তবে সেগুলি সাধারণত তার প্রাথমিক জীবনকে চাপ দেয়, দাসত্ব থেকে পালাতে এবং ভূগর্ভস্থ রেলপথের সাথে কাজ করে। তার গৃহযুদ্ধের সেবা এবং যুদ্ধের পরে তিনি বেঁচে থাকা প্রায় 50 বছর ধরে তার অন্যান্য কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কম পরিচিত।
টুবম্যানের সাংগঠনিক ক্ষমতা আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোডের সাথে তার কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, দাসত্বের বিরোধীদের একটি নেটওয়ার্ক যা স্বাধীনতাকামীদের পালাতে সাহায্য করেছিল। Tubman ছিল মাত্র 5 ফুট লম্বা, কিন্তু তিনি স্মার্ট এবং শক্তিশালী ছিলেন এবং একটি রাইফেল বহন করেছিলেন। তিনি এটি ব্যবহার করেছিলেন শুধুমাত্র দাসত্বের পক্ষের লোকদের ভয় দেখানোর জন্য নয় বরং দাসত্ব করা লোকদেরকে পিছিয়ে পড়া থেকে বিরত রাখতেও। রেলপথ সম্পর্কে "মৃত নিগ্রোরা কোন গল্প বলে না" ছেড়ে যেতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে এমন কাউকে তিনি বলেছিলেন।
টিউবম্যান যখন প্রথম ফিলাডেলফিয়া পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি ছিলেন, সেই সময়ের আইন অনুসারে, একজন স্বাধীন মহিলা, কিন্তু 1850 সালে পলাতক ক্রীতদাস আইনের পাস তাকে আবার একজন স্বাধীনতাকামী করে তুলেছিল। সমস্ত নাগরিক তাকে পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে বাধ্য ছিল, তাই তাকে শান্তভাবে কাজ করতে হয়েছিল। কিন্তু তিনি শীঘ্রই উত্তর আমেরিকার ১৯ শতকের কালো কর্মী চেনাশোনা এবং মুক্তমনা সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
পলাতক ক্রীতদাস আইন পাশ হওয়ার পর, টুবম্যান তার ভূগর্ভস্থ রেলপথের যাত্রীদের কানাডায় নিয়ে যেতে শুরু করে, যেখানে তারা সত্যিকার অর্থে মুক্ত হতে পারে। ১৮৫১ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত, তিনি বছরের কিছু অংশ কানাডার সেন্ট ক্যাথরিনস এবং নিউ ইয়র্কের অবার্নে বসবাস করতেন, যেখানে উত্তর আমেরিকার ১৯ শতকের অনেক কালো কর্মী বসবাস করতেন।
আজ আমরা জানি, গোটা আমেরিকায় সেদিন মুক্তির এই অন্তর্ঘাত ঘটানোর পিছনে ছিল হ্যারিয়েট টুবম্যান আর তার দলবল। হ্যারিয়েট কালো বটে! কিন্তু তাঁর মতো সুন্দর, তাঁর মতো সভ্য মানুষ আমেরিকায় বেশি জন্মায়নি!
আমাদের চা শ্রমিকদের জীবনের সাথে, চেহারার সাথে মিল আছে অ্যারামিন্টা রস্ এবং তাদের সকলের। হয়তো একদিন চা শ্রমিক পরিবার থেকেই একজন অ্যারামিন্টা রস্ আবির্ভূত হবে চা শ্রমিকদের ত্রাতা হয়ে।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:২৫
জুল ভার্ন বলেছেন: শ্রমিক নেতাদের উপর আস্থা রাখার কোনো সুযোগ নাই। ইতোমধ্যে আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য স্থানীয় এমপি, ডিসি এবং শ্রমিক নেতারা দুই নম্বরি শুরু করেছে। নেতৃত্ব দিতে হবে বাগান শ্রমিকদের।
২| ২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৩৪
কামাল৮০ বলেছেন: এখন দরকার একজন স্পার্টাকাস।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:২৬
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত। সেই স্পার্টাকাস উঠে আসতে হবে শ্রমিকদের মধ্য থেকে।
৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:১৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আমরা সেদিনের অপেক্ষায় রইলাম।
নব্য দাস প্রথা বিলুপ্ত হোক।
২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: মজদুরদের রক্ত ঘাম স্বপ্নের আন্দোলন সংগ্রাম কখনো বৃথা যায়না। জয় সুনিশ্চিত।
৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:২৫
জটিল ভাই বলেছেন:
জানিনা কবে এদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হবে। তবুও আশাবাদী।
২৮ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ৫০ টাকা মজুরী বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন "থ্যাংকুপিয়েম", সেই ৫০ টাকার বিনিময়ে চা বাগান মালিকেরা ভোক্তাদের পকেট থেকে বের করে নেবে অতিরিক্ত ১৫০ টাকা। এখানেই মালিক পক্ষের ইনস্ট্যান্ট লাভ ১০০ টাকা!
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৩৪
ঢাবিয়ান বলেছেন: এক নারী চা শ্রমিকের ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। তার মুখে চা-শ্রমিক মায়ের করুণ গল্পগাথা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আপনার সাথে একমত যে , শ্রমিক পরিবার থেকেই আওয়াজ তুলতে হবে জোড়ালোভাবে। তানাহলে ইস্যূর পর ইস্যূর ভীরে চা বাগানের এই মজুরি বৃ্দ্ধির ইস্যূও খুব দ্রুত হারিয়ে যাবে।