নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কান্ত কবি নামে খ্যাত বাঙালি শিক্ষা-সংস্কৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকা প্রখ্যাত কবি, গীতিকার এবং সুরকার রজনীকান্ত সেন। ঈশ্বরের আরাধনায় ভক্তিমূলক ও দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ বা স্বদেশ প্রেমই তাঁর গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও উপজীব্য বিষয়। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সমসাময়িক এই গীতিকারের গানগুলো খুবই জনপ্রিয়। তাঁর রচিত গানগুলোকে বিষয়বস্তু অনুযায়ী চারটি ভাগে বিভাজিত করা হয়েছে যথাঃ
১। দেশাত্মবোধক গান, ২। ভক্তিমূলক গান, ৩। প্রীতিমূলক গান এবং ৪। হাস্যরসের গান। তবে রজনীকান্তের দেশাত্মবোধক গানের আবেদনই বিশাল ও ব্যাপক।১৯০৫ থেকে ১৯১১ সালে স্বদেশী আন্দোলন চলাকালে 'মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নেরে ভাই' গানটি রচনা করে অভূতপূর্ব গণ আলোড়নের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। ক্ষণজন্মা এই অমর সঙ্গীতকার ও লেখক ১৯১০ সালের আজকের দিনে লোকান্তরিত হন। আজ তার ১০৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। কবি, গীতিকার এবং সুরকার রজনীকান্ত সেন এর মৃত্যু দিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
রজনীকান্ত সেন ১৮৬৫ সালের ২৬ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার সেন ভাঙাবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গুরুপ্রসাদ সেন ও মাতা মনোমোহিনী দেবীর ৩য় সন্তান ছিলেন রজনীকান্ত। রজনীকান্ত ১৮৮৩ সালে কুচবিহার জেনকিন্স স্কুল থেকে ২য় বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করেন। ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিমাসে দশ রূপি বৃত্তি পেতেন। ১৮৮৫ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে ২য় বিভাগে এফএ পাস করেন। সিটি কলেজ থেকে ১৮৮৯ সালে বিএ পাস করেন। ওই কলেজ থেকে ১৮৯১ সালে বিএল ডিগ্রি অর্জন করেন। রজনীকান্ত শৈশবকাল থেকে সংগীতপ্রিয় ছিলেন। কোথাও কোনো সুমধুর গান শুনলেই সুর, তালসহ তৎক্ষণাৎ তা কণ্ঠস্থ করতে পারতেন। তার বাবাও একজন সংগীতজ্ঞ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ফলে শৈশবে সংগীত অনুশীলনের সুযোগ ঘটে। কলেজ জীবনে অভিষেক ও বিদায় অনুষ্ঠানে তার গান গাওয়া হতো। গান লেখায় তার সময় বেশি লাগত না। এ ছাড়া অল্প সময়ে গানগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠে। স্বদেশি আন্দোলন ও বঙভঙ বিরোধিতায় তার গান ছিল প্রেরণার উৎস। তার উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলোঃ
১। নমো নমো নমো জননি বঙ্গ !
২। আমরা নেহাত্ গরীব আমরা নেহাত্ ছোট
৩। তুমি নির্মল কর মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে
৪। মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়
৫। কাঙাল ইত্যাদি
এখনও বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক শিল্পী তার গানগুলো গেয়ে ধাকেন। এ ছাড়া আধ্যাত্মিক গানের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। তার গানগুলো হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ঘারানার। এতে কীর্তন, বাউল ও টপ্পার যথাযথ সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন।
জীবদ্দশায় তার তিনটি বই প্রকাশ হয়- বাণী (১৯০২), কল্যাণী (১৯০৫) ও অমৃত (১৯১০)। মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়- অভয়া (১৯১০), আনন্দময়ী (১৯১০), বিশ্রাম (১৯১০), সদ্ভাবকুসুম (১৯১৩) ও শেষদান (১৯১৬)। এর মধ্যে বাণী ও কল্যাণী গানের সঙ্কলন।
উল্লেখযোগ্য সাহিত্য-কর্ম এবং অবিস্মরণীয় আধ্যাত্মিক গানগুলো রচনার জন্য রজনীকান্তকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক আসাদ চৌধুরী ১৯৮৯ সালে রজনীকান্ত সেন শিরোনামে একটি জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন। রজনীকান্তের শেষ দিনগুলো ছিল অসম্ভব ব্যথায় পরিপূর্ণ। ১৯০৯ সালে রজনীকান্ত কণ্ঠনালীর প্রদাহজনিত কারণে সমস্যা ভোগ করতে থাকেন। ল্যারিঙ্কস্ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৯১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত্রি সাড়ে আট ঘটিকার সময় লোকান্তরিত হন ক্ষণজন্মা অমর সঙ্গীতকার ও লেখক রজনীকান্ত সেন। আজ তার ১০৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। কবি, গীতিকার এবং সুরকার রজনীকান্ত সেন এর মৃত্যু দিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪০
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: কবি, গীতিকার এবং সুরকার রজনীকান্ত সেন এর মৃত্যু দিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি।