নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোর আকাশেই উড়ি, তোর আকশেই থাকি তোর আকাশেই এলোমেলো ,আমার সমস্ত পথচলা _

কবীর অন্তর

অভাবের মতোই তুমি সত্য আমার সমস্ত ভুবন জুড়ে...

কবীর অন্তর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি আবুল হাসান’র প্রিয় কিছু কবিতা

১৮ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:০৪

আকাঙ্খা – আবুল হাসান



তুমি কি আমার আকাশ হবে?

মেঘ হয়ে যাকে সাজাব

আমার মনের মত করে ।

তুমি কি আমার নদী হবে?

যার নিবিড় আলিঙ্গনে ধন্য হয়ে

তরী বেশে ভেসে যাব কোন অজানা গন্তব্যের পথে ।

তুমি কি আমার জোছনা হবে?

যার মায়াজালে বিভোর হয়ে

নিজেকে সঁপে দেব সকল বাস্তবতা ভুলে ।

তুমি কি আমার কবর হবে?

যেখানে শান্তির শীতল বাতাসে

বয়ে যাবে আমার চিরনিদ্রার অফুরন্ত প্রহর ।

..................................................................



একলা বাতাস – আবুল হাসান



নোখের ভিতর নষ্ট ময়লা,

চোখের ভিতর প্রেম,

চুলের কাছে ফেরার বাতাস

দেখেই শুধালেম,

এখন তুমি কোথায় যাবে?

কোন আঘাটার জল ঘোলাবে?

কোন আগুনের স্পর্শ নেবে

রক্তে কি প্রব্লেম?

হঠাৎ তাহার ছায়ায় আমি যেদিকে তাকালেম

তাহার শরীর মাড়িয়ে দিয়ে

দিগন্তে দুইচক্ষু নিয়ে

আমার দিকে তাকিয়ে আমি আমাকে শুধালেম

এখন তুমি কোথায় যাবে?

কোন আঘাটার জল ঘোলাবে?

কোন আগুনের স্পর্শ নেবে

রক্তে কি প্রব্লেম?

---------------------------------------------



বদলে যাও, কিছুটা বদলাও – আবুল হাসান



কিছুটা বদলাতে হবে বাঁশী

কিছুটা বদলাতে হবে সুর

সাতটি ছিদ্রের সূর্য; সময়ের গাঢ় অন্তঃপুর

কিছুটা বদলাতে হবে

মাটির কনুই , ভাঁজ

রক্তমাখা দুঃখের সমাজ কিছুটা বদলাতে হবে…

বদলে দাও, তুমি বদলাও

নইলে এক্ষুনি

ঢুকে পড়বে পাঁচজন বদমাশ খুনী ,

যখোন যেখানে পাবে

মেরে রেখে যাবে,

তোমার সংসার, বাঁশী, আঘাটার নাও ।

বদলে যাও, বদলে যাও, কিছুটা বদলাও !



........................................................



পাখি হয়ে যায় প্রাণ – আবুল হাসান



অবশেষে জেনেছি মানুষ একা !

জেনেছি মানুষ তার চিবুকের কাছেও ভীষণ অচেনা ও একা !

দৃশ্যের বিপরীত সে পারে না একাত্ম হতে এই পৃথিবীর সাথে কোনোদিন।

ফাতিমা ফুফুর প্রভাতকালীন কোরানের

মর্মায়িত গানের স্মরণে তাই কেন যেনো আমি

চলে যাই আজো সেই বর্নির বাওড়ের বৈকালিক ভ্রমণের পথে,

যেখানে নদীর ভরা কান্না শোনা যেত মাঝে মাঝে

জনপদবালাদের স্ফুরিত সিনানের অন্তর্লীন শব্দে মেদুর !

মনে পড়ে সরজু দিদির কপালের লক্ষ্মী চাঁদ তারা

নরম যুঁইয়ের গন্ধ মেলার মতো চোখের মাথুর ভাষা আর

হরিকীর্তনের নদীভূত বোল !

বড় ভাই আসতেন মাঝরাতে মহকুমা শহরের যাত্রা গান শুনে,

সাইকেল বেজে উঠতো ফেলে আসা শব্দে যখোন,

নিদ্রার নেশায় উবু হয়ে শুনতাম, যেনো শব্দে কান পেতে রেখে :

কেউ বলে যাচ্ছে যেনো,

বাবলু তোমার নীল চোখের ভিতর এক সামুদ্রিক ঝড় কেন ?

পিঠে অই সারসের মতো কী বেঁধে রেখেছো ?

আসতেন পাখি শিকারের সূক্ষ্ম চোখ নিয়ে দুলাভাই !

ছোটবোন ঘরে বসে কেন যেনো তখন কেমন

পানের পাতার মতো নমনীয় হতো ক্রমে ক্রমে !

আর অন্ধ লোকটাও সন্ধ্যায়, পাখিহীন দৃশ্য চোখে ভরে !

দীঘিতে ভাসতো ঘনমেঘ, জল নিতে এসে

মেঘ হয়ে যেতো লীলা বৌদি সেই গোধূলি বেলায়,

পাতা ঝরবার মতো শব্দ হতো জলে, ভাবতুম

এমন দিনে কি ওরে বলা যায়- ?

স্মরণপ্রদেশ থেকে এক একটি নিবাস উঠে গেছে

সরজু দিদিরা ঐ বাংলায়, বড়ভাই নিরুদ্দিষ্ট,

সাইকেলের ঘণ্টাধ্বনি সাথে কোরে নিয়ে গেছে গাঁয়ের হালট !

একে একে নদীর ধারার মতো তার বহুদূরে গত !

বদলপ্রয়াসী এই জীবনের জোয়ারে কেবল অন্তঃশীল একটি দ্বীপের মতো

সবার গোচরহীন আছি আজো সুদূর সন্ধানী !

দূরে বসে প্রবাহের অন্তর্গত আমি, তাই নিজেরই অচেনা নিজে

কেবল দিব্যতাদুষ্ট শোনিতের ভারা ভারা স্বপ্ন বোঝাই মাঠে দেখি,

সেখানেও বসে আছে বৃক্ষের মতোন একা একজন লোক,

যাকে ঘিরে বিশজন দেবদূত গাইছে কেবলি

শতজীবনের শত কুহেলী ও কুয়াশার গান !

পাখি হয়ে যায় এ প্রাণ ঐ কুহেলী মাঠের প্রান্তরে হে দেবদূত !

.......................................................................................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.