নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোবির

নিজের বাপারে কিই বা লেখার আছে।

কোবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিয়া ও সুন্নীর দ্বন্দের শুরু যেভাবে

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৭

মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গীদের উত্থান, সাফল্য ও জঙ্গীদের নির্মমতা বিশেষ করে শিয়া মুসলিমদের নির্বিচারে গণহত্যা আলোচিত এখন সারা বিশ্ব মিডিয়ায়। তাই হট টপিক হিসাবে স্পিরিচ্যুয়ালিটির দিক দিয়ে এই ইস্যুর মূল পর্ব -পিছনের ইতিহাসে যেতে হল। ইসলামে শিয়া-সুন্নী/ওহাবী দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। অন্তত আমার কাছে এই দ্বন্দ্ব আরবের গোত্রীয়গত বিভেদ -যেখানে দুই গোত্র বনু হাশেম ও বনু উমাইয়ার ক্ষমতার লড়াই। হযরত মুহাম্মদ (সা) এর জন্মেরও পূর্ব থেকে এই দ্বন্দ্ব চলে আসতেছে বংশ থেকে বংশানুক্রমে। তখন ছিল মক্কার দুই প্রধান গোত্র বনু হাশিম ও বনু উমাইয়াদের দ্বন্দ্ব। বনু হাশিম থেকে নবী মোহাম্মদের জন্ম হওয়ার কারণে বনু উমাইয়ারা নিজেদের শক্তি, প্রভাব প্রতিপত্তি, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা হারানো ভয়ে নবী মোহাম্মদ (সা) এর নেতৃত্ব মেনে নিতে অস্বীকার করে।সেই সূত্রে নবী পরিবারকে প্রায় তিন বছরের মত মক্কায় অবরোধ ও অবশেষে মোহাম্মদের (সা) মদিনায় গমন । তারপরেও মক্কার শীর্ষস্থীনীয় উমাইয়ারা থেমে থাকেনি। মোহাম্মদের নেতৃত্বে বনু হাশিমের বিপ্লবের ভয়ে ভীত হয়ে তারা বদর, উহুদ, খন্দক নামে বিভিন্ন অভিযান চালায় মদিনায়। অবশেষে মোহাম্মদের নেতৃত্বে বনু হাশিমের মক্কা জয় অতঃপর ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় বনু উমাইয়াদের দলে দলে ইসলাম গ্রহন।অবশ্য তার আগেই বিশেষ করে হুদাই বিয়া সন্ধির পরপরই অনেক উমাইয়া ক্ষমতার পালা বদল বুঝতে পেরেই ইসলাম গ্রহন করেছিল। আর মক্কা জয়ের পর মোহাম্মদ ও বনু হাশিমের শত্রুদের নেতার নেতা আবু সুফিয়ান ও তার পুত্র মোয়াবিয়া,আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাও ইসলাম গ্রহন করে! বনু হাশিম ও বনু উমাইয়াদের দ্বন্দ্ব কিরুপ ছিল তা বুঝতে হলে এই উদাহরণটিই যথেষ্ট যে উহুদ যুদ্ধে নবী মোহাম্মদের চাচা আমীর হামজার লাশ কেটে কুটে কলিজা বের করে চিবিয়ে খেয়েছিল আবু সুফিয়ানের স্ত্রী ও মুয়াবিয়ার মাতা হিন্দা !

বনু হাশিম ও বনু উমাইয়াদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নবী মোহাম্মদের মৃত্যুর পরপরই নতুন মাত্রা পায়। নবুওয়াত গেলেও রাজনৈতিক নেতৃত্ব যাতে বনু হাশিমের কাছে যেতে না পারে মোহাম্মদের মৃত্যুর পরপরই তার লাশের দাফন কাফন নয় বরং একটানা তিন দিন ধরে বনু সকিফাতে শলাপরামর্শ করে অবশেষে ওমর বিন খাত্তাবের জোর জবরদস্তি মূলক প্রস্তাবে খলিফা হন আবু বকর ! তখন ওমর বলেছিলেন, যে এই নির্দেশ না মানবে তাকে কতল করা হবে !! যাইহোক, প্রথম তিন খলিফার আমলে উমাইয়ারা প্রশাসনের সর্বত্র জায়গা দখল করে ! ওমর ও ওসমানের সময় প্রশাসনের এমন কোনো ক্ষেত্র ছিল না যেখানে উমাইয়াদের বিচরণ ছিল না ! ওসমান নিহত হওয়ার মদিনাবাসী আলীকে খলিফা নির্বাচিত করল ও নির্বাচিত খলিফা আলী দুর্নীতিপরায়ন উমাইয়া গভর্ণরদের বরখাস্ত করলেন, কিন্তু সব গভর্ণর মেনে নিলেও মুয়াবিয়া খলিফা আলীর নির্দেশ মানলেন না ! সিরিয়ার গভর্ণর মুয়াবিয়া সেই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে নিজেকে পাল্টা খলিফা ঘোষণা করলেন ! এরপরের ইতিহাস সবার জানা ! কারবালার করুণ বিষাদময় কাহিনীও সবার জানা ! এরপর উমাইয়ারা যখন রাজতন্ত্র কায়েম করল তখন থেকেই তারা নবী বংশকে নির্বংশ করা শুরু করল ! সেই যে শুরু সেই নবী বংশের অনুসারী শিয়াদেরকে এখনও হত্যা করেই যাচ্ছে উগ্র সুন্নীরা !!! শুরু হয়েছিল আলীকে দিয়ে ! এরপর হাসান, হুসেইনসহ বাদ বাকি সবাইকে। আর এখনও সেই ধারা বর্তমান শিয়া সুন্নী নামে।তবে ক্ষমতার লড়াইয়ে এই শিয়া-সুন্নী বিভাজন শা্সকদের মধ্যে যতটুকু ছিল আপামর জনগণের মধ্যে ততটুকু ছিল না , কিন্তু জনগণের মধ্যে এই বিভাজনের তাত্ত্বিক রুপ দিয়ে এর প্রবল বিকাশ ঘটান সালাফি মতবাদের প্রবক্তা ইবনে তাইয়েমা ! তারই সুযোগ্য অনুসারী আব্দুল ওহাব এই মতবাদকে ব্রিটিশ ও ইবনে সৌদের সহযোগিতায় রাস্ট্রীয় মযার্দা দেন। কোনো মতবাদ রাস্ট্রীয় আনুকল্য ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তা দ্রুত বিস্তার লাভ করে-আজকের খ্রিস্টান, ইসলাম ও বৌদ্ধ ধর্মই তার বাস্তব প্রমান ! মুসলমানরা যেহেতু উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা জয় করতে পারেনি বা যায়নি তাই উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাস্ট্র নেই তেমনি বৌদ্ধরা এশিয়ার বাইরে কোনো দেশ জয় করেনি বলেই এশিয়ার বাইরে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ রাস্ট্র নেই !



যাইহোক, সৌদি পেট্রো ডলারের কল্যানে ঐ ওহাবি মতবাদ এখন দ্রুতগতিতে সমগ্র মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রবলভাবে বিস্তার লাভ করেছে ! সমগ্র মুসলিম বিশ্বে জঙ্গী উত্থানের মূল রহস্য এখানেই। এই ওহাবিরা আরবে অবস্থিত ইসলামের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য ও স্থাপনাগুলোকে বুলডোজার দিয়ে নিয়মিতই ধ্বংস করতেছে ! ঐ যে ক্ষমতার লড়াইয়ের দ্বন্দ্ব বনু হাশিম ও বনু উমাইয়া-শাসকেরা গত হলেও তাদের অনুসারী শিয়া সুন্নী বিভাজন তারা রেখে গেছেন। বনু উমাইয়া শাসকেরা যেমন বনু হাশেমীয়দের মধ্যে যারা ক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বি তাদের হত্যা করেছে তেমনি উগ্র সুন্নীরা মানে ওহাবিরা বনু হাশেমীয়দের অনুসারী শিয়াদের হত্যা করতেছে !!! এই দ্বন্দ্বের অপর পৃষ্ঠে শিয়া-সুন্নীর আড়ালে আমরা ইরান-সৌদির দ্বন্দ্বই দেখতে পাব। বনু হাশেমীয় মোহাম্মদ (সা) যেমন মক্কা জয়ের পর কাবা ঘর পুনর্দখল করেছেন ও শিরকের কারণে কাবা ঘর থেকে উমাইয়াদের রক্ষিত সকল দেব-দেবির মুর্তি অপসারণ করেছেন তেমনি সেই বনু উমাইয়াদের অনুসারী ওহাবি/সালাফিরা সেই শিরকের নামে পাথর পুজা নির্মূলের নামে পুনরায় কাবা ঘর দখল ও ধ্বংসের হুমকি দিয়েছে !!!

- সংগৃহীত

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩

মদন বলেছেন: শিয়ারা হইলো প্রকৃত মুসলমান? এবং সুন্নীরা তাদের চক্রান্ত করে মেরে ফেলছে?

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:১২

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: ও, এই তাহলে ইতিহাস! তবে শিয়া-সুন্নী বিষয়টা নিয়ে একটু খটকা লাগছে। ঠিক লিখেছেন তো?

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৭:৫৩

কোবির বলেছেন: সুন্নীরা হলো ইয়াজিদের অনুসারী আর শিয়ারা আলীর।
আমি ছোটবেলা থেকে সবাইকে ইয়াজিদকে বকা দিতে শুনেছি। একদিন জেনেছি সুন্নীরা হলো ইয়াজিদের অনুসারী। ক্যামনে কি?

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:২৫

জাহাঙ্গীর জান বলেছেন: আপনার কাহিনি সত্য নয় আপনি গোমরাহ হয়েছেন । মোহাম্মদ (সাঃ) মৃত্যুর আগেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন খেলাফতের দায়িত্ববার ওমর(রাঃ) পরিচালনা করবেন, মোহাম্মদ (সাঃ) নিরপেক্ষ এবং পরিবার তন্ত্র থেকে বিশ্ব মুসলমানদের মুক্তি দিয়েছেন উনি বুঝতে পেরেছেন আমার মৃত্যুর পর আমার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে তাই খেলাফতের দায়িত্ব সাইয়েদনা আলী(রাঃ)আনহুকে দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা । শিয়াদের একটাই যুক্তি খাদিজা (রাঃ) "আল্লাহ"তালা আনহু ইচ্ছা কৃত ভাবে আলীকে খেলাফত দেওয়া থেকে বিরত রেখেছেন,।

৪| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৩৫

রাজিব বলেছেন: "সুন্নীরা হলো ইয়াজিদের অনুসারী" একথা বাংলাদেশের সুন্নিদের ক্ষেত্রে মোটেও প্রযোজ্য নয়। বাংলাদেশে আমি কাউকেই কখনো ইয়াজিদের প্রশংসা করতে শুনিনি। আপনি কাজী নজরুলের মোহররম কবিতাটি পড়ে দেখতে পারেন। নজরুল কিন্তু শিয়া ছিলেন না। তাছারা আমরা ইমাম হোসেনকে অনেক শ্রদ্ধা করি এমনকি তাকে ইমাম হোসেন বলে সম্বোধন করি শুধু হোসেন বলে নয়। বাংলাদেশে মুসলমানদের মধ্যে হাসান, হোসেন, আলী, ফাতেমা, খাদিজা খুবই জনপ্রিয়।
১০ মোহাররম বা আশুরার দিনে হোসনি দালান থেকে যে তাজিয়া মিছিল বের হয় তাতে শিয়াদের পাশাপাশি অনেক সুন্নি ও এমনকি অনেক হিন্দুও থাকে।
শিয়া ও সুন্নি মতবাদের প্রতি শ্রদ্ধা বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে যেভাবে উপস্থিত তা বিশ্বের অন্য কোন মুসলমান দেশে নেই।

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: সবার যুক্তি নিজের নিজের মত করে খাড়া করা। আবার কেউ কেউ দেখি গোমরাহ্‌-ও আক্ষা দিচ্ছে। তয় ভরসা পাই, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের মত কট্টর হইতে পারি নাই। শিয়া বা সুন্নীর আগে আমরা নিজেদের মুসলমান হিসেবেই পরিচয় দেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.