নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মায়াবতী বেঁচে থাকবে আমার গল্পে, গল্পেই তার জন্ম, গল্পেই তার অস্তিত্ব আর আমার অস্তিত্ব মায়াবতীর কল্পনায়...... অসাধারন কল্পনা থেকে বাস্তবতায় সাধারন বেশে হেঁটে হেঁটে পৃথিবীর ধূলিকণা খাই...

কাব্যপ্রেমী রিফাত

হিমু মত এলোমেলো পথে জোছনায় ময়ুরাক্ষীর পাড়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা, ধীরে নদীর পানি গ্রাস করতে থাকে আমাকে .....। ফেসবুকে আমিঃ https://www.facebook.com/hiimmuu

কাব্যপ্রেমী রিফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমাপ্তি

২২ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:১৭

"রিহান সাহেব ভালো আছেন ? দেশে আসলেন কবে ?"



মেয়েটার কন্ঠে রিহানের হাত থেকে আধখাওয়া সিগারেট পড়ে যায় । সে ভুল শোনেনি । পিছনে ঘুরতে সাহস হয় না।



হ্যা , মেয়েটা পিংকি । রিহানের পিংকি !!!



এবার মেয়েটি সামনে এসে সিগারেটের ধোঁয়া ও আগুন জুতো দিয়ে পিষে ফেলে ।



এরপর চুল ঠিক করে বলেঃ

- চলুন কোথাও বসি ।

: কি দরকার , পিংকি ?

- আছে তো দরকার ? আপনার স্ত্রী কোথায় ?

: নেই ।

- আমার মত তাকেও ছেড়ে গেছেন ।

: আমি ছেড়ে যেতে যাবো ক্যান ?

- তো পালিয়ে বেড়ান ক্যান । আর আমাকে আপনি করে বলুন ।

: আপনি !

- বিয়ে করেছো প্রচার করেছো কিন্তু করোনি । কাহিনী কি ? দেবদাস দ্বিতীয় পত্র লিখবে ?



খানিকবাদে একটা ছোট মেয়ে দৌড়ে আসে।

এসে পিংকিকে জড়িয়ে বলেঃ

"আম্মু চল যাই ।"



পিংকি বলেঃ

আচ্ছা থাকো ।

বাড়ি যাবে কবে ? বিদেশে গিয়ে বাড়িতে খোঁজ নিতে হয় ।

: মেয়ের নাম কি ?

- অপ্সরী ।

: সেই নামটাই ক্যানো ?

- আমার মেয়ে তাই ।

: বিয়েও করে ফেলেছো ?

- হ্যাঁ ।

: আচ্ছা তাহলে যাই ।

- বাড়ি যাবে কবে ?

: বাবা মাকে ফোন দিয়ে আগে ক্ষমা চাইতে হবে ।



পিংকি অপ্সরীকে নিয়ে চলে যায় ।



রিহান পকেট থেকে সিগারেট আর লাইটার বের করে কিন্তু ধরাতে পারে না । চুপ করে বসে থাকতেই চলে যায় অতীতে ,



পিংকির সাথে ফুসকা খাওয়া বা রাতে একসাথে মুভি বা হাত ধরে বসে থাকার মুহূর্ত মনে করতেই চোখ ঝাপসা হয় ।



মেয়েটা খুব ভালোবাসতো । অনেকটা জোর করেই রিহান ফিজিক্যাল রিলেশান করে । বলে মাস কয়েক পর বিয়ে করবে । অথচ আগেই ঠিক করে রাখে বিদেশে যাবে । অন্য এক বড় লোকের মেয়ের সাথে ।



তারপর ?

বিদেশ গিয়ে লিভ টুগেদার করতে বাধ্য হয় । অন্য মেয়েটি সবার সাথেই অন্তরঙ্গ হতে চায় ।



অথচ পিংকি জানায় সে প্রেগন্যান্ট । তবু রিহান বিশ্বাস করেনি ।।



বাবা মা ও বলেছিলোঃ পিংকিকে বিয়ে করতে কিন্তু সে শোনেনি ।



সেদিন থেকে যোগাযোগ বন্ধ ।



রাতে খাবার পর বাবার নাম্বারটা ডায়াল করে । একটা পিচ্চি মেয়ে ফোন ধরে বলেঃ

: কে ? Who are you ?

- রিহান ।

: দাদুর সাথে কথা বলতে চাইছেন ?

- হ্যাঁ ।

: আচ্ছা ।

- তোমার নাম ।

: অপরিচিত দের নাম বলতে মানা ।



বলে সরে যায় মেয়েটি । রিহানের মনে হতে থাকে মেয়েটি তার চেনা । খুব পরিচিত স্বর । পিংকি ?



- হ্যালো ।

বাবার রাশভারী কন্ঠে বাস্তবে ফিরে আসে ।

: বাবা ?

- কি খবর ? বাড়ি আসবি কখন ?

: তুমি রাগ করো নাই ?

- না ।

: ক্যান ?

- আসলেই বুঝবি ।

: আসছি বাবা ।

- আচ্ছা আয় ।



খানিকবাদে বাবা আবার বলেঃ

তুই দুদিন পর আয় ।



বলে ফোন রেখে দেয় ।



আজ সেই দিন ।

রিহান এসেছে ।

কিন্তু

পুরনো বাড়িটাতে আজ উত্‍সব ।



ঠিক কি কারণে তা কেউ বলছে না । কি কাহিনী ধরতে পারছে না । বরং সবাই তাকে দেখে হাসছে ।



খানিক আগে একমাত্র ছোট বোন এসে একটা ব্যাগ দিয়ে গেছে ।

ব্যাগে বিয়ের পোশাক ।



মা আসলেন । জড়িয়ে কেঁদে বললোঃ

এবার বিয়েটা করে ফেল ।

তোর বাবার অনেক ইচ্ছে ।



প্রথমে রাজী না হলেও পরে রাজি হয় রিহান।

বসে থাকতে থাকতেই পিংকির বান্ধবীকে ফোন দেয় ।

পিংকির বিয়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই বলেঃ পিংকি কাউকে বিয়ে করেনি ।



বিয়ে শুরু হতেই রিহান উঠে দাঁড়ায় । বলে বিয়ে করবো না । বলে দাঁড়াতেই সামনে এসে অপ্সরী দাঁড়ায় ।

বলেঃ তুমি আমার বাবা হবে না ?



নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে না । কি ভেবে বসে পড়ে । তার মাথা এলোমেলো লাগে । বিভ্রম লাগে ।



বাসরঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ না করেই এগিয়ে যায় মেয়েটির দিকে ।



গিয়ে এক ঝটকায় ঘোমটা খুলে দেয় । ঘোমটা খুলে দিতেই চোখ বড় হয়ে যায় তার ।



চিত্‍কার করে বলেঃ

পিংকি , তুই ?

: চুপ ।

- ক্যান ?

: বাবা শুনবে । শব্দে বাবা ঘুমাতে পারে না ।

- এত বছর এখানেই ছিলি ?

: আপনি করে বলো !

- WHY ME ?

: BECAUSE I LOVE YOU



ইতস্তত করে রিহান । পেছন থেকে অপ্সরী চিত্‍কার করে বলেঃ

I LOVE YOU TOO MA.



রিহান বুকে জড়িয়ে নেয় মেয়েটিকে ।



বাবা এসে একটা থাপ্পর দিয়ে বলেঃ

নালায়েক , এত ভালো একটা মেয়েকে ছেড়ে গেছিস । এত বছর সে তোর অভাব বুঝতে দেয়নি । কিন্তু তোর অভাব দাগ কেটেছিলো । আমি ভেবেছিলাম তুই আর আসবি না । ও বলেছিলো আসবি ।



অনেক রাগ অভিমান শেষ হয় ভালোবাসার অশ্রুতে ।



এবার দরজা লাগিয়ে দেখে পিংকি ঘোমটা দিয়েছে । পাশে গিয়ে বসতেই মেয়ে বলেঃ

তুমি এখানে ক্যান ? আমি ঘুমবো মায়ের সাথে ।



-আচ্ছা ।

বলে রিহান বাইরে যায় ।



ফিরে আসে ঘন্টাখানেক পরে ।

: সিগারেট ছাড়তে পারো নি ।

- না । তবে আজ থেকে বন্ধ । অন্তত মেয়েটার জন্য ।

: আমার জন্য ।

- ক্ষমা করে দিয়েছো আমায় । তোমায় দেয়ার কি আছে আমার?

: আছে তো !



রিহানের হাতে ঝলমল করতে থাকে একটা পায়েল আর কাঁচের চুঁড়ি ।

পায়েল পড়িয়ে দিতে গিয়েই এক ফোঁটা চোখের জল পরে পিংকির পায়ে । পিংকির হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে রিহান বলে আমায় ক্ষমা করে দাও ।



কাঁদতে কাঁদতে পিংকি বলেঃ

ক্যান পায়েল বাঁধতেই কেঁদে ফেললে ।

- প্লিজ আমার ভুল হয়েছে । তোমাকে ছেড়ে যেতে ...



রিহানের ঠোঁটে আঙুল ছুইয়ে চুপ করিয়ে দেয় পিংকি । বলেঃ

আজকের এই রাতে অতীতের কথা থাকুক । অন্য একদিন খুব করে পিটানি দিবো ।

এখন একটু জড়িয়ে ধরে দেখো তো আগের মতই আছি নাকি মোটু হয়েছি ।



রিহান আস্তে করে জড়িয়ে ধরে । অনুভব করে মেয়েটার চোখের জল থামছে না । বুকের মাঝে কত লুকোনো কষ্ট । মেয়েটা শক্ত করে ধরে রাখে ।

রিহান বলেঃ I love you too.





লিখাঃ কাব্যপ্রেমী রিফাত ।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.