নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রভাবপ্রতিপত্তি আজীবন থাকে না। প্রতারকরাও প্রতিরিত হয়। ক্ষমতাচ্যুত হলে ক্ষমতাসীনের কী হবে? কবর অথবা শ্মশানে প্রতিদিন মৃতসৎকার হয়। ©_Mohammed Abdulhaque [www.mohammedabdulhaque.com]

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক

অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্য প্রেম (উপন্যাস) পৃষ্টা ১৩-১৫

২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৭




‘নষ্টামি আর ভণ্ডামির জয়জয়কার বাজারে এখন সাধকের আকাল।’
'নিশারাতে নেশা করে বেশ্যার হাত ধরে বলে, মুনাসিব করলে মনোরঞ্জিত হবে।’
‘ভালোমানুষের বন্ধু ভালোমানুষ হয়। বদের বন্ধু হয় বদ। আমার নম্বর আমি জানি, সত্যাসত্য জেনেও নম্বর বদলাতে চাই। অবশেষে ঘাটপারে বাটপাড় ধরা পড়ছে।’
‘বাস্তবিক হয়ে আপনি বাস্তবতা দেখেছেন, দেখেছেন জীবনের ষোলোকলা। উপদিষ্ট হওয়ার জন্য আদিষ্ট হতে চাই।’
‘রঙচঙে দুনিয়া রঙ্গমঞ্চ হয়েছে, শক্তি সম্পদ এবং সন্তানের বড়াই মুখ্য বিষয়।’
‘জয় গুরু।’
‘ভাইরে, জীবনেও গরু রাখলি করিনি।’
‘আমি আসলে জানতে চেয়েছিলাম, এক কাহনে কী কী থাকে?’
‘কুড়ি গণ্ডা।’
‘ধুৎ! আপনিও আমার মতো সাধারণ মানুষ।’
‘অন্যরা আমাকে অসাধারণ বলে আর তুমি আমাকে সাধারণ বলছ, একটু বিশ্লেষণ করবে?’
‘নিশ্চয়।’
‘বিশ্লেষণ করলে বিভ্রান্তি দূর হবে।’
‘আপনি আসলেই অসাধারণ।’ বলে অনিল মাথা দুলালে গম্ভীররকন্ঠে লোক বলল, ‘কবরে শুয়েছি আজ অনেক বছর হয়, কেউ জানে না কবে কাঙাল বিদায় করবে। অবহেলায় নাজানি কবে অঙ্গল হবে? জানি না বিধায় মঙ্গলকামনা করি।’
‘বিশেষভাবে লক্ষ্য করেছি, গূঢ়তত্ত্বে ভাবপ্রকাশ করেন। আপনি এখনো জীবিত, তাইলে কবরের খবর বলছেন কেন? আমি যতটুকু জানি, ধর্মাত্মারা বিভ্রান্ত হলে এমন উক্তি ব্যক্ত করেন। আপনার কী হয়েছে?’
‘বার-দরিয়ায় যাওয়ার জন্য বার-বেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে বারয়িতার মুখোমুখি হয়ে বার-মুখো বারব্রত করেছিল। কবরের পারে দাঁড়িয়ে মড়ি মড়কের সাথে তর্কে করে মড়াকে বাটপাড়ের হাতে সঁপেছিল। পারত্রিক কল্যাণের জন্য উপবাস করে পারণার অভাবে বকব্রতীর মৃত্য হওয়ার পর থেকে পারতপক্ষে স্তন্যপায়ীর সামনে পরমান্ন রাখা নিষিদ্ধ হয়েছিল।’
‘এখন আসল বিষয় বুঝেছি, অন্তর্গূঢ় বেদনায় বিভ্রান্ত হয়ে আপনি নিগূঢ়তম প্রদেশ থেকে দৌড়ে এসেছেন?’
‘অন্তর্দশায় অন্তর্দশন করে আমি অন্তর্নিবিষ্ট শক্তির দাপটে অন্তর্বাষ্পে স্টিমরা চালাতে চেয়েছিলাম।’
‘ওরে বাসরে! আপনিতো মারাত্মক মানুষঅ’
‘হ্যাঁ, কৃচ্ছ্রবতে ব্যর্থ হয়ে সাধক হওয়ার জন্য শপৎ করেছি, মৃত্যুর পর আমার মৃতদেহের দিকে তাকিয়ে অন্যরা যেন বলে, স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভে সৃষ্টি পরিতুষ্ট হয়েছে।’ বলে লোক বুক ভরে শ্বাস টানলে আবেগপ্রবণ হয়ে অনিল বলল, ‘যা যেমন ছিল তা তেমন থাকলো, শুধু আমি আলাদা হলাম, দূর কোথাও যেতে পারব না তবে আয়নার অন্যপাশে লুকালাম। চাইলেও ছবিতে আমাকে দেখতে পাবে না, জোরচেষ্টা করলে প্রতিচ্ছবি অস্পষ্ট হবে।’
‘হায়রে হায়! আলাইর ডাকে সাড়া দিয়ে উদ্ভ্রান্ত আমি বিভ্রান্ত হয়ে বিভ্রাটে পড়েছি।’ বলে লোক মাথা নাড়লে অনিল বলল, ‘তুকতাক শুরু করলে ফাড়া কাটবে। এখন যা করার তা হলো, এক কাহনে কয় কড়া বলতে পারলে আপনাকে নিস্তার দেব নইলে বকবক করে মগজ ফেনা করার জন্য বান্ধব হব।’
‘ভাই গো, আপনার মত বালক আমার বান্ধব হলে আমি নির্বান্ধব হব।’ বলে লোকা মাথা নাড়লে অনিল ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে বলল, ‘ঠিকঠাক উত্তর দিলে আমন ধানের পান্তা খাওয়াব।’
‘কাহনের হিসাব কষতে হলে কাষ্ঠাসনে বসতে হবে।’
‘আমি অকষ্টবদ্ধ হয়েছি, বিধায় কষ্ট করে আমার পিঠে বসে হিসাব কষতে পারবেন। আমি ক্লিষ্ট হব না।’ বলে অনিল কপট হাসলে লোক কপাল কুঁচকে বলল, ‘এসব জানতে চাও কেন?’
‘পাকেপ্রকারে বিপাকে পড়েছি। হিসাব কষতে পারলে ওকে জব্দ করতে পারব নইলে ছিনিমিনি খেলার জন্য ছন্দবন্দে বন্দি করবে।’
‘এসব কী বলছেন?’
‘পরে সব বিশ্লেষণ করব আগে বলুন আপনি কে?’
‘কাহনে কয় কড় না আমার পরিচয় জানতে চাও?’
‘কড়ায়-গণ্ডায় বুঝালে উপকৃত হব।’ বলে অনিল মাথা দুলালে লোক বিরক্ত হয়ে বলল, ‘উঁফ, খালি ভেজাল। ঠিকাছে বুঝিয়ে দেব। চার আনায় পঁচিশ পয়সা এবং ষোল আনায় এক টাকা। কাহনের হিসাব মিলাতে হলে আদিকালে আমাদের দেশে ব্যবহৃত মুদ্রার মান জানতে হবে। আর তা হলো, দুই অর্দ্ধ-পয়সা বা তিন পাইয়ে এক পয়সা। দুই পয়সা বা চয় পাইয়ে এক ডাবল পয়সা। চার পয়সা বা দুই ডাবল পয়সায় এক আনা। দুই আনা বা চার ডাবল পয়সায় এক দুয়ানি। চার আনা বা দুই দুয়ানিয়ে এক সিকি। দুই সিকি বা চার দুয়ানিয়ে এক আধুলি। দুই আধুলি বা চার সিকি বা ষোল আনায় এক টাকা। ষোল টাকায় এক মোহর। অর্দ্ধ-পয়সা, পাই, পয়সা ও ডাবল পয়সা এই চারটি হল তাম্রমুদ্রা। দুয়ানি, সিকি, আধুলি ও টাকা হল রৌপ্যমুদ্রা। মোহর হল স্বর্ণমুদ্রা। এই তিন ধরনের মুদ্রা ছাড়াও কড়ির ব্যবহার মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত ছিল। চার কড়ায় এক গণ্ডা। পাঁচ গণ্ডায় এক বুড়ি বা এক পয়সা। চার বুড়ি বা এক পয়সায় এক পণ বা এক আনা। চার পণ বা এক আনায় এক চৌক। চার চৌক বা ষোল পণে এক টাকা বা এক কাহন। এক কাহনে এক হাজার দুই শো আশি কড়া। আরো বেশি নিখুঁত ভাবে বুঝতে চাইলে আমি বলছি তুমি হিসাব কষতে শুরু করো। বিশ বিন্দুতে এক ঘূণ। ষোল ঘূণে এক তিল। বিশ তিলে এক কাক। চার কাকে এক কড়া। আরেকটা মূলমান আছে। তিন যবে এক দন্তী। তিন দন্তীতে এক ক্রান্তি। তিন ক্রান্তিতে কড়া। আরো আছে।’
‘ওস্তাদ, আর লাগবে না। কাহনের পুরাতত্ত্ব জেনে আপনি সত্যি উদ্ভ্রান্ত হয়েছেন।’ বলে অনিল মাথা চুলকালে লোক বুক ভরে শ্বাস টেনে বলল, ‘আমার কাছে এক কাহন মণিমাণিক্য আছে। আমানতের জন্য আনীল ভাই এক পেটিকা দিয়েছিলেন। উনি হলেন রত্ন বিশেষজ্ঞ এবং জীবন্ত কিংবদন্তি। নীলগিরির গুপ্ত গুহার সংগুপ্ত নবরত্ন আহরণ করেছিলেন এবং আত্মশুদ্ধি করে সিদ্ধাই হয়েছেন। উনার মাঝে রাগ দ্বেষ মোহ নেই। আমি উনাকে কালপুরুষ ডাকি।’
‘এসব কী বলছেন?’
‘আমার কথা বিশ্বাস করতে হবে না। যাক, ভালো থেকো। আমি চললাম।’
‘দাঁড়ান ওস্তাত, আরো থোড়া তথ্য জানতে চাই। মোহন বাঁশি সম্বন্ধে কিছু বলুন।’
‘বাঁশির পিছনে বাইন মাছের মত লম্বা কাহিনী আছে, যা বলার এবং শোনার সময় আমাদের নেই।’
‘দয়া করে বলুন আমি শুনতে চাই।’
‘পরির প্রেমে পড়ে পরাভূত হয়েছি। পরির দেহে শুধু আগুন এবং পঞ্চভূতে আমার দেহ মজবুত হয়েছে। আমাদের মিলন কখনো হবে না।’
‘ওস্তাদ, ভূত পেত আমি ডরাই। অভয় দিলে যুগলমিলনের আয়োজন করব।’
‘তা তুমি কেমনে করবে?’


প্রথম প্রকোশ ২০/১২/২০১৭
Copyright © 2017 by Mohammed abdulhaque
ISBN-13: 978-1982087326

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: কত পাতার উপন্যাস?

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৪২

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: বই সাইজে ১১৫ পৃষ্টা। ডকুমেণ্ট ১২২ লাইন স্পেইস ১.৫। প্রতি পর্বে ডকুমেণ্টের ৩ পৃষ্টা করে দিচ্ছি। মাইর খাইব না তো? :(

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: না।
লিখেছেন তো ভালো।

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১৩

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: তাইলে চিন্তার কারণ নেই, আপনি এবং আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাব ইনশা আল্লাহ।

৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৩

নীল আকাশ বলেছেন: কাহনের হিসাব পড়ে প্রায় মাথা ঘুরে গেছে। হায় রে এত কঠিন জীবন। আগের আমলের মানুষ তো জানতাম সহজ সরল ছিল?

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১৪

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: ইতা আপনারে কেটায় কইছে? অভিধান কোন আমনে তৈরী হয়েছিল? যতসব যন্ত্রণা আগের আমলেই সৃষ্টি হয়েছিল আমরা তো যন্ত্র হয়েছি মাত্র।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.