নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের ১ম প্রধান বিচারপতি ও ৬ষ্ঠতম রাষ্ট্রপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েমের ১৬তম মৃত্যুদিন আজ

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২১



আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ছিলেন বাংলাদেশের ১ম বিচারপতি ও ৬ষ্ঠতম রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ১৯৭৭ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ এর ২১ এপ্রিল তিনি দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ছেড়ে দেন। আজ তাঁর ১৬তম মৃত্যুদিন। তিনি ১৯৯৭ সালের ৮ জুলাই ইন্তেকাল করেন। সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তার সকল দোষ ত্রুটি ক্ষমা করে পরকালে শান্তি দান করুন। আমিন-



আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ১৯১৬ সালের ২৯ মার্চ বর্তমান রংপুর জেলায় (তৎকালীন বাংলা প্রদেশের অংশ) জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি রংপুর জেলা স্কুলে পড়া লেখা করেন এবং পরবর্তিতে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। বিচারপতি সায়েম কলকাতা প্রসিডেন্সি কলেযে পড়ালেখা করেন ও ইউনিভার্সিটি ল' কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতা কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পর ১৯৪৭ সালে সায়েম ঢাকা চলে আসেন। ঢাকাতে তিনি ঢাকা হাইকোর্টে প্রাকটিস শুরু করেন। বাঙালি রাজনীতিবিদ এ. কে. ফজলুল হকের সাথেও সায়েক কাজ করেন। একসময় তিনি ঢাকা হাই কোর্ট বার এসোসিয়েশনের তিনি নির্বাচিত মহাসচিব ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হন। পূর্ব পাকিস্তান আইনজীবী এসোসিয়েশন, পূর্ব পাকিস্তান বার কাউন্সিল এবং ঢাকা বোর্ড অফ দ্যা স্টেট বাংক অফ পাকিস্তানের সদস্য ছিলেন আবু সায়েম। জুলাই ৩, ১৯৬২ সালে সায়েম বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।



(১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি আবু সাদম মোঃ সায়েম জাতীয় কবি নজরুল ইসলামকে একুশে পদক পরিয়ে দিচ্ছেন)

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিচাপতি সায়েমকে ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি দেশের প্রথম প্রধান বিচারপতির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীতে অভ্যূত্থান-পাল্টা অভ্যূত্থান চলে। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ও ৬ নভেম্বর এর সামরিক অভ্যুত্থানের পর বিচাপতি সায়েমকে দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ও জেনারেল জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করার মাধ্যমে কারাগারে আটক ও দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়েছিলেন এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তি তথা যুদ্ধাপরাধীদেরকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।



উল্লেখ্য স্বাধীনতার পরপরই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বঙ্গবন্ধু সরকার দালাল আইনের অধীনে প্রায় ৩৭০০০ মানুষকে গ্রেফতার করে। বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা দেয়ার পরও ১১ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ছিল যারা ছিল সাধারণ ক্ষমার আওতাবহির্ভুত। এই ১১ হাজারের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৭৫২ জনকে আদালত দণ্ড দান করেন। এর মধ্যে অন্তত ৩০জনের বেশি ছিলেন যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী।



১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম দালাল আইন বাতিরকরণ অধ্যাদেশ জারি করেন। এই অধ্যাদেশটিতে মাত্র ২টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। ১ম অনুচ্ছেদে অধ্যাদেশটির নামকরণ করা হয়েছে "দালাল আইন বাতিলকরণ অধ্যাদেশ"

[1. This Ordinance may be called the Bangladesh Collaborators (Special Tribunals) (Repeal) Ordinance, 1975.]

এরপর রয়েছে ২য় অনুচ্ছেদঃ এই অনুচ্ছেদে আবার তিনটি উপ-অনুচ্ছেদ রয়েছে।

১ম উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- দালাল আইন-১৯৭২ বাতিল করা হলো।

[2. (1)The Bangladesh Collaborators (Special Tribunals) Order, 1972 (P.O. No. 8 of 1972), hereinafter referred to as the said Order, is hereby repealed.]

২য় উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছেঃ এই আইন বাতিলের আগে যাদের নামে যেকোনো আদালতে বা কর্তৃপক্ষের সামনে মামলার কার্যক্রমবিষয়ক যাই চলতে থাকুক না কেন, তা আর সামনে এগুবে না। যেখানে যা কিছু আছে, তা মৃত্যু মুখে পতিত হবে।

[2. (2) Upon the repeal of the said Order under sub-section (1), all trials or other proceedings thereunder pending immediately before such repeal before any Tribunal, Magistrate or Court, and all investigations or other proceedings by or before any Police Officer or other authority under that Order, shall abate and shall not be proceeded with.]



এরপর রয়েছে ৩য় উপ-অনুচ্ছেদঃ ৩য় উপ-অনুচ্ছেদের আবার দুটো অংশ রয়েছে- 'ক' ও 'খ'। ৩য় উপ-অনুচ্ছেদের প্রথম অংশ অর্থাৎ 'ক'-তে বলা হয়েছে-

যারা দালাল আইনে ইতোমধ্যে দন্ডিত হয়েছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে আপিল করেছে, তাদের ক্ষেত্রে এই বাতিল অধ্যাদেশ প্রযোজ্য হবে না।

[2. (3) Nothing in sub-section (2) shall be deemed to affect -

(a) the continuance of any appeal against any conviction or sentence by any Tribunal, Magistrate or Court under the said Order;]

এর সরল অর্থ দাড়ায় যে- যারা ঐ সময় যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দালাল আইনের অধীনে দন্ডিত হয়েছেন অর্থাৎ ৭৫২ জন দন্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের জন্য এই দালাল আইন বাতিলকরণ অধ্যাদেশটি কার্যকর নয়। শুধু তা-ই নয়, ৩য় উপ-ধারার দ্বিতীয় অংশে অর্থাৎ 'খ'-তে সুনির্দিষ্টভাবে জেনারেল ক্লজেজ অ্যাক্টের ৬ দফা দিয়ে যথোপযুক্ত রক্ষাকবচ সৃষ্টি করা হয়েছে।



বিতর্কিত দালাল আইন বাতিল ছাড়াও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম, সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও বিচারপতি আব্দুস সাত্তার (পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি) আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে কর্নেল এমএ তাহেরের সামরিক আদালতে বিচারের প্রক্রিয়া করেন। এরই এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এমএ তাহেরসহ ১৭ জনকে সামরিক আদালতে গোপন বিচারে ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই সাজা দেওয়া হয়। এরপর ২১ জুলাই ভোররাতে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। জিয়াউর রহমান, আব্দুস সাত্তার ও আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েমই কর্নেল তাহেরের বিচারের পরিকল্পনা করেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল নূরুল ইসলাম শিশু। এর আগে মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলজ ই-মেইলের মাধ্যমে বলেছিলেন, তাহেরের ফাঁসির আদেশ 'পূর্বনির্ধারিত' ও 'পরিকল্পিত' ছিল।



১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি জিয়াউর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ১৯৭৭ এর ২১ এপ্রিল তিনি দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ছেড়ে দেন। বিচারপতি সায়েম তার আত্মজীবনী "বঙ্গভবনে:শেষ অধ্যায়" (১৯৮৮)। এ বইটিতে তিনি ১৯৭৫-৭৭ এর মাঝের দেশের রাজনৈতিক ঘটনাগুলো উল্লেখ্য করেন।



বাংলাদেশের ১ম প্রধান বিচারপতি ও ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েমে ১৯৯৭ সালের ৮ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুদিনে মুসলমান হিসেবে আমি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার সকল অপরাধের ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তাঁর ১৬তম মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা অথবা ঘৃনা জানানো পাঠকের এখতিয়ার।

সূত্রঃ বাংলা পিডিয়া

আবু সাদম মোহাম্মদ সায়েম

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী.....স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচাপতির প্রতি শুভকামনা থাকলো।

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০০

কোবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম ভাই
আপনার মহানুভবতার জন্য
ভালো থাকবেন

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩

বটের ফল বলেছেন: সেলিম আনোয়ার বলেছেন: তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী.....স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচাপতির প্রতি শুভকামনা থাকলো।

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮

কোবিদ বলেছেন: জ্বী আমি দেখেছি,
কিন্তু আপনি কী বলেন!!

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫

ধ্রুব তারা সাইফুল বলেছেন: অনেক কিছু শিখলাম। তথ্যবহুল পোস্টের জন্য অন্নেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.