নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
নিষিদ্ধ গল্প.....
প্রায়ই ভাবি- একটা ভাল কিছু লিখবো, একটা বই লিখবো। খুব উন্নত মানের একটা লেখা। আমার লেখা পড়ে কেউ হাসবে, কেউ কাঁদবে। খুব সাধারণ একটা ঘটনা নিয়ে লিখতে চাই, কয়েকটি মানুষকে নিয়ে লিখতে চাই, কিছু সুখ-দুঃখের গল্প বুনতে চাই- আমার সেই বই শেষ না করে পাঠক ঘুমোতে যেতে পারবে না। কিন্তু শেষমেশ আর কিছুই লেখা হয়ে ওঠে না। এত ঘটনার ভিড়ে কোন একটা ঘটনাও মুখ্য হয়ে ওঠে না আমার।
একটা সময় টুকরো টুকরো লিখতাম, সেই লেখা দেখলে আজ নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হয়, হাসিও পায়। কিসব ছাতামাথা লিখে নিজেকে লেখক ভাবতাম! কিন্তু এখন সেই ধ্রুব সত্যটাকে আর এড়াতে পাচ্ছি না। নিজের অজান্তেই আমি মেনে নিয়েছি, আমি আসলেই কিছু লিখতে পারি না।
আমাদের বৃহত্তর পরিবারের প্রায় সবাই, এমনকি আমার বন্ধুরা, শিক্ষকদেরও কেউ কেউ আমাকে প্রায়শই বলতেন, “এত যে বই পড়িস কিছু লিখলেও তো পারিস। পাঠকদের কেউ সম্মান করেনা, লেখকদেরই মানুষ সম্মান করে।”
বুবুও আমাকে লিখতে বলতেন.....বুবুর কথা শুনে আমি হাসতাম। আমার বুবুর ছোট্ট দুনিয়াটার কথা ভেবে কেন যেন পরম মমতায় চোখটা ভিজে উঠত আমার। আমার সামান্য ভালোতেই, কত অল্পতেই না খুশি হতো আমার বুবু! বুবুও পড়তে ভালবাসতেন। তার কাছে লেখক মানে অন্যকিছু! আব্বার পোস্টিং পশ্চিম পাকিস্তানের কোহাট এয়ার বেইসে। আব্বা যখন ছুটিতে আসতেন, আমার লেখা পড়ে উৎসাহ দিতেন.... মনে আছে, ছোট চাচার অনেক বন্ধু ছিলেন তখন নামি-দামি কবি সাহিত্যিক। তাদের কেউ যখন আমাদের বাড়িতে আসতেন বুবু তাদের সাথে যেচে কথা বলে কিরকম অভিভূত হয়ে পড়তেন। যেকোনো লেখককে সামনাসামনি দেখা বুবুর অনেক স্বপ্ন! বুবুর স্বপ্ন, সে-ও একদিন ভালো সাহিত্যিক হবে.....
আমি তো কোনো কবি সাহিত্যিক হতে পারলাম না। যদিও বিভিন্ন ম্যাগাজিনে, সাময়িকীতে টুকটাক লিখতাম কিন্তু সেই লেখায় কাউকে মুগ্ধ করতে পারতাম না।
আচ্ছা এই ইচ্ছেটার শুরু কোথায়? আমার শব্দ নিয়ে, বাক্য নিয়ে খেলা করার সুপ্ত বাসনাটা কবে জাগলো? কবে ইচ্ছে হল নিজের কোন লেখার কোন চরিত্রের জন্য কাঁদব? কবে ইচ্ছে হল আমার প্রিয় সন্ধ্যাবেলার বাড়ি ফেরার অনুভূতিটা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে?
কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি নিজেকে, নিজের সীমাবদ্ধতাকে। আমার লেখালেখি কিছু হলেও সেটা একান্তই আমার নিজের জন্য। আমার গোপন লেখার গোপন পাঠক আমি একাই।
যখন আমি এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র তখন আমার গোপন লেখালেখির মতো একতরফা গোপন প্রেম এবং প্রেমিকা ছিলো অনেক জন.....তারা সবাই আমার চেনা পরিচিত আত্মীয়া স্বজন, তাদের বান্ধবী কিম্বা তাদের ছোট বড়ো বোনেরা। আমি যখন কলেজ ভ্যাকেশনে বাড়ি ফিরতাম তখন আমার প্রেম মারাত্মক বেড়ে যেতো.....
যাযাবর লিখেছিলেন, 'মেয়েদের ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় অনেক দুর্ভেদ্য দৃষ্টি ভেদ করে পুরুষের জৈবিক তাড়না উপলব্ধি করতে পারে'! আমার জৈবিক তাড়নাও বুঝতে পেরেছিল আমার চাইতে ৫ বছরের বড়ো মৃদুলা বিশ্বাস।
আমি মৃদুলাকে দিদি ডাকতাম। কিন্তু সেই দিদি সম্বোধনে বড় বোনের অনুভূতি ছিলো না। বরং প্রচন্ড শারীরিক আকর্ষণ ছিলো। আমার দিদি সম্বোধনের আড়ালে মৃদুলা বুঝতে পেরেছিল আমি ওর কাছে আসতে চাচ্ছি.....
খৃষ্টান ধর্মালম্বীরা মুসলমান হিন্দুদের মতো রক্ষণশীল পরিবার নয়। ওদের বাড়িতে যৎসামান্য চেনাজানার সূত্রেও যেকারোরই অবাধ যাতায়াত ছিলো। সেই সুযোগে আমি প্রায় সারাদিন নানাবিধ অজুহাতে মৃদুলার কাছাকাছি থাকতে চেষ্টা করি। জানি তাতে প্রেম ছিলো সামান্যই, শারীরিক আকর্ষণই মূখ্য ছিলো। মনে হতো- মৃদুলাও আমাকে চাইতো....। বিকেলগুলো ওর জন্য আমার প্রিয় হতে লাগল। কি প্রচন্ড আবেগ কাজ করত! ওকে নিয়ে কবিতা, গল্প কিম্বা ছোট ছোট চিরকুট লিখতে শুরু করলাম। যা লিখতাম তা আবার মৃদুলাদের বাড়িতেই রেখে আসতাম...মনে মনে চাইতাম -আমার লেখাগুলো শুধু মৃদুলা দেখুক, পড়ুক।
মৃদুলাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত, বিশেষ করে মৃদুলার সাথে মেলামেশা আমাদের বাড়ির কেউ পছন্দ করে না। বুবু সরাসরি আমার উপর অসন্তুষ্ট। বুবুর চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি মৃদুলাদের বাড়ি যাই- কী এক নিষিদ্ধ আকর্ষণে। মৃদুলা কীর্তি এথলেট। কলেজের ইনডোর-আউটডোর চ্যাম্পিয়ন। মৃদুলার সাথে আমিও ক্যারম, ব্যাডমিন্টন খেলি।
একদিন লিখলাম-
'স্বপ্নে তোমায় চুমু দিলাম রাতের তারার মত,
বিশাল আকাশ থাকুক পাহারায় অবিরত।
ঠান্ডা হাওয়া নীরব আজি দুজনের উত্তাপে
কাছাকাছি বসে আঁধার দেখি আলোর পরিমাপে।
তোমার নরম গালের রংটা গাঢ় হয়ে গেল একি!
আমাদের দেখে হাসছে দেখো অন্ধকারে জোনাকি।
সাগর দেখেছি পাহাড় দেখেছি দেখেছি গভীর বন,
কোথাও পাইনি তোমার মত উত্তাপ শিহরণ।
সুন্দর দেখে লাগেনি আপন দেয়নি কিছুই সুখ
চাঁদের আলোয় দেখেছি যেনো স্বপনচারিনীর মুখ।
তুমিই আমার জীবন যাপনে সাত রাজার ধন
তুমি থাকতে নাই আর কোন সুখের প্রয়োজন।
ফিসফিস করে তোমায় বলছি শুনছো এই যে নারী?
আঁধার হারাক ভোরের আলোতে তুমি শুধু আমারই।'
কিসব কবিতা লিখতাম তখন!
আজকাল সেসব ভাবলে প্রচন্ড লজ্জা লাগে। অথচ ওর পাসে বসে যখন এসব ছন্দ মেলানো লেখা শোনাতাম, ও আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরত। ওকে কখনও আমায় “আমি তোমায় ভালবাসি” বলতে হয়নি। কিন্তু ও ঠিকই বুঝে নিয়েছিল। আমায় যে বড় লেখক হতে হবে সেই বাসনা আরও তীব্রভাবে হৃদয়ে গেঁথে দিয়েছিল মৃদুলা। নিজে লিখত না, কিন্তু খুব পড়ত। আমার লেখার সবচেয়ে বড় সমালোচক হয়ে উঠল সে। একদিন ফোন করে ওদের ভাগনির জন্মদিনে নিমন্ত্রণ করল আমায়। চকোলেট আর ফুল নিয়ে যেয়ে দেখি কেউ নেই! মৃদুলা আস্তে আস্তে বলল, “বাসায় কেউ নেই, তোমার সাথে একান্তভাবে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল- তাই আসতে বলেছি....।”
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। এরকম একটা ফাঁকা বাসায় একটা মেয়ের সাথে সময় কাটানো কতটা বিপদজনক বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু চলে আসতে পারছিলাম না। আমি আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। মৃদুলা এগিয়ে এসে আমার ঠোঁটে আলতো করে একটা চুমু খেল। আমি ভয়ংকরভাবে কেঁপে উঠলাম।..... কবিতা-গল্পে প্রচুর চুমুর কথা লিখলেও এরকম অভিজ্ঞতা একেবারেই আমার জন্য নতুন। সেদিন কতক্ষণ ওখানে ছিলাম আমি জানি না। সময় থমকে গিয়েছিল। যতবার ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখছিলাম মনে হচ্ছিল এর থেকে বড় তৃপ্তি কিম্বা অতৃপ্তি আর কিছুই হতে পারে না। ওর ঠোঁট ছুঁয়েই মনে হচ্ছিল এই প্রথম কোন নিষিদ্ধ সুখ আমি স্পর্শ করছি।
সেদিন বাসায় ফিরেই লিখে ফেলেছিলাম এক দীর্ঘ প্রেমের কবিতা। আগে যা লিখতে ভীষণ সংকোচ হত সেসবেই আস্তে আস্তে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করলাম। মৃদুলাকে এখন আমার খুব কাছের মানুষ মনে হয়। মৃদুলাকে আমার একান্তই নিজস্ব সম্পদ মনে হয়, আমার অধিকার মনে হয়।
আমি যখন তখন মৃদুলাকে ফোন করে দেখা করতে চাই....আবারও একান্তে পেতে চাই....মৃদুলা কখনো সময় দেয়- আমি সবকিছু ফেলে মৃদুলাদের বাড়ি যাই....
কিন্তু সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়......
ভ্যাকেশন শেষ। আমাকে ফিরে যেতে হবে কলেজ হোস্টেলে....
কলেজে ফিরে যাওয়া খুব কষ্টের....মৃদুলাকে ছেড়ে আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করেনা। তবুও যেতে হবে। আর মাত্র একটা বছর। তারপর আমি হবো সেনা অফিসার.....বাড়ির সবার অমতেও মৃদুলাকে জয় করার সেকেন্ড স্টেপে পৌঁছানোর অপেক্ষা......
দুপুর বেলা।
আমার বুক শুকিয়ে গিয়েছে। বারবার পানি খাছি, আমার পিপাসা মেটেনা। আসলে আমার বুকটা শুকনো লাগছে মৃদুলাকে দেখতে পাওয়ার তৃষ্ণায়। মৃদুলাকে দেখলেই আমার তৃষ্ণা মেটবে.....
মৃদুলাকে একাধিক বার ফোন করি, নো রিপ্লাই!
আমি মৃদুলাদের বাড়ি যাই। ওদের কাজের বুয়ার কাছে নিশ্চিত হলাম - মৃদুলা বাড়িতেই আছে। চুপিসারে ওদের বাড়িতে ঢুকে দোতলায় মৃদুলার বেড রুমের দড়জায় দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক দেখে নিলাম। দড়জায় আলতো ধাক্কা দিয়ে ভেতর থেকে বন্ধ পেলাম কিন্তু কারোর সাথে মৃদুস্বরে কথোপকথন শুনে থমকে যাই। কৌতূহল মেটাতে রুমের লাগোয়া বারান্দা সংলগ্ন জানালার পর্দা সামান্য সরিয়ে দেখি- একজন মধ্য বয়স্ক লোক(যাকে আমি আগেও দুএকবার মোটরসাইকেল চালিয়ে এই বাড়িতে আসতে/যেতে দেখেছি) ফ্লোরে ফেলে রাখা প্যান্ট শার্ট তুলে পরার জন্য হাতে নিয়ে মৃদুলার হাতে অনেকগুলো টাকা গুজে দিচ্ছে.... আর মৃদুলা খাটের পাশে বসে শালওয়ার কামিজ ঠিক করে নিচ্ছে আর বলছে- "পাঁচশো টাকায় হবে না, আরও পাঁচশো দাও...."- আমি আমার চোখ কানকে বিশ্বাস করতে পারছিনা....
আমি গোপনে গিয়েছিলাম, গোপনেই চলে এলাম। শুরু হল লেখক না হতে পারার আরেকটা গল্প......
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০২
কামাল১৮ বলেছেন: এই গল্পটি একজন বড় লেখকের গল্প।তবে মহাজাগতিক চিন্তা যেন না দেখে। বেত নিয়ে আসবে পিটাতে।
বড় লেখকরাও ভাবে,ভালো লেখাটি আজো লেখা হলো না।শেষ লেখাটি লেখা হয়ে গেলে লেখকের আর করার কিছু থাকে না।বড় লেখদেরও তার সব লেখা তার কাছে ভালো মনে হয় না।
ছোটগল্পই বর্তমানে লেখার ভালো মাধ্যম।আর আপনার ছোট গল্প লেখার হাত ভালো।লিখতে লিখতেই কবে যে শ্রেষ্ঠ লেখাটি লিখে ফেলেছেন নিজেও জানতে পারেন না।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ভাইজান, এখন আর লেখক হবার ইচ্ছা নাই। অবসর পেলে যা তা লিখি....আপনাদের মতো কয়েকজন জ্ঞানী গুণী ব্লগার পড়ে মন্তব্য করেন- এটাই আমার পরম পাওয়া। ধন্যবাদ।
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৩
কামাল১৮ বলেছেন: পারবেন না,হবে
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১০
জুল ভার্ন বলেছেন: জ্বি বুঝতে পেরেছি।
৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: এমন চমৎকার গল্প কেন নিষিদ্ধ হবে!!
এ গল্পটা আরো অনেক বড় হতে পারত- চাইলে একখানা আস্ত উপন্যাস লিখে ফেলা যায়, যেটা আপনার মত লেখকের ওরা খুবই সম্ভব। আপনি নিজেকে অবমুল্যায়ন করেছেন , নিজের যোগ্যতাকে খাটো করে দেখছেন; অথচ ভাষায় কি দারুন দখল আপনার, বিচিত্র অভিজ্ঞতায় ভরপুর আপনার জীবন। সময় ফুরিয়ে যায়নি- কামাল ভাই অনেক ভাল কথা বলেছেন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: তপন ভাই, আমার লেখেলেখির সীমাবদ্ধতা আপনি জানেন....আমি যখন যা লিখি- বলা যায় এক বসাতেই লিখি। বানান, শব্দ এবং বাক্য বিন্যাস নিয়েও তেমন একটা ঘাটাইল করিনা। হ্যা এই গল্পের কলেবর অনেক বৃদ্ধি করা যেতো, হয়তো পুরোদস্তুর একটা উপন্যাস লেখা যেতো। কিন্তু সেই ধৈর্য্য এবং যোগ্যতা আমার নাই- যা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা নেই। বরং এই গল্পের পটভূমি নিয়ে আপনি অনায়াসেই লিখতে পারেন আপনার বিখ্যাত বাবনিক উপন্যাসের মতো একটা অসাধারণ সুন্দর উপন্যাস।
শুভ কামনা নিরন্তর।
৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ২:৪২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সত্যই গোপনে গিয়ে গোপনে এসেছেন
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: পরিস্থিতিগত কারণে- সেটাই স্বাভাবিক।
৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:৩২
স্মৃতিভুক বলেছেন: গল্প হিসেবে সুখপাঠ্য – সন্দেহ নেই| তবে তবে গল্পের কিছু কিছু বিবরণ অতিরঞ্জিত এবং বিশ্বাসযোগ্য নয়| এই ছোট-খাটো ব্যাপারগুলি মাথায় না রাখাতে গল্পের গরু গাছে উঠে গেছে|
মনে রাখতে হবে - এই গল্পের সময়কাল স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় (লেখকের পিতার কর্মস্থলের বিবরণ অনুসারে)।
গল্পানুযায়ী, মেয়েটা কলেজের ইনডোর-আউটডোর চ্যাম্পিয়ন| নিজেদের দ্বিতল বাড়ি| বাসাতে ফোন আছে | যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সেই সময় অনুযায়ী এগুলি কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়| এবং এটুকু বিবরণ পড়ে মেয়েটার ব্যাক্তিত্ব কিংবা পারিবারিক অবস্থা সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা পাওয়া যায়|
এখন বলুন তো এরকম একটা মেয়ের পক্ষে কি গণিকাবৃত্তি করা সম্ভব? শুধু তাই নয় মেয়েটাকে দিয়ে আপনি মাছ বাজারের ক্রেতার মতো দর দর কষাকষিও করিয়ে নিয়েছেন|
আচ্ছা যাই হোক, গল্পের খাতিরে ধরেই নিলাম, তাও সম্ভব। কিন্তু একবার বলুন তো স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে এক হাজার টাকার মূল্যমান কেমন ছিল!!
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: গল্পকে নিছক গল্প হিসেবেই বিবেচনা করা উচিৎ। এটা আমার আত্মজীবনী নয়। আমি লিখেছিলাম- আব্বার পোস্টিং তখন কোহাট...তিনি যখন ছুটিতে দেশে আসতেন তখন আমার লেখা পড়তেন- আমাকে লেখালেখিতে উৎসাহ দিতেন......' এটা স্বাধীনতার আগের প্রেক্ষাপট- অর্থাৎ আমার লেখালেখির পেছনের কথা।
গল্পের প্রেক্ষাপট ১৯৭৪ এর....
এটা কোনো মফস্বল শহরের ঘটনা নয়। স্বাধীনতার পূর্বাপর ঢাকা শহরে দ্বিতল বাড়ির অভাব ছিলোনা। যে এলাকার কথা বলা হয়েছে- সে এলাকায় অনেক বাড়িতেই ফোন ছিলো। অন্যদিকে, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে গণিকাবৃত্তি বিষয়টা ব্যাখ্যাতীত.....প্রফেশনাল প্রস্টিটিউট থেকে এমেচার প্রস্টিটিউটদের মধ্যে পার্থক্য অনেক ব্যবধান।
আপনি বলেছেন- "শুধু তাই নয় মেয়েটাকে দিয়ে আপনি মাছ বাজারের ক্রেতার মতো দর দর কষাকষিও করিয়ে নিয়েছেন"... কী আশ্চার্য্য এখানে মনে হচ্ছে- আপনি কাস্টমার আর আমি দালাল! প্লিজ, আবারও বলছি- গল্পকে নিছক গল্প হিসেবেই বিবেচনা করা উচিৎ।
পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৩৮
নতুন বলেছেন: এমন কাহিনি সম্ববত হইচইএর টিভি সিরিয়াল শ্রীকান্তে একটা পর্বে আছে,
বেশ ভাল লাগলো, বর্ণনায় ছবি ফুটে উঠেছে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি হইচইএর টিভি সিরিয়াল সম্পর্কে কিছুই জানিনা ভাইয়া। তবে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে এমন গল্প অপরাবাস্তব নয়- এটা সত্য।
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।
৮| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৩৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এই ঘটনা নিয়ে লেখা গল্প বা উপন্যাস হতে পারতো আপনার লেখক জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০০
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি আমার সীমাবদ্ধতা জানি। লেখক হবার যোগ্যতা আমার নাই ভাইয়া।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৯| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: চমৎকার! আরো লিখুন।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিতো বিশেষ কোনো বিষয়ে লিখতে পারিনা। আমি মূলত চটুল বিশয়ে বারোয়ারী লেখক বলতে পারেন। ধন্যবাদ ভাই।
১০| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৯
অপু তানভীর বলেছেন: চমৎকার গল্প । আমি প্রথম দিকে তো ভেবেছিলাম এটা আসলে আপনি স্মৃতি কথা লিখছেন তবে অর্ধেক পড়ে বুঝলাম যে এটা নিছকই গল্প ।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ স্মৃতি কথা হলে কি লিখতাম
১১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: যারা ক্যাডেট কলেজে পড়েছেন তাঁরা বিলিয়ান্ট ছাত্র। এবং তাঁরা অন্য সবার থেকে আলাদা।
আপনি আপনার জীবনী লিখুন ধারাবাহিকভাবে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৩৩
জুল ভার্ন বলেছেন: 'ব্রিলিয়ান্ট' ছিলাম কি না জানিনা, তবে 'অন্য সবার থেকে আলাদা'- হয়েই জীবনের অনেক স্বাভাবিকতা থেকেই দূরে সরে গিয়েছি। জীবনের ব্যার্থতা-গ্লানী নিয়ে কি লিখবো!
১২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:২৫
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: সুখপাঠ্য চমৎকার লিখেছেন। সেদিন বুবু লেখকের ভালোর দিকটা বুঝেই বকেছিল। মৃদুলা হয়তো পেটের ক্ষুধা নিবারনে মধ্যেবয়সী পুরুষের দেওয়া টাকা গহরে গুঁজেছে। কিন্তু লেখকের প্রতি তার নিষিদ্ধ টান ছিল না, ছিল নিঁখাদ ভালোবাসা। কবির লেখা কবিতার প্রতি ছিল অগাধ আবেগ। রোজ রোজ মেকি ভালোবাসার ভিরে মৃদুলা খুঁজে পেয়েছিল সত্যিকারের ভালোবাসা কবির ঠোঁটের উষ্ণতায়।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:১৮
জুল ভার্ন বলেছেন: মৃদুলার পরিবার দরিদ্রতো ছিলোই না, বরং তখনকার অর্থনৈতিক মানে উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবার বলাই শ্রেয়। সেই সংগে মৃদুলা ছিলো অত্যন্ত উচ্চাভিলাশী এবং স্টাইলিষ্ট! বিশয়টা তার কাছে স্পোর্টস ছিলো.... পরবর্তী জীবনে মৃদুলা দেশের কর্পোরেট জগতের একজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব হয়েছিলে!
১৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: 'ব্রিলিয়ান্ট' ছিলাম কি না জানিনা, তবে 'অন্য সবার থেকে আলাদা'- হয়েই জীবনের অনেক স্বাভাবিকতা থেকেই দূরে সরে গিয়েছি। জীবনের ব্যার্থতা-গ্লানী নিয়ে কি লিখবো!
সবার জীবনেই ব্যর্থতা আছে। গ্লানি আছে।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:১৯
জুল ভার্ন বলেছেন: অনেক ব্যর্থতা না থাকলেও গ্লানি বয়ে বেড়ানোটা আরও কষ্টের!
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই কারণেই বুবু অসন্তুষ্ট ছিল। বুবু মৃদুলার ব্যাপারটা জানতো বা অনুমান করতে পারতো তাই আপনাকে ঐ বাসায় যেতে নিষেধ করতো।