নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এন্টিভাইরাস

শ্রেণীসংগ্রাম যেন নিয়মের ভাগ্যবান ঠাপ; আমাদের ঘরে তাই বিশ্বায়ন স্বামীর প্রতাপ

তানভীর রাতুল

Sensitivity to social justice might be a motivation for poems, but it is not the only one. Through the immediacy of images, an improvised-sounding, rigorous musicality, and far-ranging sentences, conveys complexities of feeling and thought while avoiding didacticism and ideologically motivated polemicspoet does not ma...ke the dangerous mistake of addressing social inequality by turning politics into art. As the philosopher and literary critic Walter Benjamin might have said, 'responds by politicizing art.' The danger of such a response, though, is that it can lead to art that disguises its participation in capitalist culture so that attention to poetic form only produces the illusion of resolution of real social conflict.

তানভীর রাতুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি কঙ্কালের ভবিষ্যদ্বাণী

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪৮

মৃত্যুর পর কী হবে, তা নিয়ে আমার আগ্রহ বরাবরই সীমিত। বেঁচে থাকাকালীনই মানুষ যা খুশি করে ফেলে, তারপর তো শুধু পচন। তবু ভাবি, মরার পর যদি কিছু করতে হয়, আমি কঙ্কাল হতে চাই। পুরোমাত্রায়, বিব্রত না হয়ে, মাংসছাড়া, চামড়াহীন, ঠোঁটবিহীন কঙ্কাল।

কী করবো কঙ্কাল হয়ে? কিছুই করবো না, কেবল থাকবো। আমার গ্রামের বাড়িতে, যেখানে আমি জন্মেছি, আবার ছুটিও কাটিয়েছি—সেই বাড়িতে একটা ছোট দাতব্য চিকিৎসালয় বানাবো, বা অন্তত চেষ্টায় থাকবো যতদিন বেঁচে থাকি। সেখানে, এক কোনায়, একটা কাঁচের বাক্সে থাকবে আমার কঙ্কাল, লন্ডনে জেরেমি বেনথ্যামের কাটামুন্ডুর মত।

মানুষ আসবে প্যারাসিটামল নিতে, প্রেসার চেক করতে, দাঁত তুলতে—আর চোখে পড়বে আমাকে।
আমি বসে থাকবো—একটা নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে, সেই ভঙ্গিটি সময়-সময়ে পাল্টাবে।

ঈদের সময় আমি দু’হাত তুলে মোনাজাত করবো। পূজার সময় করজোড়ে দাঁড়িয়ে থাকবো নমস্কারের ভঙ্গিতে। বড়দিনে দু’হাত প্রসারিত করবো—ক্রুশবিদ্ধ যীশুর মতো। আর পূর্ণিমায় বুদ্ধের মত আমি বসে থাকবো পদ্মাসনে—চোখ নেই, তবু চোখ বন্ধ, ভাব করার জন্য।

এসব দেখে হয়তো অনেকে ছবি তুলবে, কেউ কেউ অস্বস্তিতে চোখ ফিরিয়ে নেবে, কেউবা বলবে, “নাস্তিকের কাণ্ড।”
তাতে কিছু আসে যায় না।

আমার মরদেহের এই প্রদর্শনী কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে না, বরং সব ধর্মের প্রচ্ছন্ন ব্যঙ্গ।
কারণ সব ধর্মই মানুষকে ভয় শেখায়, আর আমি মৃত্যুর পর ভয়হীন হতে চাই।

আমি চাই, কঙ্কাল হয়ে থাকাকালীন আমার হাড়ে কিছু লেখা থাকুক—
হাতের হাড়ে হয়তো লেখা থাকবে: “এই হাত বই ও পোস্টার, দুটোই লিখেছে।”
পায়ের হাড়ে লেখা: “এই পায়ে দেশ হাঁটা, তবুও অনেক হাঁটতে চাওয়া।”
খুলির হাড়ে হয়তো লেখা থাকবে: “এইখানেই ছিল তর্কের কেন্দ্র।”

আর যদি একদিন কেউ আসে ভাঙচুর করতে—যেমনটা প্রায়ই ঘটে এদেশে,
যখন ধর্ম, জাতীয়তা, কিংবা রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক আবেগে কেউ হঠাৎ উত্তাল হয়ে ওঠে—
তাদের জন্য আমার রেখে যাওয়া শেষ আয়োজন থাকবে।

তারা যখন আগুন দিতে আসবে, হট্টগোল করবে, মিছিল করবে—
ঠিক তখন আমার কঙ্কালের এক হাতে উঠে যাবে বুড়ো আঙুল—উপরে, ঠাণ্ডা, আত্মবিশ্বাসী।
অন্য হাতে উঠবে মধ্যমা—সোজা, একরোখা, নির্মম।

তখন তারা হয়তো থমকে যাবে এক মুহূর্তের জন্য। কেউ হাসবে, কেউ গাল দেবে।
আর আমি, একজন মৃত মানুষ, চুপচাপ বসে থাকবো—সব সহ্য করে।
সহ্য নয়, উপভোগ করে।
কারণ এই ছিল আমার শেষ ইচ্ছা—মৃত্যুর পরও মানুষের ভয়কে ঠাট্টা করা।

আমার বাবা চাইতেন না আমি হুজুর হই, মা চাইতেন অন্তত শিক্ষক হই।
আমি কেবল কঙ্কাল হতে চেয়েছিলাম—যা কিছু লুকায়, তার উল্টো।
মাংস নয়, ভাষা নয়, ব্যাখ্যা নয়—শুধু হাড়।

হাড়ের কোনো মিথ্যা নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.