![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
ব্রীগেডিয়ার জেনারেল অবঃ আবদুল্লাহ হীল আমান আযমীর "বিভীষিকাময় আয়নাঘর"- বইয়ে "বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান"দের নিয়ে লেখা প্রথম পর্বে সর্বজন শ্রদ্ধেয় জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে নিয়ে তার লেখা হুবহু তুলে দিলামঃ
"মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিক নায়ক ছিলেন জেনারেল ওসমানী তিনি একজন প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও অনেক গুণাবলীসম্পন্ন অফিসার ছিলেন। আমি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক হিসেবে এবং উনার ব্যক্তিত্বের জন্য উনাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। কিন্তু, যেহেতু এই সেনাবাহিনীর জন্ম ১৯৭১ সালে এবং রাজনীতিকরণ তখন থেকেই শুরু হয়েছিল, তাই "সেনাবাহিনীর রাজনীতিকরণ" প্রসঙ্গে বলতে হলে উনার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এখন যা বলছি, তা উনার প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা পোষণ করেই বলছি। তিনি অত্যন্ত নীতিবান ব্যক্তি ছিলেন বলেই আওয়ামী লীগের এমপি এবং মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতার পর যখন সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে গণতন্ত্রের গলা হত্যা টিপে হত্যা করে "বাকশাল" কায়েম করেছিল, তার প্রতিবাদ করে তিনি বীরের মত পদত্যাগ পরে জাতির সামনে এক বিরল ও মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। স্যালুট জেনারেল!"
"এখানে কিভাবে জনগণের অর্থের এই পবিত্র প্রতিষ্ঠানটিকে দলীয়করণ করার চেষ্টা হয়েছে এর জন্মলগ্ন থেকে, শুধুমাত্র তা তুলে ধরার জন্যই এই প্রসঙ্গের অবতারণা। সুতরাং দয়া করে কেউ আমাকে ভুল বুঝবেন না।"
"জেনারেল ওসমানী পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে এএসসি ব্রাঞ্চের অফিসার ছিলেন এবং ১৯৬০ এর দশকের শেষ দিকে কর্নেল র্যাংকে অবসর নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ১৯৭০ সালের ৭ই ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভ করে জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ; মেম্বার অব ন্যাশনাল এসেম্বলি) হন। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের পর অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো তিনিও ভারতে চলে যান।"
"তিনি এএসসি অর্থাৎ "আর্মি সার্ভিসেস কোর"- এর অফিসার ছিলেন। এই কোর বা এর অফিসারগণ যুদ্ধ করে না। শান্তিতে এবং যুদ্ধে তাদের কাজ হলো সমস্ত বাহিনীর খাদ্য ও রসদ সরবরাহ করা এবং যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী সেনাদলের জন্য যানবাহন সরবরাহ করা। সেই হিসেবে তিনি কখনো সম্মুখযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেননি, এমনকি যুদ্ধ দেখার অভিজ্ঞতা উনার থাকার কথা নয়। লেঃ কর্নেল বা কর্নেল পদবীতে তিনি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এতো দূরে থাকতেন যে, কামানের গোলার আওয়াজও শোনা যেতো না, যা ২০/২১ কি. মি. দূর থেকে শোনা যায়। মুক্তি যুদ্ধের সময় উনাকে ৪টা প্রোমোশন দিয়ে সর্বাধিনায়ক করা হয়েছিল। তিনি কোনো দিন যুদ্ধক্ষেত্রে নূন্যতম সংখ্যক সৈন্যও পরিচালনা করেননি। সম্মুখ সমর সম্পর্কে উনার সামান্য অভিজ্ঞতা ছিলো না।"
"জীবনে কোনো দিন সন্মুখ সমর করেননি বা দেখেননি, কেবলমাত্র সৈনিকদের খাদ্য ও রসদ সরবরাহ করেছেন। সিনিয়র পদবী তে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ২৫/৩০ কি. মি. দূরে থেকে। কয়েক বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করেছেন। এমন একজন অফিসারকে কেবলমাত্র সিনিয়র (এবং এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাংসদ) হবার কারণে ৪টি প্রোমোশন দিয়ে তিন বাহিনীর অধিনায়ক বানিয়ে যুদ্ধের দায়িত্ব দেওয়া!"
প্রসংগত, আমি আমার বক্তব্য বলছি-
এম এ জি ওসমানী হয়তো সম্মুখযুদ্ধে অভিজ্ঞ ছিলেন না, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মতো বহুমাত্রিক সংগ্রামে তার নেতৃত্ব ছিল অপরিহার্য। মুক্তিযুদ্ধ শুধু সামরিক যুদ্ধ ছিল না- এটি ছিল রাজনৈতিক-সামরিক মুক্তি আন্দোলন। সেখানে ওসমানী ছিলেন প্রতীকী নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দু, যিনি মুজিবনগর সরকার, সেক্টর কমান্ডার ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী আমাদের ইতিহাসের এক মিমাংসিত সত্য।
জেনারেল এম এ জি ওসমানীর সততা, নীতি এবং সর্বোপরি ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের কারণেই ইতিহাস তাকে সর্বাধিনায়ক স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি মিমাংসিত সত্য- এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে দুর্বল করা। তাই তার সর্বাধিনায়কত্ব নিয়ে বিতর্ক তোলা ইতিহাসকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে খণ্ডিত, বিতর্কিত এবং বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।
স্যালুট জেনারেল ওসমানী- আপনি ইতিহাসে অমর, আপনার নেতৃত্ব প্রশ্নাতীত!
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার দৃষ্টিকোণ গুরুত্বপূর্ণ। সত্যিই, জেনারেল ওসমানী মুক্তিযুদ্ধে একটি অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছেন এবং তার অবদানকে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া উচিত। ইতিহাসে বিভিন্ন দিক থাকতেই পারে, তবে আমাদের মূলকথা হলো, দেশের স্বাধীনতার জন্য তার ত্যাগ ও নেতৃত্ব অমুল্য। সেনাবাহিনীর প্রতি শেখ সাহেবের কোনো আগ্রহ ছিলো না। বরং ভারতের প্রেসক্রিপশন মেনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার একটা প্লান প্রোগ্রাম ছিলো, তারই ফলশ্রুতিতে রক্ষীবাহিনী সৃষ্টি করেছিল।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২৪
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধে জেনারেল ওসমানীর মত একজন ফিগার এবং ওনার অবদানকে খুবই ক্ষীন ভাবে তুলে ধরা হয়। শেখ মুজিব আর্মিকে সোভিয়েত, চায়নার মত একটি দলের বাহিনীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। যাতে ওসমানীর প্রবল ভাবে বাধা দেন।