![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নক্ষত্রের জীবনচক্র এক অসাধারণ মহাজাগতিক কাহিনি। এর প্রতিটি স্তর পদার্থবিজ্ঞান এবং উচ্চতর গণিতের সূক্ষ্ম মেলবন্ধন। কিন্তু এই জীবনচক্রকে ঠিকভাবে বুঝতে গেলে আমাদেরকে গাণিতিকভাবে এই রহস্যের গভীরে যেতে হবে। আজকে আমি একটি বৃহৎ নক্ষত্রের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরো বিষয়টি ধাপে ধাপে উপস্থাপনা করবো। তবে আমার উত্তরে গণিতের অতিরিক্ত পদচারণার জন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
নক্ষত্রের জন্ম শুরু হয় এক বিশাল গ্যাস ও ধূলিকণার মেঘ থেকে, যাকে বলা হয় নেবুলা। এই মেঘ সংকুচিত হতে শুরু করে যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তাপগতীয় চাপকে অতিক্রম করে। মেঘটি সংকুচিত হতে পারবে কি না তা নির্ধারণ করে জিন্স স্থিতিকর্তা। এর সমীকরণ হলো:
M_Jeans = (15 * k * T * R) / (4 * π * G * μ * m_H)
এখানে,
M_Jeans হলো সংকোচনের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন ভর (kg),
k = Boltzmann constant = 1.38 × 10⁻²³ J/K,
T = temperature (K),
R = radius of the cloud (m),
G = gravitational constant = 6.674 × 10⁻¹¹ N·m²/kg²,
μ = mean molecular weight (dimensionless),
m_H = mass of hydrogen atom = 1.67 × 10⁻²⁷ kg।
যদি মেঘের ভর M এই M_Jeans এর বেশি হয়, তবে মেঘটি সংকুচিত হতে বাধ্য। সংকোচনের সময় মেঘের ঘনত্ব এবং তাপমাত্রা বাড়ে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি মুক্তি পায়, যা তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নির্ণয় করা যায়:
E_gravitational = - (3/5) * (G * M²) / R
এই শক্তি তাপমাত্রা বাড়ায়, যা ফিউশনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত তৈরি করে। ফিউশনের পূর্বে এই তাপ শক্তি নির্ণয় করা যায়:
E_thermal = (3/2) * NkT
এখানে,
N = total number of particles in the cloud।
যখন কেন্দ্রে তাপমাত্রা 10⁷ কেলভিন অতিক্রম করে, তখন হাইড্রোজেন ফিউশন শুরু হয়। এই প্রক্রিয়া প্রোটন-প্রোটন চক্রের মাধ্যমে ঘটে। প্রথম ধাপে দুটি প্রোটন একত্রিত হয়ে ডিউটেরিয়াম তৈরি করে:
1H + 1H → 2H + e⁺ + ν_e
এই প্রক্রিয়ায় একটি পজিট্রন (e⁺) এবং একটি ইলেকট্রন নিউট্রিনো (ν_e) নির্গত হয়। এই ধাপে শক্তি মুক্তি পায়:
Q = 1.442 MeV
এরপর ডিউটেরিয়াম একটি প্রোটনের সাথে মিলে হিলিয়াম-৩ তৈরি করে:
2H + 1H → 3He + γ
এই ধাপে শক্তি মুক্তি পায়:
Q = 5.493 MeV
সবশেষে দুটি হিলিয়াম-৩ মিলে হিলিয়াম-৪ এবং দুটি প্রোটন তৈরি করে:
3He + 3He → 4He + 2(1H)
এই ধাপে শক্তি মুক্তি পায়:
Q = 12.860 MeV
প্রোটন-প্রোটন চক্রের মোট শক্তি নির্ণয় করা যায়:
E_pp = Σ(Q_i) ≈ 26.7 MeV
তবে, এই শক্তির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিউট্রিনো আকারে নির্গত হয়, যা নক্ষত্র থেকে বেরিয়ে যায় এবং শক্তির ক্ষতি করে। নিউট্রিনো লুমিনোসিটি নির্ণয় করা যায় এই সমীকরণে:
L_ν = (N_ν * Q_ν) / Δt
এখানে,
L_ν = neutrino luminosity (W),
N_ν = number of neutrinos emitted,
Q_ν = energy of each neutrino (J),
Δt = time interval (s)।
নিউট্রিনো লুমিনোসিটি নক্ষত্রের ফিউশন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ এটি শক্তি ক্ষতির একটি প্রধান মাধ্যম।
এখন, যদি নক্ষত্রের ভর যথেষ্ট বড় হয়, তবে CNO চক্র সক্রিয় হয়। এটি একটি বিকল্প ফিউশন প্রক্রিয়া, যা কার্বন (C), নাইট্রোজেন (N) এবং অক্সিজেন (O) এর মধ্যস্থতায় ঘটে। একটি ধাপ হলো:
12C + 1H → 13N + γ
13N → 13C + e⁺ + ν_e
13C + 1H → 14N + γ
14N + 1H → 15O + γ
15O → 15N + e⁺ + ν_e
15N + 1H → 12C + 4He
এই চক্রে মোট শক্তি নির্গত হয় প্রায় 26.7 MeV। এটি বড় নক্ষত্রে প্রধান শক্তির উৎস।
নক্ষত্রের অভ্যন্তরে চাপ এবং মাধ্যাকর্ষণের ভারসাম্য বোঝানোর জন্য আমরা হাইড্রোস্ট্যাটিক ইকুইলিব্রিয়ামের সমীকরণ ব্যবহার করি:
dP/dr = - (G * M(r) * ρ(r)) / r²
এখানে,
P = pressure (Pa),
r = radial distance (m),
M(r) = mass enclosed within radius r (kg),
ρ(r) = density at radius r (kg/m³)।
যখন কেন্দ্রে হাইড্রোজেন ফুরিয়ে যায়, তখন হিলিয়ামের সংযোজন শুরু হয়। তাপমাত্রা যদি 10⁸ কেলভিন অতিক্রম করে, তখন তিনটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস মিলে কার্বন তৈরি করে:
3(4He) → 12C + γ
এই প্রক্রিয়ার শক্তি:
Q = 7.275 MeV
পরবর্তী ধাপে কার্বন ফিউশন শুরু হয়, যা উচ্চ তাপমাত্রায় ঘটে। এই প্রক্রিয়ায় কার্বন দুটি কার্বনের সাথে মিলে ম্যাগনেসিয়াম তৈরি করতে পারে:
12C + 12C → 24Mg + γ
এই ধাপে শক্তি মুক্তি পায়:
Q = 13.93 MeV
নক্ষত্রের কেন্দ্রে এক সময় লোহা (Fe) তৈরি হয়। এটি সবচেয়ে স্থিতিশীল নিউক্লিয়াস, যা ফিউশন বা ফিশনে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না। ফলে শক্তি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রে সংকোচন শুরু হয়। সংকোচনের সময় নিউট্রন ডিগেনারেসি চাপ মাধ্যাকর্ষণকে প্রতিহত করে। নিউট্রন তারার ঘনত্ব প্রায় 10¹⁷ kg/m³ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
যদি নক্ষত্রের ভর Tolman-Oppenheimer-Volkoff সীমা (প্রায় 2.17 M_sun) অতিক্রম করে, তখন এটি কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়। কৃষ্ণগহ্বরের শোয়ার্জশিল্ড রেডিয়াস নির্ণয় করা যায়:
R_s = 2 * G * M / c²
এখানে,
M = mass of the black hole in kilograms,
c = speed of light = 3 × 10⁸ m/s।
এই রেডিয়াসের মধ্যে আলো এবং পদার্থ আটকে যায়। সময় এবং স্থান এখানে সম্পূর্ণরূপে বিকৃত হয়।
©somewhere in net ltd.