নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাওয়ালের রাজা

বাবা ভাউয়ালী

ভাওয়ালী

বাবা ভাউয়ালী › বিস্তারিত পোস্টঃ

তরুণ সমাজ কেন জঙ্গিবাদের দিকে ঝুকছে?

১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:০৫

বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় কিছু মানুষ উগ্রবাদের সাথে সবসময়ই জড়িত ছিল। এই উগ্রবাদের সাথে ধর্ম, বর্ণ, জাতি বা আঞ্চলিকতা কোন ভাবেই জড়িত নয়। তবে একজন সরলপ্রাণ তরুনকে জঙ্গি বা উগ্রবাদি বানানোর ক্ষেত্রে ধর্ম,বর্ণ,জাতি বা আঞ্চলিকতাকে একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মহল অত্যান্ত চতুরতার সাথে ব্যবহার করেছে। শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ সমস্যা আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক দেশে আজো বড় একটি ইস্যু হয়ে আছে। আমেরিকায় বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সারা বিশ্বের কালো মানুষগুলোর সাথে বিশ্ববাসী ও খুশিতে লাফিয়ে উঠেছিল এই ভেবে যে সাদা-কালোর দাঙ্গা বুঝি আমরিকার ইতিহাস হয়েই থাকবে কিন্তু তা আর হলো না। সব সাদা মানুষেরা যেমন কালোদের অধিকার মেনে নিতে পারেনি তেমনি সব কালো মানুষগুলোও সাদাদের মেনে নিতে পারেনি। সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া ঘটনা তারই জলন্ত প্রমাণ। ভারতে উগ্রহিন্দু মৌলবাদিদের কর্মকান্ড, হিটলারের ইহুদী নিধনের মিশন , মায়ানমারে মুসলিম বিদ্বেষী বৌদ্ধদের কর্মকান্ড সবকিছুর পিছনে রয়েছে উগ্রবাদের কথিপয় বিপদগামী ব্যাক্তি। বাংলাদেশ এর থেকে ব্যতিক্রম নয়।
বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্পীতির দেশ। প্রতিবেশী অনেক দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হলেও আমাদের এই দেশে ধর্ম,বর্ণ ও জাতিগত সকল ভেদাবেদ ভুলে সবাই এক সাথে সাম্যের গান গেয়ে গেছে। সবাই দেশের জন্য দশের জন্য মানবতার জন্য কাজ করতে সদা তৎপর। আজ হঠাৎ জঙ্গি নামক একটি সাইক্লোন সবকিছু উলট-পালট করেদিচ্ছে। কিন্তু কেন ? কি জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উগ্রবাদের দিকে ছুটছে? এতো দিন আমরা কেবল উগ্রবাদীদের তালাশে মসজিদ মাদ্রাসায়কে দোষারোপ করে আসছি কিন্তু আজ আমরা যা দেখলাম তা কী দু চক্ষে বিশ্বাস করার মতো?? প্রগতিমনা বা মুক্কতচিন্তার লালনের সকল সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও কেন? কিশের নেশায় ? আজ তারা বিপদগামী??
উত্তর অনেক শুনেছি, রাজনৈতিক উত্তর, সাহিত্যিক উত্তর, চিন্তাবিদের উত্তর, ফেসবুকের উত্তর,টুইটের উত্তর, উত্তরের আর অভাব নাই। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর চোর ধরার অনেক বুদ্ধি দেয়ার লোক যেমন বেড়িয়ে আসে তেমনি জঙ্গি বা উগ্রবাদীরা কোন কিছু ঘটানোর পর মিডিয়াতে অনেক কিছুই ঘটে থাকে।
আমাদের দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ, নিজে না খেয়ে হুজুরকে খাওয়ানোর লোকের যেমন অভাব নাই তেমনি সবকিছু উজাড় করে ব্রহ্মন ভোজন করার ইতিহাসের ও অভাব নাই। জন্মসুত্রে পাওয়া এই ধর্মীয় বিশ্বাসকে সহজে একজন তরুন হৃদয় থেকে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই আমাদের ভবিষ্যত কর্মনীতি ঠিক করা দরকার ছিল যা বাংলাদেশের পেক্ষাপটে শতভাগ কার্যকর হয়নি বলে আমার বিশ্বাস। আমরা প্রাশ্চাত্য সভতাকেও রপ্ত করতে পারিনি এবং নিজেদের ঐতিহ্যকে লালন করতে পারিনি। ফলে মাঝামাঝি এক অদ্ভুদ জাতিতে আমরা পরিনত হচ্ছি দিন দিন। এই সুযোগটা একটি মহল কাজে লাগাচ্ছে, কিছু তরুন-তরুনীকে বিপথে টেনে নিচ্ছে, আর আমরাও সেই পথকে অজান্তে সহযোগীতা করছি।
বয়স সন্ধিকাল অতিক্রম কারী সন্তানদের মনে হাজারো প্রশ্নের অবতারনা হয় কিন্তু আমরা এই সকল বিষয় অনেকাংশে এড়িয়ে চলি। কখনো জানতে চাইনি তার আবেগ-উচ্ছাস, মূল্যায়ন করেনি তার অভিমত, বুঝতে পারিনি তার অভিমান, সঙ্গী হতে পারেনি তার জীবন চলার পথে। আমরা ব্যাস্ত অভিবাবকরা যখন ব্যার্থ তখন আমাদের সন্তানেরা নদীর মতো আপন গতিপথ ঠিক করে নেয়। হারিয়ে যায় মূলধারা থেকে অনেক দুরে । যারা ধর্ম-কর্মে তেমন বিশ্বাস করেনা তারা ডুবে যায় অন্ধকার হাজারো অলি-গলিতে যা থেকে আর কখনো আলোর পথে ফিরে আসতে পারে না। ঐশীর মতো হাজারো উদাহারণ আছে বাংলার ঘরে ঘরে। আর যারা ধর্ম-কর্মে কম-বেশী মনোযোগী জঙ্গিদের টার্গেট তারাই। জীবন সংগ্রামে যারা ব্যার্থ, যারা হতাশায় সাতরে বেড়ায়, যারা বেচে থাকাকে অর্থহীন মনে করে তাদেরকে দলে ভেড়ানোর শতচেষ্টা করে জঙ্গি সংগঠনগুলো। এতে মনে হয় তারা সফলও হয়, গুলশান ট্রাজেডির যারা খল নায়ক তাদের প্রোফাইল অন্তত্য তাই বলে।
মুসলমান সন্তানদের সবচেয়ে দুর্বলতম দিক হলো ধর্মীয় বিষয়ে। এর কারনও আছে সারা বিশ্ব শাসন করা এই মুসলিম জাতি আজ শোষণের শিকার। এই অধ:পতনের কারণ ও সোনালী অতীত ফিরে পেতে করনীয় কী ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন ধর্মপ্রাণ তরুনদের অন্তরে প্রশ্নাকারে আসে। আর আসাটাই স্বাভাবিক যদি না আসে তাহলে জঙ্গিদের প্রথম কাজ হলো এই প্রশ্ন একজন কৈশোর পেরুনো তরুন হৃদয়ে উত্থাপন করা। তার পর এর উত্তর খোজার ব্যাপারে কৌতুহলী করে তোলা। ব্যাস ইসলামী জ্ঞানের সল্পতার সুযোগ নিয়ে শুরু হয় মগজ ধোলাই। আর আমরা অভিবাবকরা তো ইসলামের যথার্থ জ্ঞান কখনো অর্জণ করিনি, ফলে সন্তান যখন ধর্ম-কর্মে মনোযোগী হয় তখন আমরাও একটু আত্বতৃপ্তিতে ভোগতে থাকি। আমরা ভুলে যাই যে সন্তানকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না রেখে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা দেয়াটা ফরজ। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায়ও ইসলামের মৌলিক শিক্ষার অভাব, উচ্চশিক্ষায় তো একেবারেই নাই। ফলে একজন তরুন মুসলিম ইসলামের জেহাদ আর সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের মধ্যে কী ধরনের পার্থক্য তা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় না। সুযোগটা শতভাগ কাজে লাগায় জঙ্গিরা অতি সহজে স্বর্গে যাওয়ার মহাপ্রলোভনের হাতছানিতে জড়িয়ে পড়ে জঙ্গিবাদে। ইসলামকে জানা অবাধ সুযোগ তৈরী করতে হবে, জানার ক্ষেত্রটা হতে হবে সঠিক অনেকটা ভেবে চিন্তে, যাচাই-বাছাই করে ইসলামকে জানার ক্ষেত্র নির্বাচন করতে হবে। যাতে সঠিক জ্ঞান লাভের মাধ্যমে ইসলামকে মানতে পারে। তাহলে জঙ্গিবাদ ইসলামের দৃষ্টিতে কতটা ভয়াবহ মন্দ ও খারাপ কাজ তা বুঝতে পারবে।
এখনই সময় লক্ষ করুন আপনার সন্তান,আত্বীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের মাঝে এমন কোন পরিবর্তন লক্ষ করা যায় কিনা। যদি হঠাৎ পরিবর্তন লক্ষকরা যায় তবে কাউন্সিলিং করুন, পরিবর্তনের উৎস সম্পর্কে অবগত হউন। ইসলামের সঠিক জ্ঞান পাওয়ার লক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে যেন না পরতে হয় সতর্ক থাকুন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:১৯

আমি দুরের পাখি বলেছেন: আমার মনে হয় ওই জঙ্গি গুলিকে জিজ্ঞাসা করা উচিত যে তারা কেন জঙ্গি হলো | একমাত্র তারাই অথেন্টিক উত্তর দিতে পারে | এছাড়া বাকি সবই যা আমরা করছি, সেসবই অনুমান |

১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:২৬

বাবা ভাউয়ালী বলেছেন: জঙ্গি হয়ে যাবার পর তাদের কাছ থেকে সঠিক উত্তর পাওয়া যাবেনা কেননা মগজ ধোলাই হয়ে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.