নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
ফারহা........
'নাকবা' আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ হলো বিপর্যয়, দুর্ঘটনা, দুর্ভাগ্য। ১৯৪৭-১৯৪৯ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনীদের উপর ইহুদি সন্ত্রাসী মিলিশিয়া বাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমণকে বোঝাতেই নাকবা শব্দের ব্যবহার। এ সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছিলো। ১৯৪৮ সালের নাকবা, বা বিপর্যয়, বিশ্বজুড়ে প্রতিটি একক ফিলিস্তিনি পরিবারের মনে গেঁথে থাকা একটি কষ্টের, ধ্বংশের ঘটনা।
১৩ মিলিয়ন ফিলিস্তিনী ব্যক্তিগতভাবে নাকবার শিকার হয়েছিলো এবং আজ অবধি সেই ধারা অব্যাহত। পশ্চিমা মিডিয়া ইসরায়েল রাষ্ট্রের সৃষ্টির কথা বলে নাকবাকে সমর্থন দিয়ে আসছে। নাকবা আসলে একটি বিদেশী ঔপনিবেশিক শক্তি দ্বারা ফিলিস্তিনি সমাজের পদ্ধতিগত, সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত, ধ্বংসকে বোঝায়। এটি আমাদের জনগণের জাতিগত নির্মূল, গণহত্যা, জমি চুরি, বহিষ্কার এবং হত্যাকে বোঝায়।
ফারহা, জর্ডানের পরিচালক ড্যারিন সালামের প্রথম ফিচার ফিল্ম, যা এখন নেটফ্লিক্সে দেখানো হচ্ছে। এটি একটি অসাধারণ এবং অবশ্যই দেখার মুভি কারণ এটিই প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের ইতিহাসে এই মূল ঘটনাটিকে নিপুণভাবে বর্ণনা করেছে। যদিও নাকবার ঘটনাগুলি মৌখিক সাক্ষ্য, লিখিত সাক্ষ্য, বই, কবিতা, গান, নিবন্ধ, তথ্যচিত্র এবং জায়নিস্ট আর্কাইভের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে, তবে এটি খুব কমই ফিল্মে দেখানো হয়েছে- যা জনসাধারণের কাছে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে। তবে আশংকার বিষয়, ইহুদী চক্র এবং পশ্চিমা মিডিয়া ইতোমধ্যেই ফারহা মুভিটি প্রচারের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে।
ফারহা একটি ১৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি মেয়ের গল্প যার জীবন এবং স্বপ্ন বিপর্যস্ত হয়েছিল যখন ইহুদিবাদী মিলিশিয়ারা তার গ্রামকে তাণ্ডব চালায় এবং ধ্বংস করে দেয়। ফিল্মটি একটি নামহীন গ্রামকে কেন্দ্র করে উপস্থাপন হয়েছে। যার শুরুর দৃশ্যটি দর্শকদের ফিলিস্তিনি গ্রামের শান্ত শীতল অবশিষ্টাংশের স্মরণ করিয়ে দেয়; যা সকলের কাছে একটি দৃশ্যমান টেস্টামেন্ট। প্রারম্ভিক দৃশ্যে, আমরা ফারহাকে তার বন্ধুদের সাথে খেলতে, কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করতে, একটি বিরক্তিকর ছেলেকে দূরে সরিয়ে দিতে এবং একটি মেহেদি পার্টিতে যোগ দিতে দেখতে পাই।
ফারহা ১৪ বছরের কিশোরী।
ফারহার বাড়ি প্যালেস্টাইনের গ্রামে
সেখানে ফুল আছে, নীল আকাশ আছে, ঝর্না আছে।
ফারহা বই পড়তে বড্ড ভালবাসে। যখন বন্ধুদের সঙ্গে নদীতে পানি আনতে যায়, তখনও সঙ্গে থাকে বই।
পড়াশুনো বলতে কেবল ধর্মশিক্ষা। তাতে ফারহার মন ভরে না মোটেই। তার প্রাণের সখী ফরিদা শহরের স্কুলে পড়ে। ছুটিতে যখন আসে দুই সখীতে কত আড্ডা। ফারহার চোখে স্বপ্ন- সেও পড়বে বড় স্কুলে, অনেক পড়বে, তারপর ফিরে আসবে এই গ্রামেই, একটা স্কুল খুলবে, কেবলমাত্র মেয়েদের জন্য।
গ্রামের মৌলভী সাহেব চান না ফারহা শহরে যাক। কিন্তু ফারহার মামার কথায় ফারহার বাবা রাজি হন মেয়েকে শহরের স্কুলে পড়তে পাঠাতে। ভর্তির ফর্ম চলে আসে।
ফরিদা আর ফারহার দেখা হয় তাদের প্রিয় জায়গাটিতে। দোলনায় দুলতে দুলতে দুই কিশোরী নতুন দিনের স্বপ্ন দেখে। এমন সময় বোমার আওয়াজে চারপাশ কেঁপে ওঠে।
সালটা ১৯৪৮। শুরু হয়ে যায় কুখ্যাত 'নাকবা'। প্যালেস্টাইনের জনপদ গুঁড়িয়ে যেতে থাকে ইজরায়েলি দখলদার বাহিনীর আক্রমণে। কী ভয়ংকর বর্বরতা, কী অমানবিক জুলুম নির্যাতন নিপীড়ন- বিশ্বাসেরও বাইরে, কল্পনারও অতীত! ফারহা মুভির এই রিভিউ লিখেছিলাম ফেসবুকে.... কিন্তু দশ মিনিট এর মধ্যেই আমার পোস্ট হাওয়া করে দিয়ে আইডি রেস্ট্রিকটেড করে দেয় ফেসবুক কমিউনিটি স্টান্ডার্ড বহির্ভূত পোস্ট দেওয়ার অপরাধে।
কী হয় ফারহার? কী অভিজ্ঞতা হয় ছোট্ট মেয়েটির?
এই নিয়ে তৈরি জর্ডনের ছবি "ফারহা"। নেটফ্লিক্সে চলছে। আরবি ভাষায় নির্মিত মুভির ইংলিশ সাবটাইটেল থাকলেও ছবি দেখেই বুঝতে অসুবিধা হয়না চরিত্রের উপস্থাপন, বক্তব্য। দখলদারি রাষ্ট্র আর তার প্রভাবশালী সাথীদের চাপে ছবিটি হয়ত বেশিদিন থাকবে না। এক কিশোরীর চোখ দিয়ে দেখা ইতিহাসের নির্মমতা ৭৫ বছর পরেও যা দিব্যি বুক ফুলিয়ে ঘোরে তা সিনেমার পর্দায় এসে মানুষের মনে নাড়া দিক সে কি নিরীহ মানুষের রক্তে মাখামাখি "বিজয়ী" রা চাইতে পারে?
ফারহার গল্পটি কেবল নাকবা দ্বারা সৃষ্ট ফিলিস্তিনি জীবন ধ্বংসের গল্প নয়। এটি ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ জীবনের একটি সংবেদনশীল এবং সুন্দর প্রতিকৃতি এবং একটি কিশোরী মেয়ের স্বপ্ন যারা গ্রামের মৌলভীদের দ্বারা মেয়েদের শিক্ষায় বাঁধা দেয় এবং বয়স্ক লোকের কাছে জোর করে বিবাহ দেওয়াকে ভাগ্য বলে চালিয়ে দিতে চায়। ১৯৪৮ সালের প্যালেস্টাইনের এই প্রতিকৃতিটি কেউ মিস করবেন না। প্যালেস্টাইনের জায়নবাদী আলোচনার বিন্দু "মানুষ ছাড়া একটি ভূমি একটি জনগণের জন্য একটি ভূমি ছাড়াই"- আজ প্রতিষ্ঠিত!
১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: শুভ কামনা।
২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সুন্দর মুভির নিউজ জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:১৭
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। ছবিটি অবশ্যই দেখব।
৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
ফারহা " ফিলিস্তীনীরা দেখার সুযোগ পায় না।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৫৫
বাকপ্রবাস বলেছেন: ফিলিস্তিন নিয়ে বড় ভাইয়ার কবিতার বই বের হতে যাচ্ছে, কাজ শেষের দিকে। বই এর নাম সম্ভবত এমনটা প্রতিটি জলপাই গাছ স্মৃতি ফিরে পাবে