নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
আমি অনেক কিছু হতে চেয়েছিলাম.....
জীবন আক্ষরিক অর্থে ছয় দশক আগে পিছিয়ে গেছে। টাইম মেশিনে করে চলে গেছি অনেক পেছনে- গ্রামে দাদা বাড়ি। রাত হলেই গ্রামটা জোনাকজ্বলা হয়ে যেতো- যে জোনাকির আলো শুধু জোনাকি পোকার জন্যই আর চারিদিকে ভূতুড়ে অন্ধকারের এক নেশা। এই অবস্থাতেও মানুষ একে অন্যকে ভালোবাসতো। আর অন্যকে ভালোবাসতে সে হাতে লিখে চিঠি পাঠাতো ভালোবাসার মানুষকে। সন্ধ্যে জুড়ে সেই চিঠি লেখার পরদিন সকালে সযত্নে মৃদু ফুলের গন্ধের আতর ছড়িয়ে সেই চিঠি পাঠানো হতো গন্তব্যে। আশা আতরের সুগন্ধের সাথে চিঠির শব্দ গুলোও সেই প্রিয় মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। যাতে সে পাশে না থেকেও পাশে থাকার অনুভূতি পাবে। আজ প্রিয়জনকে কেউ চিঠি লেখেনা, দূরের মানুষের কাছে পৌঁছানা আতরে মাখা মনের সুখের কথা। যদি পৌঁছত তাহলে হয়ত একা থাকার এই দিনযাপন এতটা আমরা একলা হতাম না।
ছেলে বেলা আমার অনেকজন কাজিন ছিলো আমাদের বিচরণ ছিল ধানমন্ডি এলাকার বাইরে কলাবাগান, আজিমপুর, ঝিগাতলায় নিকট আত্মীয়দের মধ্যে। মাঝেমধ্যে বাবার চাকরীস্থল ও আমাদের পুরনো বাড়ি ওয়ারীতে। ......আমরা বেড়ে উঠেছি পারিবারিক কঠোর অনুশাসন আর নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে কিন্তু আমরা শৃঙ্খলবন্দী ছিলাম না। আমাদের খেলাধুলা এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক চর্চা ছিলো অবারিত। নিয়মানুবর্তিতার বাইরে আমরা যখন যেখানে একত্রিত হতাম- সবার মধ্যেই প্রচন্ড আকুতি ছিল-"কবে আমরা বড় হবো, কবে একা একা যখন খুশী যেখানে সেখানে যেতে পারবো"! আর এখন বারবার মনে হয়- ইশ আবার যদি সেই ছেলে বেলায় ফিরে যেতে পারতাম!
ব্যক্তিগত ভাবে ছেলেবেলা থেকেই আমি ছিলাম নিভৃতচারী এবং অনেকটাই একাকী। একাকিত্ব আমাকে আমার বয়সী অনেকের চাইতেই এবং আবার বয়সের দ্বিগুণের বেশি বয়সীদের চাইতে অনেক বেশি পড়ুয়া হতে সহায়ক হয়েছিল। জীবনে আমি অনেক কিছু হতে চেয়েছি- যতদূর মনে পড়ে, প্রথম হতে চেয়েছিলাম শিক্ষক। তাও আমাদের পণ্ডিত মশায়ের ছেলেকে মারার জন্য। ঘটনাটা খুলেই বলিঃ- আমাদের বাড়িতে এসে পড়াতেন বিশ্বেস্বর মন্ডল নামের পণ্ডিত মহাশয়। ছেলেবেলায় আমাদের বৃহত্তর যৌথ পরিবারে ৬/৭ বছর বয়সী কয়েকজন কাজীনের সাথে আমিও বাল্যশিক্ষা, নামতা পড়তাম। আমার দুই বছরের বড়ো চাচাতো ভাই জামাল ছিলো খুব দুষ্ট। প্রতিদিনই কোনো না কোনও অপকর্ম করলেও আমরা কেউ কিছু বলতে পারতাম না। ওর আগ্রাসী আচরণের জন্য ওকে আমরা সবাই ভয় পেতাম। পণ্ডিত মহাশয় যে চেয়ারে বসতেন একদিন সেই চেয়ারে জামাল ফাউন্টেনপেন থেকে কালি ঢেলে রেখেছিল। পণ্ডিত মহাশয় এসে চেয়ারে বসার পর সবাই মুখ টিপে হাসাহাসি করছিলো। অবশেষে পণ্ডিত মহাশয় টের পেলেন তার ধবধবে সাদা ধুতি পেছন থেকে কালো হয়ে গিয়েছে.... পণ্ডিত মহাশয় রেগেমেগে সবাইকে জিজ্ঞেস করেও কারোর মুখ থেকে জামালের নাম বলাতে না পেরে সবাইকে কান ধরে দাঁড়িয়ে রেখে এবং বকাবকি করেন।
সবাই কান ধরে দাঁড়িয়ে থেকে এবং বকাবকি স্বাভাবিক ভাবে নিলেও আমি চেয়ারে কালি ফেলিনি তারপরও কেন আমাকে কান ধরে দাঁড়িয়ে রাখলেন তার প্রতিবাদ করলাম। যার জন্য পণ্ডিত মহাশয় আমার কানের পাশের চিপস(চুল) টেনে ধরে। আমি কান্না করে পণ্ডিত মহাশয় এর চোখে চোখ রেখে বললাম- "বড়ো হয়ে আমিও মাস্টার হবো এবং আপনার ছেলের কান টেনে ব্যথা দেবো... তখন বুঝবেন পরের ছেলেকে মারলে কেমন লাগে!"
আমি যাত্রা দলের নায়ক হতে চেয়েছিলাম.....
ছেলে বেলায় কমলাপুর মাঠে জীবনে প্রথম বার যাত্রাপালা দেখেছিলাম ছোট চাচার সাথে। যাত্রা পালার নাম ছিলো "এজিদ বদ"। এজিদ বদ যাত্রাপালা (মীর মশাররফ হোসেন এর বিষাদ সিন্দু বইয়ের সারাংশ ভিত্তিক ঘটনা) দেখে আমি এমনই বুঁদ হয়েছিলাম যে অনেক কান্নাকাটি করে ছোট চাচার মন ভিজিয়ে আরও এক রাত 'সীতার বনোবাস' নামের একটি পালা দেখেছিলাম। আর একবার আমার মামাতো ভাই, আরাফাত ভাইয়ের সাথে দেখেছিলাম 'নবাব সিরাজুদ্দৌলা' পালা। আরাফাত ভাই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ১৯৭১ সনের ২৫ মার্চ কালো রাতে ইকবাল হলে পাক হানাদারদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞে তিনি শহীদ হন। নবাব সিরাজুদ্দৌলা পালা দেখে আমি 'মোহন লাল' হতে চেয়েছিলাম। তখনকার দিনে শীতের সিজনে কমলাপুর, ধূপ খোলা মাঠে ১৫ দিন থেকে এক মাস যাবত যাত্রার আসর বসতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যাত্রা দল আসতো এবং তাদের সেরা পালা মঞ্চায়ন করতো। যাত্রাপালায় একজন 'বিবেক' থাকতেন। বিবেক চরিত্রটা আমাকে কাঁদাতো....আমি যাত্রাপালার 'বিবেক' হতে চাইতাম।
আমি 'মোহন লাল' কিম্বা 'বিবেক' হতে পারিনি। তবে আমার ভেতরে অভিনয় করার একটা সুপ্ত বীজ রোপিত হয়েছিল যাত্রাপালা দেখে। কলেজ জীবনের শুরুতে কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে 'সম্রাট শাহজাহান' নাটকে আমি 'জাহানারা' চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম! পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য দলের সক্রিয় সদস্য ছিলাম।
আমি আমার পূর্বের(১৫ আগষ্ট ২০২২ তারিখ "অটো প্রমোশন" শিরোনাম) একটা লেখায় মুক্তিযোদ্ধা আহাদ ভাইয়ের হত্যা নিয়ে লিখেছিলাম....সৎ ন্যায়নিষ্ঠ নির্দোষ আহাদ ভাইয়ের হত্যাকাণ্ড আমাকে ভীষণ ভাবে শোকাহত এবং বিমর্ষ করেছিলো। আহাদ ভাইয়ের মর্মান্তিক হত্যায় আমার কিছুই করতে না পারার বেদনায় মনে মনে 'সিরিয়াল কিলার' হতে চেয়েছিলাম.....না আমার পক্ষে সিরিয়াল কিলার হওয়া দূরের কথা, মানব সমাজের একটা দুষ্ট মাছি তাড়াবার মতো শক্তিও অর্জন করতে পারিনি।
আমি 'মাস্টার', 'মোহন লাল', 'বিবেক' কিম্বা 'সিরিয়াল কিলার' ছাড়াও আরও অনেক কিছু হওয়ার তালিকা দীর্ঘায়িত না করে কল্পনার রাজ্য থেকে বাস্তবতার কষাঘাত জর্জরিত মর্তে ফিরে আসি।
এদেশের প্রায় সব অবিভাবকের আশা- তাদের সন্তান ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পাইলট হবে, গাড়ি বাড়ির মালিক হবে....কোনো বাবা-মা চান না তাদের সন্তান বিজ্ঞান গবেষক হবেন, মানবাধিকার কর্মী হবেন কিম্বা খেলোয়াড় হবেন বরং আমাদের ছেলে বেলায় খেলাধূলায় আশক্ত সন্তানদের কপালে বাবা-মা ছাড়াও স্কুল শিক্ষকের হাতে মাইর, অপমান অপদস্ত ছিলো নিত্যকার শাস্তি। ছোট ছোট বাচ্চারা জানেইনা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পাইলট, জজ ব্যারিস্টার কি? তবুও তারা মুখস্থ বলে দেয়- 'বড়ো হয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পাইলট জজ ব্যারিস্টার হতে চাই'।
'বড়ো হয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পাইলট জজ ব্যারিস্টার হতে চাই'- ছোটবেলা থেকে এই কথাগুলো শুনতে শুনতে আমরা মনের মধ্যে গেঁথে ফেলি এবং তা সারা জীবন বহন করে বেড়াই। কিছু করার আগে ভেবে দেখতে পারি, আসলেই কতটুকু প্রযোজ্য এটা আমার জন্য। ছোটবেলা থেকে বাচ্চাদের আমরা শেখাতে পারি, কীভাবে নিজেকে ভালোবাসতে হয় এবং তা প্রকাশ করতে হয়। আমি যেমন আমার অধিকারটুকু দেখব তেমনি অন্যেরটুকুও দেখব। যখনই আমি এভাবে চিন্তা করতে পারব, তখনই দুটির সমন্বয় কীভাবে নিজস্ব মতামত দিতে হয়, তা বুঝতে পারব। আমি যখন নিজে না বলতে পারব, একই সঙ্গে অন্যের না বলাটাকেও গ্রহণ করে নিতে শিখতে হবে। আমার যেমন পছন্দ–অপছন্দ রয়েছে, তা আরেকজন মানুষেরও আছে। তা মেনে নিতে শিখতে হবে, যা আমাদের নিজের প্রতি যত্নশীল হতে শেখাবে। ভুলে যাই, আমরা যদি নিজেকে নিয়ে ভালো থাকতে পারি, কেবল তখনই অন্যকে ভালো রাখতে পারব।
আমাদের মনে রাখতে হবে- সফল হওয়া মানেই টাকা পয়সা ধন-দৌলত প্রাচুর্য নয়। সফল হওয়ার মূলমন্ত্র আত্মবিশ্বাস- আমি দৃশ্যমান কোনো ভালো কাজ না করতে পারলেও কোনো খারাপ কাজ করিনি।
সফল হওয়া সহজ কাজ নয়। তবে ছোট ছোট কাজের মধ্যেও অনেক বড়ো সফলতা থাকে। বিষয়টা দৃষ্টিভংগির, আত্মদর্শী। ছোট কিম্বা বড়ো সফল হবার জন্য পরিকল্পনা জরুরী।
সবার আগে নিজেকে গুরুত্ব দিন। অন্যরা কী ভাবছে তা ভাবার দরকার নেই। দৃষ্টিভঙ্গি বদলান। ইতিবাচক মানুষের চারপাশে থাকুন। সামনে এগিয়ে যাওয়া থামাবেন না। বুদ্ধি বিবেক খাটান। নিজেকে মাঝে-মধ্যে সবকিছু থেকে ছুটি দিন এবং আবার শুরু করুন। মনে রাখবেন, ব্যর্থতা জীবনের শেষ কথা নয় বরং ব্যর্থতা দিয়েই শুরু হোক আগামীর সফলতা।
সফলতার চাইতেও সবার ভালোবাসা পাওয়া কঠিন ব্যাপার। অনেক মানুষের স্নেহ ভালোবাসা পেয়েছি- এটাই বড় প্রাপ্তি। আমার যতটুকু অর্জন করার ছিল, তা করেছি। জীবনে কিছুই করতে পারলাম না- এমন আক্ষেপ নেই। এক জীবনে অনেক পেয়েছি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে অনেক দিয়েছেন। তাঁর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: যাত্রা দলের রাজা রানীদের পোশাক যেমন হয়....
আমার ছেলেরাও স্কুল জীবন পর্যন্ত (যে সময়টা পর্যন্ত পারিবারিক অনুশাসন প্রয়োজন) পারিবারিক কঠোর অনুশাসন মেনেই বড়ো হয়েছে...
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৫
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আপনার লেখা থেকেই বুঝা যায়, আপনি অনেক পড়ুয়া ছিলেন; আপনার ছেলেবেলাটা রবীঠাকুরের মতো ছিলো।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: সব সময়ই পড়ার প্রতি আগ্রহ ছিলো এবং এখনও আছে।
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৩
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: পূর্ণ জ্যোৎস্না , জোনাক জ্বলা রাত আমার জীবনে অনেকটা সময় পেয়েছি। সেসব দিন একেবারেই সাদামাটা, এক প্লেট সাদা ভাতের মত সরল সুন্দর। মাউন্টেইনয়ার হওয়ার ইচ্ছে এখনো লালন করি। একদিন হয়তো সব ছেড়ে ছুড়ে বেরিয়ে পড়বো। আর একটা ইচ্ছে জাগে, আমার মধ্যে এমন একটা অল্টার ইগো বেড়ে উঠুক, যে আমাকে মেরে ফেলতে পারবে, কারণ স্বজ্ঞানে আমি কখনোই সুইসাইড করতে পারবো না। আর ঈশ্বরের সাথে আমার অনেক অভিমান, অনেক....
সুন্দর লিখা। ভালো থাকবেন।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আর একটা ইচ্ছে জাগে, আমার মধ্যে এমন একটা অল্টার ইগো বেড়ে উঠুক, যে আমাকে মেরে ফেলতে পারবে, কারণ স্বজ্ঞানে আমি কখনোই সুইসাইড করতে পারবো না। -আপনার মতো আমিও একই রকম প্রত্যাশা করি....
৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কিশোর এবং তরুণ বয়সে বিজ্ঞ এবং বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা থাকলে ভালো হয়। অভিভাবকরা অনেক সময় সন্তানকে জীবনের লক্ষ্যের ব্যাপারে এমন পরামর্শ দেন যেটা সন্তানের মন মানসিকতা এবং ব্যক্তিত্বের ধরণের সাথে খাপ খায় না। ফলে পরে সমস্যা হয়।
অশান্তি এবং ব্যর্থতাকে মোকাবেলা করার একটা পদ্ধতি হল দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো।
নেতিবাচক চিন্তার লোকদের থেকে সব সময় দূরে থাকা দরকার। কারও ইমোশনাল ডমিনেশন যেন জীবনকে প্রভাবিত না করে সেই ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। অনেক বন্ধুবান্ধব থাকে যারা নেগেটিভ চিন্তা করে এবং ইমোশনালি ডমিনেট করতে চায়। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই-
মানুষের জীবনচক্রের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সময় হলো কিশোর/তরুণ বয়স, বিশেষ করে- বয়ঃসন্ধিকাল। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও আমরা বয়ঃসন্ধিকাল কী, এ সময় কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক, মনস্তাত্ত্বিক কী ধরনের সমস্যা হয়, তা অনেকে জানি না। উন্নত বিশ্বের প্রতিটি দেশ এই জেনারেশনের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা, বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ক্যারিয়ার অনুসন্ধানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনেসকোর শিশু অধিকার কনভেনশনের আওতায় বয়ঃসন্ধিক্ষণকে বিশেষভাবে প্রোটেকটেড করা হলেও আমাদের মতো নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে প্রকৃত জ্ঞান ও সচেতনতার অভাবে সব শিশুর চাহিদা, প্রয়োজন বা দুর্বলতাগুলো এখনো নানাভাবে উপেক্ষিত।
এই সময় শরীর বা মননে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় বলে এদের সঙ্গে খুব খোলামেলা বা রক্ষণশীল- উভয় ধরনের আচরণই বিপজ্জনক। তাই এই বয়সী কিশোর-কিশোরীর খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে শারীরিক ও মানসিক- সব ধরনের বিকাশকে ঘিরে অভিভাবকদের নিতে হয় বিজ্ঞানসম্মত বাস্তবিক পদক্ষেপ। পাশাপাশি এ বয়সীদের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে হবে।
আবারও আপনার মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করছি।
শুভ কামনা।
৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৭
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর এর মন্তব্য ভালো লেগেছে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আমারও।
ধন্যবাদ।
৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাই, কত কিছু যে হতে চেয়েছিলাম স্বল্প পরিসরের এই জীবনে।
যখন যেটা মনে ছাপ কাটত বা লাগত তাই হতে চাইতাম।
সিলেটে গিয়ে চা বাগান দেখে সবসময় চেয়েছি ছা বাগানে কাজ করতে। যদিও সুযোগ এসেছিল পড়াশোনা শেষে তবে কর্পোরেট জগতের কামলার চাকরী ছেড়ে আর আর যাওয়া হয়নি স্বপ্নের ভূবন সেই চা বাগানে।
বিমান সেবক/সেবিকাদের দেখে মনে আশা হত আমিও একসময় তাই করব। তবে সে আশা আর এ জীবনে পূরণ হবার নয়।
কলেজ শিক্ষকদের ভাল লাগত , ভাল লাগত কলেজ জীবনকেও ।যদিও কখনো শিক্ষক হতে আমি চাইতাম না (কারন, চাচা-ফুফু-বোন-ভাই সবাই শিক্ষ.তাদের যন্ত্রণায় শান্তি ছিলনা জীবনে) তারপরও প্রায় দু বছর কলেজে পড়িয়েছি খেয়ে-না খেয়ে পরে আবার ব্যাক টু দ্যা প্যাভেলিয়ন(র্পোরেট জগতের কামলাগিরি)।
তবে আমার কখনো বড় কিছু হবার আশা ছিলনা। আর তাইতো আমি সবসময় গাইতাম-
" কেউ হতে চায় ডাক্তার,
কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার ।
আমিত বাউল হবো,
এটাই আমার এ্যাম্বিশান"।
তবে দুর্ভাগ্য ভাই, বাউলও হতে পারিনি আমি জীবনের ছেড়াবেড়ায় জড়িয়ে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: কবি নজরুলের "খোকার সাধ" কবিতার মতো আমিও অনেক কিছু হতে চাইতাম......
আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।
সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,
‘হয়নি সকাল, ঘুমো এখন’- মা বলবেন রেগে।
বলব আমি, ‘আলসে মেয়ে ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয়নি সকাল- তাই বলে কি সকাল হবে না ক?
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’
ঊষা দিদির ওঠার আগে উঠব পাহাড়-চূড়ে,
দেখব নিচে ঘুমায় শহর শীতের কাঁথা মুড়ে,
ঘুমায় সাগর বালুচরে নদীর মোহনায়,
বলব আমি ‘ভোর হল যে, সাগর ছুটে আয়!
ঝর্ণা মাসি বলবে হাসি’, ‘খোকন এলি নাকি?’
বলব আমি নই কো খোকন, ঘুম-জাগানো পাখি!’
ফুলের বনে ফুল ফোটাব, অন্ধকারে আলো,
সূয্যিমামা বলবে উঠে, ‘খোকন, ছিলে ভাল?’
বলব ‘মামা, কথা কওয়ার নাই ক সময় আর,
তোমার আলোর রথ চালিয়ে ভাঙ ঘুমের দ্বার।’
রবির আগে চলব আমি ঘুম-ভাঙা গান গেয়ে,
জাগবে সাগর, পাহাড় নদী, ঘুমের ছেলেমেয়ে!
৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৯
হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: চমৎকার লেখা!
আমিও অনেক কিছুই হতে চেয়েছিলাম!!
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: আমিও অনেক কিছু হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কিছুই হতে পারিনি।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাই এমন- যে কেউ একাডেমিক ডিসিপ্লিন মেনে পেশা নির্বাচন করতে পারে না। আমাদের বিসিএস কর্মকর্তাদের দিকে দেখো- চিকিৎসা, প্রকৌশল ডিগ্রী নিয়ে হয় পুলিশ কর্মকর্তা, মাইক্রোবায়োলজিতে পাশ করে হয় অডিটর, কেমিস্ট হয় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কিউএম!
৯| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ ভোর ৫:১২
কামাল১৮ বলেছেন: আমি কিছুই হতে চাইনি।চলমান জীবন চিল আমার,আজো তাই আছে।
আপনার জীবন সফল জীবন।কত কিছু দেখেছেন,কতো কিছু করেছেন,এটাই বা কয়জনে পারে।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: শ্রদ্ধেয় কামাল ভাই, আপনাকে খুব মিস করেছি। আপনি কেমনা আছেন? শারিরিক ভাবে সুস্থ্য স্বাভাবিক আছেন?
বাস্তবতা হচ্ছে- আমরা চাইলেই অনেক কিছু কিম্বা বিশেষ কিছু হতে পারিনা। জীবন যখন যেমন- সেটাকেই মেনে নেই ইচ্ছায় কিম্বা অনিচ্ছায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩০
শেরজা তপন বলেছেন: 'জাহানারা'র চরিত্রাভিনয়ে আপনার অভিজ্ঞতা কি- শাড়ী নাকি ঘাগড়া চোলি আর ওড়না পড়েছিলেন?
সিরিয়াল কিলার হবার ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং!
আপনার ছেলে বেলাটা কিছুটা নিঃসঙ্গ হলেও মজার ছিল। ওইসব এলাকায় কোন একদিন জোনাকী ছিল বলে বিশ্বাস করতে মন চায় না।
আপনি আপনার ছেলেদেরতো ওভাবেই বড় করেছেন না কি?