নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মনীষী ড. নীহাররঞ্জন রায়ের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০২



দেশবরেণ্য ইতিহাসবিদ, সাহিত্য সমালোচক ও শিল্পকলা-গবেষক বাঙালি পন্ডিত নীহাররঞ্জন রায়। ভারতের শেষ বহুশাস্ত্রজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ড. নীহাররঞ্জন। তিনি ছিলেন বাংলার ইতিহাস, সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ভারতীয় শিল্পকলায় বিশেষজ্ঞ। শিল্প-ইতিহাস চর্চায় তিনি প্রথম খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতীয় রাজ্যসভার মনোনীত সদস্যরূপে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮১ সালের আজকরে দিনে তিনি কলকাতায় নিজ বাসভবনে লোকান্তরিত হন। আজ এই মনীষীর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। দেশবরেণ্য বাঙালি পন্ডিত নীহাররঞ্জন রায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।



নীহার রঞ্জন রায় ১৯০৩ সালের ১৪ই জানুয়ারী ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা ময়মনসিংহে সম্পন্ন হয়। পিতা মহেন্দ্রচন্দ্র রায় ছিলেন স্থানীয় ন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক।পড়াশোনার শুরু ওই স্কুলেই। এরপর ১৯২৪ সালে শ্রীহট্টের মুরারীচাঁদ কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স সহ বি, এ পাস করেন। ১৯২৬ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের শিল্পকলা শাখায় এম এ পাস করে রেকর্ড মার্ক সহ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯২৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-এ রিসার্চ ফেলো হিসাবে নিযুক্ত হয়ে গবাষণায় ব্রতী হন। ১৯৩৫ সালে বৃত্তি নিয়ে ইউরোপ যান এবং হল্যান্ড-এর লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী এবং লন্ডন থেকে গ্রন্থাগার পরিচালনা বিষয়ে ডিপ্লোমা নেন। ছাত্রবস্থা থেকেই তিনি প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। এক সময়ে রাজনীতি ও সাংবাদিকতা করেছেনঃ আকৃষ্ট হয়েছিলেন অনুশীলন সমিতির প্রতি, অসহযোগ আন্দোলন-এ অংশ নিয়েছিলেন, সুভাষচন্দ্র বসু প্রতিষ্ঠিত ইংরেজী লিবার্টি পত্রিকার সাহিত্য বিভাগ পরিচালনা করেছেন। আর এস পি(Revolutionary Socialist party) দলের সঙ্গে যুক্ত হন এবং দলের মুখপত্র ক্রান্তির পরিচালনা মন্ডলীতে ছিলেন। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড় আন্দোলন-এ অংশ নেওয়ায় কারাবরণ করেন।



কর্মজীবনে বিবিধ পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নীহাররঞ্জন রায়। তিনি তার কর্মজীবন প্রাচীন ভারতের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপনা দিয়ে শুরু করেন। ১৯৩৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারিক নিযুক্ত হন। ১৯৪৬ সালে শিল্পকলা বিষয়ে রানী বাগেশ্বরী অধ্যাপক পদে বৃত হন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েই। ১৯৬৫ সালে অবসর গ্রহনের পর তাঁকে প্রফেসর এমিরেটস করা হয়। সিমালয় প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউট অব এ্যডভান্স স্টাডিজ প্রতিষ্ঠানের প্রথম পতিচালক হয়ে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত ঐ পদ অলঙ্কৃত করে ছিলেন। ইউনেস্কো-র প্রতিনিধি রূপে ব্রহ্মদেশ সরকারের সংস্কৃতি ও ইতিহাস-বিষয়ক উপদেশক ছিলেন ১৯৭৩-৭৬ সাল পর্যন্ত। জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন- শিল্পকলা, প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, রাজনীতি এবং জীবনকাহিনীসহ নানা বিষয়ে তিনি বিচরণ করেন এবং বহু গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। তাঁর প্রকাশিত বাংলা গ্রন্থঃ ‘রবীন্দ্র-সাহিত্যের ভূমিকা’ (১৯৪৩), ‘বাঙালী হিন্দুর বর্ণভেদ’ (১৩৫২), ‘বাংলার নদনদী’ (১৩৫৪), ‘বাঙালীর ইতিহাস’ (১৯৪৯), ‘প্রাচীন বাংলার দৈনন্দিন জীবন’ (১৩৫৬) ১৯২৭ থেকে ১৯৩৩। এই সময়টায় তিনি বার্মায় ছিলেন। ওখানকার মন্দির স্থাপত্যের ওপর গবেষনা করেন। এ সময়েই কারুশিল্পের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ জন্মায়। ওই সময়কার তাঁর উল্লেখযোগ্য তিনটি গ্রন্থ হল: Sanskrit Bhuddism in Burma

(১৯৩৬); An Introduction to the Study of Theravada Bhddhism in Burma (১৯৪৭), Art in Burma (১৯৫৪) এছাড়াও তার অন্যান্য ইংরেজি গ্রন্থঃ ‘Brahminical Gods in Burma (1942), ‘Maurya and Sunga Art’ (1945), ‘Indo-Burmese Art (1947), ‘An Artist in Life’, ‘Idea and Image in Indian Art’, ‘Mughal Paintings, ‘Metal Sculptures of Bengal’, ‘Nationalism in India’ প্রভৃতি। তাঁর ইচ্ছে ছিল বাঙালির ইতিহাস ২য় খন্ড লিখবেন। তা আর হয়ে ওঠেনি। “বাঙালির ইতিহাস” (আদি পর্ব) নীহাররঞ্জনের অক্ষয় কীর্তি। ঐতিহাসিক যদুনাদ সরকার বইটি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন-অধ্যাপক নীহাররঞ্জন রায়ের“ বাঙালীর ইতিহাস” একখানি অমূল্য গ্রন্থ। বহু বৎসর ধরিয়া ইহা আমাদের অবশ্য-পঠিতব্য প্রামাণিক গ্রন্থ বলিয়া গন্য হইবে, এবং ভবিষ্যৎ ঐতিহাসিকের পথনির্দেশ করিবে।



তাঁর কর্ম কুশলতা ও সাংস্কৃতিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯২৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি, ১৯৩০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোয়াট স্বর্ণপদক, ১৯৫০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক রবীন্দ্র পুরস্কার, ১৯৬০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরোজিনী স্বর্ণপদক এবং ১৯৬৯ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করেন। এছাড়াও ১৯৭০ কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক বিমলাচরণ লাহা স্বর্ণপদক এবং ১৯৮০ সালে কলকাতার প্রফুল্লকুমার সরকার (আনন্দ) পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ আগস্ট তিনি কলকাতায় নিজ বাসভবনে লোকান্তরিত হন। আজ এই মনীষীর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। দেশবরেণ্য বাঙালি পন্ডিত নীহাররঞ্জন রায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:১০

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: দেশবরেণ্য বাঙালি পন্ডিত নীহাররঞ্জন রায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: তাঁকে আমার শ্রদ্ধা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.