![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজনরে জিগাইলাম, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আর হুমায়ূন আহমেদের মধ্যে তফাৎটা কই? বিরাট তালেবর জবাব দিলেন, ‘আপনি সাহিত্যের কিছু বোঝেন না বলেই এমন প্রশ্ন করতে পারলেন। কার সাথে কার তুলনা যে আপনি করছেন!’ হ্যার নাকি জবানে মিজাজটা বিলা হইয়া গেলো। ওই যে, মায়ে কইছিলো কারো সাথে রাগ হইলে চাইপা যাইছ, ‘ইয়ে’ উঠাইস না। চাইপা গিয়া কইলাম ইলিয়াসের উপন্যাস কয়টা? দেখি জনাবে তোতলায়। কইলাম আপনের মতে এক নম্বর কোনটা? চিলেকোঠার সেপাই না খোয়াবনামা? তিন নম্বর কোনটা? মাথা এমন ভাবে ঝাঁকায় যেন মাথার মইধ্যে নামটা গিট্টুতে আটকায়া গ্যাছে। এই হইলো বসের ইলিয়াস বিদ্যা। উপন্যাসের সংখ্যা যে ইলিয়াসের সর্বসাকুল্যে কয়টা হ্যাইডাও জানেন না জনাবে, উল্টা তিন নম্বর খুঁজেন!
অবস্থা দেইখা জিগাইলাম, ইলিয়াসরে আপনে পড়ছেন কী না হ্যাইডা কন। সাবের ভাইরে পড়ছেন, মঈনুল আহসান সাবের, জাকির তালুকদার? হ্যাগো সাথে ইলিয়াসের তফাৎটা কন। তৃতীয় লিঙ্গের মতন ‘ওমা’ টাইপ একটা শব্দ কানে আইলো। তারপর আর কথা নাই। অধিক শোকে পাত্থর অবস্থা। তোতলাইতে গিয়া কী কইলো বুঝবার পারলাম না। তয় বিষদৃষ্টি দেইখা মনে হইলো পারলে আমারে ভস্ম কইরা দিতো।
মোদ্দা কথা বুঝতে পারছেন তো? এরা হইলো ওই কিছিমের জিনিস, হয় কিছুই পড়ে নাই, নয় পইড়াও বুঝবার পারে নাই। এনাগো আবার কিছু আধাত্মিক গুরু আছেন। গুরুগো মুখ দিয়া যাগো নাম বাইর হয়, হ্যারাই সেরা। হ্যারা সেই গুরুরেই বন্দে। এই যে সেরার ন্যারেটিভ সৃষ্টি হইছে তাতে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আর মানিক বন্দোপাধ্যায় কমন। সাহিত্য বুঝতে হইলে আপনের ইলিয়াস পড়তে হইবো। কেন হইবো, তার কুনো জবাব নাই। হুমায়ূন আজাদও হ্যাগো তালিকায় আছেন। সলিমুল্লাহ খান ভালো কইছেন, আজাদের প্রায় সবটাই মাইরা দেয়া মাল।
এই গুরুরা মাঝেমইধ্যে সাহিত্যের সাথে রাজনীতির মিশাল দিয়া আমাগো মতন গরীব মানুষের জীবনচরিত বয়ান করেন। ‘কেউ খাবে তো কেউ খাবে না’ টাইপের স্লোগান মিশাইয়া প্রেম-ভালেবাসার সাথে ইতিহাস ব্লেন্ড কইরা দেন। তাও ইতিহাস হইতে হইবো নিজেগো চেতনার মেশিন থিকা বানাইননা। যেই জীবনচরিতে নায়কের মরতে হইবো স্লোগান দিয়া মুঠি উপরের দিকে তুইলা। এইডারে আমি কই চটপটি চেষ্টা। তেঁতুলের টক দিয়া গিলানোর ধান্ধা। এই সকল গরু থুক্কু গুরুগো অবস্থা হইলো কইলকাতার বাবুগো মতন। সাঁতার না জাইনা ঝড়ের রাইতে মাঝিরে আনা আনা বোঝায়। নৌকা ডুবনের আগে মাঝি যখন জিগায়, সাঁতার জানো বাবু? –তখনি সব কাইত।
বিদেশী পইরা স্বদেশী করা গুরুর নিজেগো জীবনচরিতই ঠিক নাই, হ্যাগো আবার সাহিত্য ভাবনা। হ্যারা অ্যাপল ম্যাকে দেখে বস্তিবাসীর জীবন। সুপেয় পানির অভাবে বস্তিবাসীর জীবনটা জল হইয়া গেলো ভাইবা দুই পেগ মাইরা লয়। কয়, ‘আমি তো এমনি এমনি পান করি না, বস্তিবাসীদের কষ্ট ভোলার জন্য করি।’ তগো... মায়ে কইছে গাইল না দিতে, ছোট বেলার শিক্ষা বইলা কথা। তয় চামে কই, পারলে এইসব বাবুগো ইগনোর কইরা যান। এগো তরিকা হইলো ‘কাল্ট কালচার’ এর। ‘ভগবান রজনীশ’ টাইপ। অসম্ভব আর অবাস্তব চিন্তার গ্রুপ। এরা শুধু আপনেরে বিভ্রান্ত করবো। সাহিত্য, রাজনীতি, জীবনাচরণে সবখানেই আপনে বিভ্রান্ত হইবেন। দড়িরে ভাববেন সাপ, আর সাপেরে দড়ি। এমুন বিভ্রান্তিতে না পইড়া নিজেরে যোগ্য কইরা তোলেন। যোগ্য হইয়া উঠেন চিন্তায়-ভাবনায়। তইলেই যদি আপনের হয়।
ফুটনোট: আলাপের শুরুটা কী নিয়া কই। সূত্রপাতটা হুমায়ূন আহমেদ বিষয়ে আমার একটা লেখা নিয়া। আমার দোষ আমি কেন হুমায়ূনরে নিয়া লিখি। জাত গেলো অবস্থা। লালনের মতন জিগাই, ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’। তারপর আর কী, প্রপাত ধরণীতল।
©somewhere in net ltd.