নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঐতিহাসিক বা নাগরিক চেতনা ধারন করতে পারিনি ,অনেকটা আদিম ,বর্বরই রয়ে গেছি ।আমার লেখা আমার এই আদিম ,বর্বর জীবনের প্রতি বাঁকেরই প্রতিফলন

কাল্পনিক সত্ত্বা

মনোপ্রকাশ

কাল্পনিক সত্ত্বা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কেন বনখেকো হলাম

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:২০



তিনটা পাহাড় নেমে গ্যাছে খাড়া
সহস্র ইঞ্চি বিবর্তন বেয়ে নেমে গ্যালে
সোঁদা গিঞ্জি মস, তরু, ঘাস, লতায় ছেয়ে আছে যে ভূমি;
সেখান থেকে তুমি বামে তাকাও-
নীরবে দাঁড়িয়ে আছে প্রকান্ড কিন্তু অসহায় বৃক্ষ,
ডানে তাকাও-
তা ই দেখতে পাবে।
সে ভূমিতে তোমার আমার পদচিহ্ন না পড়লে,
আমাদের অনুসরণ করে বুলডোজার আসবে না,
আসবে না প্রকান্ড করাত,
পান চিবুতে চিবুতে ফিতা নিয়ে আসবে না করাতকলের কসাই।

তুমি যেও না সেখানে,
সেদিন তন্দ্রায় তোমাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম সেই গিরিখাতে,
পাশে বয়ে যাওয়া ঝর্নায় চেয়েছিলাম ডুব দিতে,
তোমার নগ্নতায় বুনো প্রকৃতি এঁকে যাক অস্তিত্বের চুম্বন-
চেয়েছিলাম-
মহুয়ার গন্ধে তোমার গন্ধ মিলে যাক
চেয়েছিলাম অনেক করে,
পাশ দিয়ে চলে যাওয়া সাপটা তোমার ঠোঁটের প্রশংসা করুক
তোমার দেহ ছুঁয়ে যাক ঝিরির তলদেশ
চেয়েছিলাম-
চোখ বন্ধ তোমার বক্ষ, স্তন, উরু, যোনিকে
ঢেকে রাখুক আদিম গুল্ম,
গাছের উপর থেকে পাখিরা ঝরাক শুকনো পাতা,
মমতা হয়ে আলতো করে পড়ুক তোমার শরীরজুড়ে
চেয়েছিলাম--

ওসব তুমি ভুলে যাও;
তন্দ্রায় আমি হত্যার কলা শিখিয়ে দিয়েছিলাম
ভুলে যাও প্লিজ!

অযথা ঘুমের ঘোরে আমিতো কত কিছুই বলি, বলতাম-
তোমাকে নিয়ে থাকতে চাইতাম গহীন বনের মাঝে কুঁড়েঘরে,
সে ঘরে থাকতো না নিত্যকার কোলাহল,
থাকতো না হয়ত তোমার প্রিয় সংগীত,
সে ঘরের মাচায় ঝুলত না তোমার সকল অব্যবহৃত প্রেম-
সময় আসময় তুমি হাত বুলিয়ে সান্তনা দিতে পারতে না তাদের--

কিন্তু গভীর রাতে ঘরের পাশে পানি খেতে আসা
ছোট্ট হরিণশাবকের অহেতুক অশ্রুসজল চোখ থাকত।
থাকত রাতে ভয় ধরানো পাখিদের অবাধ বিচরন,
ভোরে বুনো ফুল ফুটে ঘরময় ছড়িয়ে দিত আদিম স্নিগ্ধতা,
সন্ধ্যার সূর্য বলে যেত-
"ভালোবাসিস ওকে ঠিকমত,
যা চায়, যেভাবে চায় দিস কিন্তু,
সকালে এসে যেন ওকে হারাতে না দেখি"

ওসব তুমি ভুলে যাও প্লিজ,
আমি তন্দ্রায় বলে ফেলেছি গোপন নীলনকশা।

রাতের শেষভাগে খালি দ্বীপের সৈকতে সাগরকে ছুঁয়ে দিতে চেয়েছিলাম,
তোমার চোখের ঠিক নিচে এঁকে দিতে চেয়েছিলাম মানচিত্র,
যে মানচিত্র গেয়ে উঠবে অবৈধ স্বাধীনতার নিষিদ্ধ জাতীয় সংগীত;
ঠোঁটে খোদাই করে দিতে চেয়েছিলাম সার্বোভৌমত্বের কঠোর প্রতিজ্ঞা;
তোমার স্তনে লিখে দিতাম সংবিধান,
যার দোহাই দিয়ে বার বার সংশোধনের জন্য ছুটে যেতাম-
একাদশ, দ্বাদশ, ত্রয়োদশ সংশোধনী!

"এত বাহানা কেন করা লাগছে?
এসো?!"

যে প্রকৃতি হাতে, কোলে করে মানুষ করল আমাদের,
বয়ে নিয়ে আসলো লক্ষ বছর,
তার ঠিক মুখ বরাবর সালফিউরিক এসিড মারা মানুষ আমরা-
তুমিও বা এর ব্যাতিক্রম হবে কেন!

ভুলেও যেও না গিরিখাতে, গহীন জঙ্গলে বা পরিত্যক্ত দ্বীপের সৈকতে-
ওখানে আমি ওড়াব সন্ধির শাদা পতাকা।।


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৫৩

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: ভুলে যেও না গিরিখাতে, গহীন জঙ্গলে বা পরিত্যক্ত দ্বীপের সৈকতে
ওখানে আমি ওড়াব সন্ধির শাদা পতাকা ।।


এখানে এসে শিরশির করে উঠল ।

পুরো কবিতা জুড়ে কী নিদারুণ অনুভূতি !! খুব ভালো লাগল আপনার কবিতাটা । আপনি সত্যিই দারুণ লেখেন !!

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:০০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

সাধু, সাধু, সাধু...

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: মাশাআল্লাহ কী সুন্দর

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: বন জঙ্গল উজাড় করে মানুষ নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছে।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৯

বিজন রয় বলেছেন: কবিতাটি অনেক ভাল লেগেছে। কিন্তু নামটি কবিতায় সাথে গেল না!!

৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৪৩

কাল্পনিক সত্ত্বা বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.