নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পোশাক কারখানার মেধা-শ্রমিক । মেহনতী মানুষের জয় হোক । পড়তে ভাল লাগে, মূলত এই জন্যেই ব্লগে আসা-যাওয়া করি ।

কালমানব

বস্ত্র কারখানার পেশাজীবি

কালমানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ভালবাসা দিবসের কড়চা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৬

’’মাথা হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ যা কিনা প্রেমে পড়ার আগ পর্যন্ত দিনে চব্বিশ ঘন্টা, সপ্তাহে সাত দিন, বছরে তিনশ পয়ষট্টি দিন কাজ করে।’’
যদিও ব্যাপক সংখ্যক লোক ভালোবাসা দিবসে তাদের উথলে উঠা প্রেমের আবেগ এবং সৃষ্টিশীল ভাললাগার অনুভূতি প্রকাশের জন্য মুখিয়ে থাকে, আবার এমন লোকও আছেন যারা বস্তুটির নিরাবেগ প্রকাশ ভঙ্গিতে অভ্যস্ত । আজকাল লোকেরা তাদের জীবনসঙ্গী এবং ভালবাসার মানুষদের পাশাপাশি তাদের সন্তান, ভাইবোন, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের তাদের জীবনে ভি-ডে উদযাপন করতে দেখে কখনো আমোদিত, কখনো বিস্মিত হচ্ছে । আবার অসাবধানে এটি গোপন প্রেম-প্রকাশে কখনও কখনও কিছুটা অনাকাংখিত ও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে; সেটা খেয়াল রাখা দরকার । আমরা সেলফি তোলা, এফবি পোস্ট দেয়ার জন্য দিনটিকে যতটা ভালবাসি, আসলে কোন সম্পর্কের মানে ততটা কি হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারি ।
সোয়া ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশে ২৮% তরুন জনসংখ্যা মানে প্রায় পৌনে ৫ কোটি সবুজ মনের চাহিদার কারনে মোবাইল কোম্পানীগুলোর মেসেজ ব্যবসার পোয়াবারো । সেই সাথে তারা বারো রকমের বান্ডেল অফার, প্যাকেজ, মিনিট ইত্যকার পসরা নিয়ে হাজির, কেউ কেউ রেজিষ্ট্রেশন করলেই ফ্রি মিনিট অফার করছেন; এসবের মধ্য দিয়ে লাখ লাখ তরুন-তরুনীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে- ব্যক্তি সচেতনতার অভাব এবং যথার্থ রাষ্ট্রীয় নীতিমালার না থাকার কারনে ব্যাপক আকারে ’ডাটা প্রাইভেসী’ নষ্ট হচ্ছে অথবা ’ডাটা পাইরেসী’ হচ্ছে । যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত এ’বিষয়ে সঠিক ইন্টারভেনশন করা, আরো বেশী দেরী হয়ে যাওয়ার আগেই ।
এছাড়াও, অনেক অনেক নায়ক-গায়ক-ইউটিউবার সেলিব্রেটি, খেলোয়াড়, নেতা ও নেতার সহমত ভাই, চামচা থেকে পাতি নেতার পদে প্রমোশন প্রার্থী, অভিনেতা, কবি, লেখকও ভ্যালেন্টাইন্স ডে সম্পর্কে বিভিন্ন রকমের বানী ও ফেসবুক পোস্ট দিয়ে আম-জনতার মনের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছেন, যাদের বেশিরভাগই মজার ভালোবাসা দিবসের উদ্ধৃতি হিসাবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে এবং নিতে যাচ্ছে । এর মাধ্যমে শুরু হয়েছে নতুন দিনের ’মেসেজ সাহিত্য’ যার অনেকটাই আবার পদ্য, গদ্য অথবা নাটকের সংলাপ নির্ভর, স্বরচিত উদ্ভাবনী কাব্য-চিত্র-কথকতাও কম নয় ।
কোটেশন বার্তায় দেশীয় হুমায়ুন-নজরুল-রবি-জীবন-শরৎ-শীর্ষেন্দু-শক্তি-সুনীল-সমরেশ থেকে শুরু করে বিদেশী প্রাচীন সেক্সপিয়ার-ওয়ার্ডসওয়ার্থ-শেলী-কিটস-বাইরন থেকে অধুনা ঘরের মারজুক-পলাশ-মোশারফ-নিশু-রনি-মীর-পরান থেকে চার্লি শীন-জিম ক্যারি-উইল ফেরেল- জিমি ফ্যালন এবং জেরি সিনফেল্ডের মতো সাহিত্যিক, কথাশিল্পী ও প্রিয়ভাষীরা সকলেই জেনে-না জেনে ওয়াও থেকে একেবারে ওয়াক-থু পর্যন্ত কালজয়ী ভাষা এবং বাচনের মাধ্যমে দিনটিকে উজ্বল করেছেন। বিশ্ববিখ্যাতদের মধ্যে স্যার আইজ্যাক নিউটন, এপিজে আব্দূল কালাম, স্বামী বিবেকানন্দ, উইনস্টন চার্চিল, জর্জ ওয়াশিংটন, বারাক ওবামা, বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধী এমনকি স্বয়ং হিটলারও রেহাই পান নি কোটেশন-হান্টারদের হাত থেকে । সামনের দিকে এই ‘জরুরী মেসেজ-সাহিত্যের কাজে নিয়োজিত’ ব্যক্তিদের সংগ্রহের আরো প্রসার ঘটতে পারে আশা করা যায় । পাড়া-মহল্লায় হিট বার্তা লেখকদের বিশেষ খাতির-সমাদর দেখে আন্দাজ করতে পারি সামনে এই পেশাটির উজ্বল ভবিষ্যত আছে ।
আপনি ভ্যালেন্টাইনস ডে পোস্টে কী লিখবেন তা ঠিক করার চেষ্টা করছেন, এমন কিছু খুঁজছেন যা আপনার ভ্যালেন্টাইন্স ডে-বিরোধী আপনার বন্ধুকে হাসাতে বাধ্য করবে বা আপনি একটি নিখুঁত টিকটক ভিড্যু বানাতে ব্যস্ত আছেন, চেষ্টিত হন যাতে আপনার এই হাসিখুশি V-Day পোস্ট আইডিয়া হিট বাড়িয়ে দিয়ে ভার্চুয়াল বন্ধুদের জন্য অসীম আনন্দ নিয়ে আসতে পারে ।
বর্তমান প্রেমহীন-ভালবাসাহীন বিশ্বে দিকে দিকে যে রক্তের হোলীখেলা চলে,দেশে দেশে ধর্ম, দেশ ও জাতের নামে চরম মাত্রার পরমত অসহিষ্ণুতা দেখা যায় । নেতানিয়াহু বা বাইডেনের মতো নেতৃত্ব যারা স্ব-পরিচালিত নির্বিচার মানব-হত্যার দৃশ্য দেখে পরম নিশ্চিন্তে ডিনার সেরে সুখনিদ্রা দিয়ে জেগে উঠে আবার পরবর্তী দিনের কিলিং প্ল্যান নিয়ে ব্রেকফাস্টে জরুরী মিটিং করে আবার লাঞ্চ, ডিনার, রেস্ট, স্লিপ, সেক্স, ফান....সব ঠিক চলে- প্রেস ব্রিফিংয়ে বুড়ো ভ্যাম্পায়ারের ঠোটের কোনে সরু শ্বদন্ত মানব-শিশুর রক্ত পানের নেশায় ঝিঁকমিকিয়ে উঠে ।
হিব্রু হিস্ট্রিয়ান প্রফেসর ইউভাল নোয়া হারারী আমাদের জাত-পরিচয় করিয়ে দেন এভাবে, ‘'Tolerance is not a Sapiens trademark. In modern times, a small difference in skin color, dialect or religion has been enough to prompt one group of Sapiens to set about exterminating another group. Would ancient Sapiens have been more tolerant towards an entirely different human species?'' অসহিষ্ণু স্যাপিয়েন্স বা মানুষদের সংঘবদ্ধ, সুপরিকল্পিত আক্রমনের মুখে, বিকশিত হবার সমস্ত সম্ভাবনা সত্তেও- বুদ্ধিমান ও শক্তিশালী ডেনিসোভান, নিয়ান্ডারথাল মানবেরা এভাবেই পৃথীবির বুক থেকে হারিয়ে গিয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে ।
বাংলার শঙ্খচিল, শালিক, ধুসর নিসর্গের প্রেমে পড়া জোঁলো ধাতের এক কবি বলেন,
’’অদ্ভূত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথীবিতে আজ............
যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই-প্রীতি নেই-করুনার আলোড়ন নেই
পৃথীবি অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া ।’’
তো তাহলে এই ব্যাপার চলে আসছে অনেক আগে থেকেই, ভিন্ন সময়ে ভিন্ন রুপে ভিন্ন স্থানে; খুনে-হন্তারকদের মনে রাখা দরকার, ইতিহাসের পূনরাবৃত্তি হয় – সময়ের ব্যাপার মাত্র ।
যদি এমনি হয়, হিংসার সুপ্ত বীজ হৃদয়ে ধারন করে আমরা বিকাশমান আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে নতুন সময়ে প্রবেশ করি যখন এআই চালিত বিবিধ মারনাস্ত্র আরো নির্ভুল নিশানায় নতুন নিয়মে পরাক্রমশালী পক্ষেরি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে, নিখুতভাবে সমস্ত বিরোধীদের নি:শেষ করে দিয়ে শুধু এ্কটিমাত্র ধর্ম-বর্ন-জাতের লোকেরা পৃথীবিতে বেঁচে থাকবে; আরো ৭০ হাজার বছর পরে কোন এক ইতিহাসের মেধাবী অধ্যাপক গবেষনা করে বের করবেন যে এক সময়ে একাধিক ধর্ম, বর্ন, জাত-পাতের মানুষ দুনিয়াতে বেঁচে ছিল । অথবা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে তার অন্যায্য হুকুমদাতাকে বাহাত্তুর ঘন্টা দানা-পানি না খাইয়ে ওয়ার সিমুলেশনে রেখে আবার সিদ্ধান্ত রিভিউ করবে কিনা হ্যা/না জানতে চাইবে । কিংবা, অন্যায় নির্দেশদাতার কমান্ড অমান্য করে তাকে মানব-সভ্যতার বৈচিত্রের পক্ষে ক্ষতিকারক বিবেচনা করে গুলি করে মেরে ফেলবে । আমরা অপেক্ষা করছি, হয়তো বেশীদিন নয় ত্রিশ-চল্লিশ বছর বড়জোর ২১০০ সন শেষটা অব্দি ।
একসেন্ট্রিক জিওনিস্ট ফ্যালাসী ড্রাগসে অবশ এ্যাংলো-ইউরোপিয়ান হিউম্যান কনশাইন্স, সমৃদ্ধ নির্বোধ আরবদের নির্লিপ্ত উদাসীনতা, হঠকারী হামাসের গুলতি রকেট অথবা আমাদের মত মাগল-ম্যানদের অসহায় ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া; এর কোন কিছুই ইসরাইলী জঙ্গীবিমানের ছোড়া ক্লাস্টার বোমা, দানবীয় ট্যাংকের ধাবমান আক্রমন এবং সাব-মেশিনগান হাতে কিলার ট্রুপসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম নয় । স্বজন হারানো, আহত, শারীরিক-মানসিক চরম পর্যদুস্ত, খাদ্য, পানিসহ মৌলিক সুবিধাহীন, আশাহত, ভীতসন্ত্রস্ত প্যালেস্টাইনী নারী-শিশু-বৃদ্ধ-যুবা কাউকে নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ । তবুও, যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন এই ম্যাস-কিলিংয়ের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান তীব্র ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছি #StopGenocide@Gaza, #HumanLivesMatters, #MuslimsrHuman.
প্রফেশনাল প্লাটফর্ম থেকে ভালবাসা-বাসি শব্দটি যায় না, বরং যেটা সত্যি করে বলতে চাই সেটা হল; আজকের দিনটি উপলক্ষে এখানে আমার সাথে যুক্ত সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং নিখাদ শুভেচ্ছা জানাই ! আসুন, আমরা একসাথে কিছু ভাল কাজ করি, আমরা একে অপরকে সমর্থন করি; এবং সেটিই হবে উদযাপন করার মতো বিষয় !
অভিনন্দন ও অভিবাদন ! চরম ধৈর্যধারন করে যিনি আমার এই অখাদ্য লেখাটি পড়ে শেষ পর্যন্ত এতদুর এসেছেন- আপনার জীবন সত্যিকারের ভালবাসায় ভরে উঠুক, সবুরের মেওয়ায় ভরে উঠুক সোনালী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব । হ্যাপী ভ্যালেন্টাইনস ডে ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ সবাইকে ভালোবাসতে পারে না।
মানুষের ভালোবাসা পরিবার কেন্দ্রিক হয়ে গেছে।ভ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.