| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালবাসা মিথ্যা,
এই যে তুমি বল ভালবাসি
সে কথা মিথ্যা
ভালবাসা, মিথ্যা মিথ্য।
তুমি স্বপনে দেখতে পাও, সেও মিথ্যা
ভালবাসা মিথ্যা।
তুমি যদি আমার না হও,
সে কোন স্বপনে, তুমি আমাকে খুজে পাও?
তোমার স্বপন মিথ্যা,
ভালবাসা , মিথ্যা মিথ্যা।
কোরিয়ান মুভি "Jason's Heart" মুল গানের ভাবানুবাদ।
Han Hyo Joo - Love lies OST
সব ডিসেম্বরেই ভাবি বেড়াতে যাব, একটু ঘুরে আসলে সারা বছরের মনের ক্লান্তি দূর হবে, কিন্ত সব বারই ভেজাল বাধে। সবার ছুটি, সিডঊল মেলে না। বছর শেষে অনেক কাজ থাকে। খাজনা দেয়া, ইয়ার্ডে সার দেয়া, বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ইয়ারলি মেরামতের কাজ করা ইত্যাদি।
গতকাল সেরকমই একটা দিন গেল। ছুটি, ভাবলাম টুকটাক কাজ সেরে রাখি। সকাল বেলা সবাই যে যার কাজে চলে যাওয়ার পর , বেশ আয়েশ করে যেই মাত্র চায়ে চুমুক দিয়েছি। এখন মাত্র সকাল সাড়ে সাতটা বাজে। মোবাইলে টুং শব্দ শোনা গেল। মেসেজ "আপনার গাড়িতে অয়েল চেন্জ করতে হবে, আজই আমাদের গ্যারেজে চলে আসুন।" ভাবলাম চা টা খেয়ে গ্যারেজ থেকে ঘুরে আসি।
বাইরে ঠান্ডা ও ঝিরি ঝিরি বৃস্টি হচ্ছে। এমন দিনে কেউই বাইরে যেতে পছন্দ করে না। ভাবলাম একটি দরকারি কাজ, সেরে আসি। তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারলে, আবার চা নিয়ে বসা যাবে।
গ্যারেজ #১
-ভাই আমার অয়েল চেন্জ করতে হবে।
-দেখি চাবি দেন, - কুচকানো মুখটি প্রশস্ত হাসিতে ভড়িয়ে দিয়ে আশি পেড়োনো মহিলা বলল।
আধা ঘন্টা পরে একজন হাস্কি লম্বা লোক এসে বলল - "কাজ শেষ, তবে...."
সে আমাকে একটি লিস্ট ধরিয়ে দিল। এগুলো নাকি ঠিক করতেই হবে, তা না হলে গাড়ি চালানো সেফ না।
অগ্যতা এই বৃস্টি মাথায় করে শহরের অপেক্ষাকৃত ঘিন্জি এরিয়াতে গেলাম আরেকটি গ্যারেজে।
গ্যারেজ #২
-ভাই আমাকে এই লিস্টের সব কাজ করে দিতে হবে।
-আমাদের হাতে অনেক কাজ, ওয়েট করেন- ভিলেনের মত মুখ করে ইরানি মেকানিক আমাকে এটা বলল।
৪২ ফারেনহাইটে মোটা হুডিতে মাথা ঢেকে ভেজা কাকের মত আমি বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাইরে দাড়িয়ে রইলাম। সকালে চা ছাড়া কিছু খাওয়া হয়নি। আশে পাশে কাছাকাছি কিছু নেই।
অনেকক্ষণ পরে ইরানি মেকানিক এসে আমাকে ধমোকের সুরে বলল - "গাড়িতে অনেক সমস্যা, ওর কাছে সব কিছু নেই, সে আমাকে আরেকটি গ্যরেজে যেতে বলল"
গ্যারেজে #৩
একটি চিনা ভদ্রলোক হাসি হাসি মুখে আমাকে একটি বসার রুমে নিয়ে গেল। বেশ সুন্দর বসার জায়গা আছে, হিটার চালু আছে। আমার চাবি নিয়ে সে আমাকে এখানে অপেক্ষা করতে বলল। "শালা আজকের দিনটিই কুফা"। সকালে মোবাইলে ম্যাসেজ পড়ে , বের হয়ে পরা ঠিক হয়নি। এখন মনে হচ্ছে আমি একটি বিরাট বোকামি করেছি। বসে চারিদিকে তাকালাম। গৌতম বুদ্ধের একটি মুর্তির সামনে অনেক খাবার রাখা। দেখে , খিদেটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। এখন দুপুর পেরিয়ে যাচ্ছে , দেরটা বাজে। চিনা ভদ্রলোক এসে একটি বিশাল বিল ধরিয়ে দিল। আমার মাসিক বেতনের থেকে বিলের সংখ্যাটি বড়। মনে হল - আজ যে কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙ্গেছে। মনে পড়ল ঘুম থেকে উঠে সামুর একটি ব্লগ পরেছি। সেই লেখককে মনে মনে একটা কড়া গালি দিয়ে, আমি আমার ক্রেডিট কার্ড চিনা ভদ্রলোকের দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
তিন নম্বর গ্যারেজ থেকে বের হয়ে, একটি কোরিয়ান দোকানে গেলাম ক্ষুধা মেটাতে। এই চায়না পাড়াতে একটি সিনেমা হল আছে। সেখানে কোরিয়ান মুভি "Jason's Heart" দেখলাম। এরপর বাসায় এসে ছুটি ক্যানসেল করে দিলাম।ছুটিতে যদি এত কাজ করতেই হয়, তাহলে আমার সেই ছুটির দরকার নেই।
ছুটিও মিথ্যা।
--------------
ডিসেম্বের ২, সকাল ১০:৩১
এই লেখাটি দিনের বেলা লিখেছি। আমার আগের সব লেখাই রাতে লিখেছি। দিনের সাথে রাতের লেখার কি পার্থক্য আছে? সেটা বোঝার চেস্টা করছি। বলতে পারেন পরীক্ষামূলক লেখা।
©somewhere in net ltd.