নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশ দিয়া উইড়া যাই

We must not exist, our existance is the most impossible thing.

কাকপাখি ২

এইটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে লোকেরা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ব্যাপারে সন্দিহান অথচ নিজেদের অস্তিত্ব তাদের কাছে আশ্চর্যের বিষয় মনে হয় না।

কাকপাখি ২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসহায় মা অসহায় শিশু / মুহাম্মদ জাফর ইকবাল

১৪ ই জুন, ২০১২ রাত ১১:৫৬

জাফর স্যার একটু আগে রোহিঙ্গাদের নিয়ে লেখাটা লিখেছেন:



১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন পুরো দেশকে পৃথিবীর নৃশংসতম হত্যাকান্ড দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে ফেলছে তখন আমরা একটি গ্রামের একজন অবস্থাপন্ন মানুষের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। মে মাসের ৫ তারিখ পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমার বাবাকে হত্যা করার পর আমাদের আশ্রয় দেয়া গৃহস্বামীর মনে হল যে মানুষটিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী হত্যা করেছে তার পরিবারকে আশ্রয় দেয়া বিপজ্জনক। তিনদিন পর বিকেল বেলা তিনি আমাদের পুরো পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন।



আমার মা ছোট ছোট দুটি নৌকা ভাড়া করে আমাদের ছয় ভাইবোনকে নিয়ে পুরোপুরি অনিশ্চিত পথে যাত্রা করলেন। যখন পদে পদে মৃত্যুর আশংকা তখন পুরোপুরি আশ্রয়হীন হয়ে নৌকা করে নদীতে ভেসে বেড়াতে কেমন লাগে তখন আমাদের সেই অভিজ্ঞতাটি হয়েছিল। একজন মানুষের যখন সারা পৃথিবীতে কোথাও যাওয়ার যায়গা থাকে না তখন বুকের ভিতর যে অসহায় অনুভুতি হয় এবং জগত সংসারের প্রতি যেই অভিমানের জন্ম হয় তার চাইতে হৃদয় বিদারক কোন অনুভুতি আছে বলে আমার জানা নেই।



প্রায় চল্লিশ বছর পর খবরের কাগজ খুলে আমি সেই অনুভুতিটি নুতন করে অনুভব করছি। নিজদেশে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে আশ্রয়ের আশায় রোহিঙ্গা শরনার্থীরা আমাদের দেশে আসছে। অসহায় আতংকে হকচকিত শিশু, আশ্রয়ের আশায় ব্যাকুল মা - হঠাৎ করে আমি খবরের কাগজের ছবিতে আমার নিজেকে, আমার ছয় ভাইবোনকে খুঁজে পেতে শুরু করেছি। ছবিগুলো অনেক নিষ্ঠুর কারন বাংলাদেশ সরকার সদম্ভে ঘোষনা করেছে কেউ এখানে আশ্রয় পাবে না। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, আগরতলায় যত অধিবাসী ছিল শরনার্থীর সংখ্যা ছিল তার থেকে বেশি। যদি পার্শবর্তী দেশ ঘোষনা দিত সেই দেশে বাংলাদেশের কোন অসহায় মানুষ আশ্রয় পাবে না তাহলে নিশ্চিত ভাবেই ১৯৭১ সালের হত্যাকান্ডের সংখ্যা ত্রিশ লাখে থেমে না গিয়ে আরো কয়েকগুন বেড়ে যেত।



পৃথিবীতে অনেক নিষ্ঠুরতা আছে তারপরেও আমরা পৃথিবীতে অনেক স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকি কারন আমরা জানি এখানে যতটুকু নিষ্ঠুরতা আছে তার থেকে অনেক বেশি রয়েছে মানুষের জন্য মানুষের ভালবাসা। বিপদগ্রস্থ রোহিঙ্গারা যখন আমাদের দেশে আশ্রয়ের জন্য ছুটে আসছে, আমরা অমানুষের মত বলছি এই দেশে তোমাদের স্থান নেই, তোমরা ফিরে যাও। আমার দেশ এরকম অমানবিক এরকম নিস্ঠুর - নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস হয় না।



একাত্তর সালে আশ্রয়হীন হয়ে যখন আমার মা তার অসহায় সন্তানদের নিয়ে নৌকায় ভেসে বেড়াচ্ছিলেন তখন একজন হতদরিদ্র মানুষ আশ্রয় দেওয়ার জন্য ছুটে এসেছিল। সেই ভয়ংকর বিপদে আশ্রয় পেয়েছিলাম বলে আমরা প্রানে বেঁচেছি, আমি সেই কথাটি এক মুহুর্তের জন্যও ভুলি না। আমি জীবনে কখনো মানুষের উপরে বিশ্বাস হারাইনি, আমি জানি এই পৃথিবিটা এত সুন্দর কারন মানুষের জন্য মানুষের ভালবাসা কখনো ফুরিয়ে যাবে না।



তাহলে আমাদের সরকার কেমন করে এত নিষ্ঠুর হয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিচ্ছে? আমরা কেমন করে এত সহজে ১৯৭১ ভুলে গেলাম?



১৪/৬/১২



মূল লেখা :

Click This Link

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:১১

শিকদার বলেছেন: এখন জাফর ইকবাল সাহেবের ভক্ত এবং নাস্তিকেরা তাকে ছাগু বলবে এবং তাকে মৌলবাদী বলবে এবং ঘৃনা ছোড়তে থাকবে।

২| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:২০

রমিত বলেছেন: সাবাস জাফর স্যার, আপনার এই লেখাটির জন্য আমি আপনাকে স্যালুট ঠুকছি।

সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।
মানবতা, মানবতা, মানবতা।
আমার বিল্ডিং-এ একবার আগুন লেগেছিল, আমি পাশের বিল্ডিং-এ ছুটে গিয়েছিলাম, তারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছিল।
আজ বিপদে পরে অন্য কেউ আমার কাছে ছুটে আসলে আমি কি তাকে ফিরিয়ে দিতে পারি?

Click This Link

৩| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:২১

হাদী নয়ন বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~হাসতে হাসতে পেটে ব্যাথা হয়ে গেলো যে এখন ব্লগে আর এক ক্যাচাল চলবো। আমি হচ্ছি পাঠক শ্রেনীর মানুষ।মন্তব্য,লিখা দুই টাই কাদাচিত।ভালো টাইম পাস হবে।

৪| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:৩১

বদনামী বলেছেন: আমরা কেমন করে এত সহজে ১৯৭১ ভুলে গেলাম?

৫| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:৪৬

টিং টিং বলেছেন: জাফর স্যার কি এখন জামায়েত ইসলামি হবে নাকি?

৬| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ১২:৪৮

রমিত বলেছেন: চট্টগ্রাম, টেকনাফের হৃদয়বান মানুষেরা, অসহায় মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়ান। যে যতটুকু পারেন খাদ্য আর পানীয় তাদের হাতে তুলে দিন। আমরা যারা দূরে আছি আসুন তারাও কোন না কোনভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করি। আমাদের ঘরেও নারী ও শিশুরা রয়েছে, অন্ততপক্ষে তাদের কথা ভেবে আসুন আমরা ক্ষুধাপীড়িত লোকগুলোকে দয়া করি।

৭| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ৩:১৬

শয়ন কুমার বলেছেন: জাতিসংঘের তৎতাবধানে (অর্থায়নে ) এদেশে সাময়িক সময়ের জন্য একটি শরনার্থী শিবির খুললে ভাল হয় ।তাহলে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পিছনে আমাদেরও অর্থ খরচ হবে না সেই সাথে রোহিঙ্গাদেরও জীবন বাচবে। আর বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে মায়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনকারী উগ্রবাদী রাখাইনদের জন্য রইলো মানব মনের সমস্ত ঘৃণা।

৮| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ৩:২০

মিনেসোটা বলেছেন: জাফর ইকবাল এর মেয়ের হাটু আর হাতের বোতল নিয়ে যেসব ছাগু লেখালেখি করেছিল, সেগুলো এখন জাফর ইকবাল এর এই লেখা বেঁচে ক্ষমা ভিক্ষা করবে

৯| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ৩:২২

কলম.বিডি বলেছেন: টিং টিং বলেছেন: জাফর স্যার কি এখন জামায়েত ইসলামি হবে নাকি?

১০| ১৫ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:৩২

চলতি নিয়ম বলেছেন: মিনেসোটা বলেছেন: জাফর ইকবাল এর মেয়ের হাটু আর হাতের বোতল নিয়ে যেসব ছাগু লেখালেখি করেছিল, সেগুলো এখন জাফর ইকবাল এর এই লেখা বেঁচে ক্ষমা ভিক্ষা করবে
=p~ =p~

১১| ১৫ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৪:০৩

Palol বলেছেন: কার সঙ্গে কী আর পান্তা ভাতে ঘী। একাত্তরে বাঙ্গালী একটা মহত লড়াইয়ে ব্যাপৃত ছিল, স্বপ্নজয়ী সেই লড়াইয়ে তাদের দেশ ত্যাগ করতে হয়েছিল। আর রোহিঙ্গারা সংখ্যালঘু হিসেবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন কিন্তু তাদের কোনো প্রতিরোধ লড়াইয়ের খবর আমরা জানি না। মার খেয়ে যারা পালান, অন্যের করুনা নিয়ে বাচতে চান, শুনতে যতই নির্মম হোক, তারা উচ্ছেদ হন। আমার মতে রোহিঙ্গারা সেদেশেই তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যতদিন না নামছেন, ততদিন তাদের বাচার আশা ক্রমেই ক্ষিণ হয়ে যাবে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে যা করছেন, তাতে একটা দুষিত আবাহাওয়া তৈরি করছেন। তারা নাকি একটা মিথ্যার ওপর দশ বছর থাকতে পারে। মৃত্যুর জন্য যারা প্রস্তুত বাচার অধিকার একমাত্র তাদেরই।

১৬ ই জুন, ২০১২ ভোর ৫:৪৩

কাকপাখি ২ বলেছেন: মৃত্যুর জন্য যারা প্রস্তুত বাচার অধিকার একমাত্র তাদেরই--- আপনি নিজে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত তো? নাইলে কিন্তু আপনার কথামত বাঁচার অধিকার আপনার নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.