নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Samuel Barclay Beckett আধুনিক ইংরেজী সাহিত্যের স্বনামধন্য নাট্যকার স্যামুয়েল বার্কলে বেকেট। তিনি ছিলেন আধুনিক ইংরেজি সাহিত্যের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব এবং নাট্যকার। ১৯৮৯ সালের আজকের দিনে এই লেখক মৃত্যুবরণ করেন। আজ এই নাট্যকারের ২৪তম মৃত্যুদিন। মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
(কিশোর স্যামুয়েল বার্কলে বেকেট)
স্যামুয়েল বার্কলে বেকেট ১৯০৬ সালের ১৩ এপ্রিল আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘মার্ফি’ ১৯৩৮ সালে প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় বেকেট নাৎসী বাহিনীর বর্বরতা সহ্য করতে না পেরে ফ্রান্সের সামরিক বাহিনীতে যোগদান করেন।
বেকেটের সর্বশ্রেষ্ঠ নাট্যকর্ম ‘ওয়েটিং ফর গডো’ ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয়। এই নাটকের চরিত্রগুলো যখন কথা বলে তখন তাদের মনে হয় বাস্তবতা থেকে খানিকটা দূরের মানুষ, তারা কবিতার মতো কথা বলে। তাদের কথায় তারিখ নাই, মাসের নাম আসে না, নির্দিষ্ট বছরের উল্লেখ নাই, বারের যাও বা উল্লেখ আছে তারও ঠিক নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। তাই সব চরিত্র ছাপিয়ে সময়হীনতাই এই নাটকের সবচেয়ে বড় চরিত্র। সময়কে কাটিয়ে ওঠায় এটা একটা 'গুণ', সময়কে হারিয়ে ফেলায় এর অন্য নাম হয়ত 'ত্রুটি'।
পুরো নাটকে ভ্লাদিমির আর এস্ত্রাগন অপেক্ষা করে Godot এর জন্য। অপেক্ষা করতে করতে রাত হয়। আবার অপেক্ষার শুরু হয় পরের দিন। যেই গডোর (Godot) জন্যে অপেক্ষা, তার কোনই দেখা মেলেনা। প্রথম অঙ্কের মাঝামাঝি দুইজন অন্য মানুষের দেখা মেলে: পোৎজো আর লাকি । তাদের সাথে একটু ভিন্ন সময় কাটানোর পর আবার অনির্দিষ্ট পরের দিন শুরু হয়। দ্বিতীয় অঙ্কেও প্রথম অঙ্কের গতিহীনতা থেকে ভিন্ন কিছু ঘটে না। সেই অপেক্ষা , সেই না আসা । আবারও পোৎজো এবং লাকি। আবারও প্রথম দৃশ্যের শেষের মতো একজন বালক , গডোর বার্তা নিয়ে আসে। বার্তাও বরাবর একই।
‘He won’t come this evening’
‘But he’ll come tomorrow’
(' আজকে সন্ধ্যাবেলা তিনি আসবেন না'
' কিন্তু কালকে আসবেন')
Waiting for Godot নিয়ে বেকেটের প্রচেষ্টাকে অনেকেই এতটা সময়বিবর্জিত লাগায় অনেকে একে মনে করেছেন জীবনবিবর্জিত। যেখানে সমাজ নাই; বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় বা গীর্জা, প্যাগোডা নাই; হাসপাতাল নাই, বাজার, কারখানা বা ফসলের জমি নাই; সেখানে কীভাবে বাস্তবতা আসে, মানুষের জীবনের অস্তিত্ব কোথায় সেখানে? তাই এমন একটা নাটককে শিল্পের মর্যাদা দিতে চান নাই অনেকেই। কিন্তু সমকালীন ক্ল্যাসিক হিসেবে এই লেখার বর্তমান স্বীকৃতির পেছনে নির্দিষ্ট সময়চিন্তা ছাড়াই, যে কোন ভাবেই হোক, উজ্জ্বল হয়ে আছে সবচেয়ে বড় মানবিক দর্শন, অস্তিত্ববাদ।
বেকেট কিন্তু গডোর পরিচয় দেন নি। হতে পারে গডো ঈশ্বরতুল্য কেউ। যদি তাই হয়, তবে তিনি হয়তো চান যে ভ্লাদিমির আর এস্ত্রাগন নিজের ভবিষ্যত নিজে ঠিক করুক। তাই তিনি দেখা দেন না, অস্তিত্ববাদী এই ঈশ্বরের 'আসি-আসি বলে ফাঁকি' দেওয়ার ব্যাপরটা যদিও এই ধরণের সহজ ব্যাখ্যার উর্ধ্বে। স্পষ্ট অস্তিত্ববাদী এই নাটক বাইরে বাইরে জীবনমুখী না হয়েও, জীবনের সার্বজনীন ইঙ্গিত তুলে ধরে আছে কোমলতায়, আবছা ভোরের হাওয়ার মতো, চাঁদের ধবধবে পূর্ণিমার নিচে বালুর চকচকে প্রতিফলনের মতো। নির্দিষ্টতার বাইরে যাওয়ায় এই লেখা মেঘের মতো, রোদের মতো, বাতাসের গন্ধের মতো সার্বজনীন। এই নাটকই তাকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দেয়। ১৯৬৯ সালে তিনি লাভ করেন সাহিত্যে সর্বোচ্চ সম্মান নোবেল পুরস্কার।
১৯৮৯ সালের ২২ ডিসেম্বর এই লেখক মৃত্যুবরণ করেন ইংরেজী সাহিত্যের স্বনামধন্য নাট্যকার স্যামুয়েল বার্কলে বেকেট। ২৪তম মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৪০
নতুন বলেছেন: আমরাও বাস্তব জীবনে অনেক সময় গডোর জন্য অপেক্ষা করি... কিন্তু গডো কখনোই আসে না...