নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ঐতিহাসিক ৬৯’র গনঅভ্যুত্থান দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের এক তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক। বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কত লক্ষ প্রান উৎসর্গ করতে হয়েছে, কত আন্দোলন করতে হয়েছে বাঙালী জাতিকে, তার সঠিক হিসাব করা সম্ভব নয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঔপনিবেশিক পাকিস্তানী শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালী জাতিকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং এন এস এফের বিদ্রোহী গ্রুপ মিলে ১১দফা প্রনয়ন করে এবং বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলে । ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারী কর্মসূচি ঘোষনা করে। এতে স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্রতর হয়।
(শহীদ আসাদ)
শহীদ আসাদ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুনঃ
আইয়ুবশাহী পতন আন্দোলনের পথিকৃৎ শহীদ ছাত্রনেতা আসাদ
পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আন্দোলনকে নস্যাত করার হীন উদ্দেশ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে বঙ্গবন্ধুকে বন্দী করা হয়। এ মামলার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা দুর্বার ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন গড়ে তোলে। কিন্তু ভীত সন্ত্রস্ত সরকার এর আগেই সভাস্থলের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল সহ রাজপথে নেমে আসে। পাকিস্তানী সামরিক শাসন উৎখাতের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের এ দিনে সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্যআইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। সেনাবাহিনী নামানো হয় শহরে। তারা পাখিরমতো গুলি করে সংগ্রামী মানুষজনকে একের পর এক হত্যা করা হয়।
এ মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হন নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান। কিন্তু এতো কিছুর পরও বীর বাঙালী রাজপথ থেকে এক চুল সরে দাঁড়ায়নি। হাজারো ছাত্র-জনতা আসাদের মৃত্যুতে একত্রিত হয়ে পুণরায় মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। আসাদের রক্তমাখা সার্ট সেদিন পতাকায় পরিনত হেয়েছিল।
কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ কমিটি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারী সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে পুলিশ পুণরায় গুলিবর্ষণ করে। ফলশ্রুতিস্বরূপ আসাদের মৃত্যুতে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান সরকার দু'মাসের জন্য ১৪৪-ধারা আইনপ্রয়োগ স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়।
শহীদ আসাদের আত্মদানের পর ২১ থেকে ২৪শে জানুয়ারী পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষ রাজপথে নেমে পড়ে। ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয় এই দিনে। মানুষের অবিস্মরণীয জাগরনের মুখে ফিল্ড মার্শাল আইউব খান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর মোনায়েম খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
জনতার রুদ্ররোষ এবং গণঅভ্যুত্থানের জোয়ারে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকলকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পতন ঘটে আইয়ুবের স্বৈরতন্ত্রের। শোষিত মানুষের পৰে মুক্তিকামী ছাত্রসমাজের ১১ দফা কর্মসূচীর ভিত্তিতে এই অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালীর মুক্তির সনদ ৬ দফা, পরবর্তীতে ১১ দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে রক্তাক্ত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালী জাতি অর্জন করে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা। অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আজও দেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।
আজ ঐতিহাসিক ৬৯’র গনঅভ্যুত্থান দিবস। ঐতিহাসিক এ দিনটিকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০০
কোবিদ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবা + জন্য
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৪
াহো বলেছেন: +