নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২১ আগষ্টঃ ভয়াল ও বিভীষিকাময় রক্তাক্ত গ্রেনেড হামলা দিবস আজ। বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের দিন। মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার নবম বার্ষিকী। সভ্যজগতের অকল্পনীয় এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানো হয় ২০০৪ সালের এই দিনে। গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। রক্ত-ঝড়ের প্রচ-তায় মলিন হয়ে গিয়েছিল বাংলা ও বাঙালীর মুখ। বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ এদিন মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীত।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা এবং নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত মিছিলপূর্বক সন্ত্রাস-বিরোধী শান্তি সমাবেশে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে পরিকল্পিতভাবে মানবতার শত্রু সন্ত্রাসী ঘাতকচক্র আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা এবং গুলিবর্ষণ করে বলে অভিযোগ আছে। বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ছিলেন কুষ্টিয়ার মাহবুব। তিনিই সেদিন নিজের জীবন দিয়ে শেখ হাসিনা কে বাঁচিয়েছিলেন। প্রকৃত অর্থে সুপরিকল্পিত এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল দেশের প্রধান দল আওয়ামী লীগ, যারা এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং অসম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক আদর্শের পতাকা বহন করে তাকে নেতৃত্বহীন এবং বিনাশ করে দেওয়া।
সে দিনের সেই গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। ভয়াল-বিভীষিকাময় সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের দিনটির কথা মনে হলে আজও বুক কেঁপে ওঠে। তেরটি গ্রেনেড বিস্ফোরণে এক নারকীয় তান্ডবের সৃষ্টি হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ। সেদিন গ্রেনেড হামলার প্রচন্ডতায় মুহূর্তেই ওই স্থানটি পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় শহীদদের শরীরের অঙ্গপ্রতঙ্গ ও মসত্মিষ্ক ছিন্নভিন্ন অংশ, রক্তাক্ত শরীর, অস্বাভাবিক ও বীভৎস জিহ্বা বের হয়ে যাওয়া, কারও পা নেই, দেহ আছে মস্তিস্কের অধিকাংশ নেই এমন চিত্র আমরা দেখেছি পত্র-পত্রিকাও টেলিভিশনের সংবাদ চিত্রে। বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রত্যৰ মদদ ও সহায়তায় স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুর উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গীগোষ্ঠীর বর্বরতা কতটা যে হায়েনার রূপ নিতে পারে ছবিগুলো না দেখলে তা বোঝার উপায় নেই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হিংস্র সাপদের ভয়াল ছোবলে তথা নৃশংস বর্বরোচিত হামলায় নেতা-কর্মীদের মানবঢাল ও পরম করুনাময় আল্লাহতায়ালার রহমতে প্রাণে বেঁচে গেলেও এই নিষ্ঠুর আক্রমণে শহীদ হন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী।
এছাড়াও আহত হন অগনিত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষ। তাদের অনেকেই আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে আজ ও মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। নয় বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের কষ্টের তীব্রতা এতটুকুও কমেনি। হাত-পাসহ গোটা শরীর ক্ষত-বিক্ষত, জোড়াতালি দেয়া অনেকের শরীর। এখনও সর্বাঙ্গে বিঁধে থাকা গ্রেনেডের তীব্র যন্ত্রণা কাউকে বলে বোঝাতে পারছেন না। ঘুমের ওষুধ খেয়েও রাতে ঘুমাতে পারছেন না তারা। জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে থাকা গ্রেনেড হামলায় আহদের একটাই দাবি, "প্রকাশ্য দিবালোকে যারা এভাবে হত্যাযজ্ঞ চালাল, সেই ঘাতকচক্র ও তাদের মদদদাতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক"। ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মৃত্যুজাল ছিন্ন করে প্রাণে বেঁচে যাওয়া পঙ্গুত্ববরণকারী বেশ কজন নারী নেত্রীর কণ্ঠে ছিল এমনই দাবি।
বীভৎস গ্রেনেড হামলায় হত্যাযজ্ঞের ৯ম বাষির্কীতে আজ দেশবাসীর প্রত্যাশা এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সত্য উৎঘাটন হোক। প্রকৃত পরিকল্পনাকারী, তদানীন্তন ক্ষমতাসীনদের ষড়যন্ত্র, হত্যাকারীদের কারা আড়ালে করতে চেয়েছিল এসব জানা আজ জাতীয় নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে জরুরি। তাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রকৃত অপরাধী এবং হুকুমের আসামীদের যথোপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এই নির্মম ট্র্যাজেডির সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার হোক, সত্যের আলোয় বেরিয়ে আসুক অপরাধীদের যাবতীয় কর্মকান্ড। এটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন অপরাধী সে যত বড় ক্ষমতাধরই হোক না কেন শাস্তি যেন অপরাধীরা এড়াতে না পারে।
মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার নবম বার্ষির্কীতে সকল শহীদদের আত্মার শান্তি ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
©somewhere in net ltd.