![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর্ষণ বা অপরাপর চলমান অপরাধ বন্ধ করতে হলে কয়েকটি জায়গায় দৃষ্টি দিতে হবে সাথে চিন্তার গিট্টুটা খুলতে হবে। ধর্ষক আর ধর্ষণের বিচার দাবিকারীদের কমন মিলের জায়গায় ফোকাস করতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে, কেনো অপরাধ এখনো চলমান। নুসরাতকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো। মানুষ বিচার চেয়েছে। সেখানেও দেখা গেছে, একটা কমন জায়গা রয়েছে দু’পক্ষের আপাত মিলের। এই যে আপাত মিলের যুগলবন্দী, এরধ্যেই বন্দী হয়ে আছে মুক্তির মন্ত্র।
দু’জন দু’দিকে কিন্তু লেজের গিট্টু লেগে আছে। মুখ যতই দু’দিকে থাক, লেজের জোড়াটা কিন্তু লেগে থাকে। যেই ছুটে যেতে চাক, লেজে টান পড়বেই। আর সে টানের ব্যথা যে মধুর এ কথা দিব্যি দিয়ে বলা যাবে না। যায় না। সুতরাং বিপরীতমুখীতাই সব সময় বৈপরীত্য এমন ভেবে নেয়াকে কিছুটা বুদ্ধিভ্রষ্টতাও বলা যায়। ভ্রষ্ট বুদ্ধির অনেক পরিচয় কাগজে খুঁজলেই পাবেন।
অনেকেই ধর্ষণের প্রতিবাদে প্রোফাইল পিকচার কালো করছেন। কেনো? কালো তো শোকের প্রতীক। তাহলে প্রতিবাদ নয়, মাতম করছেন আপনারা? প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের রঙ লাল। রঙের হিসেবটাও গুলে খেয়েছেন অনেকে! মাতম করে যুদ্ধে পরাজয়ের পর, স্বজনহারাদের শোকে। তবে কি পরাজয় মেনে নিয়েছেন আপনারা। লেজের গিট্টুতে টান লেগে গেছে। আহারে, জন্মান্তরের টান, কষ্ট লাগে ছিড়ে যেতে। অনেকটা নাড়ির টানের মতন। নাড়ির টানে তো মায়া থাকে। উৎসর্গ থাকে। লেজের টানে থাকে ক্যাসিনোর বোর্ড। জুয়ার দান।
যুদ্ধ করার চেয়ে মাতম করা সহজ। কেঁদেকেটে কিছুটা হাল্কা হয়ে নেয়া যায়। ক্রোধ কমে। চিকিৎসকরা সেজন্যেই শোকের ক্ষেত্রে কান্নার কথা বলেন। না কাঁদলেই মুশকিল, উল্টোপাল্টা কিছু করে ফেলতে পারে। কান্নাটা জরুরি। উল্টোপাল্টা করলে নিজের ক্ষতি, কেউ কি আর নিজের ঘরে সিঁধ কাটতে চায়! তারচেয়ে মাতমই ভালো। কালো রিবন একদিন। তারপর সব ওকে। লালঝান্ডা দিনকে দিন বয়ে বেড়াতে হয়। বাড়ি থাকে না, ঘর থাকে না। এসি থাকে না, প্রাডো থাকে না। নিদেনপক্ষে একটা হোন্ডা সিভিক, তাও থাকে না। তারচেয়ে মাতমই সহজিয়া। বেঁচে থাকলে, করে খেতে পারবে।
কারো মাতম দেখে ভারতের রুদালি সম্প্রদায়ের কথা মনে পড়ে যায়। ওই যে যারা শোকের বাড়িতে কেঁদেকেটে আসে। পরম্পরায় সে ধারা লালন করে চলেছে তারা। কান্নার ধারা। শোক হলেই হলো, কিছুই দেখার নেই কাঁদতে বসে যাওয়া। তারপর খেয়েদেয়ে নগদ নারায়ণ নিয়ে বিদায়। দিনকে দিনকে এই শোকের মাতম দেখতে দেখতে মাঝেমধ্যে রুদালি হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। মাতমই যখন বানাতে হয় তবে কিছু লোকই একা একা শিন্নি খাবেন কেনো, আমরাও ভাগ বসাই। সবাই রুদালি হয়ে যাই। যাদের কাজ হবে শুধু কেঁদে যাওয়া। বিষয় ফ্যাক্টর নয়, কেঁদে যাবার সুযোগ পেলেই হলো। আচ্ছা রুদালিদের কেউ মারা গেলে তারা কি কাঁদতে পারে? নাকি সেক্ষেত্রেও বায়না দিতে হয়? কি জানি?
সবাইকে বলছি না। বিশেষ করে নতুন যারা, তরুণ যারা। তারা জানে না কী করে দাবি আদায় করতে হয়। তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধটা শোনা, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনটাও। তাদের কাছে যুদ্ধ আর আন্দোলন একটা কাহিনি মাত্র। তাদেরকে পথভ্রষ্ট করছে সেই ‘রুদালি’রা। কান্না বেচা পার্টি। নিরাপদ পথের আন্দোলন যেভাবে পথভ্রষ্ট হয়েছিলো। আহা পুঁজিবাদে কান্নাও আজ বিক্রয়যোগ্য!
©somewhere in net ltd.