![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
পুজোয় মহাদেবকে অর্পণ করা ভোগের সারবত্তাঃ-
মন্দিরে ভগবানকে ফুল, ফল ইত্যাদি নিবেদনের কারণঃ
বিভিন্ন উপচারসহ নানা ধরনের পুজো রয়েছে। সেগুলি চতুষষ্ঠী হোক, ষোদশী হোক, পঞ্চ উপচার কিছু বিষয় সাধারণ। এই উপচার বা ঈশ্বরের সেবার মধ্যে রয়েছে, ধোপা দীপা নৈবেদ্য পুষ্পম আরতি। ধর্মীয় উপাসনায় এই প্রতিটি আচারেরই রয়েছে গভীর অর্থ।
হিন্দুধর্ম পৃথ্বী (পৃথিবী), জল (জল), বায়ু (বায়ু), অগ্নি (আগুন) এবং আকাশ (ইথার) হিসাবে পাঁচটি উপাদানকে জানে। হিন্দুধর্ম পঞ্চমটিকে "আধ্যাত্মিক আকাশ" হিসাবেও সংজ্ঞায়িত করে।
হিন্দুদের জন্য উপাসনা এই উপাদানগুলো সমস্ত জীবন ফর্মের ভরণপোষণ নিশ্চিত করে। একটি পিতল, কাসা তামার জল (সিগনিফায়িং জল) দেই, প্রদীপ জ্বালাই (অগ্নির সংকেত), ধূপ জ্বালাই (বায়ু সংকেত), তাজা ফল এবং ফুল (পৃথ্বী নির্দেশক) নিবেদন করি এবং পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। ঈশ্বরের যে এই সব প্রয়োজন তা নয়। ঈশ্বর আমাদের সম্পূর্ণ ভক্তিতে সন্তুষ্ট। তাই এই অভ্যাস গড়ে তুলুন আমরা ধর্মীয়ভাবে এই আচারগুলো মেনে চলি।
ধুপ আমাদের ঘ্রাণ অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করে। ঈশ্বর আমাদের এই বুদ্ধি দিয়েছেন, তাই ধুপ. ফুল একটি উপায়ে কান প্রতিনিধিত্ব করে। এগুলো দেখতে কানের মতো। নৈবেদ্য বা ফল বা মিষ্টি বা খাদ্যদ্রব্য প্রদান করা আমাদের স্বাদের অনুভূতিকে নোট করে। ভগবানকে নিবেদনের পর সাধারণ খাবারটি প্রসাদে পরিণত হয়। ভগবদ্গীতায় ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন যে যে কেউ ভগবানকে নিবেদন না করে কোন খাদ্যদ্রব্য রান্না করে বা খায় সে কেবল তার বাবার কর্ম প্রস্তুত করছে খাবার নয়। তাই খাওয়ার আগে অন্তত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন এবং খাওয়ার পর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ বলুন।
ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক শক্তি এবং আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য আরতি করা হয়৷ ঐতিহ্যগতভাবে, অগ্নি দেবতাদের দূত এবং মুখ হিসাবে পরিচিত৷ তাই যখন আমরা আরতি করি, তখন অগ্নি ভগবানের কাছে পৌঁছে তার আশীর্বাদ নিয়ে আসে। অগ্নি যজ্ঞে দেবতাদের নিবেদিত হবিরভাগ গ্রহণ করেন।
আমরা যেখানে প্রার্থনা করছি তার উপর নির্ভর করে আমরা যে হিন্দু দেবদেবীদের পূজা করি তা পরিবর্তন করা হলেও, যে কোনও হিন্দু মন্দির বা এমনকি কোনও বাড়িতে উপাদানগুলি, পাঁচটি উপাদানকে সর্বদা একই পদ্ধতিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। হিন্দু সংস্কৃতি প্রকৃতির সাথে বেঁচে থাকার এবং আমাদের উপর এর শক্তির প্রশংসা করার উপর অনেক জোর দিয়েছে। কারণ কৃষ্ণ বলেছেন:
যদি কেউ আমাকে ভালবাসা ও ভক্তি সহকারে একটি পাতা, একটি ফুল, ফল বা জল দেয়, আমি তা গ্রহণ করব। এমনকি একটি পাতা বা সামান্য জল একটি ফুল বা ফল অকৃত্রিম ভালবাসায় পরমেশ্বর ভগবানকে নিবেদন করা যেতে পারে এবং ভগবান তা গ্রহণ করে খুশি হবেন। ফুলের গন্ধ সুন্দর, দেখতে সুন্দর এবং সুস্থ পরিবেশে সহজে এবং সস্তায় জন্মানো যায়। প্রাকৃতিক ফুল দিয়ে ভগবানকে সম্মান ও যত্ন দেখানো সর্বত্তম উপায়।
ধুতরোঃ- মহাদেবের চরণে নিবেদন করা হল পার্থিব বিষ। মহাদেব তুমি বিষধারী। তাই আমার হিংসা, দ্বন্দ্ব, দ্বেষের মতো বিষ তুমি নিয়ে আমায় শুদ্ধ, দয়ালু করো।
দুধঃ- দুধ অর্পণ করা হয় শুদ্ধ চরিত্র পেতে। মন ও আত্মা দুধের মতো শ্বেত ও পরিষ্কার হোক।
দইঃ- দুধ থেকে দই হয়। একবার দই হয়ে গেলে তাকে আগের অবস্থায় ফেরানো যায় না। এই সংসারের মায়া বা অবিদ্যায় যেন জড়িয়ে না যাই। মহাদেবের প্রতি ভক্তিবান থাকতে পারি, এই প্রার্থনা। শিবের প্রতি ভক্তি যেন মানুষের আধ্যাত্মিক বিকাশ ঘটায়।
ঘিঃ- ঘি অর্পণ করা হয় স্বাস্থ্য, জ্ঞান এবং সম্পদের শ্রীবৃদ্ধি যেন অন্যের উপকারে আসে এই আশায়।
মধুঃ- যাতে হৃদয় এবং জিহ্বা অন্যকে আঘাত না করে মিষ্টি ব্যবহার করে। মনযোগী হবার চেষ্টায় ও আত্মার ডাক অনুভব করার শক্তি পেতে অর্পণ করা হয় মধু।
চিনিঃ- শরীরের প্রতিটা কোষ যেন চিনির দানার মতো স্বচ্ছ হয়, তাতে যেন তিক্ততা না থাকে এই আশায় মহাদেবকে অর্পণ করা হয় চিনি।
(আমার বাল্যবন্ধু দেবু বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের ২য় সর্বোচ্চ পদে জব করে অবসরে গিয়েছে। ধর্ম বিশ্বাসে দেবু আস্তিক-নাস্তিকের মাঝামাঝি, ওর স্ত্রী কঠিন ধর্মানুরাগী ব্রাম্মণ। একমাত্র ছেলে পুরাই নাস্তিক। দেবু এবং ওর স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। ওদের শিক্ষাগত বিষয়টা উল্লেখ করার কারণ, দুজনেই আস্তিক এবং নাস্তিকতা দর্শনের যুক্তি দিয়ে তুলে ধরেছে। দেবতার ভোগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেবুর স্ত্রী)
১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: সত্যিই আপনার জানার ব্যপ্তি দীর্ঘ!
শিব; যাকে বলা হয় দেবাদিদেব মহাদেব, “দ্যা পাওয়ার অফ ডিস্ট্রাকশন”।
কিন্তু আসলে তিনি শুধু ধ্বংসের দেবতা নন- তিনি সৃষ্টিরও সূচনা।
জটা মাথায় গঙ্গার প্রবাহ, গলায় মহাবিষ, গায়ে বাঘের চামড়া, হাতে ত্রিশূল- সবই গভীর প্রতীকের ভাষা। তাঁর ধ্যানমগ্ন দৃষ্টি মানে- বিশৃঙ্খলার মাঝেও শান্তি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভুলো মনের এই শিবই আসলে ধ্যানের গুরু, আত্মজ্ঞান আর মুক্তির পথপ্রদর্শক- আদিযোগী।
ধ্বংস তাঁর কাছে শেষ নয়, বরং নতুন কিছুর জন্ম।
তিনি শেখান- কখনও কখনও কিছু ভাঙতে হয়, যেন আবার নতুন করে গড়া যায়।
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আমেরিকায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি তখন আন্ডারগ্র্যাড লেভেলে আমার কিছু লিবারেল আর্টস এর ক্লাস নিতে হয়েছিলো। অনেক ঘেঁটে-ঘুঁটে "সাউথ এশিয়ান রিলিজিয়ন" ক্লাস নিয়েছিলাম। একটা পেপার লিখতে হয়েছিলো সনাতন ধর্মের "ত্রিদেব" ধারনা নিয়ে। সেটা লিখতে গিয়েই "শিব" -এর প্রসঙ্গ চলে আসে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু এর ব্যাপারে বুঝতে সময় লাগে নি। তবে শিব-এর বিষয়ে লিখার জন্য যখন পড়তে শুরু করলাম, তখন মনে হচ্ছিলো আমিতো এর আগা-মাথা কিছুই বুঝলাম না। বিভিন্নজন বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে ব্যাখ্যা করছেন। যেহেতু এসব নিয়ে আগে কখনো পড়াশোনা করা হয় নি, সবই আউলা-ঝাউলা লাগতে শুরু করলো।
কাকতালীয়ভাবে সে সময়ই "দেবো কে দেব.. মহাদেব" সিরিয়াল চলছিলো। প্রথম থেকে দেখা শুরু করলাম, দেখতে দেখতে ৮২০টা এপিসোড-ই দেখা হলো। ততদিনে সেমিস্টার পেরিয়ে আন্ডারগ্র্যাডও শেষ পর্যায়ের দিকে। না, পেপার লিখতে সমস্যা হয় নি। আই ওয়াজ হুকড এট দ্যাট ক্যারেকটার। কখনো শ্মশানে, কখনো কৈলাসে, কখনো অঘোরিদের মাঝে, কখনো বিয়ে করতে যায় রাজ মহলে তো কখনো বীর ভদ্র-কে পাঠায় শ্বশুরে কল্লা নামাইতে। কখনো স্বাতীর জন্য বৈরাগ্য ধারন করে তো কখনো স্বয়ং বিষ্ণু-কে ত্রিশুল মারে। এ এক উথাল-পাতাল অব্স্থা। তবে সবকিছুরই ব্যাখ্যা আছে, শুধু জানতে হবে এই যা।
মহাদেব-কে পূজো করার সুর্নিদিষ্ট কোন নিয়ম আছে বলে আমি জানি না। তিনি সামান্য বেল পত্র অর্পণেও খুশি। তবে প্রজপতি দাক্ষ বরাবরই সবকিছু নিয়ম বদ্ধ করার কথা বলেও শিব তেমনটা কখনোই বলেন নি। শিবের সাথে পাঙ্গা নিয়ে বাপ হারালো মাথা আর ছেলে কল্লা, তদাপি এই বার-বাড়ন্ত আমার কাছে সঠিক মনে হয় না। শিব-এর ক্রোধ যেমন তেমনি অপার প্রেম ভক্তের জন্য, সন্তানের জন্য, প্রেয়সির জন্য। একজন প্রকৃত শিক্ষাগুরু, যোগী, ত্রিকালদর্শী, আদর্শ পিতা, স্বামী ও সর্বপোরি ত্রিদেব এর একজন। তিনি পশুপতিনাথ কিংবা ভোলেনাথ, অথবা গঙ্গাধার, শম্ভু, রুদ্র, হারা, ওঙ্কার, নীলকন্ঠ, মহাকাল, নটরাজ। শিবের এই বৈশিষ্ট্যগুলো আমার কাছে কখনো কখনো অতি-মানবীয় বলে মনে হয়। তার এই গুণাবলীর জন্যই তার প্রতি শ্রদ্ধা কাজ করে।
১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন!
আমি পাঁচ বছর ব্যাপী 'মহাভারত' ড্রামা সিরিজ দেখেছি এবং মহাভারত পড়েছি বন্ধু দেবুর কাছ থেকে নিয়ে। সত্যি বলতে- মহাভারত মানে মহা জ্ঞান ভাণ্ডার! আপনার সৌজন্যে আমি শিব নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে আমার মন্তব্য শেয়ার করছি-
সনাতন ধর্মে মহাদেবের স্থান অন্য সবার চেয়ে আলাদা। কারণ, তিনি কেবল দেব নন, তিনি এক দর্শন, এক জীবনবোধ। শিবকে পাওয়া যায় না বিলাসবহুল যজ্ঞে বা জটিল আচারে; তিনি থাকেন বেলপাতার সরলতায়, ধ্যানের নীরবতায়, আর ভক্তির নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়। শিবের কাছে ভক্তির মূল্য নিয়মের চেয়ে বড়- এটাই সনাতন ধর্মের প্রকৃত সৌন্দর্য।
তিনি ধ্বংসের দেবতা হলেও, সেই ধ্বংসই নতুন সৃষ্টির পথ উন্মুক্ত করে। তাই সনাতন বিশ্বাসীরা শিবকে ভয় নয়, ভালোবাসায় পূজা করে। কেউ বলে ভোলেনাথ, কেউ বলে মহাকাল, আবার কেউ বলে পশুপতিনাথ- সব নামই শেষমেষ মিলে যায় এক মহা চেতনায়।
সনাতন ধর্মের এই উদারতা, গ্রহণযোগ্যতা আর মুক্ত ভাবনার প্রতীকই শিব। যিনি শেখান- “ভক্তির অন্তরটাই আসল মন্দির, আর প্রেমই সর্বশ্রেষ্ঠ উপাসনা।”
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:২৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: জুল ভার্ন,
সনাতন ধর্মের দেবদেবীদের কোনটা যে কে তা আমার আজও মনে রাখা হয়ে উঠলোনা। কারন, তাদের এক একজনকে ডজনখানেক নামে বা উপাধিতে ডাকা হয় আর তাদের এক একজনের কাজও বৈপরীত্যে ভরা। তাই এদের সম্পর্কে পড়তে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছি সবসময়।
তবে সকল ধর্মই শান্তি আর সুন্দরের কথাই বলে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:০০
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
শিবকে বলা হয় দেবাদিদেব মহাদেব; "দ্যা পাওয়ার অফ ডিস্ট্রাকশন" । ছোট বেলায় বিভিন্ন হিন্দু সিরিয়াল গুলোতে বাঘের চামড়া পরিধান, গলায় সর্প, হাতে ত্রিশুল, জটা মাথার চুলের এই ফিগারটি বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হতো। ভুলো মনের শিবকে ধ্যানের গুরু বা আদিযোগী হিসেবে ও সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করা হয়। হিন্দু ধর্মে শিবের প্রতিকৃতি কে পুজো না করে লিঙ্গ রুপে আরাধনা করার পিছনে একটি গভীর কারন আছে।