নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি, ঔষধ ব্যবসায়ী স্যামসন এইচ চৌধুরীর ১ম মত্যুবার্ষিকী আজঃ স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান, সিআইপি ব্যবসায়ীর মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৭



বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি এইচ চৌধুরীর গত বছর আজকের দিনে সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মৃত্যুর পর পত্র-পত্রিকায় তাঁর ওপর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা ও স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর মৃত্যুদিবসে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।



স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯২৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ই এইচ চৌধুরী ও মা লতিকা চৌধুরী। ১৯৩০-৪০ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতার বিষ্ণুপুর উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এখান থেকেই তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন।



(The ancestral house of the late Samson H Chowdhury in Ataikula in Pabna)

ভারত থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে ফিরে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাবনার আতাইকুলা গ্রামে। স্যামসন এইচ চৌধুরীর বাবা ছিলেন আউটডোর ডিসপেনসারির মেডিক্যাল অফিসার। বাবার পেশার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই ঔষুধ নিয়ে তিনি নাড়াচাড়া করেছেন।



১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে চিন্তাভাবনা করে তিনি 'ফার্মেসি'কেই ব্যবসায় হিসেবে বেছে নিলেন; গ্রামের বাজারে দিলেন ছোট একটি দোকান। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে যুক্তফ্রন্ট সরকার তখন ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে পেয়ে যান ওষুধ কারখানা স্থাপনের একটা লাইসেন্স। তিনিসহ আরো তিন বন্ধুর সঙ্গে মিলে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকায় পাবনায় কারখানা স্থাপন করলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। স্কয়ারের নামকরণও করা হয়েছিল চার বন্ধুর প্রতিষ্ঠান হিসেবে। তাই এর লোগোও তাই বর্গাকৃতির। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের স্থাপিত স্কয়ার শিল্পগোষ্ঠীর অধীনে ১৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার কর্মী কাজ করছেন।



স্কয়ার গ্রুপ ২০০৯-১০ অর্থবৎসরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সেরা করাদাতা নির্বাচিত হয়েছিলো। স্যামসন এইচ চৌধুরী ২০০৯-১০ অর্থবছরে ব্যক্তি করদাতা হিসেবে আয়কর দিয়েছেন এক কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার ১৮১ টাকা। তাঁর ছেলে তপন চৌধুরী আয়কর দিয়েছেন এক কোটি তিন লাখ ৪৩ হাজার ৩৫ টাকা। অঞ্জন চৌধুরী আয়কর দিয়েছেন ৭৭ লাখ ১২ হাজার ৮৩২ টাকা। স্যামুয়েল এস চৌধুরী ৭৬ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮৪ টাকা আয়কর দিয়েছেন। ব্যক্তি করদাতা হিসেবে তাঁরা রাজশাহী কর অঞ্চলের আওতায় পাবনা কর সার্কেল-১-এ কর দিয়েছেন।



শুধু ঔষুধেই নয় দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে স্যামসন এইচ চৌধুরী বাংলাদেশের শিল্প, কৃষি, সেবা, আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করেছেন। অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। এই শিল্প গ্রুপের ব্যবসায় সম্প্রসারিত হয়েছে প্রসাধনসামগ্রী, টেক্সটাইল, পোশাক তৈরী, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা এমনকি মিডিয়াতেও। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙার চেয়ারম্যান ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। ব্যাক্তিগত জীবনে অত্যন্ত নীতিনিষ্ঠ ও বিনয়ী ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। তাঁর স্ত্রীর নাম অনিতা চৌধুরী। বর্ণিল কর্মময় জীবনের অধিকারী স্যামসন চৌধুরী তিন ছেলের জনক। তাঁর ছেলে তপন চৌধুরী, অঞ্জন চৌধুরী ও স্যামুয়েল চৌধুরী ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।



দেশের বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জাতির আয় বৃদ্ধিসহ সামগ্রিকভাবে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য কর্মময় জীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। দ্য ডেইলি স্টার এবং ডিএইচএল প্রদত্ত বিজনেসম্যান অব দ্য ইয়ার (২০০০), আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের (অ্যামচেম) বিজনেস এক্সিকিউটিভ অব দ্য ইয়ার (১৯৯৮) উল্লেখ যোগ্য। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার ৪২ জন ব্যক্তিকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সিআইপি (শিল্প) নির্বাচন করে। তন্মধ্যে বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর ১৮ জনের মধ্যে একজন ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী।



বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্যামসন চৌধুরী টিআইবির প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি। স্কয়ার গ্রুপ্রের চেয়ারম্যন ছাড়াও স্যামসন চৌধুরী মেট্রোপলিটন চেম্বার, ওষুধ শিল্প সমিতি এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিমিটেড কোম্পানিজের সভাপতিও ছিলেন। যুক্ত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সঙ্গে। ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান চেম্বার অব কমার্সের সদস্য। এ ছাড়াও চেয়ারম্যান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ, চেয়ারম্যান, এস্ট্রাস লিমিটেড, সম্মানিত সদস্য, কুর্মিটোলা গল্‌ফ ক্লাব, সাবেক চেয়ারম্যান, মাইক্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস (মাইডাস), চেয়ারম্যান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, ২০০৪-২০০৭, সভাপতি, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি, ঢাকা (১৯৯৬-১৯৯৭), বাংলাদেশ, সাবেক পরিচালক, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), সদস্য, নির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ ফ্রান্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি, পরিচালক, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ, চেয়ারম্যান, সেন্ট্রাল ডিপোজিটোরি এজেন্সি অব বাংলাদেশ, সদস্য, উপদেষ্টা, কমিটি অব দ্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ড্রাস্ট্রিজ। ১৯৮৫ সাল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ব্যাপ্টিস্ট ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্সের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন ন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপ অব বাংলাদেশের সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটির আজীবন সদস্য ছিলেন।



দেশের অন্যতম উদ্যোক্তার ওষুধ শিল্পের অগ্রনায়ক, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙার চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে বার্ধক্যজনিত রোগে সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সূত্রঃ

১। দৈনিক প্রথম আলোঃ পরলোকে শিল্পপতি স্যামসন এইচ চৌধুরী

২। দৈনিক কালের কণ্ঠঃ সেরা করদাতা পরিবার 'স্কয়ার'

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.