নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের বিবেক হচ্ছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ আদালত

মো কবির

আমি একজন মানুষ; তাই মানুষ হয়ে, মানুষের জন্য কিছু করে যেতে চাই। আমার ব্লগ www.ProgrammingDesk.Blogspot.com আর বিশ্বাস করি এবং মানুষকে উপদেশ দেই---, "যে কোন অবস্থায়,কাউকে যদি তার নিজ স্বার্থের জন্য অন্যের ক্ষতি কিংবা প্রতারণা করতে দেখ,যদি তার প্রতিবাদ না করতে পার,তবে মন থেকে তাকে ঘৃণা কর এবং সবসময় তাকে পরিহার করে চল।কেননা,যে তার স্বার্থের জন্য অন্যের ক্ষতি করতে পারে,সুযোগ পেলে সে তার স্বার্থের জন্য তোমার ক্ষতি করতেও দ্বিধাবোধ করবে না,তুমি তার বন্ধু আর যাই হও না কেন।"

মো কবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

""১ম পর্ব--যাদু ও বদ নযরঃ চিকিৎসা""

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৩

""১ম পর্ব--যাদু ও বদ নযরঃ চিকিৎসা""



১. আর আমি কুরআনে এমন কিছু নাযিল করেছি যা হচ্ছে আরোগ্য এবং মুমিনদের জন্য রহমত। (সূরা বানী ইসরাঈল- ৮২)



২. তোমাদেরকে যে মুসিবতেই স্পর্শ করুক না কেন তা তোমাদের কৃতকর্মের কারণেই হয়ে থাকে। আর তিনি অনেক কিছুই ক্ষমা করেন। (শূরা- ৩০)



৩.“যে ব্যক্তি রহমান তথা আল্লাহর যিকির থেকে বিমুখ থাকে তার জন্য আমি একজন শয়তান নির্ধারণ করে দেই, তখন সেই হয় তার সঙ্গী।” (যুখরুফ-৩৬)



কিভাবে যাদু এবং বদনযর থেকে বেঁচে থাকবে?



১) আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুলঃ সকল প্রকার বালা-মুছিবত থেকে বেঁচে থাকা এবং যাবতীয় উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সবচেয়ে বড় মাধ্যম হল আল্লাহর প্রতি ভরসা। আল্লাহ্ বলেন,



(وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلىَ اللهِ فَهُوَ حَسْبُهُ)



“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করবে, আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হবে।” (সূরা ত্বালাক- ৩)



২) আল্লাহর নির্দেশের বাস্তবায়ন ও নিষেধ থেকে দূরে থাকাঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ নিষেধের হেফাযত করবে, সে অনুযায়ী চলবে আল্লাহ্ তাকে দ্বীন, দুনিয়া, পরিবার, সম্পদ সর্বদিক থেকে হেফাযত করবেন। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলেন,“তুমি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চল আল্লাহ্ তোমাকে হেফাযত করবেন।” (তিরমিযী)



৩) অধিকহারে আল্লাহর যিকির করাঃ যেমন- কুরআন তেলাওয়াত, সুবহানাল্লাহ্, আল হামদুলিল্লাহ্, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, আল্লাহু আকবার ইত্যাদি বেশী বেশী বলা, অধিকহারে ইস্তেগফার করা, নবী (ছাঃ)এর উপর বেশী করে দরূদ পাঠ… ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে বান্দা নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারে।



নির্দিষ্টভাবে যে সকল দু’আ কালামের মাধ্যমে যাদু, বান, টোনা, বদ নযর, জ্বিন, শয়তান ইত্যাদি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নিম্নরূপঃ



ক) নিদ্রা যাওয়ার আগে আয়াতাল কুরসী (সূরা বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত) পাঠ করা। যে ব্যক্তি রাতে তা পাঠ করে, তার জন্য সকাল পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন হেফাযতকারী ফেরেশতা নিয়োগ থাকে, ফলে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে পারে না। (ছহীহ বুখারী)



খ) সূরা বাক্বারা পাঠ করা। যে গৃহে এই সূরা পাঠ করা হয় সেখান থেকে শয়তান পলায়ন করে। (মুসলিম)



গ) সূরা বাক্বারার শেষের দু’আয়াত পাঠ করা। যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষের দুটি আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য এ দুটিই যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ- সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে। (ছহীহ বুখারী)



ঘ) সকাল-সন্ধার নির্ধারিত দু’আ সমূহ পাঠ করা। গৃহে প্রবেশ, গৃহ থেকে বের হওয়া, সোওয়ারীতে আরোহণ করা প্রভৃতি সময়ে নির্দিষ্ট দু’আ পাঠ করা।



ঙ) শিশুদেরকে ঝাড়-ফুঁক করা। যেমন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) হাসান ও হুসাইন (রাঃ)কে ঝাড়-ফুঁক করতেন। তিনি বলতেন,



أُعِيْذُكُماَ بِكَلِماَتِ اللهِ التاَّمَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطاَنٍ وَهاَمَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ



“আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের মাধ্যমে আমি তোমাদের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করছি সকল প্রকার শয়তান থেকে, বিষধর প্রাণীর অনিষ্ট থেকে এবং সকল প্রকার বদ নযর থেকে।” (বুখারী)



চ) সূর্যাস্তের সময় শিশুদেরকে বাড়ীর বাইরে যেতে বাধা দেয়া। নবী (ছাঃ) বলেন, “যখন সন্ধা হয় তখন তোমাদের শিশুদেরকে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত রাখ। কেননা এই সময়ে শয়তানের দল বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। যখন রাতের একটি প্রহর অতিবাহিত হবে তখন (শিশুদেরকে) ছেড়ে দিতে বাধা নেই।” (বুখারী ও মুসলিম)



ছ) বাসস্থানকে ক্রুশ, মূর্তি, প্রাণীর ছবি, কুকুর থেকে পবিত্র করা। কেননা এসব বস্তু যে গৃহে থাকে সেখানে ফেরেস্তা প্রবেশ করে না। এমনিভাবে গান-বাদ্যের সরঞ্জাম থেকেও গৃহকে পবিত্র রাখা।



চিকিৎসাঃ



ইমাম ইবনুল ক্বাইয়েম বলেন, যাদু-টোনা ইত্যাদির ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপকারী চিকিৎসা হল এলাহী চিকিৎসা। বরং প্রকৃতপক্ষে তাই হল, আসল উপকারী চিকিৎসা। তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:-



যাদুকৃত ব্যক্তির চিকিৎসা:



১) প্রথম পন্থ : যে সমস্ত বস্তু দ্বারা যাদু করা হয়েছে তা সম্ভব হলে বের করা এবং নষ্ট করে ফেলা।



২) দ্বিতীয় পন্থা হচ্ছে: শরীয়ত সম্মত ঝাড়-ফুঁক। মহামান্য শায়খ ইবনু বায (র:) বলেন, যাদু থেকে মুক্তির জন্য নিম্ন লিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়: সাতটি কাঁচা কুল (বরই) পাতা নিয়ে বেটে একটি পাত্রে রাখবে এবং তাতে পানি মিশ্রিত করবে। পানি এমন পরিমাণ হওয়া চাই যা দ্বারা গোসল করা সম্ভব হয়। এরপর উক্ত পানিতে কুরআনের এ আয়াতগুলো পড়ে ফুঁক দিবে: আয়াতাল কুরসী, সূরা ইখলাছ, সূরা ফালাক, সূরা নাস, সূরা আরাফের (১১৭ থেকে ১২২) নং আয়াত, সূরা ইউনুসের (৭৯ থেকে ৮২) নং আয়াত এবং সূরা ত্বায়াহার (৬৫ থেকে ৭০) নং আয়াত। তারপর উক্ত পানি থেকে কিছু পানি রুগীকে পান করাবে এবং অবশিষ্ট দ্বারা তাকে গোসল করাবে। ইনশাআল্লাহ্ এদ্বারা যাদু কেটে যাবে।



যদি প্রয়োজন দেখা দেয় তবে উক্ত পদ্ধতী দু’বার বা ততোধিক ব্যবহার করতে পারে। (বহুবার এপদ্ধতী পরীক্ষা করা হয়েছে এবং আল্লাহ্ তা দ্বারা উপকার দান করেছেন।)



যাদু সহ সকল প্রকার বালা-মুছিবতের সবচেয়ে উপকারী চিকিৎসা হল, খাঁটিভাবে আল্লাহ্র কাছে তওবা ও বেশী বেশী ইস্তেগফার করা। কেননা পাপাচারই হল সকল মুছিবতের প্রধান কারণ। আর তওবাই হল তার প্রধান ঔষধ।



বদ নযরের চিকিৎসা:



প্রথমত: কোন ব্যক্তির নযর লেগেছে তা যদি জানা যায়, তবে তাকে ওযু করতে বলতে হবে। অতঃপর উক্ত ওযুর পানি দ্বারা বদনযরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে গোসল করাতে হবে। (ছহীহ মুসলিম)



দ্বিতীয়ত: যদি তাকে জানা না যায়, তবে নিম্নলিখিত আয়াত ও দু’আ সমূহ পড়ে বদনযরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝাড়-ফুঁক করবে:



ক) সূরা ফাতিহা,



খ) আয়াতুল কুরসী (সূরা বাক্বারার ২৫৫নং আয়াত)



গ) সূরা বাক্বারার শেষের দুটি আয়াত (২৮৫ ও ২৮৬ নং আয়াত),



ঘ) সূরা ইখলাছ,



ঙ) সূরা ফালাক,



চ) সূরা নাস,



ছ) এই দু’আটি



بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيْكَ وَمِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أوْ عَيْنٍ حاَسِدٍ اللهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ



“আমি আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি- তোমাকে কষ্টদানকারী সকল বস্তু হতে, এবং প্রত্যেক ব্যক্তির অথবা হিংসুক ব্যক্তির নযরের অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ্ তোমাকে আরোগ্য দান করুন। আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাকে ঝাড়-ফুঁক করছি।” (বুখারী ও মুসলিম)



জ) এই দু’আটি



أعُوذُ بِكَلِماَتِ اللهِ التاَّمَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطاَنٍ وَهاَمَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ



“আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের মাধ্যমে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি সকল প্রকার শয়তান থেকে, বিষধর প্রাণীর অনিষ্ট থেকে এবং সকল প্রকার বদনযর থেকে।” (বুখারী)



ঝ) এই দু’আটি



بِسْمِ اللهِ يُبْرِيْكَ ومِنْ كُلِّ داَءٍ يَشْفِيْكَ، ومِنْ شَرِّ حاِسِدٍ إذاَ حَسَدَ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ ذِيْ عَيْنٍ



“আল্লাহর নামে শুরু করছি, তিনি তোমাকে মুক্ত করুন, প্রত্যেক অসুখ থেকে আরোগ্য দান করুন, প্রত্যেক হিংসুকের হিংসা থেকে এবং প্রত্যেক বদনযরের অনিষ্ট থেকে (মুক্ত করুন)। (মুসলিম)



জিনে ধরার চিকিৎসা:



ক) সূরা ফাতিহা, খ) আয়াতাল কুরসী, গ) সূরা বাক্বারার শেষের দুটি আয়াত, ঘ) সূরা ইখলাছ, ঙ) সূরা ফালাক, চ) সূরা নাস ইত্যাদি পাঠ করে জিনে ধরা ব্যক্তিকে ফুঁ দিবে। এরূপ তিনবার বা ততোধিকবার করবে।



ওয়াস্ওয়াসা বা কুমন্ত্রনার চিকিৎসা:



১) আঊযুবিল্লাহ্… পাঠের মাধ্যমে শয়তান এবং তার কুমন্ত্রনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ২) সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করবে। ৩) আল্লাহ্ তায়ালার যিকির করবে। কেননা তা হচ্ছে ওয়াস্ওয়াসা দুর করার সর্বাধিক উপকারী চিকিৎসা। ৪) মনের কুচিন্তা বা ওয়াস্ওয়াসার দিকে দৃষ্টিপাত না করে তার প্রতি কোন গুরুত্ব দিবে না। মনে যে সমস্ত কুচিন্তা বা ওয়াস্ওয়াসার উদ্রেক হয় সে সম্পর্কে মুসলিম ব্যক্তি জিজ্ঞাসিত হবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “মানুষের অন্তরে যে সমস্ত কুচিন্তা জাগ্রত হয় আল্লাহ্ তা আমার উম্মত থেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষন তারা তা মুখে উচ্চারণ না করবে বা কর্মে বাস্তবায়ন না করবে।” (বুখারী ও মুসলিম)



সুত্রঃ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.