নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফরাসী লেখকদের মধ্যে বহির্বিশ্বে সবচাইতে বেশি পরিচিত লেখক ফরাসী ঔপন্যাসিক আলেকজান্দার দ্যুমা। তিনি মূলতঃ ইতিহাস আশ্রিত এডভেঞ্চার উপন্যাস লেখক হিসেবে বিখ্যাত। তার লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপন্যাস- দ্য কাউন্ট অব মন্টে ক্রিস্টো, থ্রি মাস্কেটিয়ার্স, দ্য কর্সিকান ব্রাদার্স, জর্জেস, লুই সিক্স অ্যান্ড হিজ সেঞ্চুরি, টোয়েন্টি ইয়ার্স আফটার, দ্য ভিকটিম দে ব্রাজেলন (এর তিন খণ্ডের একটি বিখ্যাত ম্যান ইন দ্য আয়রন মাস্ক), দ্য টু ডায়নাস, দ্য ব্ল্যাক টিউলিপ, দ্য নিউ ট্রয় প্রভৃতি। তার লেখা উপন্যাসগুলো প্রায় ১০০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে, যা তাকে ফরাসী লেখকদের মধ্যে বহির্বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিচিত লেখক করে তুলে। তার উপন্যাস প্রকাশের পরপরই ইংরেজিতে অনুদিত হতো। তাঁর লেখা উপন্যাসগুলো অবলম্বনে প্রায় ২০০ এর কাছাকাছি চলচিত্র তৈরি হয়েছে। বিখ্যাত এই ঔপন্যাসিক ১৮০২ সালের আজকের দিনে ফ্রান্সের আইসনিতে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ২১২তম জন্মবার্ষিকী। বিখ্যাত ঔপন্যাসিক আলেকজান্দার দ্যুমার জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা।
আলেকজান্দার দ্যুমা ১৮০২ সালের ২৪ জুলাই ফ্রান্সের আইসনির ভিলার কু্যতারেতসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম দ্যুমা ডেভি ডে লা পাইলিতেরি। বাবার সাথে বিবাদ করে তিনি দাদীর উপাধি দ্যুমা নিজের নামে গ্রহণ করেন। তার বাবার থমাস আলেকজান্দার ছিলেন অভিজাত জেনারেল। ১৮০৬ সালে বাবা মারা যাওয়ার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর। ফলে তার মায়ের পক্ষে তাকে ভালো স্কুলে ভর্তি করানো সম্ভব ছিল না। মেধাবী দ্যুমা ঘরে বসে পড়াশোনা শুরু করেন। এমনকি স্প্যানিশ ভাষাও শিখে ফেলেন। মা তাকে সব সময় তার বাবার বীরত্বের কথা বলতেন, যা তার মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ১৮২২ সালে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্যারিসে চলে যান। এখানে বাবার পদমর্যাদা তাকে অনেক সাহায্য করে। এ কারণে তরুণ বয়সেই ডিউক অব অরলিয়ন্স লুই ফিলিপের অধীনে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। এ সময় দ্যুমা নাটকের মাধ্যমে লেখালেখির ক্যারিয়ার শুরু করেন। বহু ভ্রমণ কাহিনীও লিখেছেন তিনি। তার প্রথম নাটক ছিল হেনরি থ্রি অ্যান্ড হিজ কোর্টস। এটি ১৮২৯ সালে মঞ্চস্ত হয়। প্রথম নাটক থেকেই সাফল্য পান দ্যুমা। পরের বছর লেখা ক্রিস্টাইন নাটকটিও সমান জনপ্রিয়তা পায়, যা তাকে সর্বক্ষণিক লেখক হওয়ার মতো অর্থের জোগান দেয়। নাটকের সাফল্যের পর উপন্যাস রচনার দিকে ঝুঁকে পড়েন দ্যুমা। তার অনেক উপন্যাস প্রাথমিকদিকে মূলত ধারাবাহিক হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল। এ সময় পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে অনেক উপন্যাস প্রকাশিত হয়। ১৮৩৮ সালে নিজের লেখা নাটককে ‘লা ক্যাপিটেইন পল’ নামের উপন্যাসে রূপান্তর করে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেন। তিনি একটি প্রডাকশন স্টুডিও-ও গড়ে তোলেন। এ সময় তিনি অসংযত জীবনযাপন শুরু করেন এ কারনে তার আয় থেকে ব্যয় বাড়তে থাকে।
১৮৩৯ থেকে ১৮৪১ সালের মধ্যে বন্ধুদের সাহায্যে তখনকার ইউরোপের কুখ্যাত অপরাধী ও তাদের অপরাধ নিয়ে ৮ খণ্ডের বই প্রকাশ করেন। ১৮৪০ সালে আগাস্টিন গ্রিসিয়ারের সহযোগিতায় লেখেন উপন্যাস দ্য ফেন্সিং মাস্টার। বইটি রাশিয়ার জার নিকোলাস-১ নিষিদ্ধ করেন। এমনকি দেশটিতে তার ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে জারের মৃত্যুর পর দ্যুমা দেশটিতে ভ্রমণ করেন। ১৮৪৪ সাল থেকে ১৮৪৫ সাল পর্যন্ত দ্য কাউন্ট অব মন্টি ক্রিস্টো ধারাবাহিকভাবে ১৮ খন্ডে প্রকাশিত হয় । দ্য কাউন্ট অব মন্টি ক্রিস্টো সম্রাট নেপোলিয়নের ও তার পরবর্তী সময়কার ফ্রান্স ও ইতালির পটভূমিতে বর্ণিত এক দুর্দান্ত ও রোমাঞ্চকর কাহিনী। আলেকজান্দার দ্যুমার লেখা অন্য উপন্যাস থ্রি মাস্কেটিয়ার্স সপ্তদশ শতকের ত্রয়োদশ লুইকে নিয়ে লেখা। ১৮৫১ সালে লুই নেপোলিয়ন বেনাপোর্টের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অবস্থা তার প্রতিকূলে চলে যায়। তাই তিনি বেলজিয়ামে চলে যান। সেখানে কয়েক বছর থাকেন। এর পর কিছু সময় রাশিয়া ও ইতালি কাটান। ১৮৬১ সালে ইতালিতে প্রকাশ করেন সংবাদপত্র এল ইন্ডিপেন্ডেটে। এটি ইতালির একত্রীকরণকে সমর্থন করত। ১৮৬৪ সালে তিনি প্যারিসে ফিরে আসেন। দ্যুমা তাঁর শেষ উপন্যাস "দি নাইট অফ সেইন্ট হেরমাইন" সম্পূর্ণ করে যেতে পারেন নি। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে অসম্পূর্ণ উপন্যাসটি সম্পূর্ণ করা হয়। এটি সেই বছরের সর্বাধিক বিক্রিত উপন্যাস হয়। ২০০৮ সালে "দি লাস্ট ক্যাভেলিয়ার" নামে এর ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশিত হয়। তার অনেকগুলো বই বাংলায় অনুদিত হয়েছে।
১৮৭০ সালের ৫ ডিসেম্বর ফ্রান্সের সেইন মেরিটাইমসের পায়েসে মৃত্যুবারণ করেন আলেকজান্দার দ্যুমা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৮ বছর। আজ তাঁর ২১২তম জন্মবার্ষিকী। বিখ্যাত ঔপন্যাসিক আলেকজান্দার দ্যুমার জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:০১
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার কিছু ক্লাসিক লিখে গেছেন এই মহান লেখক। থ্রি মাসকেটিয়ার্স যে বাংলা ইংরেজিতে কতবার পড়েছি, বা কাউন্ট অব মন্টে ক্রিস্টো, ম্যান ইন দ্য আয়রন মাস্ক, দ্য কর্সিকান ব্রাদার্স!! একেকটা মাস্টারপিস।
খুব প্রিয় একজন একজন লেখক। অনেক শ্রদ্ধাঞ্জলী রইল তার জন্মদিনে।