নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাগানের কালজয়ী সুরস্রষ্টা, অবিস্মরণীয় সুরের আগুন যিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সমগ্র বাংলায়, বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে সমগ্র উপমহাদেশে সেই কিংবদন্তী শিল্পীর নাম হেমন্ত মুখপাধ্যায়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় একজন খ্যাতিমান বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক এবং প্রযোজক। তিনি হিন্দি সঙ্গীত জগৎ এ তিনি হেমন্ত কুমার নামে প্রসিদ্ধ। আজ এই খ্যাতিমান সঙ্গীত শিল্পীর ৯৩তম জন্ম দিন। ১৯২০ সালের ১৬ জুন তিনি ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। শিল্পীর জন্মদিনে আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।
বিংশ শতাব্দির প্রথমার্ধে হেমন্তকুমারের পরিবার কলকাতায় আসেন। হেমন্ত মুখপাধ্যায় ১৯২০ সালের ১৬ জুন ভারতের পবিত্র শহর বারাণসীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার ছোটবেলা কাটে তিন ভাই এক বোন নীলিমার সাথে।বড় ভাই তারাজ্যোতি ছোটগল্প লিখতেন। ছোটভাই , অমল মুখপাধ্যায় কিছু বাংলা ছায়াছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন এবং ১৯৬০ এর দশকে কিছু গান ও গেয়েছিলেন। হেমন্ত ভবানিপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনের ছাত্র ছিলেন। ইন্টারমিডিয়েট পাস করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান। কিন্তু, তিনি সঙ্গীতের জন্য আপন শিক্ষা ত্যাগ করেন। সেখানেই তার বাল্যবন্ধু ও কবি সুভাষ মুখপাধ্যায়ের সাথে পরিচয়। প্রথমে তাঁর সাহিত্যিক হবার ইচ্ছে ছিল। কিছুদিন, তিনি দেশএর জন্যে লেখেনও।
কিন্তু যাঁর হবার কথা সঙ্গীতশিল্পী, তিনি কি অন্য কোনো কাজে মন বসাতে পারেন! ১৯৩৩ সালে শৈলেশ দত্তগুপ্তের সহযোগিতায় ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’র জন্য প্রথম গান ‘আমার গানেতে এল নবরূপী চিরন্তন’ রেকর্ড করেন হেমন্ত। কিন্তু গানটি সেভাবে জনপ্রিয়তা পায়নি। শেষতক ১৯৩৭ সাল থেকে তিনি পুরোপুরি প্রবেশ করেন সঙ্গীত জগতে। এই বছর তিনি নরেশ ভট্টাচার্যের কথা এবং শৈলেশ দত্তগুপ্তের সুরে গ্রামোফোন কোম্পানী কলম্বিয়ার জন্য ‘জানিতে যদিগো তুমি’ এবং ‘বলো গো তুমি মোরে’ গান দুটি রেকর্ড করেন। বাল্যবন্ধু কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাকে গান গাইবার জন্য ইডেন গার্ডেনের স্টুডিওতেও নিয়ে গিয়েছিলেন একবার। এরপর থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরই তিনি ‘গ্রামোফোন কোম্পানী অফ ইন্ডিয়া’র জন্য গান রেকর্ড করেছেন। ১৯৪০ সালে, সঙ্গীত পরিচালক কমল দাসগুপ্ত, হেমন্তকে দিয়ে, ফাইয়াজ হাস্মির কথায়ে "কিতনা দুখ ভুলায়া তুমনে" ও "ও প্রীত নিভানেভালি" গাওয়ালেন।
১৯৪১ সালে এই শিল্পী তাঁর প্লে-ব্যাক সংগীত জীবন শুরু করেন ‘নিমাই সন্ন্যাস’ ছবির মাধ্যমে। এরপর থেকেই তিনি ভারতীয় বাংলা সিনেমার একজন অপরিহার্য শিল্পী হিসেবে পরিগণিত হন। ফলে দর্শক-শ্রোতা একের পর এক কালজয়ী বাংলা গান উপহার পেয়েছেন। ১৯৪৪ সালে ‘ইরাদা’ ছবিতে প্লে-ব্যাক করে হিন্দী গানের শ্রোতাদেরকেও নিজের জাত চিনিয়েছিলেন হেমন্ত। একই বছরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রথম নিজের কম্পোজিশনে দুটো গান করেন। গান দুটির গীতিকার ছিলেন অমিয় বাগচী।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড বের করেছিলেন। তবে তিনি প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছিলেন ১৯৪৪ সালে ‘প্রিয় বান্ধবী’ সিনেমাতে। এছাড়াও কলম্বিয়ার লেবেলে রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড বের করেছিলেন তিনি। তবে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে হেমন্ত আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৪৭ সালে ‘অভিযাত্রী’ সিনেমার মাধ্যমে।
পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকেই হেমন্ত নিজেকে সম্ভাবনাময় শিল্পী এবং কম্পোজার হিসেবে সবার নজর কাড়েন। সেসময় তিনিই ছিলেন একমাত্র পুরুষ কণ্ঠশিল্পী যিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে কাজ করেছিলেন। ১৯৫৪ সালে বলিউডি সিনেমা ‘নাগিন’ এর সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তিনি। এই ছবির গান সেসময় দুই বছর ধরে টপচার্টের শীর্ষে অবস্থান করেছিল এবং এই সিনেমার জন্যই হেমন্ত ১৯৫৫ সালে ‘ফিল্মফেয়ার বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর’ এর পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি বাংলা সিনেমা ‘শাপমোচন’ এর সঙ্গীত পরিচালনা করেন। এই ছবিতে তিনি উত্তম কুমারের জন্য চারটি গান করেছিলেন। তারপর থেকেই যেন উত্তম কুমারের ছবি মানেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান। পরবর্তী সময়ে এই জুটি পেয়েছিল অসম্ভব জনপ্রিয়তা।
(বেলা মুখপাধ্যায়, গীতা দত্ত, হেমন্ত মুখপাধ্যায়, শ্রী অরূপ, স্বরোজ সেন গুপ্ত)
ব্যাক্তিগত জীবনে ১৯৪৫ সালে হেমন্ত মুখপাধ্যায়ের সাথে বেলা মুখপাধ্যায়ের বিবাহ হয়। ১৯৪৩-এ বাংলা ছায়াছবি, কাশিনাথে, সঙ্গীত পরিচালক পঙ্কজ মল্লিক বেলাকে দিয়ে কিছু জনপ্রিয় গান গাইয়েছিলেন, কিন্তু বিবাহের পর তিনি আর সঙ্গীত জগৎ এ প্রবেশ করলেন না। হেমন্তর দুই সন্তান - পুত্র, জয়ন্ত, ও কন্যা, রাণু। রাণু মুখপাধ্যায় ১৯৬০-৭০ এ গান গাইতেন।
‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে, আমি যদি আর নাই আসি হেথা ফিরে’ মৃত্যুর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ঢাকায় এসে এই গানটি শুনিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ১৯৮৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রথিতযশা এই শিল্পীর জীবনাবসান ঘটে। তবে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে যে এই শিল্পীর স্বরলিপি চিরদিনের জন্য খোদাই করা হয়ে গেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভারতীয় বাংলা ও হিন্দি কন্ঠশিল্পি, সঙ্গীত পরিচালক এবং প্রযোজক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের আজ ৯৩তম জন্মদিন। শিল্পীর জন্মদিনে আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কালজয়ী কিছু গানঃ
১। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান
২। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বাংলা ছবির গান
আশা করি হেমন্তু মুখোপাধ্যায়ের শ্রোতাদের ভালো লাগবে। সবাইকে শুভেচ্ছা
১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭
কোবিদ বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ
কিংবদন্তি এই শিল্পীর জন্মদিনে
শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪২
আরজু পনি বলেছেন:
আমি প্রতিদিন ব্লগে অপেক্ষা করি দিনের শুরুতে আপনার কাছ থেকে একটা বিশেষ পোস্ট পাওয়ার জন্যে। অনেকসময়ই মন্তব্য করা হয় না।
কিন্তু পড়ি নিয়মিত।
এক সময় হেমন্তের গানের পার ভক্ত ছিলাম। এখনও মাকে নিয়ে গানটা সামনে চলে এলো।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইল ।
১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮
কোবিদ বলেছেন: আপনাদের ভালোবাসা, ভালো লাগা ও অনুপ্রেরণা আমাকে প্রতিদিন একজন বিশেষ গুণী ব্যক্তি সম্পর্কে লিখতে সাহস যোগায়। আশা করি সাথে থাকবেন যদিও সময়ের অভাবে মন্তব্য করতে পারেন না তার পরেও সাথে থাকেন তাতেই আমি ধন্য। শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকবেন
৩| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: তার গাওয়া মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে ।গানটা আমর দারুণ প্রিয়। তার অনেকগুলি গান ই গুন গুনিয়ে গাওয়ার চেষ্টা করি।ও নদীরে একটি কথা শুধাই শুধু ......
১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১১
কোবিদ বলেছেন: উপরে তাঁর গানের একটি লিংক দেওয়া আছে
আমার বিশ্বাস তার গাওয়া প্রতিটি গানই ভালো
লাগাবে। ধন্যবাদ সেলিম আপনার মন্তব্যের জন্য।
৪| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: শুভেচ্ছা !!!
১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
কোবিদ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
৫| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫
মোহাম্মদ শরিফ বলেছেন: পোষ্টে ভাল লাগা
১৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
কোবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ শরিফ ভাই
ভালো থাকবেন
৬| ১৭ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯
শ্রাবণ জল বলেছেন: ভাল লাগল।
১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১৭
কোবিদ বলেছেন:
আমারও ভালো লাগলো
আপনার ভালো লেগেছে বলে
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০২
মাহমুদুল হাসান (সুমন)। বলেছেন: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে শুভেচ্ছা।
++