নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রেকিং নিউজঃ খ্যাতিমান নাট্যকার আতিকুল হক চৌধুরী আর নেই, ইন্না লিল্লাহি ওয়া..........রাজেউন

১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৪৫



দেশের খ্যাতিমান নাট্যকার আতিকুল হক চৌধুরী আর নেই, ইন্না লিল্লাহি ওয়া..........রাজেউন। গত কাল রাতে তিনি ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৩ বছর। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আতিকুল হক দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যানসার, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত জটিল রোগে ভুগছিলেন। ১৯৬০ সালে রেডিও পাকিস্তানে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৬৬ সালে তিনি পূর্ব টেলিভিশনে যোগদান করেন। টিভিটি কর্মরত অবস্থায় তিনি দেশবাসীকে অসংখ্য দর্শক নন্দিত নাটক উপহার দেন। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগেও তিনি ১১ বছর শিক্ষকতা করেরেছন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহা পরিচালক ছিলেন। এর পর তিনি জনপ্রিয় বেসরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল "একুশে টেলিভিশনের" উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তাঁর বর্নাঢ্যময় কর্ম জীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ শেষ্ঠ নাট্য প্রযোজক হিসেবে ১৯৭৬ সালে জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও তিনি অর্জন করেছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সংস্থা পুরস্কার, সিকোয়েন্স পুরস্কার, শেরে বাংলা স্মৃতি পুরস্কার, স্যার সলিমুল্লাহ স্মৃতি পুরক্কার, রংধনু পুরস্কার, নাট্যসভা পদক, যায় যায় দিন পুরস্কার, তারকালোক পুরস্কার, কথক সাহিত্য পুরস্কার, ঢাকা আর্টস কাউন্সিল পুরস্কার, অর্জন সাহিত্য পুরস্কার, আনন্দ থিয়েটার পুরস্কার, ঢাকা লায়ন্স পদক বাংলা একাডেমী পুরস্কারসহ উল্লেখযোগ্য অনেক পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। খ্যাতিমান এই নাট্যকর্মীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।



আতিকুল হক চৌধুরীরঃ

বিশিষ্ট নাট্যকার, পরিচালক, নাট্যশিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীর বরিশাল জেলার প্রসিদ্ধ উলানীয়া জমিদার বাড়ির সন্তান। তিনি ১৯৩১ সালের ১৫ ডিসেম্বর বরিশালে তাঁর মাতুলালয় বাটামাড়া সৈয়দ বাড়িদে জন্ম গ্রহণ করেন।

আতিকুল হক চৌধুরী ষাট দশকে কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা বেতারে। তারপর পাকিস্তান টেলিভিশনে ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে। যেখানে উপ-মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন শেষে শিক্ষকতা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে দীর্ঘ ১১ বছর। তার এই সুদীর্ঘ জীবন তার নিজের জন্য যেমন ঘটনাবহুল, তেমনি তার সময়ের জন্যও। সব ঘটনাই তাকে প্রভাবিত করেছে এবং সব স্বভাবকে তিনি তার সৃষ্টিকর্মে কাজে লাগিয়েছেন। তিনি সফল যিনি নিজস্ব ক্ষেত্রে তার দক্ষতা প্রমাণ করেন। এক জীবনে সবকিছুই অর্জন করা হয় না যেমন সত্য, তেমনি একটি বিশেষ ক্ষেত্রে সাফল্যও খুব সহজ ব্যাপার নয়। আতিকুল হক চৌধুরী কঠিন সে কাজটি সফলতার সাথে করেছেন। সে অর্থে তার জীবনে সাফল্যের প্রতিকৃতি উজ্জ্বলতর হয়েছে।

গত আট বছর ধরে তিনি একুশে টেলিভিশনে প্রথমে পরিচালক অনুষ্ঠান সেখান থেকে নবারূন মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান ও সিইও পদে নিযুক্ত থাকার পর তিনি এখন একুশে টেলিভিশনের উপদেষ্টা পদে অধিষ্ঠিত।



আতিকুল হকের সুদীর্ঘ নাট্যজীবনে তিনি অগণিত নাটক লিখে প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন, প্রযোজনা করেছেন অন্যের নাটকও। শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, টলোস্টয়ের মতো নন্দিত লেখকদের বহু গল্প-উপন্যাসের স্বার্থক নাট্যরূপ দিয়ে তিনি দর্শক নন্দিত হয়েছেন।

সুদীর্ঘ পাঁচ দশক তিনি বেতার ও টেলিভিশনে নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, বলা যায় এখনও করে চলেছেন। গণমাধ্যমে বর্তমানে কর্মরত তিনি শীর্ষতম বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। তিনি তার নাটক প্রযোজনার সময়ে নিজস্ব ভাবনা, বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করেছেন। বেতার ও টিভিতে শ্রোতা ও দর্শকদের রুচি নির্মাণে যত্নবান হয়েছেন। নাটকের বিষয়বস্তু, সমকালীনতা কিংবা বক্তব্যধর্মিতা সব ক্ষেত্রেই তিনি মননশীল ব্যক্তিত্বের পরিচয় তুলে ধরেছেন। এই মননশীলতার বেশ কয়েকটি ভাগও রয়েছে বলা যায়।



প্রথমত উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের নাট্যরূপ প্রচার যেমন লিও টলস্টয়, মোঁপাসা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরত্চন্দ্রের ধ্রুপদী রচনাকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে এসেছেন। একেবারে স্বল্পশিক্ষিত মানুষকেও তিনি অসাধারণ এসব রচনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। দেশীয় উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মকেও তিনি তার নাটকের উপজীব্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করে সুস্থ, সত্ ও দেশজ সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার মননশীলতার আরেকটি দিক হলো—তার নাটকে বক্তব্যের বলিষ্ঠতা ও সমকালীনতা। সময় উপযোগী বক্তব্য, নাটকে সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অনিয়ম ও অসংগতির উপস্থাপনা ও সেখান থেকে উত্তরণের উপায় এবং তরুণ সমাজ ও তারুণ্যের প্রতি অগাধ আস্থা তাকে তার সময়ে একজন ধ্রুপদী নাট্যকার ও নির্মাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।



সত্তর ও আশির দশকে তার রচিত ও প্রযোজিত অনেক কালজয়ী নাটকের মধ্যে 'বাবার কলম কোথায়?', 'দূরবীন দিয়ে দেখুন', 'সার্কাস দেখুন', 'নীল নকশার সন্ধানে', 'নিঝুম দ্বীপের সন্ধানে', 'অন্বেষণ', 'জুলেখার ঘর', 'সভাপতির অভিভাষণ' 'জলাশয় কত দূর' মামার বালিশ কোথায়, উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও তাঁর বড় কৃতিত্ব হলো বেতার ও টেলিভিশনে তিনি প্রায় শতাধিক নতুন শিল্পীকে দর্শকদের সামনে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তরুণ এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে স্বনামধন্য শিল্পী হতে পেরেছেন যাঁরা বর্তমানে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের আকাশে এক একটি উজ্জ্বল তারকা হিসেবে অবস্থান করছেন।



সকলের শ্রদ্ধেয় এবং বর্ষীয়ান নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: সকলের শ্রদ্ধেয় এবং বর্ষীয়ান নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।

মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

২| ১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৩০

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: উনার আত্মার শান্তি কামনা করছি :(

৩| ১৮ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

রমিত বলেছেন: সকলের শ্রদ্ধেয় এবং বর্ষীয়ান নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

৪| ১৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪০

কাউসার রুশো বলেছেন: উনি কোন বিভাগে এবং কোন চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছিলেন? জানাতে পারবেন ভাই?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.