নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টিস্নান!

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৩

১.

তাদের দুজনের দীর্ঘদিনের শখ বৃষ্টিতে ভেজার। দুজন একসাথে ভিজবে বৃষ্টিতে। অনেকদিনের এই অেপক্ষা তাদের আজ বোধহয় পূরণ হতে চলেছে। আকাশ মেঘে ঘন হয়ে এসেছে। দুজন রিক্সাতে। দুজনের মন আজ তুমুল আনন্দে আচ্ছন্ন। আজ যে তারা বৃষ্টিতে ভিজবে! গন্তব্যে পৌঁছেও তাই তারা রিক্সা থেকে নামে না। রিক্সা চলতে থাকে। তারা অেপক্ষা করতে থাকে কখন আসবে বৃষ্টি।

ছেলেটা বলে, বৃষ্টি আসলে রিক্সার হুড ফেলে দেবে।

মেয়েটা রাজী হয় না। কেউ যদি দেখে ফেলে! ছেলেটা আক্ষেপ করে কেন তার পরনে আজ ব্ল্যাজার আর টাই নাই, মেয়েটার পরনে নাই শাড়ী! তার মতামত, ওমন পোষাক পরে রমনার খোলা ময়দানে বসে বাদাম খেতে খেতে কাকভেজা হবার আনন্দ অন্যরকম হত! মেয়েটা সেই কল্পনায় মজা পেয়ে খিলখিল করে হেসে উঠে। ছেলেটাও। আকাশে মেঘের দল উথাল পাথাল হতে থাকে। ঝড়ো বাতাসের ঠেলায় মেঘের দল ছুটতে থাকে সুদুরের দিকে। ধীরে ধীরে একসময় আকাশ পরিষ্কার হয়ে আসে। ছেলেটার, মেয়েটার মনের ভেতর তখন মেঘেদের আনাগোনা।



২.

তারও অনেকদিন পরের কথা। আষাঢ়ের প্রথম দিন। তুমুল বৃষ্টি। ছেলেটা মোবাইল ফোনটা হাতে তুলে নেয়। মেয়েটাকে কল দিয়ে বাইরে বেরুতে বলে। ঠিক হয় আধাঘন্টা পর ছেলেটা মেয়েটাকে তাদের পাড়ার মোড় থেকে এগিয়ে নিয়ে আসবে। ছেলেটা চটজলদি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ে। ভিজতে ভিজতে এগুতে থাকে। আজ কোনোভাবেই সুযোগটা হাতছাড়া করতে রাজী নয় সে। বৃষ্টির বেগ বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে তার হার্টবিটও বাড়তে থাকে। আর তখনি পকেটে রাখার মোবাইলের মেসেজ টোনটা বেজে উঠে। বৃষ্টির মধ্যেই সে মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে মেসেজ বাটনে কিক করে জানতে পারে মেয়েটার মা তাকে এই বৃষ্টিতে বাইরে যেতে মানা করেছেন! ছেলেটার হার্টবিট স্বাভাবিক হতে থাকে।



৩.

আরো কয়েকদিন পর এক সকালে যখন মেয়েটার ঘুম ভাঙলো, যখন মেয়েটা বুঝতে পারলো বাইরে বৃষ্টি, মেয়েটার মন বিষন্নতায় ভরে গেল। তাদের দু’জনের বৃষ্টিতে ভেজার সাধ কবে পূরণ হবে! কবে দু’জন প্রাণ ভরে বৃষ্টিতে ভিজতে পারবে! ভাবতে ভাবতেই মেয়েটা একটা বুদ্ধি পেল। পাশে রাখা মোবাইলটা হাতে তুলে নিয়ে ছেলেটার ঘুম ভাঙালো। ছেলেটাকে ছাদে উঠতে বলে নিজেও তার বাসার ছাদে উঠে গেল। চারিদিকে বৃষ্টি, বৃষ্টি আর বৃষ্টি। বোকা ছেলেটার কানে মোবাইল! মেয়েটারও! দুজন হাসছে, আর বৃষ্টির জলে স্নান করছে! দু’জনের অবস্থানগত দূরত্ব অনেক হলেও আমরা হতভাগ্যরা যদি তাদের বৃষ্টিস্নান দেখতে পেতাম, আনন্দে উদ্বেলিত হতে দেখতে পেতাম বুঝতে পারতাম, দূরে থেকেও অতোটা কাছাকাছি হবার আনন্দ!



এই কিশোর-কিশোরী যেদিন একসাথে বৃষ্টিতে ভেজার সুযোগ পাবে সেদিনও তারা যাতে এখনকার মতো কাছাকাছি থাকে, বোকা থাকে - এই কামনা করি।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১১

গেন্দু মিয়া বলেছেন: চমৎকার নাম :

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮

শ্রাবণ জল বলেছেন: ব্লগে আসা হয়না বেশ কিছু দিন ধরে। আপনার নতুন ৫ টা পোস্ট দেখলাম! এটা পড়লাম কেবল। বাকি গুলো আরেকদিন।

শুভ কামনা সেই কিশোর কিশোরীর জন্য।

আপনার জন্য ও।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩১

কয়েস সামী বলেছেন: বাকিগুলা তাড়াতাড়ি পড়েন।ব্লগে আসেন না কেন? পরীক্ষা বুঝি?

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: পৃথিবীর পাপ পঙ্কিলতা মুছে যাক বৃষ্টির স্পর্শে, অপাপবিদ্ধ কিশোর কিশোরীর লালিত ইচ্ছার সৌন্দর্যে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩২

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই। এবার বইমেলায় কোন বই আসছে, অাপনার?

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৬

দূর্যোধন বলেছেন: একদিন নিশ্চয়ই ছেলে ও মেয়েটি একসাথে বৃষ্টিতে ভেজার অবকাশ পাবে , নিশ্চয়ই সেইদিনও তারা আজকের মতই বোকা থাকবে । :)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩৩

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। কৃতজ্ঞতাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.