নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
মহান বিজয় দিবসের ভাবনা......
শত্রুর হাত থেকে, বর্হিশক্তির হাত থেকে মুক্ত হয়ে কোনো দেশের স্বাধীনতা লাভ করার দিনটিকে ঐ দেশের বিজয় দিবস বলা হয়। প্রতিটি জাতির জীবনেই বিজয় দিবস এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবছর ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ বাঙালির জাতীয় জীবনে অপরিসীম আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে বিজয় দিবস।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। পঞ্চাশ বছর আগে ১৬ই ডিসেম্বর ন’ মাসব্যপী একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা ছিনিয়ে এনেছিলাম স্বাধীনতার লাল সূর্য্যকে। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। সে বিজয় শুধু একটি ভূখন্ডের নয়, নয় একটি মানবগোষ্ঠীর- সে বিজয় একটি চেতনার, একটি সংগ্রামের, একটি ইতিহাসের। এবং সে বিজয় তো সীমাবদ্ধ নয় একটি দিবসে - তা অনুরণিত প্রতিদিন, প্রতি পলে, প্রতি প্রানে।
প্রতি বছর ২৫ মার্চ যেমন এক বিভিষিকাময়, বেদনাময় দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়, আবার প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর আনন্দ উৎসব এবং অসংখ্য দুঃসহ স্মৃতিকে ফিরে পাওয়ার দিন। নয়মাসের ধ্বংসযজ্ঞ আর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কতো শত স্মৃতি অলিখিত আছে যার স্বাক্ষী হবার সৌভাগ্য এবং দুর্ভাগ্য হয়েছি- তা দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবেনা।
স্বাধীনতার একটি অন্তর্নিহিত মাত্রিকতা আছে, কিন্তু স্বাধীনতা কোন বিমূর্ত ধারনা নয়। অন্যদিকে বিজয়েরও একটি বর্হি:মাত্রা আছে, কিন্তু বিজয় তো বোধের। সুতরাং বিজয় বা স্বাধীনতা শুধু উদযাপনের নয়, চেতনারও। এবং সেই চেতনা ধারন করতে হবে বর্ষব্যপী, প্রতিটি মানুষের হ্দয়ে- যারা ১৯৭১ দেখেছি, তাদের এবং যারা দেখেনি, তাদেরও।
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, বিজয় দেখেছি, তাদের একটি অংশ সেই চেতনাকে ধারন করে রাখতে পেরেছি। কিন্ত সেই সঙ্গে এটাও সত্য যে আমরা অনেকেই সেই চেতনা বিস্মৃত হয়েছি এবং আমাদের কেউ কেউ বেপথুও তো হয়েছি। স্বাধীনতা সংগ্রাম দেখেছে, কিন্তু স্বীকার করেনি, তাদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের চেতনাকে আমরা যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের সাক্ষী, তাদের মাধ্যমেই নতুন প্রজন্মের জন্য ফিরিয়ে আনতে হবে ইতিহাসের আলোকে।
আসলে পুরো প্রেক্ষিতটি অনেক বেশী তাৎপর্য্যপূর্ণ আমাদের তরুন ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য, যারা বিজয় দেখেনি। তারা মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনেছে, কিন্তু দেখেনি। মু্ক্তিযুদ্ধ তাদের কাছে হয়তো একটি কল্পকাহিনী, বিজয় তাদের কাছে সুদূর অতীতে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। এ অবস্হায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তরুন প্রজন্মের আবেগী কিংবা একটি বস্তুনিষ্ঠ যোগ সবসময় নাও থাকতে পারে। কারনগুলো সঙ্গতই- হয়তো কেউ তাদের বিষয়টি ঠিকভাবে বলেনি, কিংবা তাদের পাঠ্যক্রমে তা অনুপস্হিত থেকেছে বা বিকৃতভাবে উপস্হাপিত হয়েছে। এ অবস্হায় বিভ্রান্তিমূলক ধারনারও জন্ম হতে পারে সহজেই।
বেদনার সঙ্গে বলতে হয় যে, আজকের বাংলাদেশে এ অবস্হাটির কমতি নেই এবং সেটা খুবই শঙ্কাজনক। এ প্রবনতা চলতে থাকলে ভবিষ্যত প্রজন্ম ধারন করবে না বিজয়ের সত্যিকারের চেতনা, জানবে না মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস। ভবিষ্যতের দিনগুলোতে আমাদের জাতিসত্বা:র অহংকার, আমাদের ঐতিহ্যের ইতিহাস, আমাদের চেতনার ভিত্তি বিলুপ্তির পথ এ প্রক্রিয়া প্রশস্ত করে দেবে।
কিন্তু এ চেতনার শিক্ষা, এ ইতিহাসের জ্ঞান বিমূর্তভাবে কিংবা দার্শনিকভাবে হয় না। নানান প্রতীকির ব্যবহার, নানান বাস্তব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ উদ্দেশ্য সাধিত হতে পারে। বিজয় স্মরন ধারনাটির ব্যপ্তি বিস্তৃততর ও গভীরতর। মৌলিকভাবে বিজয় আমাদের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পরে বাঙ্গালী জাতির ঐতিহাসিক বিজয়ের এক উজ্জ্বল প্রতীক এবং স্মারক- এর মাধ্যমে আমরা আমাদের বীর মুক্তিযাদ্ধাদের এবং তাঁদের অবদানের কথা স্মরন করতে পারি। কারণ, আমি বিশ্বাস করি- আমাদের এক একজন মুক্তিযোদ্ধাই এক একটি বিজয় দিবস।
বিজয় দিবস স্মরন কিম্বা উজ্জাপণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশ, মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের কথা বলতে পারি- বিশ্ববাসীর কাছে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও তাঁদের শেকড়ে নিয়ে যেতে পারি। সেই সঙ্গে আমরা সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়তে পারি। সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে চেনানোর জন্যে এবং বিদেশীদের কাছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় ব্যাখ্যার জন্যেও বিজয় দিবস উজ্জাপণের বিকল্প নাই।
বিজয় স্মরন প্রক্রিয়া মানুষের সঙ্গে মানুষকে সর্ম্পৃক্ত করে যৌথ চেতনার সৃষ্টি করে। অবাক মানি যখন দেখি, ছোট-বড় সবাই মিলেমিশে কত সহজে বিজয় দিবসে- আমাদের শিশুদের পরিবারের সবাই মিলে শেয়ার করতে পারি মুক্তিযুদ্ধের গল্প - দেশের ইতিহাসের, মুক্তিযুদ্ধ বিজয় এর গল্প।
বিজয় দিবস উজ্জাপণ জাতির ইতিহাস সমৃদ্ধ করতে বড় ভূমিকা আছে। আমাদের রাষ্ট্রীয় চার নীতি আমরা বিস্মৃতপ্রায় - ভূলুণ্ঠিতও বয়েছে কোন কোন নীতি। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মানুষের মুক্তির চেতনা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশের আমজনতা চেয়েছিলেন সাধারন মানুষের সার্বিক মুক্তি, এবং সেই লক্ষ্যে স্বাধীনতাকে তারা দেখেছিলেন আবশ্যকীয় শর্ত হিসেবে। বিজয় দিবসে চারটি সেই চার নীতি - জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায্যতা হিসেবে সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক হতে পারে।
বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় দিবসসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি দিবস। তবে এ দিবসটি অন্যান্য দিবসের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব রাখে। কেননা, বিজয় দিবস আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি দিন হলেও এর সাথে জড়িয়ে আছে '৭১-এর মহান শহিদদের স্মৃতি, স্বজন হারানোের আর্তনাদ আর যুদ্ধাহত ও ঘরহারা মানুষের দীর্ঘশ্বাস। এ দিনটি শুধু আমাদের বিজয়ের দিন নয়, এটি আমাদের চেতনার জাগরণের দিন। তাই এই দিনে প্রতিটি বাঙালি নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় দেশকে গড়তে- বিশ্বসভায় সামনের সারিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে।
মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর সেনানীদের আমার সশ্রদ্ধ অভিবাদন। অনেক ভালোবাসা সেই সব ছোট বড় মাতৃকাদের যাদের স্নেহচ্ছায়া আমাকে ঘিরে রেখেছে আজীবন। শেষ কথা বলি- বিজয় স্মরন ধারন করে আছে আমার দেশ, তার ইতিহাস, তার মুক্তিযুদ্ধ, তার ঐতিহ্য আর মূল্যবোধ আর আমি ধারন করে আছি সে প্রক্রিয়া সারা বছর আমার হৃদয়ে - ওটাই আমার অঙ্গীকার।
সবার জন্য বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: এই জীবনে মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় দিবস নিয়ে কতো স্মৃতি ধারণ করে আছি.....সব স্মৃতি পুঞ্জিভূত থাকবে...
আপনার আব্বাও মুক্তিযুদ্ধের একজন অগ্র সেনানী। সশ্রদ্ধ সালাম জানাই।
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩০
শেরজা তপন বলেছেন: অগ্রজ হিসেবে আপনি বিষয়টা ভাল উপলব্ধি করতে পারছেন।
আপনাকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ভাইয়া, উপলব্ধিগুলো প্রকাশ করতে পারছিনা মুক্তিযুদ্ধের ফরমায়েশি ইতিহাসের জন্য!
৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৪০
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: বাংলাদেশের বিজয় একটু বেশী গৌরবের। কারণ এ যুদ্ধে আমাদের জনগণের অপরিসীম ত্যাগ রয়েছে। আমাদের একাত্তরের বিজয়কে পিছনে ফেলতে একটা চক্র আমাদেরকে আরেকটা যুদ্ধে জড়াতে চায়। তাদের থেকে আমাদেরকে সাবধান থাকতে হবে।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: যুদ্ধ জয়ী একাত্তরকে কেউ পেছনে ফেলার শক্তি রাখেনা। "জুজুর ভয়" স্বৈরশাসকদের একটা চালাকি।
৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের ভাবনায় কাজ দিবে না। ভাবতে হবে শেখ হাসিনাকে।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: কথা সত্য।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:৩১
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
ছোটবেলায় ১৬ ডিসেম্বর সকালে আব্বা বলতেন , গিয়ে দেখো সূর্যটা আজ কত লাল।
ভালো থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা। সালাম জানাই।