অধিকার, কামনা

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৩

একদা এক গ্রামে জ্যাক এবং জিল নামে এক দম্পতি বাস করতো। জ্যাক ছিলো সাধারন কৃষক এবং তার স্ত্রী জিল ছিলো খুব সাধারন একজন গৃহীনি। কিন্তু জিল এর ছিলো অসাধারন এক গুণ, তার ভুবন ভুলানো হাসি। সদা হাসিমাখা মুখেই যাকে দেখতো সবাই। জ্যাক সারাদিনের কঠিন শ্রমের পর একমাত্র তার স্ত্রীর হাসিই তাকে তার সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতো।



জ্যাক ও জিলের প্রতিবেশী রাও মুগ্ধ ছিলো জিলের হাসিতে । এবং সে সুবাদেই তাদের সাথে তাদের প্রতিবেশী দের সু-সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং যার ফলশ্রুতিতে পাড়া প্রতিবেশী দের নিয়ে তাদের সংসার খুব ভালোই চলে যাচ্ছিল।



তাদের ছোট গ্রামে একজন অতীথির আগমন ঘটে একদিন। তার নাম থাকে ইভান। সে জানতো না যে এই গ্রামে একজন মন ভোলানো হাসির অধিকারিণী আছে। ইভান গ্রামের পথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো। ঘুরতে ঘুরতে সে জ্যাক আর জিলের বাসার সামনে এসে দাঁড়ায় এবং সেখানে দেখতে পায় জিল তার স্বভাব সুলভ হাসি মাখা মুখে জানালার সামনে দাঁড়ানো। ইভান মুগ্ধ হয় এবং অনুভব করে এক ধরনের মোহনীয়তা। এভাবেই প্রতিদিন ইভান জিলের বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে এবং উপভোগ করে জিলের মোহনীয় হাসি।



একদিন দূর্ভাগ্য ক্রমে ইভান জ্যাক এর সামনে এসে পড়ে। কিন্তু জ্যাক কিছু মনে করে না। একই রকম ঘটনা প্রতিদিনই জ্যাক অবলোকন করে কিন্তু কোনও রকম প্রতিক্রিয়া দেখায় না। কিন্তু জ্যাক মনে মনে ইভান এর উপর ক্ষিপ্ত হতে থাকে।



এক সপ্তাহ পর...

ইভান সেই বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না। তার পর আরোও কিছু দিন সে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে জিলের হাসির খোজে। কিন্তু জিল কে আর দেখা যায় না।



হাসির টানে ইভান প্রতিদিনই জ্যাক জিলের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু হটাত একদিন দেখে জ্যাক জিলের বাসার ভেতর থেকে কয়েকজন গ্রাম্য পুলিশ জ্যাক এর হাতে হাতকড়া দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইভান কিছুই বুঝতে পারে না। ইভান দেখে জ্যাক এর চোখে জল এবং মুখে হাসি। কিছুই বুঝতে না পেরে অগত্যাই ইভান পুলিশের কাছে যায় যেখানে হাতকড়া পরিয়ে জ্যাক কে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।



জ্যাক একরকম উদ্ববিঘ্ন চোখে জ্যাকের দিকে তাকায়।



জ্যাক তখন ইভান কে উদ্দেশ্য করে বলে,



“জনাব, হাসিটা শুধুই আমার ছিলো, সেটা আমি নিজের করে নিয়ে নিয়েছি এখন, আমি এখন সেখানেই যাবার জন্যে প্রস্তুত যেখানে শুধু আমরা দুইজনই থাকবো। আমাদের মত করে। ”

৪ টি +১/-০