নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
দেশে বিদেশেঃ হিস্ট্রি রিপিটস ইটসেলফ!
১৯২৭ সালে সৈয়দ মুজতবা আলী যখন শিক্ষকতা করতে আফগানিস্তান যান তখন আফগানিস্তানের রাজা ছিলেন আমানুল্লা খান। এই রাজা সাহেব মেয়েদের পর্দা প্রথা তুলে দিয়েছিলেন, মেয়েদের জন্য স্কুল কলেজ বানিয়ে দিয়েছিলেন। দেশ বিদেশ থেকে ডেকে এনেছিলেন জ্ঞানী-গুণী, পন্ডিতদের। সৈয়দ মুজতবা আলী তার আমন্ত্রণেই আফগানিস্তানে পড়াতে যান। রাজা আমানুল্লার স্বপ্ন ছিল আফগানিস্তান জ্ঞানে বিদ্যায় পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেবে।
'কিন্তু সে সুখের দিন বেশিদিন টিকলো না। আমানুল্লা খান খুব দ্রুত "কাফের" উপাধি পেয়ে গেলেন। উত্তর আফগানিস্তান থেকে এই সময় আবির্ভাব হলো এক উগ্রপন্থীর দস্যুর যার নাম ছিল বাচ্চায়ে সকাও। বাচ্চায়ে সকাও দ্রুত ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে লাগলো এবং এক এক করে আফগানিস্তানের শহর দখল করতে করতে ক্রমশ কাবুলের দিকে এগোতে থাকলো। নৃশংস ও চরমপন্থী এই যুদ্ধবাজটিকে ঠেকাতে আমানুল্লা খান বাচ্চায়ের মাথার দাম ঘোষণা করলেন ৫০০ টাকা। বাচ্চায়ে সকাও সে ঘোষণা শুনে ঘোষণা করে দিলো রাজা আমানুল্লা খানের মাথার দাম সে দেবে ১০০০ টাকা!'
ক্রমশ অমানুল্লার সৈন্য বাহিনী রাজার জন্য লড়াই করতে অস্বীকার করলো এবং তারা দলে দলে বাচ্চায়ের দলে যোগ দিতে লাগলো। আমানুল্লা বাচ্চায়ে কে ঠেকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হলেন এবং সে রাজধানী কাবুলে ঢুকে পড়লো। আমানুল্লা খানের হয়ে লড়াই করার আর কেউ রইলো না। আমানুল্লা তখন আর উপায় না দেখে অস্ত্রাগার থেকে রাইফেলগুলো বের করে কাবুলবাসীর মধ্যে বিলি করতে লাগলেন। তার শেষ আশা যদি কাবুলবাসী কোনোভাবে সে দস্যুকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে। তারপর যা হলো তার বর্ণনা দিতে গিয়ে সৈয়দ মুজতবা আলী সাহেব:
"সবচেয়ে অবাক হলুম খাস কাবুল বাসিন্দাদের ব্যবহার দেখে। রাইফেল ঝুলিয়েছে কাঁধে, বুলেটের বেল্ট বেঁধেছে কোমরে, কেউ পরেছে আড়াআড়ি করে পৈতের মতো বুকের উপরে, কেউ বা বাজুবন্ধ বানিয়ে বানিয়ে বাহুতে, কেউ কাঁকন করে কব্জিতে, দু একজন মল করে পায়ে!
যে অস্ত্র বিদ্রোহী, নরঘাতক দস্যুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য দীন আফগানিস্তান নিরন্ন থেকে ক্রয় করেছিল, তা আজ অলংকার রূপে ব্যবহৃত হলো !"
না, একজন কাবুলের বাসিন্দাও সে রাইফেল থেকে একটি গুলিও দস্যু বাচ্চায়ের দিকে ছোঁড়েনি। রাজা আমানুল্লা খান প্রাণ বাঁচাতে আফগানিস্তান ছেড়ে পালান এবং ইটালিতে আশ্রয় পান। বাচ্চায়ে সকাও বিনা বাধায় কাবুল দখল করে ফেলে এবং যথেচ্ছ লুঠপাট চালায়। লাখ লাখ মানুষ প্রাণের ভয়ে কাবুল ছেড়ে পালতে থাকেন। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। মহিলাদের জন্য আবার চালু হয় কড়া পর্দাপ্রথা। মেয়েদের স্কুল কলেজ তুলে দেয়া হয়।'
ভাল মন্দ ভবিতব্য হলেও পুরোনো ইতিহাস আবার ফিরে এসেছে!
(শবনম; সৈয়দ মুজতবা আলী)
** এক বছর আগের লেখা।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: মুজতবা আলীর শবনম শুধু গল্পই নয়। এক অমর প্রেমের কাহিনী, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত আফগানিস্তানের ইতিহাস।
হ্যা এটাও সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রথম জীবনের ছবি।
ইয়েস, “History is never dead. It crawls its way into our present and shapes our future.”
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩১
সোহানী বলেছেন: আহ্ ধর্ম একটি দেশকে কিভাবে ধ্বংস করতে পারে তা আফগান একটা উদাহরন হয়ে থাকলো।
মুজতবা আলী আমার অসম্ভব প্রিয় লেখক। বাবার প্রিয় বলে তারাই ধারায় বইগুলো পড়েছিলাম। বাবার প্রতিবেশী ছিলেন সিলেটে।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করে তারা ধর্মকেই হেয় করছে। পৃথিবীতে ধর্মের নামেই বেশী মানুষ হত্যা করা হয়েছে, এখনো হত্যা করছে- জানিনা এর শেষ কোথায়!
সৈয়দ মুজতবা আলী আমারও অত্যন্ত প্রিয় লেখক, পছন্দের একজন মানুষও বটে। ওনার জন্মস্থান বর্তমান ভারতে আসামের করিমগঞ্জ। তবে তার পৈতৃক ভিটা মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার উত্তরসূর গ্রামে। আমি মৌলভী বাজারের বাড়িটা দেখেছি।
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উপরে রিপিটস হবে। ভুলে রিপিট লিখেছি।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: কোনো সমস্যা নাই- বুঝতে পেরেছি।
৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৪
বিটপি বলেছেন: বাচ্চায়ে সাকাওয়ের এত ক্ষমতার উৎস কি ছিল? আমেরিকা? দরিদ্র একটা দেশ জ্ঞান বিজ্ঞানে পশ্চিমাদের সাথে পাল্লা দেবে - এই ঘোষণা মনে হয় পশ্চিমারা বেয়াদবি হিসেবে নিয়েছিল। তাই তাদের অস্ত্র দিয়ে তাদেরকেই ঘায়েল করার শয়তানিতে মেতে উঠেছে আর এটাকে ইসলামী অনুশাসনকে কৌশল হিসেবে অপব্যবহার করেছে। ধন্য পশ্চিমা বুদ্ধি। আজকে আফগানিস্তান যদি একটি শিক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হত, তবে ইসলামের সঠিক শিক্ষার প্রচারও একই সাথে হত বলে আমার বিশ্বাস।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৭
জুল ভার্ন বলেছেন: বাচ্চায়ে সাকাওয়ের ক্ষমতার উৎস ছিল মূলত অরাজকতার সুযোগ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম। আফগানিস্তানের মূল শত্রু ওদের খনিজ সম্পদ। যার লোভে একের পর এক বিশ্ব শক্তি আফগানদের মধ্যে বিভক্ত বিভাজন তৈরী করে সুযোগ নিয়েছে। তবে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন শক্তি ছাড়া সবাই ছিলো ক্ষমতার হালুয়া রুটি খাওয়া নেতা- যাদের সাথে স্বাধীনচেতা আফগান জনগনের কোনো সম্পর্ক ছিলনা। আর বর্তমান তালেবার সরকার স্রেফ গুন্ডা সন্ত্রাসী মূর্খ গোয়ার গোবিন্দের সমষ্টি। নারীদের হাতে পায়ে, মনে শিকল পরিয়ে ইসলামের নামে অরাজকতা কাম্য নয়। ইসলাম কখনোই নারী শিক্ষা শক্তির বিরুদ্ধে নয়।
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৬
গেঁয়ো ভূত বলেছেন:
সৈয়দ মুজতবা আলীর শবনম আমার পড়া বই সমূহের মধ্যে অন্যতম প্রিয় উপন্যাস। বইটা পড়ার সময় পাহাড় আর পাথুরে রাস্তা সম্বলিত আফগানিস্তান দেশটাকে মনে হয় চর্মচক্ষে দেখেছি ! আর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি কথা যদি বলতে হয় তাহলে আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে বোধ হয় কথাটি একটু বেশিই প্রযোজ্য। হাজার বছর ধরে দেশটি একই চক্রে আটকে আছে।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩২
জুল ভার্ন বলেছেন: শবনম আমারও অন্যতম প্রিয় উপন্যাস! সৈয়দ মুজতবা আলী আমার অন্যতম প্রিয় লেখক। আফগানিস্তানের জাতিগত, উপজাতীয় এবং আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলির মধ্যেকার ফাটল স্পষ্ট। কারণ বিভিন্ন তালিবানি উপগোষ্ঠীগুলি ক্ষমতার জন্য নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে। বাস্তববাদীরা রীতিমতো কোণঠাসা- এমন অবস্থায় আফগানিস্তানে তালেবান শাসনে কখনোই শান্তি আসবেনা।
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫৮
বাংলার এয়ানা বলেছেন: সৈয়দ মুজতবা আলী আমার খুবি প্রিয় লেখক। ৯ম-১০ম শ্রেনীর পাঠ্যবইয়ে "রসগোল্লা" আছে কি?
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:১৬
জুল ভার্ন বলেছেন: সৈয়দ মুজতবা আলী আমার অন্যতম প্রিয় লেখক। ৯ম-১০ম শ্রেনীর পাঠ্যবইয়ে "রসগোল্লা" আছে কি-না জানা নাই। আমাদের সময় ছিলো সৈয়দ মুজতবা আলীর 'দেশে বিদেশে' বইয়ে একটা গল্প ছিলো- গল্পের নাম মনে নাই। সেই গল্পের প্রধান চরিত্র ছিলো লেখকের সেবক- আবদুর রহমান।
৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৩৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
প্রতিটা কর্মেরই কিছু ফলতো ত্যরি হয়ই, সে ফল কে ভোগ করবে সেটি ভিন্ন কথা।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৫৩
জুল ভার্ন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১:১৭
কামাল৮০ বলেছেন: ইতিহাস কখনই ফিরে আসে না।নতুন রূপে নতুন ভাবে আসে।মানুষ সামনের দিকে হাটে।পিছনের দিকে কেউ হাটে না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৩
জুল ভার্ন বলেছেন: বিষয়টা দৃষ্টিভংগির।
৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:১১
নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: তার ভৃত্য আব্দুর রহমানের তাকে এয়ারপোর্টে বিদায় দেয়ার কথা মনে পড়লেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
১০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ইতিহাস বার বার ফিরে আসুক।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১১
জুল ভার্ন বলেছেন: ইতিহাস থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।
১১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২৬
মোগল সম্রাট বলেছেন:
পাগমান পাহাড়ের সাদা বরপের মতো....................!!
১২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালার সাথে এই বাচ্চায়ে সকাও এর মিল খুঁজে পাচ্ছি না।
মুজতবা আলী যে অনেক রসিক ছিলেন সেটা ওনার ছবিটা দেখেই বোঝা যায়। ওনার ছবি নাকি অন্য কারও ছবি এটা?
বাচচি খান স্যার আমাদের ইতিহাস পড়াতেন। সব সময় বলতেন হিস্ট্রি রিপিট ইট সেলফ।