নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
যে গল্পের শেষ নাই.....
পাসের সীটের যাত্রী সাথে আলাপচারিতায়- নাম জানার পর, জিজ্ঞেস করলাম- "বাড়ি কোথায়?"
ছেলেটি বলল- 'ঝালকাঠী, কীর্ত্তিপাশা গ্রাম।' কীর্ত্তিপাশা শুনেই বুকের ভিতরে উথাল পাথাল ঢেউ- এক কিশোরীর মিষ্টি মুখ ভেসে উঠলো.......
এসএসসি পরীক্ষা শেষে যেমন অফুরন্ত সময় থাকে- এইচএসসি পরিক্ষার পর তেমন নয়। প্রথমত উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি পরিক্ষার প্রস্তুতির জন্য বাড়তি পড়াশোনা। আমাদের সময় ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেটদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান অনেকটাই বাধ্যতামূলক ছিলো- কিন্তু জাতীয় রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির পর থেকে '৭৫ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীতে যোগদানের প্রতি ক্যাডেটদের আগ্রহ কমে যায় কিম্বা একটা দোদুল্যমান অবস্থা বিরাজ করছিলো। এইচএসসি ফাইনাল এক্সামের আগেই সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য প্রি-মেডিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে- তবুও আমি আরও অনেকের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। ফাইনাল এক্সাম দিয়ে আমি সময় কাটাই বৃটিশ কাউন্সিল, পাবলিক লাইব্রেরীতে। বন্ধু ফরিদের কাছে জেনেছিলাম- আরজ আলী মাতুব্বর নিয়মিত বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরীতে আসেন। তার সাথে পরিচিত হতে এক্সাম শেষে আমি বরিশাল চলে যাই।
এক বিকেলে বন্ধু ফরিদের বাড়িতে গিয়েছি। সেখানেই প্রথম দেখা, বন্ধু ফরিদের মামাতো বোন- ওদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। তার উজ্জ্বল গভীর চোখ আর ঠোঁটের নিচে ছোট্ট তিল.... এক নজরেই ভালো লেগে গেল। দুবেণী বাঁধা চঞ্চল মেয়েটাকে কী যে ভালো লাগছে! কিন্তু প্রকাশ করতে পারিনি। পরিচিত হবার, কথা বলার প্রবল ইচ্ছা কিছুই বলা হয়নি। সেও কিছু বলেনি তবুও "অনেক কথা যাও যে বলে কোনো কথা না বলি"... হয়তো সেও আমার ভালোলাগা বুঝেছিলো। 'রানু' নামের ক্লাস টেনের ছাত্রীটির আকর্ষণেই সময় অসময়ে বন্ধুর বাড়ি পরপর কদিন গেলাম। সেও আশেপাশে ছিলো...
এক দিন ঠোঁটের কোণে স্মিত হাসির রেখা এনে বলল -"কাল সকালে চলে যাবো।"
হ্যা রানু চলে গিয়েছে। 'রানু' এবং 'কীর্তিপাশা' ছাড়া আমার আর কোনো সঞ্চয় নেই... ওখানেই সব কিছু থেমে গেলেও বুকের ভেতর রানু নামটা খোদাই হয়ে রইলো- 'এখন আমার বেলা নাহি আর, বহিব একাকী বিরহের ভার'...
কয়েক বছর পর বন্ধু ফরিদকে একদিন জিগ্যেস করলাম -"রানু'র কি বিয়ে হয়ে গেছে?"
বন্ধু হেসে বলল - তুই কি ওকে........
সময়ের ব্যবধানে পেরিয়ে গিয়েছে অনেক কিছু। অর্ধশত বছর পর 'কীর্তিপাশা' নামটা শুনেই অসমাপ্ত মনে হলো জীবনের যৎসামান্য মুহূর্ত! একদিন অযাচিত ভাবে অকস্মাৎ শুরু হয়েছিল, সেটা অপরিবর্তিত থেকে গেছে আজও......কিছু কিছু স্মৃতি জীবনের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে থাকে হাজারো চেষ্টা করেও
মুছে ফেলা যায় না।
কত বসন্ত দোল,
ফাগুন রঙে লাল হওয়া
চলে গেছে জীবনের ওপর দিয়ে।
না আমি মরে যাইনি, আমার প্রাণটা খুব শক্ত।
হয়ত আরও অনেক কষ্ট পেতে বাকী আছে তাই এখনও বেঁচে আছি।
কিন্তু সেদিনের সেই দুবেণী বাঁধা চঞ্চল মেয়েটার
উৎসাহ উদ্যমে ভরা একটা প্রাণ কোথায় যে
হারিয়ে গেল? আর ফিরে এলোনা....
তবুও বসন্ত কাল এলে আজো আমার মনের কোণে সুর বেজে ওঠে, অকারণ খুশীতে প্রাণটা ছট্পট্ করে, তবু যৌবনতো আর ফিরে আসবেনা, যে যায় সে কি আর আসে? কত চন্দ্রভূখ অমাবস্যা পার হলাম, তবু সে তো আসেনি!
(ইহা একটি নিছক গল্প)
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৮
জুল ভার্ন বলেছেন: এবং মৃদুমন্দ বেদনাদায়কও
২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৩
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: শ্রদ্ধেয় ! ইহা নিছক গল্প নয়-এটা গল্পের ভেতরের গল্প। ইহা যে কখনোই মন হতে মুছা যাইবে না, শুধুই ছলকে ছলকে মাঝে মাঝে দাউ দাউ করিয়া জ্বলিয়া উঠিয়া মনটাকে ভষ্ম করিয়া দিতে চাহে। ইহাই হইলো আসল প্রেম-----
হুমম স্মৃতি বড়ই যন্ত্রনা দেয়।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রেম কি না বুঝি না, তবে সেই স্মৃতি কিছুক্ষণের জন্য হলেও আনমনা করে দেয়!
৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:০৩
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৪
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ বন্ধু।
৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:০৪
শেরজা তপন বলেছেন: হা বিশ্বাস করলাম ইহা নিছক গল্প
ভাবিও সেইটাই জানে।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৪
জুল ভার্ন বলেছেন:
৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৩
কামাল১৮ বলেছেন: কীর্ত্তিপাশা নাম শুনে একাত্তুরের কথা মনে পড়ে গেলো।কয়েক মাস কাটিয়েছি কীর্ত্তিপাশায়।যুদ্ধকরেছি অনেকের সাথে কাঁদে কাদ মিলিয়ে।বেশি মনে পড়ে শশাঙ্কের নাম।শশাঙ্ক পাল।সে তার বন্ধুদের গল্প করতো। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো কবি আবুল হাসান,গুন ও হুমায়ুন কবীর।তাদের গল্পই করতো বেশি।কীর্ত্তিপাশা থেকে চলে আসি গৌরনদী
গৌরনদী থেকে পার্টির নির্দেশে আমি ঢাকায় চলে আসি।কয়েক দিন পরে শুনি শশাঙ্ক নিহত হয়েছে।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: ভাইজান, আপনার এই মন্তব্য আমাকেও নস্টালজিক করে দিয়েছে অনেক গুলো কারণে....(১) কবি আবুল হাসান সম্পর্কে ছিলেন আমার কাজীন, যার স্মৃতি নিয়ে একাধিক বার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলাম। (২) আমার মামা সম্পর্কীয় আবদুল বাতেন, যিনি সিরাজ শিকদারের দলে 'রতন সিং' নামে রাজবাড়ী জেলার দ্বায়িত্বে ছিলেন- তার অকাল মৃত্যু। (৩) কৃতিপাশা জমিদার পরিবারের সন্তান ইতিহাসবিদ ডক্টর তপনরায় চৌধুরীর লেখা 'বাংগাল নামা' বইয়ের একটা অধ্যায়ে আমাদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের নাম অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেছিলেন। তপন রায় চৌধুরী ছিলেন আমার বাবার সহপাঠী। (৪) ডক্টর তপন রায় চৌধুরীর লেখা ঐতিহাসিক বই বাংগাল নামা আমাকে গিফট করেছিলেন- আমাদের পারিবারিক সুহৃদ স্বজন বিশিষ্ট ব্লগার জুন
ধন্যবাদ।
৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫
মিথমেকার বলেছেন: গল্পটা বেশ স্মৃতিকাতর এবং সুপাঠ্য। নিতান্ত ফিকশন হলে এটাকে বড় করতে পারেন, বেশ জম্পেশ গল্প হবে!
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: যাকনা এতোটুকুই...
৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৭
অধীতি বলেছেন: আমার বাড়ি ঝালকাঠী পৌরসভার মধ্যে। ঈদ আসলেই গাবখান সেতু আর কৃত্তিপাশা জমিদার বাড়ি দেখতে যাওয়াটা ছিল একটা রীতির মত। শ্যামল, নদী ঘেরা শহরটা কত সুন্দর হতে পারে পরিকল্পনা করে সাজালে। অথচ প্রকৃতি সম্পর্কে কারো ভ্রুক্ষেপ নাই।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: ওয়াও! আদতে আমরা তো প্রতিবেশীই!
ছেলে বেলায় আমি অনেক বার ঝালকাঠি শহরে গিয়েছি- আমার বড়ো ফুফুর বাড়ি। ঝালকাঠি শহরে আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজনরা এখনো আছেন, যদিও আমার সাথে যোগাযোগ নাই। স্বাধীনতা পূর্ব-পরবর্তী ঝালকাঠি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবন (এখন আছে কি না জানিনা) ওই ভবন মালিক আমার ফুফা এবং পাশের তিনতলা বাড়িটা তাদের আবাসিক ভবন। বাড়ির উল্টো দিকে তাদের লবনের ইন্ডাস্ট্রি ছিলো। ওই বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিম দিকে খরস্রোতা নদী (নাম সম্ভবত সুগন্ধা কিম্বা ধানসিঁড়ি) পালবাড়ির খেয়া পার হয়ে চলে যেতাম বাসন্ডা, কীর্তিপাশা...
৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৪
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: কীর্ত্তিপাশার একটা মেয়েকে বলেছিলাম, বয়স পঁচিশ থাকলে তোমার প্রেমে পড়তাম। তারপর তার সাথে কিছুটা নিরিহ চ্যাটিং করে স্ত্রীর হাতে ধরা পড়ে কায়দামত হেয়নেস্তা হয়ে ছিলাম। সেই কীর্ত্তিপাশার দু’বান্ধবী এসে বলেছিলো তাদে দু’জনের একজন স্বামী চাই। তাদের কথাগুলো ছিলো কবিতার মত। কিন্তু আমি যার সাথে বাঁধা তার থেকে এক চুল নড়ার সুযোগ নাই। আর আমি তার থেকে একচুল নড়তেও চাই না। সাতাশ বছর এক সাথে আটকে আছি পরম শান্তিতে।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: যেহেতু এখনো বিষয়টা ভুলতে পারছেন না, তা ভাই সাহেবকে কি- ভাবী খুব বেশী মাইরা ফাটাইয়া দিছিলো? রক্তারক্তি হয়েছিল?? এখনো কি অমাবস্যা-পূর্নিমায় ব্যাথাটা বাড়ে??? কি দিয়ে পিটাইছিলো- একটা ফরেনসিক স্টেটমেন্ট দেন
৯| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আহা রানু
কিশোর প্রেম
ভুলা যায় না। সুন্দর লাগলো
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: এগুলোও জীবন প্রবাহের টকমিষ্টি ঝাল স্মৃতি.....
১০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব সুন্দর মিষ্টি লেখা।সত্যি কিছু কিছু স্মৃতি নিভৃতে মনের মাঝে আজীবন রয়ে যায়।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
১১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভাই রি পোষ্ট এটা ? নাকি আগে ফেসবুকে পড়েছি?
বারবার পড়া যায় এমন স্মৃতি।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: জ্বি আপু, ফেসবুকে লিখেছিলাম।
১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৮
জটিল ভাই বলেছেন:
গল্পটা সত্যি হলেও পারতো♥♥♥
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:০০
জুল ভার্ন বলেছেন: তাহলে এই পোস্ট থেকে বঞ্চিত হতেন
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫
ঊণকৌটী বলেছেন: স্মৃতি সতত মধুর