নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পেশায় একজন শিক্ষক, প্রশিক্ষক, সংবাদকর্মী, সমাজসেবক এবং প্রযুক্তিবিদ। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, এবং সমাজের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম নিয়ে আমি বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখে থাকি।

ছোট কাগজ কথিকা

আমি পেশায় একজন শিক্ষক, প্রশিক্ষক, সংবাদকর্মী, সমাজসেবক এবং প্রযুক্তিবিদ। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, এবং সমাজের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম নিয়ে আমি বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখে থাকি।

ছোট কাগজ কথিকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেভাবে বেড়ে ওঠে

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১

মাহবুবা খন্দকার


গা তুলতুল ছোট্ট মেয়ে পারু। ওর বয়স যখন তিন
তখন মা মারা গেলেন। ভরা ভাদ্র। চারিদিকে পানি থৈ থৈ
করছে। পারু'র মাকে কবর দেওয়া হলো ওদের
বাড়ি সংলগ্ন কাঁঠাল গাছের নিচে।
শোকের ছায়া আর বন্যার পানি না সরতেই পরিবারে
আগমন ঘটলো এক নতুন অতিথির।প্রতিবেশীরা
বলল, "পারু তোর মা। "পারুর বিশ্বাসই হয়না,আগে যে
ওরা বলেছিল, "পানির জন্য তোর মাকে কাঁঠাল
গাছের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। পানি সরলে
আবার নিয়ে আসা হবে। "তাহলে কি মাটির নিচে রাখায়
চেহারা এমন বদলে গেছে মায়ের! মা হলে
পারুকে নিয়ে কত আদর করতো চুমো খেত,
তাহলে এতদিন চোখের আড়ালে থাকায় সবকিছু
ভুলে গেছেন মা।
সবার প্রচেষ্টায় দিন কয়েক পর থেকে 'মা ' ডাকা
শুরু করে ও। অথচ তিন বছরের পারুর মনে খটকা
লাগে কই মা এমন রাগ করেননি কখনও।
একদিন রাতে চমকে ওঠে পারু "মা তুমি আমাকে
মারছো?
-মারবো না আদর করবো, পোড়ামুখি! আমার গায়ে
পা দিয়ে ঘুমুচ্ছিস, আমি যেন ওর মা !
- তাহলে? মুহূর্তে কান্না থেমে যায়।
- সুখের আশায় আবার বিয়ে করলাম এখানে দেখি
উপদ্রব রয়েছে। যদি জানতাম তাহলে কি আর ---
আর বলতে হয়না। সেই থেকে শিশু পারুর মুখে
কেউ আর 'মা 'ডাক শুনতে পায়নি।
দিন, ক্ষণ, মাস অতীত হয়ে যায়। সুখ-দুখের
মধ্যদিয়ে চলতে থাকে সময়। বিমাতার মনের
লেলিহান অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বেলে দেয় ভাংগেন।
ধূপের মত আস্তে আস্তে পুড়তে থাকে সংসারটি
পারু এখন একদম চুপচাপ। ও খেলতে যায়না কারো
সাথে কথা বলেনা। মায়ের গল্প শুনলে ওর ছোট্ট
বুকটা হাহাকার করে ওঠে। ব্যথায় টনটন করে। অথচ
মা সেতো কাছে নেই। রাত গভীর হয়, তবুও ঘুম
নেই, চোখ পোড়ে, মাথা ব্যথায়। কখন ঘুম এসে
যায় টের পায়না।
আশ্বিনের রাত, বহু কষ্টে যখন ঘুম এল তখন ওর
প্রচণ্ড জ্বর। জ্বরের ঘোরে স্বপ্ন দেখে
প্রলাপ বকে।
যে কাঁঠাল গাছের নিচে মাকে রাখা হয়েছে সেখান
থেকে মা যেন পারুকে ডাকছে। পারু আস্তে
করে নেমে যায় খাট থেকে। সামনে নদী
দেখে ও। নদী পানিতে টইটুম্বুর। ওপারে সাদা শাড়ি
পরে মা বলছে, "পারু এসো। "।মা'র বাড়িয়ে দেওয়া
হাতে ঝাঁপ দেয়।অনেক পানি, ঠাঁই পায়না, হাত-পা
ছোঁড়াছুড়ি করে। গুঁতো লাগে বাবার। টের পান?
তিনি। বাইরে আসেন বাবা। মাথায় পানি দেন। ফ্যালফ্যাল
করে এদিক ওদিক চেয়ে দেখে পারু । পাশাপাশি
দুটো ছবি ওর সামনে ভাসে।দ্বিতীয় ছবির সাথে
প্রথম ছবির মিল খুঁজে পায়না। অথচ সার্বক্ষণিক
দ্বিতীয় ছবির বিচরণ ওর কচি মনে বিদ্রূপ ঢেলে
দেয়। মন হয়ে যায় ছাইচাপা।
আর এভাবেই পারু বেড়ে ওঠে ছাগলে মোড়া পুঁই
লতার মত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬

সুজন চন্দ্র পাল বলেছেন: আর এভাবেই পারু বেড়ে ওঠে ছাগলে মোড়া পুঁই
লতার মত

ভাল লিখেছেন , :|

২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৪

হানিফ রাশেদীন বলেছেন: ভালো লাগা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.