নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"Raiders From The North" থেকে...........

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৭

"Raiders From The North" থেকে...........

পানিপথের যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদির মুখোমুখি হওয়ার আগঅব্দি বাবরের কোনো ধারণা ছিল না পরবর্তী প্রায় ৩০০ বছর তার বংশধররা হিন্দুস্তানের তখতে আসীন থাকবে। তৈমুরের উত্তরাধিকার হিসেবে ফরগনা নামের একটা ছোট্ট অঞ্চলের এক আঞ্চলিক শাসক থেকে বাবর তামাম হিন্দুস্তানের শাসক হবে। মাত্র বারো হাজার সেনা নিয়ে কাবুল থেকে সিন্ধু নদ পেড়িয়ে ইব্রাহিম লোদির লক্ষাধিক সৈন্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কি একটু হলেও পা কেঁপে উঠেছিল বাবরের? সে গল্প হয়ত ইতিহাসের গহ্বরে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

ঠিক যেমন আমরা জানি না বাবা উমর শেখ মির্জার আকস্মিক মৃত্যুর পর মাত্র বারো বছর বয়সে ফরগনার শাসক হয়ে কি অনুভূতি হয়েছিল বাবরের। তবে তার মাথায় তৈমুরের উত্তরাধিকারের ঐতিহ্য বহন করার দায় ছিল। দায় ছিল তিমুরিদ সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতীষ্ঠা করার। স্বপ্ন ছিল তিমুরিদ সাম্রাজ্যের রাজধানী সমরখন্দে নিজের সাম্রাজ্যের রাজধানী তৈরি হবে। কিন্তু বারবার দুর্ধর্ষ উজবেক বর্বর শৈবানি খাঁর ক্রমাগত আক্রমণের ফলে একসময় নিজের রাজ্য ফরগনা থেকে উৎখাত হতে হয়। সমরখন্দ হাতে এলেও সেখান থেকেও উৎখাত হয়। হয়ত সাম্রাজ্য প্রতীষ্ঠার স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত। হয়ত একজন পরাজিত শাসক হিসেবেই ইতিহাসের গহীন গহ্বরে নিমজ্জিত হয়ে থাকত বাবরের নাম।

বারবার ভাগ্যের তাড়া খেয়ে ফিরতে ফিরতে মধ্য এশিয়ায় তিমুরিদ সাম্রাজ্য স্থাপনের স্বপ্ন যখন ভেঙে যাচ্ছে ঠিক তখনই মুচকি হেসেছিল ইতিহাসের ভাগ্যবিধাতা। স্বপ্ন যে দেখে ভাগ্য তারই সহায় হয়। তা নাহলে কে ভেবেছিল এক সময়ে মধ্য এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে সহায় সম্বলহীন হয়ে ঘুরে বেরানো বাবর যৌবনের প্রান্তসীমায় প্রবেশ করে পানিপথের যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে সম্রাট হয়ে উঠবে হিন্দুস্তানের! সাথে তার অষ্টাদশ বর্ষীয় তরতাজা যুবক পুত্র হুমায়ুন। যদিও এরপরও হিন্দুস্তান তাকে অনেক ভুগিয়েছে। শুধু বাবরকেই বা কেন, যুবক পুত্র হুমায়ুনকেও বিড়ম্বনার হাত থেকে রেহাই দেয়নি হিন্দুস্তান। হুমায়ুনের গল্প অবশ্য আলাদা। সেটা আবার কোনো সময় লিখবো।
অ্যালেক্স রাদারফোর্ড আসলে মাইকেল ও ডায়ানা প্রেস্টন নামক এক দম্পতির ছদ্মনাম। পরপর ফিকশনের আড়ালে বলে গেছেন বাবর হুমায়ুন আকবর জাহাঙ্গীর শাহজাহানের গল্প। এই মুঘল সিরিজের প্রথম বইই বাবরকে নিয়ে 'Raiders From The North'। উত্তরের হানাদার। তবে অবশ্য শুধু হানাদারিতেই গল্প আটকে থাকেনি। খুব সূক্ষ্ম ভাবে গল্পের মধ্যে তারা তুলে এনেছেন সাম্রাজ্য রক্ষার স্বার্থে কিভাবে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়।

ঐতিহাসিকরা একমত হবেন, যে কোনো সাম্রাজ্যেই শাসকরা যাই করে থাকুক না কেন সবই তার নিজের সাম্রাজ্য রক্ষার স্বার্থেই করেন। মন্দির মসজিদ ভাঙাই হোক, বা রাস্তা নির্মাণ বা ধর্মকে আশ্রয় করা অথবা পররাজ্য আক্রমণ- সব কিছুই সাম্রাজ্য রক্ষার স্বার্থে। ঠিক এই কারনেই মেবারের রাণার সাথে যুদ্ধকে যখন বাবর ঘোষণা করছে এটা ধর্মযুদ্ধ বা জিহাদ বলে, অবাক হয়ে যুবক হুমায়ুন প্রশ্ন তুলছে, "কিন্তু আমাদের সাথে তো অনেক হিন্দু রাজাও রয়েছে!"

বাবর মৃদু হেসে হুমায়ুনকে বলেন, "হিন্দু রাজাদের এই যুদ্ধে জড়ানো হবে না। তারা থাকবে তাদের নিজেদের রাজ্য নিয়ে। কিন্তু আমার সেনারা আর হিন্দুস্তানে থাকতে চাইছে না। হিন্দুস্তানের গরম আর রাণাদের আক্রমণে তার বিতশ্রদ্ধ হয়ে দেশে ফিরে যেতে চাইছে। এই সময়ে ওদের উজ্জীবিত করার জন্যই আমাকে ধর্মযুদ্ধে নামতে হবে।"

(কোথায় যেন মিল খুঁজে পেয়ে যাই বিতশ্রদ্ধ প্রজাদের রাজার প্রতি আনুগত্য অটুট রাখার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করার মধ্যে)। ঐতিহাসিক গল্প সব সময়েই প্রিয় বলে কিনা জানি না, ব্যক্তিগতভাবে ভারতের ইতিহাসে মুঘল আমল আমার পছন্দের সারিতে সবার ওপরে।
মুঘল সিরিজ আমার অনেক প্রিয়- Raiders From The North.

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৭

কামাল৮০ বলেছেন: মধ্য যোগের কোন শাসককেই আমার ভালো লাগে না।আমরা শুধু রাজাদের কথাই শুনি প্রজাদের কথা খুব একটা ইতিহাসে লেখা নাই।প্রজাদের উপর কি নির্মম অত্যাচার তারা করেছে সে সব শুনলে ঘা শিউরে উঠে।এই জন্যই মধ্য যোগকে বলা হয় বর্বর যোগ।
মোগলদের কথাই যদি ধরেন,তবে দেখতে পাবেন প্রায় সবাই তারা আপন ভাইদের হত্যা করেছে।যে আপন ভাইকে স্বার্থের জন্য হত্যা করেছে সে অন্যের সাথে কেমন ব্যবহার করেছে।হেরেমের পবিত্রতার নামে তারা কতো লোককে খোজা করছে।অত্যাচারের হাজারো কাহীনি আছে।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৬

জুল ভার্ন বলেছেন: একদম সঠিক পর্যবেক্ষণ। মুঘলদের ইতিহাস মানেই ভাইয়ে রক্তে ভাইয়ের হাত রঞ্জিত করার ইতিহাস। সেই বাবর থেকে শুরু যার মর্মান্তিক সমাপ্তি হয়েছিলো আওরংগজেবের নির্মমতায়। মোঘল শাসনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এমন একজন মোঘল সম্রাট/শাসক নাই- যার হাত ভাইয়ের রক্তে অঞ্জিত হয়নি।

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:০৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
সিরিজটা আমি পড়েছি। শুধু শেষটা এখনো পাইনি।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩১

জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার বই।

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৩৭

অপু তানভীর বলেছেন: সত্যিই তাই । নিজেদের রাজ্য রক্ষার নামে ক্ষমতা রক্ষার নামে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়ে আসছে সেই আদিম যুগ থেকেই যা বর্তমান পর্যন্ত টিকে আছে ! এবং এই ট্রিকস টিকে থাকবে আরও অনেক অনেক দিন !

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৩

জুল ভার্ন বলেছেন: সেই মধ্য যুগ থেকেই ধর্ম ক্ষমতার হাতিয়ার.... যতই মানব সভ্যতা সংস্কৃতি এগিয়েছে ক্ষমতার জন্য ধর্মের অপব্যবহার ততই বেড়েছে।

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৪৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


সাম্রাজ্যের মধ্যে মুগলরাই কি পরিবারেই রক্তগঙ্গা প্রবাহিত করেছে?

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৭

জুল ভার্ন বলেছেন: না, ক্ষমতার জন্য মুঘলরা ছাড়াও যুগে যুগে, কালে কালে দেশে দেশে রক্ষে রঞ্জিত করেছে। তবে ভাইয়ে ভাইয়ে, পিতার বিরুদ্ধে সন্তান, সন্তানের বিরুদ্ধে পিতা- মুঘলদের মতো অন্যদের তেমন বর্বরতা কম।

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বইটা পড়ার ইচ্ছা আছে।

'মোগল হারেমের অন্তরালে' নামে একটা বই ছোটবেলায় বাসায় দেখেছিলাম। কিন্তু পড়া বারণ ছিল তাই পড়তে পারি নাই। এই বইটাও পড়ার ইচ্ছা আছে যদি কখনও পাই।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩১

জুল ভার্ন বলেছেন: এই সিরিজের বইগুলো খুবই পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রায় সব বড়ো বইয়ের দোকানে পাবেন। আর অনলাইনে রকমারিতেও পাবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.