নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতই ফালাসরে পাগল মরতে একদিন হইবই

তারা ভরা রাতের নিষাচর...

জুনজুন

নিতান্তই সরল দিন গুলো কেটে যায়..... শুধু বসে থাকা কিছু সপ্নকে মুঠো করে।

জুনজুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাস কাহন

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৯

আমাদের দেশের মন্ত্রী মিনিস্টাররা পাবলিক বাসে চড়েন না, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে জর্জ ব্যরিস্টারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজন খুব কমই বাসে চড়েন। শুধু চড়ি আমরা- আম জনতা আরকি। তাই পাবলিক বাসে এসি নাই...... শিতের দিনে ফাকা গ্লাস দিয়ে সুশীতল হাওয়া আর গরমের দিনে দুর্বিনীত গরম আপনাকে নিয়ত অভর্থনা জানাতে কার্পণ্য করবে না। তবুও আমাদের এই বাসেই বাশ খেয়ে যেতে হয়। যতই উন্নয়নের বুলি কপচাক পাবলিক বাস গুলো এমনই থাকবে। প্রথম যখন ঢাকা এসেছিলাম তখন ২০০৫/৬ হবে। চাকরির খোজে নিতান্ত বেকার যুবক......... সবাই দেখা হলেই জিগায় কিরে কোথাও হোল নাকি? মুখ পাংশা করে না বোধক সিগন্যাল দেই, না হয়নি। তখন ঢাকা জুড়েই সব ছোট মোট টেম্পুর জয়গান। অগুলোতে চড়েই চাকরির পিছে পিছে ছুটি, বড় ভাই পরিচিত জন দেখলেই ‘মা কয়টা খয়রাত দে না’ টাইপের আশা নিয়ে চাকরি খুজি। তারাও বেশ আশাবাদি সেজে কিছু উপদেশ ছুড়ে দেন—এটা কর সেটা কর, কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমন দিনে দু একটা টিউশনি আর বাবার পাঠান হাত খরচই ভরসা। সেই ধানমণ্ডি থেকে রামপুরা বাসে চড়ে আসতে আসতে রিতিমত কাবাব হয়ে যাবার যোগাড়, তবুও টিউশানি ছাড়া কি যায়। তবে ভিড়ে ভরপুর বাসে চলতে চলতে মোটামুটি গালির একটা লাইন মুখস্ত হয়ে গেল...... জোয়ান বয়স তাই লোক লজ্জার বাছবিচার না করে যে কোন জায়গায় চলিয়ে দিতাম ভাঙ্গা রেকর্ড। শিখেছিলাম আমারই এক বন্ধুর কাছে, কুত্তার...... দিয়ে শুরু হয়ে ছু...... পুত দিয়ে শেষ, সে বেশ দুলে দুলে রাইমস অব গালাগালি তথা গালির ছড়া পাঠ করত।অবশ্য লোকজন আমার লাল ঠোটের উৎগিরিত এইসব কাল অখাদ্য গালাগালি শুনে নিশ্চয় মনে মনে আফসুস করত এই বয়সেই পোলাটা গেল বখে। তবে বাস ওয়ালারা সর্বং সহা এত গালিতে কিছুই হত না। সে সময়ে ছয় নম্বর বাসে দুই দরজা ছিল টাকা পয়সা টান থাকলে পিছন দরজা দিয়ে কাট মারা যেত, এখন অবশ্য এক উইনার বাদে সব পাবলিক বাসের এই দুই নম্বর দরজার লিক বন্দধ করে দিছে। তখন অবশ্য বিনপি সরকারের প্রথম দিকে দাইউ কোম্পানি থেকে বেশ কিছু পাবলিক দোতলা বাস ছড়ছিল প্রিন্ট করা টিকেটও ছিল। আমার একটা চাকরি ছিল শাহবাগের মোড়ে, মহাখালি থেকে সেই বাসগুলোতে উঠলে খুব আরামে পৌঁছে যাওয়া যেত, আমি প্রায়ই দোতলার ড্রাইভিং সিটে বসে যেতাম। মহাখালীর মেসে যখন থাকতে থাকতে প্রায়ই নিরাশা বাদি হয়ে উঠছি তখনই আরেকটা চাকরি হয়ে গেল, সেই সাথে বুয়েটের ভর্তি হয়ে থাকা মাস্টার্স এর কল্যাণে বুয়েটে শহীদ স্ম্বতি হলে একটা ছিটও জুটে গেল কোন ভাল কাজের কল্যাণে কি জানি। হলের ডাইনিং এ খাওয়া মেসের মত সপ্তাহান্তে বাজার সদায় করার ঝামেলা নেই, আমার মনে হল স্বর্গে আছি। তবে চাকরির ক্ষেত্রটা হোল উত্তরা...সেই বুয়েট থেকে কাক ডাকা ভোরে উঠি লোকাল বাসে নাম তার পিংক সিটি। পিংক কালারের বাসের একটা সিট বেছে নিয়ে মোটামুটি ঘুম দিয়ে উঠি দেখি উত্তরা এসে গেছি। যাওয়ার সময় পান্থপথে আর বিজয় স্মরণীতে বাসের জামে কাবাব হতে হতে সেই আগের গালিগুলা মনে পড়ে কিন্তু চাকরির ফিটফাট ড্রেসে আরা মুখ খারাপ করতে মন চায় না। আর মুখ খারাপ করলেই কি জ্যাম ক্লিয়ার হবে তা ত না, তাই খালি হাত ঘড়ি দেখতে থাকি বারে বারে, রাত ৯ টা পার হলে আবার ডাইনিং এর খাবার মিস বাইরে রুতি পরাটা দিয়ে নাস্তা কর। দশ বছর পর আবার পোস্টিং উত্তরায়, আগের অফিস ছিল বাড্ডা, তাই বাসাও বাড্ডার কাছে। হেটে যেতাম অফিসে তাই পাবলিক বাসের সংস্পর্শে আসাঁ লাগেনি অনেক দিন। পোস্টিংএর পর পাবলিক বাসে উঠতে বুঝলাম সেই আগের দিনই রয়ে গেছে, লক্কড় ঝক্কর মার্কা বাসই ভরসা। সুপ্রভাত বাসগুলো অতি সুপ্রভাতে ছাড়লেও আমার বাসার সামনে পৌছুতে পৌছুতে প্রভাত পেরিয়ে যায় যায়...... “উত্তপ্ত উনুন” বুঝতে হলে, বাসগুলর ভিতর একবার ঢু মারতে হবে। অফিসগামী যাত্রী আর বাস ড্রাইভার হেল্পারদের রোজকার খিস্তিখিওর মিশ্রিত বচসা বেশ উপভোগ্যও বটে। বাস ড্রাইভার হেল্পারদের ইচ্ছে বাসের ভিতর এক চুল জায়গাও ফাকা না থাকুক। আর তার সাথে যোগ হয় প্রতিযোগিতা...... “দি গ্রেট তুরাগ” আর “ছালছাবিলের” ছাল চামড়া উঠা বাসগুলো খিলখেত মোড়ে কিলাকিলি (ঠুকাঠুকি) করে ভাঙ্গা বডির শক্তি পরীক্ষা করে যেনো। আফিসের কাছে আসলে বাস থেকে রোজ ছিটকে পড়তে হয়, ‘নামা’ শব্দটা বললে ভুল বলা হবে যে।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৮

রাজ বিদ বলেছেন: ii

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫০

রাজ বিদ বলেছেন: এটাতে কয় চুল খালি আছে দেখুন তো B-)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২২

জুনজুন বলেছেন: হা হা হা

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: পুরাই তেজপাতা লাইফ!
কী আছে গিবনে!

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৪

জুনজুন বলেছেন: গিবনে রুতি পরাটা আছে ভাই

৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: কঠিন সংগ্রামের কথা লিখেছেন। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই হয়ত এই পরিস্থিতির সাথে পরিচিত নয়। আপনার অভিজ্ঞতার কথা শুনলাম, ভালো লেগেছে।

আমি দেখেছি রাজধানী ঢাকায় তার নাগরিকদের জন্য কোন ভালো বাস সার্ভিস নেই। অবশ্য জনসংখ্যার ভাড়ে বিপর্যস্ত একটি শহর আর কি বা সেবা দিবে। তাও আমার মনে হয়েছে রাজধানীর সব রুটে পর্যাপ্ত বাস সুবিধা নেই। ঢাকা শহরের সেরা বাস সুবিধা বর্তমানে চালু আছে মিরপুর এলাকায়। বাড্ডা, রামপুরা, ধানমন্ডি এই সব অঞ্চল থেকে ভালো বাস সার্ভিস নেই। ফলে আমাদের মত সাধারন মানুষদের কথা বাদ দেন, কর্মজীবি নারীরা কি ভয়াবহ কষ্টই না তারা করেন। অমানবিক, সত্যি অমানবিক।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৬

জুনজুন বলেছেন: আমি আনেক রাতে আফিস ফিরত যেতে দেখেছি বাসে উঠার জন্য কর্মজীবি নারীরা কি ভয়াবহ কষ্টই না করেন। সত্যি অমানবিক...

৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুনজুন ,





অতি বাস্তবতার কথন ।
ঢাকা মহানগরীর (?) পরিবহন খাতের এই হলো লেটেষ্ট ষ্ট্যাটাস ।

তবুও এই চিড়ে চ্যাপ্টা হওয়ার মাঝেও অন্য ধরনের মজা আছে । আম-জনতার সাথে দুধের মতো মিশে যেতে পারা যায় । জীবনকে চেনা যায় কাছ থেকে । বোঝা যায় সাধারন মানুষের চিন্তা-ভাবনা-চেতনার দৌঁড় ।
একবার ভাবুন তো, সেই মেয়েটির মুখ , সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছে বাসের প্রতীক্ষায় । অফিসের সময় বয়ে যায় । বাসে ওঠা হয়না ।
সেই শিশুর চোখ-মুখখানি ভাবুন , বাবার হাত ধরে আছে বাসে উঠবে বলে । তার স্বপ্নের বাসে ওঠা হয়না । বাবার ঠেলাঠেলিতে কোনও রকম বাসে উঠলেও তার শিশু মনে গুতোগুতির যে ছবি আঁকা হয়ে যায় জনমের তরে , সেখান থেকে তার মুক্তি মিলবে কি ? এ সমাজকে সে দেখবে কি চোখে ? এ সমাজের মানুষকে সে আপন ভাববে কি করে ?????

এটা শুধুই বাস কাহন নয় , জীবন কাহন ও বটে .............

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৭

জুনজুন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আমার জীবনেরই কিছু গল্প আরকি!

৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: তারপরও আমাদের পাবলিক বাসেই উঠতে হবে

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৮

জুনজুন বলেছেন: পাবলিক বাসই ভরসা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.