নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এলোমেলো ভাবনা.......

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

এলোমেলো ভাবনা.......

ইচক দুয়েন্দের ‘লালঘর’ পড়ে নিজের অনুভূতি এলোমেলো হয়ে গিয়েছে!
বইয়ে ১১ জন আসামিকে ঘিরে, তাদের হাজতে নিয়ে আসা হয়। উদ্বেগ হলো তারা মুক্তি পাবে কখন, বা আদৌ মুক্তি পাবে তো? ইচক দুয়েন্দের লালঘরে বন্দী ছিলেন ১১ জন। সেই সব বন্দীদের ভাবনা চিন্তা তুলে ধরেছেন লেখক। অন্যদিকে আমি বইটি পড়ে হারিয়ে গিয়েছি টুকরো টুকরো স্মৃতিতে.......

জেমস জয়েসের যেমন 'এপিফ্যানি'। তিনি ধর্মীয় অনুশাসন না মেনে গির্জার বাইরে শব্দটিকে এনে ব্যবহার করেছেন। এটি এমন এক বিদ্যুৎ-মুহূর্ত বা ক্ষণপ্রভা যখন তুচ্ছ কোনও বিষয় সত্যের আলোকে আলোকিত হয়ে ওঠে। তুচ্ছের মধ্যে মহৎকে সহসা দেখতে পায়। 'ইউলিসিস' এই সত্যে উদ্ভাসিত।

লোরকার যেমন 'দুয়েন্দে'!
দুয়েন্দে কী?
লোরকায় ভাষায়, 'উকার, গুয়াদদলেতে, সীল বা পিথুয়েরগা নদীর মধ্যবর্তী বিস্তৃত পশুচারণ-ক্ষেত্রে যদি কেউ ঘুরে বেড়ায় তাহলে কখনও কখনও তার কানে আসবে, 'এখানে প্রচুর দুয়েন্দে ছড়ানো।' মানুয়েল তোরেস, এক মহান আন্দালুসীয় গায়ক, একবার আরেকজন গাইয়েকে বলেছিলেন, 'তোমার গলা আছে, সৌকর্য আছে, কিন্তু তুমি কখনও সাফল্য পাবে না, কারণ তোমার কোনও দুয়েন্দে নেই।'
দুয়েন্দের সংজ্ঞা এইভাবে নির্দেশ করা যায়, 'এমন এক রহস্যময় এষণাশক্তি যা সকলেই অনুভব করে, কিন্তু কোনও দার্শনিকই যা ব্যাখ্যা করেননি।'

ওরহান পামুকের যেমন 'হুজুন'! মধ্যরাতে বাড়ি ফেরা ফেরিওয়ালার হ্যাজাকের আলোকে হুজুন বলেছেন পামুক। এক বিষণ্ন একাকী পাগল পাগল আলো। এই আলোয় পামুক তাঁর শহরের আত্মাকে খুঁজেছেন। তাঁর চরিত্রেরা বড্ড অশরীরী- ছায়া ছায়া।

গার্সিয়া মার্কেজ পরিবারের সঙ্গে প্রথম তুষারপাত দেখতে যাচ্ছিলেন। কীভাবে তাঁর উপন্যাস শুরু করবেন কিছুদিন ধরেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। দিশা পাচ্ছিলেন না। পথে যেতে যেতে তাঁর দাদীর গল্প বলবার স্টাইলের কথা মনে এল। তিনি লাফিয়ে উঠে গাড়ি ঘুরিয়ে বাড়ির পথে চললেন। শুরু হল এক কিংবদন্তি উপন্যাস- এটিই মার্কেজের প্রস্থানভূমি।

ইসাবেল আইয়েন্দে তাঁর 'দ্য হাউজ অব দি স্পিরিট' উপন্যাসটি হয়তো কোনওদিনই লিখতেন না- যদি না হঠাৎ আলোর ঝলাকানি হিসেবে তাঁর দাদা দাদীর লেখা চিঠি হাতে পৌঁছত। সারা ঘরময় যেন চিঠিগুলো উড়ে বেড়াতে শুরু করল।

রাইনার মারিয়া রিলকে একটি দোকানের শোকেসে অর্ফিয়ুসরূপী পুতুল দেখে 'সনেটস টু অর্ফিয়ুস' লিখতে শুরু করেছিলেন বা দুয়নো দুর্গে বসে 'দুইনো এলিজি' লিখেছিলেন। এখানে স্থান(দুইনো) ও পাত্র (অর্ফিয়ুস) নেহাত তুচ্ছ নয়- যেন সৃষ্টির স্ফুলিঙ্গ।

এরিখ আওয়েরবাখের প্রবাদপ্রতিম বই 'মাইমেসিস'- এর শুরুতে লিখছেন, হোমারের 'ওডিসি'-তে ওডিসিয়াস বহুদিন পর দেশে ফিরছেন আর তার পায়ের জন্মদাগ দেখে পুরনো দাসী ইউরিক্লিয়া তাকে চিনে ফেলছেন। এই 'জন্মদাগ' আওয়েরবাখের মতে 'an independent and exclusive present'- পূর্ণ আলো।

সুফি সাধকরা বলেন 'ফনা'! ফনা হল জীবন্ত অবস্থায় মরণ অথবা অহমকে লোপ করে দেওয়া। হুজরীরী বলেন 'গরীবী'! জগতের সব বস্তু থেকে বিমুখ হয়ে সম্পূর্ণ অহম বিলোপ করে সেই পূর্ণ এককে দেখা। ফনা ব্যক্তিত্বের নাশ নয় বরং পূর্ণ হয়ে ওঠা।

প্রেমে ফনার পথের অবস্থা হল 'হাল' আর বাউল বৈষ্ণবদের তাই 'দশা'! তখন:
"ভাব দিয়ে খোল ভাবের তালা
দেখবি সেই অতলের খেলা,
ঘুচে যাবে মনের ঘোলা
থাক গে সে রূপ নিহারে"।

এটা একটা ম্যাজিক। কখন কোথায় কবে কীভাবে একটা ভাবনার বীজ রোপন হবে কেউ আগাম বলতে পারেন না। পরিত্রাণহীনভাবে শুধুমাত্র হয়ে ওঠা।

'একটি মোমের মতন যেন জ্বলে ওঠে হৃদয়'!
জীবনানন্দ দাশের কাছে তা 'মহাবিশ্বলোকের ইশারার থেকে উৎসারিত সময়চেতনা' অথবা 'অপরিহার্য দূরদর্শিতা ও ধীশক্তি'।

একজন জেলবন্দীর ভাবনা এমনই- ‘আমাদের এই প্রিয় গ্রহ পৃথিবীটাই তো শূন্যে ভাসমান এক বিশাল কারাগার।’

('দুয়েন্দে' নিয়ে কোনো এক ব্লগে একজন ব্লগারের লেখা পড়েছিলাম, নাম ভুলে যাওয়া সেই ব্লগার বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা। কয়েক বছর আগে 'হাবিজাবি' শিরোনামে আমি ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম- সেটারই পূণঃলিখন এই পোস্ট।)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

ডার্ক ম্যান বলেছেন: আপনার পোস্ট ভালো লাগলো। আপনি নানা শ্রেণির বই পড়েন বোঝা যাচ্ছে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২০

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ। আমার একমাত্র নেশা- বই পড়া। কিন্তু বই পড়ার জন্য যথেষ্ট সময় বের করা কঠিন।তবে পড়ার জন্য সুবর্ণ সময় ছিলো জেলখানা!

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬

ডার্ক ম্যান বলেছেন: জেলখানায় বই কি দেয় না?
আমি অবশ্য শুধু একটা শ্রেণির বই পড়ি। তাই মোটামুটি সময় পাই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪০

জুল ভার্ন বলেছেন: কেন্দ্রীয় কারাগারের লাইব্রেরী বেশ সমৃদ্ধই বলা যায়। ওখানে অনেক ভালো বই যেমন আছে, তেমনই আওয়ামী লীগের এক শ্রেণীর অপ লেখকদের আউলফাউল বইয়ে ৭০ ভাগ বুকসেলফ ভড়া। জেলখানায় আসামি/কয়েদীদের দিনে সকাল/বিকেল মোট তিন ঘন্টা সেলের বাইরে যেতে দেওয়া হয়। সেই সময়টা আগ্রহি পাঠকরা লাইব্রেরীতে কাটায়। লাইব্রেরী থেকে আসামিদের স্টাট্যাস অনুযায়ী (সাধারন আসামি, ডিভিশন প্রাপ্ত আসামী- ইত্যাদি ক্যাটাগরী) আগ্রহে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এক বা একাধিক বই সরবরাহ করা হয়- সেলে নিয়ে পড়ার জন্য। আমি যেহেতু সাধারন আসামী কিন্ত 'উচ্চ শিক্ষিত' (প্রত্যেক আসামীর কেইস কার্ডে লেখা থাকে শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ইত্যাদি) তাই আমাকে সপ্তাহে একটা বই ইস্যু করা হতো। কিন্তু আমার অন্তত চারটা বই দরকার হতো আমি লাইব্রেরিয়ানের সাথে ভাব করে (টাকা দিয়ে) অন্য আসামিদের অনুরোধ করে তাদের নামে বই ইস্যু করিয়ে এনে আমি পড়তাম।

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: ভাইজান , আমি যা বুঝেছি দুয়েন্দে হলো আমাদের নিজের সাথে সাথে নিজের কথোপকোথন কিংবা আত্মস্বীকৃতি বা নিজ উপলব্ধি।

আসলেই আপনি একথা ঠিক বলেছেন, '' এ পৃথিবীটাই আসলে এক কারাগার,যেখানে আমরা সবাই সাজা খেটে যাচছি জীবন ভর, না চাইতেও''।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৭

জুল ভার্ন বলেছেন: দুয়েন্দে মানে ভেতরের অন্ধকার শক্তি, যা নিজের ভেতরে সৃজনশীলতা জাগ্রত করে। Federico García Lorca- Theory and Play Of The Duende নামের কবিতা আছে। অবশ্য আমি সেটাকে কবিতা মনে করিনা বরং একটি প্রবন্ধ বলে মনে করি।

৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৪

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: দুয়েন্দে অর্থ হয়তো এটাও হতে পারে আত্মোপলব্ধির মাধ্যমে নিজেকে নির্মোহ করা।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৭

জুল ভার্ন বলেছেন: হ্যা এটাই দুয়েন্দের নিহিত অর্থ।

৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: আগে প্রচুর বই পড়তাম, ইদানিংকালে কর্ম ব্যস্ততার কারণে অনেকটাই ভাটা পড়ে গিয়েছে। তবে আপনার সেই আগে পড়া বই থেতে নিজস্ব স্মৃতির উপর ভর করে অনেক সুন্দর করে রিভিউ দিয়েছেন। মাশাআল্লাহ ---

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫২

জুল ভার্ন বলেছেন: সময়ের বিবর্তনে আমারও পড়ায় বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। আগে গোগ্রাসে গেলার মতো করে পড়তাম- যাকে বলা যায় বই গিলে খাওয়া! এখন পড়ার ধৈর্য্য নাই- জাস্ট পৃষ্ঠা উল্ট চোখ বুলাই। অনেক লেখক বন্ধু স্বজন বই পাঠায়- তা পড়ে বিশয়বস্তু নিয়ে কদাচিত লিখি।

ধন্যবাদ।

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৩

কামাল১৮ বলেছেন: সময়ের বিবর্তন থেকে প্রজাতির বিবর্তন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪১

জুল ভার্ন বলেছেন: আবর্তন কিম্বা বিবর্তন- সময় সব কিছু নির্ধারণ করে দেয়।

৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬

জটিল ভাই বলেছেন:
রিভিউ অসাধারণ হয়েছে ভাই♥♥♥

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.