নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোনার মানুষ খুঁজি

কাজী জাকির হোসেন

প্রাক্তন সাংবাদিক, লেখক, শিক্ষক

কাজী জাকির হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন সাহসী মেয়রের অভিজ্ঞতা, একজোড়া রক্তচক্ষু এবং কতিপয় দালাল

১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩

জাতিগত অহমের রক্তজুড়ে আমাদের শরীরে কিছু বন্ধ্যাত্ব জমেছে,
সে বন্ধ্যাত্ব আমরা কাটাতে পারি না কোনোমতে, ইচ্ছে হয় না, মন সায় দেয় না, হায়!
এত প্রেম তার প্রতি, এত অনুরাগ, এত লুকোচুরি তাকে ঘিরে!
যেন পয়সাপতি হওয়ার জন্য সে এক মানব মোটাতাজাকরণ পিল!
প্রিয় ঘুষ, প্রিয় কমিশন, প্রিয় দুর্নীতি, প্রিয় আখের গোছানোর মহৌষধ!
তাকে মেনে নিলেই কোটি কোটি টাকা লাভ, দুপক্ষেরই লাভ যেন!
সেই বন্ধ্যাত্ব দশা কাটিয়ে যখন একজন মেয়র সাহসী হয়ে দুকথা বলেন,
তখন রক্তচক্ষু যেন চড়কগাছ হয়ে ওঠে, ভয়ে মেয়র কেনো দূর এই গৃহবাস থেকে
আমি এক নতজানু সাধারণও ভয়ে আঁৎকে উঠি! কেনো কোন সাহসে তিনি
এমন করে দুঃসাহসী হয়ে ওঠেন, যখন অন্যেরা সঙ্গে সঙ্গে বলে দেন:
আমাদের বাপের জন্মেও শুনি নি এমন কথা, এমন করে ঘুষ চাওয়ার কথা!
এমন করে কমিশন চাওয়া হয় নাকি এদেশে! তারা অবাক বিস্ময়ে জানিয়ে দেন
তাঁদের সত্যপ্রতিম চেহারা, যেন গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন,
বাঙালির হাজার বছরের লুকোচুরির গল্পখানা।
আমিও ভয়ে মুষড়ে যাই, হায়! এ কী তিনি বললেন!
এমন কতশত কত লাখোকোটি গল্প প্রতিদিন বাঙালির জীবনে ঘটে যায়!
কেউ তো বলে না কথা! প্রমাণ রাখে না, মুখ খোলে না,
এমন কি এমন বিষয় নিয়ে কথা হলে ভয়ে লাইকও মারে না যেদেশের মানুষ।
কেননা্ এতে তো দুয়েরই লাভ! দুপক্ষই নিরাপদ।
হয়তো কিছু কমিশন যাবে। তাতে কী!
৮০ কোটির জায়গায় আসবে তো ৩০০ কোটি টাকা, বিস্তর ব্যবধান।
ব্যক্তিগত ক্ষতি তো নেই মোটে, রাষ্ট্র ও জনগণের টাকা কতজন তো লোটে!
যাহোক, অন্তত একজন মেয়রের মুখে একথা প্রথম শুনি।
ভয়ে মুষড়ে যাই, আঁৎকে উঠি, তিনি পারবেন তো প্রমাণ দিতে?
এমন করে আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনে খুব বেশি বলার জোটে না মানুষ!
তাও এমন সব পদে থেকে। যেমন করে সাক্ষীগোপাল অন্যান্য মেয়র।
তারা তো কোনোদিন স্বপ্নেও শোনেন নি এমন কথা কভূ কোনোকালে।
যে সাধারণ কোনো ফাইলজীবী কেরানীর কাছে যান, তিনি যদি কিছু চান,
দিয়ে দেন অবলীলায় কেননা তিনি জানেন এদেশে এখন এই ই হয়!
তবু মুখ খোলেন না মোটে, কাজ তো হয়েছে, প্রমাণ রেখে কী আর হবে?
এইভাবে কতজন কত টাকা কামাই করে মোটাতাজা হন, পূঁজিপতি হন,
মানুষ তার পিছু ছোটে, বাহবা দেন, তার উদ্দেশে প্রশংসার তুবড়ি ফাটান
এমনকি গর্বিত পিতা তার সুন্দরী মেয়েটিও তার কাছে তুলে দিতে হন না পিছপা।
কেননা ছেলেটি ও তার বাপ ভারি পয়সাওয়ালা।
তারপর একদিন তারা বড় কোনো নেতাও হবেন! নেতা বনে যাবেন।
তো খামোখা ঝক্বি পোহাবেন কেনো! যেই দেশে যদাচার।
আমাদের মাননীয় এক মেয়র প্রকাশ্য দিবালোকে সেই বেফাঁস বললেন!
শুনলাম, কদিন দেখলাম, ভাবলাম, বেচারা নাকানিচুবানি খাবেন হয়তো।
যেখানে সত্য উচ্চারণ করে মাননীয় মন্ত্রী পর্যন্ত ক্ষমা চেয়ে খ্যামা দেন!
তারপর একদিন আজ যখন শুনলাম, তিনি বলছেন, সাহসে ভর করে।
তিনি বলছেন, প্রমাণ ছাড়া বলি নি কোনো কথা, বুকে বল পেলাম।
নিজেও সাহসী হলাম, সামান্য দর্শক, সামান্য পাঠক আমারও ধড়ে পানি এলো।
যাক বাবা! অন্তত একজোড়া যেমন রাঙা চোখ দেখেছিলাম!
না জানি কী হয় সত্যকথনের দায়ে!
বুঝলাম, ছাটগাঁয়ের মেয়র নিছক গোবেচারা নন, তিনি সাহসী পুরুষ!
মাননীয় মেয়রের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, শ্রদ্ধা নিরন্তর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.