নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের নির্দেশিত পথে দান খয়রাতের ফযীলত

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০০



ইসলামসহ অন্যান্য সকল ধর্মে দান খয়রাত এবং তার মাহাত্ম্যের কথা বলা হয়েছে। ধন সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তা’আলা। তিনি যাকে ইচ্ছা উহা প্রদান করে থাকেন। এজন্য এ সম্পদ অর্জন ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে তাঁর বিধি-নিষেধ মেনে চলা আবশ্যক। সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও সৎ পথে উহা ব্যয় করা হলেই তার হিসাব প্রদান করা সহজ হবে। ইসলামে দান খয়রাত অবস্থাভেদে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। দানের ধর্মীয় নির্দেশ নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী ধনী-গরিব সবার জন্যেই প্রযোজ্য। সালমান বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “মিসকিনকে দান করলে তা শুধু একটি দান হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু গরীব নিকটাত্মীয়কে দান করলে তাতে দ্বিগুণ ছওয়াব হয়। একটি ছাদকার; অন্যটি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার।” (নাসাঈ, তিরমিযী) আপনার যা আছে তা থেকেই স্বতঃস্ফূর্ত দান করুন। স্বতঃস্ফূর্ত দান বলতে বোঝায় ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়। দানের ক্ষেত্রে পরিমাণ নয়; আপনার আন্তরিকতাই প্রমাণ করবে আপনি বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী। নবীজী (স) বলেন, যে ব্যক্তি তার বৈধ উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ দান করে, আল্লাহ ঐ দান নিজ হাতে গ্রহণ করেন এবং তাতে বরকত দিয়ে করে তোলেন পাহাড়তুল্য। তবে যে দান লোক দেখানো, যা মানুষের প্রশংসা/বাহবা কুড়ানোর জন্যে দাতা পরিচয় বা হাসিলের উদ্দেশ্যে করা হয়, তা সৎ দান নয়। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করে ও তা গোপন রাখে এবং গ্রহীতাকে এজন্যে খোঁটা ও কষ্ট দেয় না তারা পুরস্কৃত হবে। তাদের কোনো ভয় ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। (সূরা বাকারা ২৬৩)। সূরা বাকারার শুরুতেই ইরশাদ হয়েছে : এ (কোরআন) সেই কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই, এ মুত্তাকিদের জন্য পথ নির্দেশ। (মুত্তাকি তারাই) যারা গায়েবে ইমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাদের যে রিজক দান করা হয়েছে তা থেকে ব্যয় করে। (সূরা বাকারা : আয়াত ২-৩)। নবীজী (স) খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, সৃষ্টির সেবায় যা ব্যয় করবে, তা-ই হচ্ছে তোমার সম্পদ, তোমার পরিত্রাণের উপায়। আর যা জমিয়ে রেখে যাবে, তা তোমার নয়; তোমার উত্তরাধিকারীর ভোগে ব্যবহৃত হবে।

সূরা আদ্দাহরিয়াত (আয্যারিয়াত)-এর ১৯ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছেঃ নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদে নিঃস্ব ও অসহায়দের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ আমরা যা দান করি, কোরআনের দৃষ্টিতে তা দয়া নয়; তা অসহায়দের অধিকার বা হক্কুল ইবাদ। আপনি যখন দান করেন, তখন আপনি সৃষ্টির অধিকারকেই সম্মান করেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করবেন। কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে : যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস্যবীজ, যা উৎপাদন করে সাতটি শীষ, প্রত্যেক শীষে একশত শস্যকণা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়। তবে যারা মানুষের প্রশংসা নেয়ার উদ্দেশ্যে দান করবে, তাদের দ্বারাই জাহান্নামের আগুনকে সর্বপ্রথম প্রজ্বলিত করা হবে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “সর্বপ্রথম তিন ব্যক্তিকে দিয়ে জাহান্নামের আগুনকে প্রজ্বলিত করা হবে।… তম্মধ্যে (সর্ব প্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির, আল্লাহ যাকে প্রশস্ততা দান করেছিলেন, দান করেছিলেন বিভিন্ন ধরনের অর্থ-সম্পদ। তাকে সম্মুখে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত রাজীর পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নেয়ামত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরূপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে বলা হবে, সে দানবীর। আর তা তো বলাই হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাকে মুখের উপর উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (মুসলিম)

গোপন-প্রকাশ্যে যে কোনভাবে দান করা যায়। সকল দানেই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ ”যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি গোপনে ফকীর-মিসকিনকে দান করে দাও, তবে এটা বেশী উত্তম। আর তিনি তোমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন।” (সূরা বকারা- ২৭১)। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

“কিয়ামত দিবসে সাত শ্রেণীর মানুষ আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে, তম্মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে:

“এক ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করে বাম হাত জানতেই পারে না।” (বুখারী ও মুসলিম)।

বর্তমান যুগে অনেক মানুষ এমন আছে, যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে দান করে এবং তা মানুষকে দেখানোর জন্য। মানুষের ভালবাসা নেয়ার জন্য। মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর জন্য। মানুষের মাঝে গর্ব অহংকার প্রকাশ করার জন্য। অনেকে দুনিয়াবি স্বার্থ সিদ্ধির জন্যও দান করে থাকে। যেমন, চেয়ারম্যান বা এমপি নির্বাচনে জেতার উদ্দেশ্য দান করে। কিন্তু দান যদি একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হয় তা দ্বারা হয়ত দুনিয়াবি কিছু স্বার্থ হাসিল হতে পারে কিন্তু আখেরাতে তার কোন প্রতিদান পাওয়া যাবে না। তবে কাউকে দানে নিরুৎসাহিত করা গুরুতর অন্যায়। এ ধরনের কাজকে কোরআনে অবিশ্বাসীদের কাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা মাঊনে বলা হয়েছে, যারা বিশ্বাসী নয়, তারা মিসকিনদের খাবার দেয়ার ব্যাপারে লোকদেরকে উৎসাহিত করে না। এমনকি সূরা ফজরের ১৬ থেকে ২০ আয়াত ব্যাখ্যা করলে আমরা বুঝতে পারি, দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে অভাবগ্রস্তকে সাহায্য করতে অন্যদের উৎসাহিত না করা। শাশ্বত ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে আমরা নিঃসংশয়ে বলতে পারি, অন্যকে দানে উৎসাহিত করা বিশ্বাসী হওয়ারও গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। তাই নিজে দানের পাশাপাশি অন্যকেও দানে উৎসাহিত করুন। সৎকাজে উৎসাহ দেয়ায় তার দানের কল্যাণের ভাগীদার আপনিও হবেন। আপনার জীবনেও কল্যাণের পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:২৩

নীল জোসনা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এমন বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য ।

ভালো থাকবেন ।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩১

কোবিদ বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ নীল জোসনা
লেখাটি আপনার পছন্দ হয়েছে
বলে আমি সত্যিই খুব খুশী হলাম।
ধর্মবিষয়ক পোস্ট সবাইকে টানেনা...আফসোস...

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮

is not available বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ জানবেন! আল্লাহ্ আমাদেরকে হেদায়াত দিন!

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৭

কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ is not available
ভালো লাগলো আত্মশুদ্ধির জন্য
আপনার মনোবাসনা পূর্ণ হোক। আমিন-

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৭

না পারভীন বলেছেন: থ্যাক্স ভাইয়া, অসাধারণ পোস্ট। প্রিয় তে।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৩৯

কোবিদ বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ না পারভীন,
সর্বদা সুন্দর ও মঙ্গলময় পথে থাকুন
সেই প্রত্যাশায়।

৪| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪

গাজী ইলিয়াছ বলেছেন: অনেক ভাল লাগল।ইসলামের যাকাত কন্সেপ্ট এ পৃথিবীকে জান্নাতে পরিনত করতে পারে।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪১

কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ ইলিয়াছ ভাই
আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
ভালো ধাকবেন সব সময়।

৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

জনাব মাহাবুব বলেছেন: সুন্দর, প্রাঞ্জল্য এবং সাবলীলভাবে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। এত সহজ ভাষায় অনেকেই লিখতে পারেনা।

ভালো লিখেছেন আপনার লেখা পড়ে দান সম্পর্কে সঠিক পদ্ধতি শিখতে পারলাম।

ধন্যবাদ

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:২২

কোবিদ বলেছেন:

ধন্যবাদ জনাব মাহাবুব
আপনার অনুপ্রানিত করা
মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন
সাথে থাকবেন আগামীতে সেই প্রত্যাশায়

৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩

মুদ্‌দাকির বলেছেন:
হৃদয়গ্রাহী পোষ্ট , বিষয় গুলো সকলের জানা উচিৎ !!

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪

কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ মুদদাকির
ধন্যবাদ আপনাকে
সুন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য
ভালো থাকবেন, সৃষ্টিকর্তা আপনার
সহায় হোন, আমিন-

৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮

খাটাস বলেছেন: এত সুন্দর গোছান তথ্যের পোস্ট খুব কম ই দেখি। পোস্টের গভীরতা ব্যাপক। অনেক কৃতজ্ঞতা এমন সুন্দর একটি পোস্টের জন্য।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১২

কোবিদ বলেছেন:
ধন্যবাদ খাটাস!!
খুব ভালো লাগলো
আমার পোস্টে
আপনার প্রথম
মন্তব্য।
ভালো থাকবেন।

৮| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

জাফরুল মবীন বলেছেন: খুব সুন্দর গুছিয়ে এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তথ্যসহ আলোচনা করার জন্য আমার আন্তরিক ধন্যবাদ গ্রহণ করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.