নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রভাবপ্রতিপত্তি আজীবন থাকে না। প্রতারকরাও প্রতিরিত হয়। ক্ষমতাচ্যুত হলে ক্ষমতাসীনের কী হবে? কবর অথবা শ্মশানে প্রতিদিন মৃতসৎকার হয়। ©_Mohammed Abdulhaque [www.mohammedabdulhaque.com]

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক

অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্য প্রেম (উপন্যাস) পৃষ্টা ১৯-২১

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১১




‘তোমার সমস্যা কী?’
‘আমার সমস্যা হলো আমি স্বার্থান্ধ হতে চাই না। পারলে অন্যের উপকার করব কিন্তু আমার অপকার কেউ করলে আমি তার মাথায় বাড়ি মারি।’
‘তোমার মাথায় বুদ্ধি আছে। হাঁ করো, আক্কেল পেকেছে কি না দেখি?’
‘কেউ আমাকে বলেছিল, সাধনা শেষ হলে সাধকরা গন্তব্যে যায়। হায় রে হায়, ছলচ্ছল টলট্টল কলক্কল তরঙ্গা। কবিতা হল কবির মনের ভাব এবং কথা।’
‘মনে রেখো, কামানলে জ্বলে বঁধু অলাত হলে অন্তরে ছলাৎ ছলাৎ করে কামেচ্ছা।’
‘ওস্তাদ, একটা গল্প লিখতে চাই। আপনার সাথে দেখা হয়ে জবর ভালো হয়েছে, কিছুক্ষণ ক্যাঁচর-ম্যাচর করতে পারব। বিষণ্ণ মনকে যোগানো ভীষণ ঝামেলা। তাই মন উন্মনা হয়েছে। আপনার সাথে গপসপ করলে মন চনচনে হবে। আমি আসলে প্রহেলিকার প্রহ্লাদে একটু জর্জরিত। তিক্ত এবং অতিষ্ট হয়ে পলাশতলে যাচ্ছিলাম।’
‘আমি নিশ্চত হয়েছি এবং নিশ্চয়তার সাথে বলতে পারব, চৌরাস্তার মোড়ে ঘুরপাক খেয়ে নিশ্চয় ভুল পথে হেঁটে এত দূর এসেছি। মন বিমনা হলে পলকে সব ভুলে যাই। এখন পানতামাক আর চা-টা দিয়ে আপ্যায়ন করলে, গরমাগরম গিলে তাল লয় বোল ঠিক করে একটা গান গাইব।’
‘গায়ের জোরে ব্যাঙরা হাঁকা-হাঁকি করছে। হাঁকপাঁকের জন্য কাটি-গঙ্গায় জোয়ার আসে না। গলা ভিজাতে চাইলে খালি খালের জল শুকায়। বিধায় চাইলেও আমি গান গাইতে পারব না। রাতে ঠাণ্ডা লেগে গতকাল আমার গলা ভেঙেছে।’
‘পলাশ ডালে বসে কোকিলা লো, তুই আর কু ডাকিস না, তোর ডাক শুনে আলাই আসে, মনে শান্তি পাই না। ঝাঁড়ের বাঁশে বাঁশি বানাতে হবে, আহা, কাটি-গঙ্গার পারে বসে মনানন্দে বাঁশি বাজাব।’
‘আশকারা পেয়ে অবশেষে আশার নাও ভরসার সায়রে ভাসিয়েছি।’
‘মনে রেখ, দয়ায় আছে দায়, মায়ায় আছে দ্বন্দ্ব। সবার মনে লোভ আছে। কেউ যখন দিতে শুরু করে, তখন গ্রাহক লোভী হয় এবং আপনরা দূরে সরে। হায়! আমার আপনরা বসন্তের বাতাস ছিল, বিধায় আমি এখন পুবালি বাতাসের সাথে ভাব জমাই।’
‘ওস্তাদ গো, ঝাড়ুর বাড়ি কপালে পড়লে বাঘ দৌড়ে, আমি তো মানুষ।’
‘আনন্দ জন্মাধিকারে পড়ে এবং যৌবন লীলা আশিতে শুরু হয়।’
‘আহা, শরমে ভানুর গাল লাল হয়েছে। লাল পলাশের রসে ভানু রসিকা হয়েছে।’
‘গুণনসংক্রান্ত সূত্রে সমস্যাপূরণ হলেও ক্ষতিপূরণ অথবা বাসনাপূরণ হয়নি।’
‘ওস্তাদ, যাওয়ার সময় চা’র টাকা পরিশোধ করলে সব সমাধান হয়ে ঝামেলা চুকবে।’
‘ঠিকাছে।’ বলে আসিল দ্রুত চলে গেলে অনিল অস্বাভাবিক ভাবে অস্বস্তিবোধ করে। নীলগিরিতে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়। আস্তেধীরে হেঁটে বাড়ি যেয়ে ঘরবার করে। অদূরে দাঁড়িয়ে নুরি হাত এবং চোখের ইশারায় ডাকলে অনিল মাথা নাড়ে। তার চোখের দিকে তাকিয়ে নুরি বলল, ‘বিহরেরাগুনে আশার কলি ছাই হয় পুড়ে, নোনা জলে ভেসে চোখের স্বপ্ন ঝরে পড়ে, মনে থাকে মনের কথা বলি না কাউরে, বন্ধুর বিচ্ছেদে বুকের ভিতর ধড়ফড় করে।’
অনিল হাঁটতে শুরু করে গম্ভীরকণ্ঠে বলল, ‘নুরি, নীলা আমাকে ভালোবাসে। উচ্ছৃঙ্খল হলেও তুই আনন্দোচ্ছল। তুই হাসলে আমার বাগানে ফুল ফুটে। তুই বেজার হলে আমার কলিজা মোচড়ায়। তোর চোখের দিকে তাকালে আমি নীলাচলের আকাশ দেখতে পাই।’
নুরি আবেগপ্রবণ হয়ে কাঁধ ঝুলিয়ে বলল, ‘বাতাস বন্ধু, আমি তোকে ভালোবাসি।’
‘কবে তুই হবে ষোড়শী?’
‘গতকাল আমার বয়স বিশ হয়েছে।’
‘বুঝেছি, তুই আসলে অত্যন্ত রূপসী।’
‘আমাকে কথা দে?’
‘তোর দাদির সাথে কথা বলতে হবে।’
‘পারলে চা বানা দাদিকে আনতে যাচ্ছি।’ বলে নুরি দৌড়ে গেলে অনিল চোখ বুজে শিউরে ঘরে প্রবেশ করে দরজায় ছিটকিনি লাগায়। তার দাদি ঠুকে বললেন, ‘অনিল, তোর কী হয়েছে?’
‘আমার গলায় দা লাগাবার জন্য নুরি দৌড়ে গিয়েছে। আজ ওর দাদি আসলে ঝামেলা হবে। আমি আর বাড়ি আসব না।’
‘ঠিকাছে বেরিয়ে আয়, দাদি নাতনি আসলে আজ একহাত হবে।’
‘সত্যি বলছেন?’
‘বেরিয়ে আয়।’
অনিল বেরেয়ি তিনজনকে দেখে ধপাস করে বসে দুহাতে মাথা চেপে ধরে বলল, ‘এ কী সর্বনাশ করেছি?’
দাদিরা চলে গলে বিদ্রুপহেসে নুরি বলল, ‘তোর কী হয়েছে এমন করছিস কেন? আমার সাথে আয়, বাগিচায় বসে গপসপ করব।’
‘ঠিকাছে চল, আজ তোর সাথে গপসপ করব।’ বলে অনিল দাঁড়িয়ে নুরির সাথে বাগিচায় গেলে, তার চোখের দিকে তাকিয়ে নুরি পিছু হাঁটে। এমন সময় বাতাসে গানের সুর ভাসে, ‘আমি মরলে আমার বন্ধু আইব, তারে তোমরা কইয় গো বুঝাইয়া, তার বিরহে মরছি আমি ফুলের মধু খাইয়া। অবুঝ মনে বোঝ মানে না বন্ধু হইছে খেলুড়িয়া, অকালমরণ হইছে আমার তার প্রেমেতে মজিয়া। লোকে তারে রঙ্গচিঙ্গা ডাকে রঙ্গরসের কারবার করে সে হইছে রঙ্গিয়া, তারে বুকে পাওয়ার লাগি গো দু-হাত রাখি বাড়াইয়া।’
গান থামলে নুরি গুনগুন করে বাজুতে অশ্রু মুছে ফুলে হাত বুলিয়ে হাঁটে। অনিল ওর পাশে যেয়ে হাসার চেষ্ট করে বলল, ‘গাইন নিশ্চয় তোর বান্ধবী?’
‘বাতাস বন্ধু, আমি তোরে ভালোবাসি। তোর বিরহে আমার মৃত্যুর কারণ অমৃত হবে।’
‘চারপাশে তাকিয়ে দেখ, বাগিচায় বিষাক্ত ফুল নেই।’
‘মাত্রাতিরিক্ত হলে মৃত্যুর কারণ হয়।’
‘এখন তুই আমাকে বল, তোর ভালোবাসা কি মাত্রা অতিক্রম করেনি?’
‘মনে রাখিস বেজায়গায় বসলে বেজুত হতে হয়।’
‘আমি তোকে প্রশ্ন করেছিলাম।’
‘তোর প্রশ্নের উত্তর হলো, মাত্রা সবসময় নিয়ন্ত্রণে থাকে। আত্মাকে আয়ত্তে রাখা যায় না। বিরক্ত হলে সবকিছু অতিরিক্ত হয়। ভক্তরা ভক্তি করে। শত্রুরা করে বিভক্ত। আসক্ত এবং আসত্তির অর্থ আমি জানি না।’
‘কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগী কাষ্ঠাসন বসতে পারে না, তাদের বেশি কষ্ট হয়।’
‘বাতাস বন্ধু, তোর পেটের ভিতর নিশ্চয় গ্যাস্ট্রিক হয়েছে?’
‘তত্ত্বজ্ঞান উপলব্ধি করার শক্তি থাকলে এমন কথা বলতে না।’
‘কল্লার ভিতর এক ছটাক ঘিলু থাকলে পারমিতাকে কেউ তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে না।’
‘বিশেষভাবে বিদিত হয়ে বুঝেছি বিষয় আসলে সত্যি অতি প্রসিদ্ধ।’
‘বাতাস বন্ধু, আমি পাগলী হলে অন্যরা তোকে পাগল ডাকবে। তোর দাদি বলেছেন যেমন করে হোক তোর সাথে আমার বিয়ে হবে।’
‘ওরে সবর্নাশ, সবশেষে সর্বনাশ হয়েছে।’
‘আমার সামনে আয়, আজ তোকে চোখের দেখা দেখব।’

প্রথম প্রকোশ ২০/১২/২০১৭
Copyright © 2017 by Mohammed abdulhaque
ISBN-13: 978-1982087326

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার চত্রিক গুলো শুধু কথা বলে। কথার পিঠে কথা।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৬

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: তিন অথবা চারটা উপন্যাস এমন, ড্রামা এবং একশন নেই, সংলাপ বেশি।

যাক, আপনার খবর কী? আমাকে ঠাণ্ডা জেঁতেছে।

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৭

নজসু বলেছেন:




নুরীর দেখি বেতালা সাহস।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৭

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: এখন আপনার পরিচয় জানতে মন চাইছে!

বেতালা শব্দটা এখন প্রায় অচল, আমার এক উপন্যাসে আছে।

৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০৯

ময়ূরী বলেছেন: গভীর....

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৮

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.