![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুখ সেতো অধরা; ভালো করেই জানি, মর্ত্যলোকে ঘুড়ে বেড়াই আমি অভিমানী।
১১/১১/১৯৭১- একজন লোক পাহাড়ের খামারে কাজকর্ম করে,
তার কাছে জানতে পারলাম, ফয়েজ লেকের বিপরীত দিকের পাহাড়ের উপর অনেক লাশ পড়ে আছে। আমি তখন আরো তিনজন সঙ্গী নিয়ে পাহাড়ের ভেতর পথ করে দেখার জন্য চললাম।
কি দেখলাম? দেখলাম, অগণিত মৃতদেহ। চক্ষু স্থির হয়ে গেল। সংযত হলাম। ভালো করে দেখলাম। এবার দেখলাম সব লাশ মেয়েদের। উলঙ্গ অবস্থায়। অধিকাংশই যুবতী এবং দুই তিনদিন আগের মৃতদেহ বলে মনে হলো। ভালো করে নজর করে দেখলাম, অধিকাংশ মৃত নারীর পেটে সন্তান পচনশীল অবস্থায় আছে। মৃতদেহগুলো এক স্তূপে ১০ জন ১৫ জন করে রাখা হয়েছে। এভাবে পাহাড়ের উপর বিভিন্ন স্থানে অনেক স্তূপ করে রাখা হয়েছে। আমার সঙ্গী একজন অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। আমি কোন রকমে সংজ্ঞা রেখে একে একে সব মৃতদেহ গূনে দেখলাম এক হাজার বিরাশিটি হতভাগ্য যুবতীর মৃতদেহ। এই অর্ধগলিত লাশগুলো দেখে মনে হলো অধিকাংশের পেটে ছুরি দ্বারা আড়াআড়িভাবে আঘাত করে বধ করা হয়েছে...
পরে জানতে পারি, এই যুবতী মেয়েদের চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে পাক হানাদার সৈন্যদের ভোগের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজাকার এবং তাদের দোসররা এনে আটকে রাখেছিলো । এদের অধিকাংশই শিক্ষিতা ও ভদ্রঘরের মেয়ে মনে হয়েছিলো। দীর্ঘদিন আটক রাখার ফলে তারা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ও ভোগের অযোগ্য হওয়ায় হত্যা করে অজ্ঞাত স্থানে এনে ফেলে দিয়েছে।
- পাহাড়তলীর হত্যাকান্ড/ এ,কে, এম আফছার উদ্দীন ( ১৯৭১০: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বই থেকে)
আজ যারা ব্যাক্তি স্বার্থে অথবা কম জানার কারনে মনে করেন ৭১ এ যা হয়েছে তা বাড়িয়ে বলা হয়েছে এবং রাজাকারদের পক্ষে সেই সাথে তাদের দোসরদের পক্ষে সাফাই গাচ্ছেন তাদের জন্য আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। আপনাদের জন্ম এই আশরাফুল মাখলুকাত গোত্রের জন্য যোগ্য নয়।
©somewhere in net ltd.