নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ)
মুক্তিযুদ্ধের সফল রূপকার আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গ তাজ তাজউদ্দিন আহমদ। একজন সৎ, মেধাবী ও আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল সর্বজন বিদিত। তিনি বাংলা ভাষার অধিকার, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সকল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সাফল্যের সাথে পালন করেন। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা তাজউদ্দিন আহমদের আজ ৮৮তম জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা।
তাজউদ্দীন আহমদ ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই শীতলক্ষ্যার তীরঘেষা গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলভী মোঃ ইয়াসিন খান এবং মাতা মেহেরুননেসা খান। ৪ ভাই, ৬ বোনের মাঝে ৪র্থ তাজউদ্দীন আহমদের পড়াশোনা শুরু বাবার কাছে আরবি শিক্ষার মাধ্যমে। এই সময়ে ১ম শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ির দুই কিলোমিটার দূরের ভূলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে৷ ১ম ও ২য় শ্রেণীতে ১ম স্থান অর্জন করেন৷ ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের কাপাসিয়া মাইনর ইংলিশ স্কুলে। এরপর পড়েছেন কালিগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস ইনস্টিটিউশন, ঢাকার মুসলিম বয়েজ হাই স্কুল ও সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে৷ ১৯৪৩ সালে তাজউদ্দীন আহমদ অধ্যায়ন কালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হন। ১৯৪৪ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৪ সালে তিনি ম্যাট্রিক ও পরবর্তীতে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় অবিভক্ত বাংলার সম্মিলিত মেধাতালিকায় যথাক্রমে দ্বাদশ ও চতুর্থ স্থান (ঢাকা বোর্ড ) লাভ করেন। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ (সম্মান) ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এল.এল.বি. ডিগ্রীর জন্য পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকবাহিনী গণহত্যা শুরু হলে তাজ তাজউদ্দিন আহমদ ঢাকা ত্যাগ করে ভারত চলে যান। ১০ এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হলে তিনি এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেন। মুক্তিবাহিনীর জন্য অস্ত্র সংগ্রহ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আর্ন্তজাতিক সমর্থন লাভের ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ২২শে ডিসেম্বর তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ সরকারের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। মুক্তিযুদ্ধে চুড়ান্ত বিজয়ের পর তিনি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসলে তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তাজউদ্দিন আহমদ প্রথমে অর্থ এবং পরে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৩-এ ঢাকা-২২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় বাজেট পেশ করেন, প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের সমাপনী অধিবেশনের বক্তৃতায় তিনি দল, সরকার এবং নেতা ও কর্মীদের মাঝে দূরত্ব দূর করে, সংগঠন এবং সরকারের মাঝে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান৷
শেখ মুজিব দেশকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেন। বাকশালের কিছু সামাজিক উপযোগিতা থাকলেও তাজউদ্দিন আহমদ বাকশাল সমর্থন করতে পারেননি। তাজউদ্দিন আহমদ দেখছিলেন শেখ মুজিব দেশকে ভিন্নপথে পরিচালনা করছেন। তখন তিনি শেখ মুজিবকে সাবধান করে দিয়ে বলেছিলেন, মুজিব ভাই, আপনাকে আরো সতর্ক হতে হবে। যে অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি সে অবস্থা চলতে থাকলে আপনিও বাঁচবেন না আমিও বাঁচবো না। কিন্তু শেখ মুজিব তাজউদ্দিনের সে কথায় কর্ণপাত করেন নাই। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর সাথে তাজউদ্দীনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ ৩০ বছরের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকর্মীকে ভুল বুঝেন। ১৯৭৪ সালের ২৬শে অক্টোবর তাজউদ্দীন মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তিনি শেখ মুজিবকে বললেন, মুজিব ভাই, আমি আপনাকে সিরিয়াসলি একটা কথা বলি। আমার অনুরোধ, আপনি গোয়েন্দাদের দিকে একটু দৃষ্টি দেবেন। তা না হলে আপনি বাঁচতে পারবেন না। শেখ মুজিব যে রাতে খুন হলেন সে রাতেই গভীর ব্যথিত কণ্ঠে তাজউদ্দিন স্বগতোক্তি করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু জানতে পারলেন না-কে তার শত্রু আর কে তার বন্ধু ছিল?
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর হত্যাকারীদের নির্দেশে তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দী করা হয়। ২২ আগস্ট সামরিক আইনের অধীনে তাজউদ্দীন আহমদ-সহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরিবারের সদস্যদের প্রতি শুধু বলে গেলেন- ‘ধরে নাও আজীবনের জন্য’ যাচ্ছি৷ ৩ কন্যা, ১ পুত্রসহ স্ত্রীকে ছেড়ে যাবার সময় একটুও বিচলিত ছিলেন না।
(পরিবারের সাথে তাজউদ্দিন আহমদ)
গ্রেফতারের পর তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। কারা অন্তরীণ হলেন আরো ৩ জন জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামরুজ্জামান।১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় জেলখানার মধ্যে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় এই নিঃসঙ্গ সারথি-কে… তৃষ্ণার্ত এই লোকটির “পানি পানের ইচ্ছা”-কে বেয়োনেট চার্জ দ্বারা মিটিয়ে দেয়া হয় চিরতরে…। একই দিনে জেলখনায় বন্দি অবস্থায় তাঁর সাথে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মোঃ মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকেও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে জেলহত্যা নামে কুখ্যাত হয়ে আছে।
আজ এই মহান ব্যাক্তিত্বের ৮৮তম জন্মদিন। মুক্তিযুদ্ধের নিঃসঙ্গ সারথী তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ কাণ্ডারী অথর্ব
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গ তাজ তাজউদ্দিন আহমদের
জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য
২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আজকের দিনের জন্য এই পোস্টটি ইস্টিকি হলে ভালো হত।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১১
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ অথর্ব আপনার আন্তরিকতার জন্য
৩| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৪৫
বোকামন বলেছেন:
মুক্তিযুদ্ধের নিঃসঙ্গ সারথী তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩২
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ বোকামন
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে শুভেচ্ছা
জানানোর জন্য। ভালো থাকবেন।
৪| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:১৫
পুরোনো পাপী বলেছেন: অনেক তথ্য যোগার করে লিখেছেন। আমি লিখার সময়ে এত কিছু মাথায় ছিল না। আমার মাথা গরম তো তাই যা মনে আসে তাই ঝাইড়া দেই
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
কোবিদ বলেছেন:
এত মাথা গরম করা ঠিক নয়।
মাতা ঠাণ্ডা রাখুন, কারন
রাগলেন তো হারলেন।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৫| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০১
বাংলার হাসান বলেছেন: তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪১
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ নিমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য
৬| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৭
স্বসংকোচ বলেছেন: আজকের দিনে এমন একটা পোষ্ট ষ্টীকি হলে ভাল লাগত। ষ্টিকি করার দাবি যানাছি।
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪২
কোবিদ বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ
আন্তরিকতার জন্য
৭| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭
একজন ঘূণপোকা বলেছেন: ++++++
২৩ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬
কোবিদ বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
৮| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯
বটের ফল বলেছেন: বাংলায় আজ তাঁর মত আরো মহান নেতা দরকার ছিল। কিন্তু আফসোস। আমরা তাঁকে হারিয়েছি। তাঁর ছেলেকেও হারালাম!!!!! আফসোস!!!!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।
৯| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১১
খাটাস বলেছেন: অনেক তথ্য সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। পোস্টে অবশ্যই প্লাস। ভাল থাকবেন।
মুক্তিযুদ্ধের নিঃসঙ্গ সারথী তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
১০| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: কান্ডারী অথর্ব বলেছেন:
আজকের দিনের জন্য এই পোস্টটি ইস্টিকি হলে ভালো হত।
শ্রদ্ধেয় তাজউদ্দিন আহমদকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
১১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯
অপু তানভীর বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের নিঃসঙ্গ সারথী তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৩৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
মুক্তিযুদ্ধের নিঃসঙ্গ সারথী তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।