নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। পুরা নাম সাদ্দাম হোসেন আবু আল মাজিদ আল তিকরিতি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে কঠোর হাতে ইরাক শাসন করেছেন তিনি। ১৯৭৯ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০০৩ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইরাকের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইরাকে ব্যাপক গণ বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগে ইরাকে সামরিক অভিযান চালায়। ৯ এপ্রিল মার্কিন বাহিনী বাগদাদ দখল করে নিলে সাদ্দাম ক্ষমতাচ্যুত হন। একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে তাঁর জন্ম স্থান তিকরিত থেকে মার্কিন বাহিনী আটক করে। ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর ইরাকের উচ্চ আদালতে দুজাইল গ্রামের হত্যাকান্ড মামলায় সাদ্দাম হোসেনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। ৬৯ বছর বয়সী ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ওই বিচারে দোষী সাব্যস্ত করে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তার ফাঁসি কার্যকর করে। সাদ্দাম হোসেন ১৯৩৭ সালের আজকের দিনে পূর্ব বাগদাদের তিকরিতে জন্ম গ্রহণ করেন। আজ তাঁর ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের জন্মবার্ষিকীতে আমাদের শুভেচ্ছা।
সাদ্দাম হোসেন আবু আল মাজিদ আল তিকরিতি ১৯৩৭ সালের ২৮ এপ্রিল পূর্ব বাগদাদের তিকরিত শহরের কাছাকাছি একটি ছোট গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি নিষিদ্ধ বাথ পার্টিতে যোগ দেন। পঞ্চাশের দশকে একবার বাথ পার্টি ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে ব্যথ হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৮ সালে সাদ্দাম ইরাকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ক্ষেত্রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই সময় সাদ্দাম দৃঃঢ় ভাবে সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যকার বিরোধের অবসান ঘটান। এই উদ্দেশ্যে তিনি নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করেন। প্রথমে সাদ্দাম হোসেন জেনারেল আহমেদ হাসান আল বাকরের উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন। এরপর ১৯৭৯ সালের জুলাই মাসে তিনি ইরাকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হবার পর ইরাকের রাষ্ট্রপতি ও বাথ পার্টির প্রধান হিসেবে সাদ্দাম হোসেন আরব জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ধর্ম নিরপেক্ষ ও আধুনিক ইরাক গড়ে তুলতে প্রয়াস নেন।
এসময় সাদ্দাম হোসেন ইরাকে এক দলীয় শাসন কায়েম করেন। এসময়ই সাদ্দাম হোসেন ইরানের সাথে ৯ বছরের যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন (১৯৮০-১৯৮৮)। তার মতে ইরাকের স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধের সকল পক্ষকে নির্মুল করার উদ্যোগ নেন। এই বিরুদ্ধ পক্ষে ছিল উপজাতীয় ও ধর্মীয় গোত্র গুলো যারা স্বাধীনতা দাবি করছিল। যেমন, ইরাকি শিয়া মুসলমান, কুর্দি, ইরাকি তুর্কি জনগন। ইরাক-ইরান যুদ্ধের পরে ১৯৯১-এ সাদ্দাম উপসাগরীয় যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন। ১৯৯০ সালে তাঁর নির্দেশে ইরাক কুয়েত দখল করে নেয়। ১৯৯১ সালের প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী কুয়েত দখল মুক্ত করে নেয়।
২০০৩ সালের মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইরাকে ব্যাপক গণ বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগে ইরাকে সামরিক অভিযান চালায়। যদিও যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে এমন কোন অস্ত্রের হদিস পাওয়া যায় নাই। ৯ এপ্রিল মার্কিন বাহিনী বাগদাদ দখল করে, সাদ্দাম ক্ষমতাচ্যুত হন। একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে তাঁর জন্ম স্থান তিকরিত থেকে মার্কিন বাহিনী আটক করা হয়। ২০০৪ সালের ৩০ জুন মার্কিন বাহিনী সাদ্দামের ক্ষমতা ইরাকের অস্থায়ী সরকারের কাছে হস্তান্তর করে এবং ১ জুলাই ইরাকের বিশেষ আদালত সাদ্দামের বিচার শুরু হয়। ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর ইরাকের উচ্চ আদালত দুজাইল গ্রামের হত্যাকান্ড মামলায় সাদ্দামকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করে। উল্লেখ্য, সাদ্দাম হেসেনের প্রায় ২৫ বছরের শাসনামলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। তাদের অধিকাংশই ছিল শিয়া সম্প্রদায়ের। এসব মৃত্যুর জন্য সাদ্দাম সরকারকেই দায়ী করা হয়। ১৯৮২ সালে সাদ্দাম দুজাইল গ্রামে স্থানীয় শিয়া সম্প্রদায়ের অধিবাসিদের হত্যার আদেশ দিলে এতে ১৪৩জন নিহত হয়। ২০০৬ সালে ৫ নভেম্বর ইরাকের উচ্চ আদালত চল্লিশ বারের বিচার নিয়ে মানবতা বিরোধী তত্পরতা চালানোর অভিযোগে সাদ্দামকে ফাঁসির আদেশ দেয়। ২৬ ডিসেম্বর ইরাকের মার্কিনীদের তাবেদার সরকারের আদালত সাদ্দামের আপীল নাকচ করে এবং আগের রায় বহাল রেখে ৩০ দিনের মধ্যে সাদ্দামের ফাঁসি কার্যকরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। রায় ঘোষণার স্বল্পতম সময়ে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের দিনে ইরাকি সময় সকাল ৬.০৬ মিনিটে সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির রশিতে ঝোলানোর আগ পর্যন্ত তাঁর মনোবল ছিল অটুট, ছিল না কোনো অনুশোচনা।
পাশ্চাত্য এবং অনেক ইরাকির চোখে তিনি নিষ্ঠুর একনায়ক আর ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী রাষ্ট্রনায়ক। যদিও সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো আজ ও প্রমানিত হয়নি। প্রহসনের বিচারে সাদ্দামের ফাঁসি তাই ইতিহাসের এক নির্মম ট্রেজেডি। আজ ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। সাদ্দাম হোসনে ভালো কি খারাপ ছিলেন তার বিচারের ভার মহান সৃষ্টিকর্তার। আমরা শুধু তাঁর জন্মদিনে জানাই শুভেচ্ছা।
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:০৪
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ আদরসারািদন আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আমার ব্লগে আসবার জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা। আশা করি
আগামীতেও সাথে থাকবেন।
২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
পাকনা কলা বলেছেন: সাদ্দাম ভালো ছেলে।
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:০৯
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ পাকনা কলা আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভালো মন্দ বিচারে ভার সৃষ্টিকর্তার। তবে
প্রত্যেক মানুষকে তার কর্ম ফল ভোগ করতে হয়।
৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২৮
শাহ আজিজ বলেছেন: মাত্র ৮ বছর বয়েসে বারি থেকে পালিয়েছিলেন সাদ্দাম । সাদ্দাম কিন্তু আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ওকালতি পড়ার প্রায় শেষ পর্বে চলে এসেছিলেন পার্টির ডাকে । তার ফাসির আগের উক্তি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ । সাদ্দাম বলেছিলেন একজন মিলিশিয়া সবসময় মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে চলে , আমার কোন ভয় বা অনুভুতি নেই ।
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০২
কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ আজিজ ভাই
আমার মতে তিনি যথার্থই
বীর ছিলেন। ইতিহাসের এই
ট্রাজেডিক বীরকে শ্রদ্ধা
৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ২০০৩ সালের মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইরাকে ব্যাপক গণ বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগে ইরাকে সামরিক অভিযান চালায়। যদিও যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে এমন কোন অস্ত্রের হদিস পাওয়া যায় নাই ..
মিথ্যাবাদী আমেরিকা ও বৃটেনের ফাসি কে দেবে??????????
ইতিহাসে সাদ্দাম বীর হলেও বর্ণচোরা সাম্রাজ্যবাদীরা মিথ্যাবাদী হিসাবেই ঘৃণিত হয়ে থাকবে।
৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫
শাহ আজিজ বলেছেন: আগের কমেন্টে মিলিট্যানট হবে মিলিশিয়া নয় ।
৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৪৬
রাসেল সরকার বলেছেন: এতগুলো তথ্যসহকারে লিখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৭
আদরসারািদন বলেছেন: সাদ্দাম হোসনে ভালো কি খারা ছিলেন তার বিচারের ভার মহান সৃষ্টিকর্তার। আমরা শুধু তাঁর জন্মদিনে জানাই শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ আপনাকেও তথ্যগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য