নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।
চালক গাড়ি থামি সাধারণকণ্ঠে বলল, ‘সাহেব, আপনার বাসার সামনে এসেছি।’
ধন্যবাদ বলে টাকা হাতে দিয়ে অনিল দৌড়ে বাসার ভিতর যায়। চালক গাড়ি ঘুরিয়ে একটু দূরে যেয়ে বাঁয়ে থেমে বেরিয়ে হাত উঠিয়ে হেঁকে বলল, ‘আসিল, দৌড়ে আয়।’
গাড়ির পাশে যেয়ে ব্যস্তকণ্ঠে আসিল বলল, ‘ওস্তাদ, কী হয়েছে?’
‘অনিলকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছি। নীলার সাথে তার পরিচয় হয়েছে। উঠে সব, আজ কয়েকটা বিক্র করতে হবে। অদ্য অনেক টাকার প্রয়োজন হবে।’
‘এই বেশে গেলে জেলে গারদে চালান করবে।’
‘চিন্তার কারণ নেই, লাট সাজতে বেশি সময় লাগবে না।’
‘আপনি হলেন ওস্তাদ। যা বলবেন তা করব।’
‘সফলতা বাতাসে থাকে। যে বিশ্বাস করে সে সফল হয়। আমি সাফল্যমণ্ডিত হতে চাই।’
‘ওস্তাদ, সত্যি বিত্রস্ত হয়েছি।’
‘মনে রাখিস, আগুন লুকিয়ে রাখা যায় না এবং মা বাবার দোয়া দুনিয়ার সাথে ভাগ করলেও কমে না। আর কথা না বলে উঠে সব।’
আসিল উঠে বসে এবং দ্রুত চালিয়ে শহরে যেয়ে ভদ্রবেশ ধারণ করে দুজন নামিদামি অলঙ্কারের দোকানে প্রেবশ করে শান্তকন্ঠে আনীল বলল, ‘মালিক অথবা পরিচালকের সাথে কথা বলতে চাই।’
একজন অগ্রসর হয়ে বলল, ‘আমি মালিক। কী সাহায্য করব?’
ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে পকেট থেকে কালো মখমলের বোঁচকা বার করে মুখ খুলে আনীল বলল, ‘মণি মানিক আছে।’
‘চুরি করে নিয়ে এসছ নাকি?’
‘কে চোর তা আমরা জানি। কত দেবেন?’
‘চোরাই মাল আমি কিনি না।’
‘দুশ্চিন্তার কারণ নেই, আপনার সময়ের জন্য ধন্যবাদ।’
‘কোথা থেকে চুরি করেছ বলো নইলে পুলিশ ডাকব।’
‘ধন্যবাদ, আমিও পুলিশের সাথে কথা বলতে চাই। যথেষ্ট চুরি করেছ।’
‘কী?’
‘বললাম তো, যথেষ্ট চুরি করেছ।’
‘ঠিকাছে ঝামেলার প্রয়োজন নেই, কত চাও?’
‘ন্যায্য মূল্য দিলে যথেষ্ট আছে।’
‘আমার কাছে এসেছ কেন?’
‘আমি বিশ্বাস করি আপনি মণিমাণিক্য চিনেন।’
‘পাউরুটিতে আর মাখন লাগাতে হবে না। তুমি হয়তো জাননা আমি এখন সিদ্ধচালের ভাত খাই।’
‘আরো ভালো হয়েছে, লাভ বেশি পাব। এই নিন, পরে এসে টাকা নিয়ে যাব। ওদেরকে বলবেন সতর্কতার সাথে কাজ করার জন্য।’ বলে আনীল বোঁচকা দিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে বুক ভরে শ্বাস টেনে হাঁটতে শুরু করে বলল, ‘বেনিয়ার হাতে মণি নিরাপদ, জংলায় নিরাপদ বেনেবউ।’
‘ওস্তাদ, চোর পুলিশ আমি ডরাই। ঝাপটে ধরলে খামোখা মারধর করে।’
‘তুই হয়তো জানিস না, ঠাঠা পড়লে ঠিক মাথার মাঝখানে পড়ে।’
‘ওস্তাদ, সাপবিচ্ছুরা কামড়ায় এবং বিষাক্ত হলে রক্ত জমে মৃত্যু হয়। পুলিশরা মেরে আধমরা করে ছাড়ে। হাজত থেকে বেরিয়ে বাঁচতে মন চায় না, মরতেও ডর লাগে।’
‘চুরি করে ধরা খেয়েছিলে নাকি? আমি এখন সত্যি চিন্তিত হয়েছি।’
‘ঐ লোকটাকে একানার বিশ্বাস করি না।’
‘এই ব্যবসায় তার চেয়ে বিশ্বস্ত আর কেউ নেই। চাইলে প্রমাণ দিতে পারব।’
‘প্রমাণ চাইনি তো।’
‘তাইলে কথা না বলে হাঁটতে থাক।’
‘ওস্তাদ, একটা প্রশ্ন করতে চাই।’
‘কী জানতে চাস?’
‘Mission এবং adventure শব্দের বাংলা কী?’
‘বিশেষকার্যে বেরিয়েছিলাম, দুঃসাহসিক অভিযানে কার্যোদ্ধার হয়েছে।’
‘আমি বলতে চেয়েছিলাম, উনি আসলে সত্যি বিশ্বস্ত মানুষ।’
‘বাপ দাদার যথেষ্ট সম্মান সম্পদ আছে। নীলাকে ভালোবেসেছিলাম। একচালা ঘর চেয়েছিল, বানিয়ে দিতে পারিনি।’
‘চাইলে নীলগিরি কিনে শণের ঘর বানিয়ে দিতে পারবেন।’
‘আমি বলেছিলাম একচালা ঘর।’
‘খামোখা খালি ভুল করি। আমিও তা বলতে চেয়েছিলাম।’ বলে আসিল কপটহাসলে মাথা নেড়ে আনীল বলল, ‘তোকে যথেষ্ট দিয়েছিলাম, কী করেছিস?’
‘আমি আপনার সেবা করতে চাই।’
‘অনেকে বলে আমি অভিশপ্ত।’
‘ঠাঠা রোদে মাটি তাতালে খালি পায়ে হাঁটা যায় না।’
‘কী বলতে চাস?’
‘ঠাট বজায় রেখে সবাই হাঁটতে চায়। সুন্দরীরা খামোখা কোমর মোড়ায় কেন? গুরু গো! মোচড়ামুচড়ি আমি ডরাই।’
‘তোকে কতদিন বলেছি, ঠাঠা পড়লে ঠিক মাথার মাঝখানে পড়ে।’
‘ভুল হয়েছে ওস্তাদ ক্ষমা করুন। ওস্তাদ, আরেকটা প্রশ্ন করতে চাই।’
‘কেমনে কী করেছিলাম তা জানতে চাস এই তো?’
‘জি।’
‘এবার তার স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করেছিলাম। পরের বার সফল হব না। এখন সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। অনিল গুপ্তমন্ত্র জানে এবং নীলা তাকে বিশ্বাস করেছে।’
‘তাকে নিয়ে যাবেন কেমন? নীলগিরিতে কেউ তাকে যেতে দেবেন না। তার দাদিজান আন্দাজ করলে আমাদের গলায় দা লাগবেন। আর নুরি! ওরে বাপরে বাপ, টের পেলে ঢিল মেরে কল্লা ফাটাবে।’
‘দাদিসুদ্ধ নিয়ে যাব।’
‘গুরু গো, ও গুরু তা কেমনে করবেন?’
‘তা আমি করব, তোকে যা করতে হবে তা হলো অনিলের মোবাইল থেকে নীলাকে ফোন করে বলতে হবে দাদা দাদিকে নিমন্ত্রণ করার জন্য।’
‘আমি পারব না। আমার কান ছিড়ে ফেলবেন।’
‘ভয়ের কারণ নেই, নীলার মোবাইল থেকে আমি তাকে ফোন করেছিলাম। বুড়া বুড়ি বেড়াতে পছন্দ করেন। বুড়ি আমাকে বেয়াড়া ওরম্বা ডেকেছিলেন। বুড়ির কারণ নীলাকে বিয়ে করতে পারিনি। নাফাখুমে ফর্জ গোসাল করালে বুড়ির বড়াই কমবে।’
‘গুরু গো, কোন বুড়ির কথা বলছেন? ও মাই গো।’
‘অনিলের দাদি আমাকে দুই চোখে দেখতে পারেন না। বুড়া সত্যি ভদ্রলোক। কেন যে অভদ্রমহিলাকে বিয়ে করে বেড়াজালে বেড়া খেয়েছেন। বিশেষকার্য এবং অভিযান উনি খুব পছন্দ করেন। অসম্ভব কার্যোদ্ধারের জন্য নুরি এবং বুড়িকে ফুসলাতে হবে।’
‘নীলার মোবাইল থেকে ফোন করে কী বলতে হবে?’
‘বুড়াবুড়িকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার জন্য। বুড়ি সত্যি খুব খুশি হবেন।’
‘নীলগিরিতে নিয়ে যাবেন কেমনে?’
‘তা আমি করব, তোকে বললে তোর আরামের ঘুম হারাম হবে।’
‘গুরু, এখনো বিয়ে করিনি। অবলা বউর জন্য এক’ছা হার বানিয়েছিলাম। ওর গলায় না দিয়ে মরতে চাই না।’
‘ভয়ের কারণ নেই, সব ঠিকঠাক আছে।’
‘আমার সব বেঠিক হওয়ার কারণ, আরেক নীলা কোথায় পাব?’
‘আছে, অনিলের সহাধ্যায়িনী নীলাচল থাকে। পকেটমারকে টাকা দিয়ে ওর মোবাইল চুরি করিয়েছিলাম।’
‘জয়োস্ত, গুরুর জয় হোক। গুরু, গুরুমা এখন কোথায়?’
‘ওর সাথে পরে দেখা করব। এখন গেলে ল্যাং মেরে ল্যাংড়া করবে।’
‘গুরু, লোকে বলে চেলা ছেলের তুল্য।’
‘তুই আমাকে কুমন্ত্রণা দিয়েছিলে, বেশি কাঁইমাই করলে কার্যোদ্ধার হবে না। চল, অনিলকে বার্তা দিতে হবে নইলে সব পণ্ড হবে।’
‘কখন বার্তা দেব?’
‘এখন না, কাল সকাল তার আব্বা আম্মা ছুটি কাটাবার জন্য বিদেশ যাবেন। তাকে সাথে নেবেন না। তার সাথে থাকার জন্য দাদা দাদি আসবেন নুরিও আসবে।’
‘গুরু গো, ডরে ভয়ে হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে।’
প্রথম প্রকাশ ২০/১২/২০১৭
Copyright © 2017 by Mohammed abdulhaque
ISBN-13: 978-1982087326
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৮
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: দেশি পাউরুটি আসলে খুব মজার।
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
এই অংশটুকু শুরু থেকে কিছুটা সহজ হয়েছে; আজকাল, সবকিছু সহজভাবে লিখছেন সবাই।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২২
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমার সমস্যা হয়েছিল ম্যাক কিনার পর থেকে। আইম্যাক ছিল, অভিধান শব্দকোষ খুলা থাকতো। বানানে আমি খুব কাচা। যেমন এই কাচা বানান ভুল না শুদ্ধ আমি জানি না। কাচা বানান ভুল, অভিধান দেখেছি কাঁচা। অভিধান খুলাই থাকে। প্রথম সহজ ভাষায় লিখতাম। পরে লজ্জিত হয়ে শব্দকোষ কিনেছিলাম এবং ইংলিসে লেখা শুরু করার পর নিজেকে অনুবাদ করে দেখলাম অভিধান ব্যবহার করলে বাংলায় নতুন কিছু করতে পারব। জানি না কিছু হয়েছে কি না? আমার কাছে সব মিলিয়ে ১৩ খান অভিধান ছিল।
৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২২
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: নাফাখুম কোথায়? যেখানে বুড়িকে ফর্জ গোসল করাতে চান। আমাদের বান্দরবানে একটা ঝর্ণা আছে নাফাখুম নামে, ওটা নয় তো?
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৪
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: জি ওটাই। আপনাদের ছবি এবং ভ্রমণ থেকে পট এবং উপাদান পাই। এমনকি অনেক সংলাপ আছে আপনাদের সাথে যখন মন্তব্য বিনিময় হয় তা পরে কবিতা অথবা সংলাপ হয়।
আজকে পেইজবুক একটা পোস্ট করেছি ওটা কিন্তু ব্লগের মন্তব্য থেকে।
৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বই মেলায় আনতে পারেন।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০৯
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: মেলায় হয়তো আমার বই কখনো যাবে না। আটারো খান আমাজনে প্রকাশ করেছি এবং ইবই বানিয়ে নিজের সাইটে রেখেছি। ছাওয়ালকালে অনেক শখ এবং আশা ছিল এখন বুড়া হয়ে বাস্তিবক হয়েছি, দলের দালালি না করলে কিচ্ছু হয় না দেশে।
৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৩১
ময়ূরী বলেছেন: দারুণ লিখেছেন।।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৮
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আপনারা পড়লে আমি মনে শান্তি পাই এবং আপনাদের জন্য দোয়া করি।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩১
নিভৃতা বলেছেন: পড়ার ইচ্ছে আছে। কিন্তু এখনও শুরুই করতে পারিনি। কত পর্ব চলছে?
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৫
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: ডকুমেণ্টে ১২২ পৃষ্টা, প্রতি পর্বে ৪ পৃষ্টা করে দিচ্ছি এখন।
আগ্রহের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। পরে ইবই লিংক দেবে। আমার সাইটে আরো ১৮টা বই আছে একটা হলো কবিতার বই।
আপনার গল্প পড়ছি ভালো লাগছে।
৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৪
নিভৃতা বলেছেন: অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৭
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: কৃতজ্ঞতা
৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: দারুণ, মনোমুগ্ধকারী ভাবনা, শুভেচ্ছা সতত ।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৭
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই পর্ব পরে মনে পড়লো- অনেক দিন পাউরুটি মাখন দিয়ে খাই না।