নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

লক্ষণ ভান্ডারী

কবিতা

লক্ষণ ভান্ডারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

টুসু পূজা (গীতি কবিতা)

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৯



টুসু উৎসব অগ্রহায়ণ সংক্রান্তি থেকে পৌষ সংক্রান্তি পর্যন্ত এক মাস ধরে পালিত হয়। ধানের ক্ষেত থেকে এক গোছা নতুন আমন ধান মাথায় করে এনে খামারে পিঁড়িতে রেখে দেওয়া হয়। অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তির সন্ধ্যাবেলায় গ্রামের কুমারী মেয়েরা একটি পাত্রে চালের গুঁড়ো লাগিয়ে তাতে তুষ রাখে। তারপর তুষের ওপর ধান, কাড়ুলি বাছুরের গোবরের মন্ড, দূর্বা ঘাস, আল চাল, আকন্দ, বাসক ফুল, কাচ ফুল, গাঁদা ফুলের মালা প্রভৃতি রেখে পাত্রটির গায়ে হলুদ রঙের টিপ লাগিয়ে পাত্রটিকে পিড়ি বা কুলুঙ্গীর ওপর রেখে স্থাপন করা হয়। পাত্রের এই পুরো ব্যবস্থা প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে টুসু দেবী হিসেবে পূজিতা হন। পৌষ মাসের প্রতি সন্ধ্যাবেলায় কুমারী মেয়েরা দলবদ্ধ হয়ে টুসু দেবীর নিকট তাঁদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক অভিজ্ঞতা সুর করে নিবেদন করে ও দেবীর উদ্দেশ্যে চিঁড়ে, গুড়, বাতাসা, মুড়ি, ছোলা ইত্যাদি ভোগ নিবেদন করে।

টুসু উৎসব পালনের সময় পৌষ মাসের শেষ চারদিন চাঁউড়ি, বাঁউড়ি, মকর এবং আখান নামে পরিচিত। চাঁউড়ির দিনে গৃহস্থ বাড়ির মেয়েরা উঠোন গোবরমাটি দিয়ে নিকিয়ে পরিস্কার করে চালের গুঁড়ো তৈরী করা হয়। বাঁউড়ির দিন অর্ধচন্দ্রাকৃতি, ত্রিকোণাকৃতি ও চতুষ্কোণাকৃতির পিঠে তৈরী করে তাতে চাঁছি, তিল, নারকেল বা মিষ্টি পুর দিয়ে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় ভাবে এই পিঠে গড়গড়্যা পিঠে বা বাঁকা পিঠে বা উধি পিঠে ও পুর পিঠা নামে পরিচিত। বাঁউড়ির রাত দশটা থেকে টুসুর জাগরণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মেয়েরা জাগরণের ঘর পরিষ্কার করে ফুল, মালা ও আলো দিয়ে সাজায়। এই রাতে কিশোরী কুমারী মেয়েরা ছাড়াও গৃহবধূ ও বয়স্কা মহিলারাও টুসু গানে অংশগ্রহণ করে। এই রাতে টুসু দেবীর ভোগ হিসেবে নানারকম মিষ্টান্ন, ছোলাভাজা, মটরভাজা, মুড়ি, জিলিপি ইত্যাদি নিবেদন করা হয়।
পৌষ সংক্রান্তি বা মকরের ভোরবেলায় মেয়েরা দলবদ্ধভাবে গান গাইতে গাইতে টুসু দেবীকে বাঁশ বা কাঠের তৈরী রঙিন কাগজে সজ্জিত চৌডল বা চতুর্দোলায় বসিয়ে নদী বা পুকুরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রত্যেক টুসু দল একে অপরের টুসুর প্রতি বক্রোক্তি করে গান গাইতে দেবী বিসর্জন করে থাকে। টুসু বিসর্জনের পরে মেয়েরা নদী বা পুকুরে স্নান করে নতুন বস্ত্র পরে। ছেলেরা খড়, কাঠ, পাটকাঠি দিয়ে ম্যাড়াঘর বানিয়ে তাতে আগুন লাগায়।



আঞ্চলিক লোক কবিতা টুসু পূজা নামে গীতিকবিতা রচনা করে এই গানটি আমার ব্লগে প্রথম প্রকাশ দিলাম। আশা রাখি সকলের সহযোগিতা ও সাহমর্মিতায় এই গীতি কবিতাটি প্রত্যন্ত শহর থেকে গাঁয়ের মাটির পাঁচিল ঘেরা উঠোনের প্রতিটি ঘরে ঘরে কিশোরী কুমারীরা যাতে সুর করে গাইতে পারবে।

সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। ভালো থাকুন, সবাইকে ভালো রাখুন।
শুভ নববর্ষে সকলের সুস্বাস্থ্য ও পারিবারিক কল্যাণ কামনা করি।
জয়গুরু ! জয়গুরু ! জয়গুরু !



টুসু পূজা (গীতি কবিতা)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

পৌষ পরবে টুসু পূজিব------
আমরা টুসুর ভোগ সাজাব-
পৌষ পরবে টুসু পূজিব।

বাড়িতে আছে চালের পিঠা
আতপ চাল আর গুড়,
হরেক রকম গুড়ের চাকতি
সন্দেশ আর খেজুর।

মুড়কি, খই আর বাতাসা
টুসুকে আমরা খাওয়াব।
… … … … … … … …
পৌষ পরবে টুসু পূজিব------
আমরা টুসুর ভোগ সাজাব-
পৌষ পরবে টুসু পূজিব।

পৌষ পরবে টুসুর পূজা
পুরো গোটা মাসটা ধরে,
সাঁঝের বেলা সবাই মিলে
টুসুগান গায় সুর করে।

সংক্রান্তির দিন এলে টুসুকে
অজয় নদীর জলে ভাসাব।
… … … … … … … …

পৌষ পরবে টুসু পূজিব------
আমরা টুসুর ভোগ সাজাব-
পৌষ পরবে টুসু পূজিব।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: টুসু উপলক্ষ্যে আজই প্রথম জানলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.