নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন প্রতিশ্রুত পয়গম্বর। (Promised Prophet)ঃ

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১১

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন প্রতিশ্রুত পয়গম্বর। (Promised Prophet)ঃ

আল্লাহ্ যে রাসুলে পাক হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে দুনিয়ায় পাঠাবেন, একথা পূর্বেই নির্ধারিত ছিলো। তিনি ছিলেন সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু। কাজেই তাঁর জ্যোতির্মূর্তি আল্লাহ্ র ধ্যানে প্রথমেই সঞ্চারিত হয়েছিলো। এই জ্যোতির্মূর্তিই নূরে মহাম্মদি। সর্বপ্রথম তাই আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছিলেন মুহাম্মদের নূর। একটি হাদিসে তাই এসেছে,“ আউয়ালা মা খালাকাল্লাহু নূরী” অর্থাৎ রাসুলে পাক (সাঃ) বলেন,“ সর্ব প্রথমেই আল্লাহ্ যা সৃষ্টি করেন তা হলো আমার নূর”। সুতরাং এই কথা সহজেই বলা যায় যে, হযরতে নূর পুর (সাঃ) তাঁহার দুনিয়াতে আগমনের অনেক আগেই সৃষ্টি হয়েছিলেন। সারা সৃষ্টি তাঁর নূরের আলোকেই উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিলো।

প্রতিশ্রুত পয়গম্বরকে এই অর্থেই গ্রহণ করতে হবে। প্রতিশ্রুত পয়গম্বর তিনি- যাঁর আবির্ভাব সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়মে যা অনিবার্য্য, আবির্ভাবের পূর্বেই তা প্রতিশ্রুত। মুহাম্মদ (সাঃ) আসবেন- এই কথা তাই বিশ্বনিখিলের অবিদিতি ছিলো না। হযরত আদম, হযরত নূহ, হযরত মূসা, হযরত ইব্রাহিম, হযরত ঈসা (আঃ) প্রমুখ পূর্ববর্তী যাবতীয় পয়গম্বর ও তত্ত্বদর্শী মহাপুরুষই জানতেন সেই নিশ্চিত অনাগত একদিন আসবেন। তাই তাঁরা প্রত্যেকেই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এঁর আগমন সম্মন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। বেদ-পুরাণ, জিন্দাবেস্তা, দিঘা-নিকায়া, তওরাৎ, জবুর, বাইবেল প্রভৃতি পুরাকালীন প্রধান প্রধান ধর্মগ্রন্থে মুহাম্মদ (সাঃ) এঁর গুণগান ও তাঁর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী বিঘোষিত হয়েছে। যেমন-

বেদ-পূরাণঃ
বেদ-পূরাণ এবং উপনিষদ হিন্দুদিগের বিশিষ্ট ধর্মগ্রন্থ। এইসব প্রাচীন ধর্মশাস্ত্রে ‘আল্লাহ্’,‘রসুল’,‘মুহাম্মদ’ ইত্যাদি শব্দ কিভাবে উল্লেখিত হয়েছে দেখুনঃ

‘অথর্ববেদীয় উপনিষদ’-এ আছেঃ
অস্য ইল্ললে মিত্রাবরুণো রাজা, তন্মৎ তানি দিব্যানি পুনস্তং দুধ্যু, হবয়ামি মিলং কবর ইল্ললাং, অল্লোরসুলমহমদকং, বরস্য অল্লো অল্লাম ইল্লল্লেতি ইল্লাল্লাল
‘ভবিস্য পুরাণ’-এ আছেঃ
এতস্লিন্নন্তরে ম্লেচ্ছ আচার্যেন সবন্বিতঃ, মহামদ ইতি খ্যাতঃ শিষ্যশাখা সমন্বিতঃ, নৃপশ্চৈব মহাদেবং মরুস্থলনিবাসিনম্, গঙ্গাজলৈশ্চ সংস্নাপ্য পঞ্চগব্যসমন্বিতৈঃ, চন্দনাদিভিরভ্যর্চ তুষ্টাব মনসা হরম্, নমস্তে গিরিজানাথ মরুস্থলনিবাসিনে, ত্রিপুরাসুরনাশায় বহুমায়াপ্রবর্তিনে,
ভোজরাজ উবাচ-
স্লেচ্ছৈর্গুপ্তায় শুদ্ধায় সচ্চিদানন্দরুপিণে, ত্বং মাং হি কিঙ্করং বিদ্ধি শরণার্থ মুপাগতম

ভাবার্থঃ ঠিক সেই সময় ‘মহামদ’ নামক এক ব্যাক্তি - যাঁর বাস ‘মরুস্থলে’ (আরব দেশে) - আপন সাঙ্গোপাঙ্গোসহ আবর্ভিুত হবেন। হে আরবের প্রভু, হে জগদগুরু, তোমার প্রতি আমার স্তুতিবাদ।তুমি জগতের সমুদয় কলুষ নাশ করবার বহু উপায় জান, তোমাকে নমষ্কার। হে পবিত্র পুরুষ! আমি তোমার দাস। আমাকে তোমার চরণতলে স্থান দাও।

‘অল্লোপনিষদ’-এর একটি স্থানে দেখতে পাওয়া যায়ঃ
হোতারমিন্দ্রো হোতারমিন্দ্রো মহাসুরিন্দ্রাঃ, অল্লো জ্যোষ্ঠং পরমং পূর্ণং ব্রহ্মাণ অল্লাম, অল্লোরসুলমহমদকং বরস্য অল্লো অল্লাম, আদল্লাহ্ বুকমে ককম অল্লাবুক নিখাতকম
ভাবার্থঃ আল্লাহ্ সকল গুণের অধিকারী, তিনি পূর্ণ ও সর্বজ্ঞ্যানী, মুহাম্মদ আল্লাহ্ র রসুল। আল্লাহ আলোকময়, অক্ষয়, এক, চীর পরিপূর্ণ এবং সয়ম্ভূ।
‘অর্থবেদ’- এ উল্লেখ আছেঃ
ইদং জনা উপশ্রুত নরাশংসস্তবিষ্যতে, ষষ্টিং সহস্রা নবচিতং চ কৌরম আরুশ মেষু দবহে।
ভাবার্থঃ হে লোকসকল, মনোযোগ দিয়া শ্রবণ কর। ‘প্রশংসিত জন’ লোকদিগের মধ্য হতে উত্থিত হবেন। আমরা পলাতককে ৬০,০০০ জন শত্রুর মধ্যে পাইলাম। বলা বাহুল্য, এখানে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এঁর কথাই বলা হয়েছে। কারণ মহাম্মদ অর্থই ‘প্রশংসিত জন’ আর মক্কার অধিবাসীগনের তৎকালীন সংখ্যাও ছিলো প্রায় ৬০,০০০।

বৌদ্ধ শাস্ত্রেঃ

বৌদ্ধদিগের প্রামাণ্য গ্রন্থ ‘দিঘা-নিকায়া’য় উল্লেখ আছে,“মানুষ যখন গৌতম বুদ্ধের ধর্ম ভুলে যাবে, তখন আর একজন বুদ্ধ আসবেন, তাঁর নাম হবে ‘মৈত্তেয়’ ( সংস্কৃত মৈত্রেয়) অর্থাৎ শান্তি ও করুণার বুদ্ধ।”
এ কথার প্রমাণে সিংহল হতে প্রাপ্ত একটি তথ্যের উল্লেখ করা যায়, তা হলো-
আনন্দ বুদ্ধকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার মৃত্যুর পর কে আমাদেরকে উপদেশ দিবেন? বুদ্ধ বল্লেন, “ আমিই একমাত্র বুদ্ধ বা শেষ বুদ্ধ নই। যথাসময়ে আর একজন বুদ্ধ আসবেন, আমার চেয়েও তিনি পবিত্র ও অধিকতর আলোকপ্রাপ্ত- তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্মমত প্রচার করবেন- ”
আনন্দ জিজ্ঞাসা করলেন,“ তাঁকে আমরা চিনব কি করে? বুদ্ধ বল্লেন ,“ তাঁর নাম হবে মৈত্রেয়”। এই ‘শান্তি ও করুণার বুদ্ধ’ (মৈত্রেয়) যে মুহাম্মদ, তাতে কোনোই সন্দেহ নাই। কোরআনুল করিমে মুহাম্মদের বিশ্লেষণেও অবিকল এইরুপই আছে। মুহাম্মদ সম্মন্ধে বলা হয়েছেঃ তিনি ‘রহমাতুল্লিল আলামিন’ অর্থাৎ সমগ্র বিশ্বের জন্য মূর্ত করুণা ও আশীর্বাদ।
পার্শি ধর্মশাস্ত্রঃ
পার্শিজাতির ধর্মগ্রন্থ’র নাম ‘জিন্দাবেস্তা’ ও ‘দসাতির’। জিন্দাবেস্তায় হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এঁর আবির্ভাবের সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। এমনকি ‘আহমদ’ নামটি পর্যন্ত উল্লেখিত হয়েছে। মূল শ্লোক ও তার অনুবাদ নিম্নরুপঃ
Noid te Ahmad dragoyeitim fram-raomi, Spetame Zarathustra yam dahmam Vangnim afritim, yunad hake hahi humananghad hvakanghad, Hushyanthand hudaenad....( Zend-Avesta, Part 1, Translated by Muller, p-260)
অর্থাৎঃ “ আমি ঘোষণা করছি, হে স্পিতাম জরতুষ্ট্র, পবিত্র আহমদ (ন্যায়বানদিগের আশির্বাদ) নিশ্চই আসবেন, যাঁর নিকট হতে তোমরা সৎ চিন্তা, সৎ বাক্য, সৎ কার্য্য এবং বিশুদ্ধ ধর্ম লাভ করবে।”
‘দসাতির’ গ্রন্থেও অনুরুপ আর একটি ভবিষ্যদ্বাণী আছে। তার সারমর্ম হলো,“ যখন পার্শীরা নিজেদের ধর্ম ভুলে গিয়ে নৈতিক অধঃপতনের চরম সিমায় উপনীত হবে, তখন আরব দেশে এক মহাপুরুষ জন্ম গ্রহণ করবেন- যাঁর শিষ্যগন পারশ্যদেশ এবং দুর্ধর্ষ পারশিক জাতিকে পরাজিত করবে। নিজেদের মন্দিরে অগ্নিপূজা না করে তাঁরা ইব্রাহিমের ক্বাবা-ঘরের দিকে মুখ করে প্রার্থণা করবে; সেই ক্বাবা প্রতিমা মুক্ত হবে। সেই মহাপুরুষের শিষ্যগন বিশ্ববাসীর পক্ষে আশীর্বাদস্বরুপ হইবে।” “ তাঁরা পারশ্য, মাদায়েন, তুস, বলখ, প্রভৃতি পারশ্যবাসিদের যাবতীয় পবিত্র স্থান অধিকার করবে। তাঁদের পয়গম্বর একজন বাগ্মী পুরুষ হবেন এবং তিনি অনেক অদ্ভুত কথা বলবেন।” (Muhammad in world scriptures: By A. Haq vidyarthi, P-47)

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩১

নূসরাত তানজীন লুবনা বলেছেন: উপকৃত
শুভ কামনা

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৮

আহলান বলেছেন: ধন্যবাদ ...

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২১

হুতুম বলেছেন: ালো লাগল। ধন্যবাদ হে বন্ধু ।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৯

আহলান বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৭

হানিফঢাকা বলেছেন: Brother, have you ever read quran with understanding what it says about Muhammad (PUBH). Your first para regarding the prophet (PUBH) against the teaching the Quran, borrowed from pagan ideas.
1. Where did you find that Allah make meditation?
2. Where did you find Muhammad (PUBH) was made of light? (The hadith that you mentioned narrated from Jabir ibn Abdullah is not reliable.)
3. Where do you find he was made first of all creation?
Brother, please provide us some Quranic verse to prove your first para regarding your idea of Allah and his prophet (PUBH).

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৭

আহলান বলেছেন: এটা পড়তে পারেন। বুঝ অবুঝ বা আপনার বুঝ আপনার কাছে .... ধন্যবাদ
হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বপ্রথম “নূর” হিসাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।
বর্তমান জামানা হচ্ছে ফিৎনার জামানা। আজ মুসলমান সমাজের বিভিন্ন বাতিল বাহাত্তর ফির্কার লোকে পরিপূর্ণ। এদের সাথে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের মূল এবং প্রধান পার্থক্য হচ্ছে আক্বীদাগত পার্থক্য। বাতিল ফির্কার লোকেরা সাধারন মানুষদের বিভ্রাম্ত করতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মাটির সৃষ্ট মানুষ বলে বিভিন্ন বই পুস্তকে, ওয়াজ মাহফিলে অপপ্রচার চালায়। নাউযুবিল্লাহ !!!
এই সকল বাতিল ফিরর্কার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে এবং সুন্নী আক্বীদার সাধারণ সকল মানুষদের দলীলের প্রয়োজন মিটাতে এই নোটটা লিখা হচ্ছে। আশাকরি সবাই উপকৃত হবেন।
আলহামদুলিল্লাহ ! হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি “নূরে মুজাসসাম”। মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম উনাকে সবকিছু সৃষ্টির পূর্বে নূর হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।
আমরা সহীহ হাদীস শরীফ থেকে প্রমান করে দেখাবো আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার “নূর” মুবারক সৃষ্টি করেছেন।
আমাদের প্রিয় নবীজী হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূর এ মুজাস্সাম। সর্ব প্রথম আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন।
এ প্রসঙ্গে সহীহ হাদীস শরীফে বর্নিত আছে। হাদীস শরীফখানা বর্ননা করেন ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উস্তাদের উস্তাদ। ইমাম আহমদ বিন হাম্মল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উস্তাদ,ইমামে আযম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাত্র, বিখ্যাত মুহাদ্দিস , তাবে তাবেয়ী, হাফিজে হাদীস, আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত হাদীস শরীফ গ্রন্থ “মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক” ১ম খন্ড ৯৯ পৃষ্ঠায় ১৮ নং হাদীস শরীফে।
ইমাম হযরত আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফ বর্ননা করেন হযরত মা’মার বিন রশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি বর্ননা করেন মুহম্মদ বিন মুনকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি বর্ণনা করেন বিখ্যাত ছাহাবী জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে।
হাদীস শরীফ-
عن جابر رصي الله عنه قال قلت يا رسول صلي الله عليه و سلم بابي انت و امي اخبرني عن اول شييء خلق الله تعالي قبل الاشياء قال يا جابر ان الله تعالي قد خلق قبل الاشياء نور نبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالي ولم يكن في ذالك الوقت لوح ولا قلم ولا جتة ولا نار ولا ملك ولا سماء ولا ارض ولا شمس ولا قمر ولا جني ولا انسي ….الي اخر
অর্থ: হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবানি হোক, আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন? তিনি বলেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম সব কিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই নূর মুবারক আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা অনুযায়ী কুদরতের মাঝে ঘুরছিলো।আর সে সময় লওহো, ক্বলম, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য, মানুষ ও জ্বিন কিছুই ছিলো না। ”
দলীল সমুহ —
(১) মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক ১/৯৯, হাদীস ১৮
(২) দালায়েলুন নবুওয়াত ১৩/৬৩
(৩) মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া ১/৯
(৪) মাদারেজুন নবুওয়াত ২/২
(৫) যুরকানী ১/৪৬
(৬) রুহুল মায়ানী ১৭/১০৫
(৭) সিরাতে হলবীয়া ১/৩০
(৮) মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃ
(৯) ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া ১৮৯ পৃ
(১০) নি’ মাতুল কুবরা ২ পৃ
(১১) হাদ্বীকায়ে নদীয়া ২/৩৭৫
(১২) দাইলামী শরীফ ২/১৯১
(১৩) মকতুবাত শরীফ ৩ খন্ড ১০০ নং মকতুব
(১৪) মওজুয়াতুল কবীর ৮৩ পৃ
(১৫) ইনছানুল উয়ুন ১/২৯
(১৬) নূরে মুহম্মদী ৪৭ পৃ
(১৭) আল আনোয়ার ফি মাওলিদিন নবী ৫ পৃ
(১৮) আফদ্বালুল ক্বোরা
(১৯) তারীখুল খমীস ১/২০
(২০) নুজহাতুল মাজালিস ১ খন্ড
(২১) দুররুল মুনাজ্জাম ৩২ পৃ
(২২) কাশফুল খফা ১/৩১১
(২৩) তারিখ আননূর ১/৮
(২৪) আনোয়ারে মুহম্মদীয়া ১/৭৮
(২৫) আল মাওয়ারিদে রাবী ফী মাওলীদিন নবী ৪০ পৃষ্ঠা ।
(২৬) তাওয়ারীখে মুহম্মদ
(২৭) আনফাসে রহীমিয়া
(২৮) মা’ য়ারিফে মুহম্মদী
(২৯) মজমুয়ায়ে ফতোয়া ২/২৬০
(৩০) নশরুতত্বীব ৫ পৃ
(৩১) আপকা মাসায়েল আওর উনকা হাল ৩/৮৩
(৩২) শিহাবুছ ছাকিব ৫০
(৩৩) মুনছিবে ইছমত ১৬ পৃ
(৩৪) রেসালায়ে নূর ২ পৃ
(৩৫) হাদীয়াতুল মাহদী ৫৬পৃ
(৩৬) দেওবন্দী আজিজুল হক অনুবাদ কৃত বুখারী শরীফ ৫/৩
আমাদের সমাজের অনেক দেওবন্দী/ খারেজী/ওহাবী/লা মাযহাবী/ তাবলীগি ইত্যাদি বাতিল ফির্কা এই হাদীস শরীফকে নিজেদের সার্থ চরিতার্থ করার জন্য জাল/দুর্বল বলে থাক। আসুন আমরা সত্যতার মাপকাঠিতে হাদীস শরীফটির সনদ যাচাই করে দেখি।
যিনি এ হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন তিনি হচ্ছেন হাফিজে হাদীস,ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হলেন মুসলিম উম্মাহের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীস ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর দাদা উস্তাদ। যদি বিতর্কের খাতিরে ধরেই নেই আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কিতাবে দুর্বল হাদীস উল্লেখ করেছেন তাহলে বলতে হয় বুখারী শারীফেও দুর্বল হাদীস আছে যেহেতু ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হাদীস শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছেন আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর কাছ থেকে। কিন্তু বুখারী শারীফে দুর্বল হাদীস আছে সেটা কেউই বলেন না। তাই “হাদীসটি দুর্বল/জাল” কথাটি ভুল প্রমাণীত হল।
হাদীসের সনদটি নিম্নরূপ :
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু

মুহাম্মাদ বিন মুঙ্কদার রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

মা’মার বিন রাশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি

আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।
সুবহানাল্লাহ্ !!!
এবার দেখা যাক বর্নিত হাদীস শরীফ উনার রাবীদের সম্পর্কে মুহাদ্দীগণের মন্তব্য :
হাফিজে হাদীস,তাবে তাবেয়ীন ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি :
আহমাদ ইবন সালীহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “আমি একবার আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি হাদীস শাস্ত্রে আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে নির্ভরযোগ্য আর কাউকে পেয়েছেন? আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, না”।
দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব লি হাফিয ইবনে হাজর আসক্বলানী ২/৩৩১
হাদীস শরীফ উনার অপর রাবী মা’মার বিন রাশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি :
উনার সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি বাসরার সকল হাদীস শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞের থেকে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকে মা’মার বিন রাশীদ এর সূত্রে পাওয়া হাদীসগুলো পছন্দ করি। ইবন হাজর আসকলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে প্রখর স্বরনশক্তি সম্পন্ন এবং নির্ভরযোগ্য বলেন।
দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব ১/৫০৫
√ আসমাউর রেজাল।
উক্ত মা’মার বিন রাশীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত বুখারী শারীফের হাদীস সংখ্যা প্রায় ২২৫ এবং মুসলিম শারীফে বর্ণিত হাদীস সংখ্যা প্রায় ৩০০ টি।
সুবহানাল্লাহ্ !
হাদীসটির আরেক রাবী হলেন মুহাম্মাদ বিন মুকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি :
ইমাম হুমায়দি রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মুকদার রহমতুল্লাহি আলাইহি একজন হাফিজ,ইমাম জারাহ তাদীলের ইমাম ইবন মা’ঈন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উনি নির্ভরযোগ্য।
দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব ০৯/১১০৪৮
√ আসমাউর রেজাল ।
হযরত মুনকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা বুখারী শারীফে ৩০টি এবং মুসলিম শারীফে ২২টি।
সুবহানাল্লাহ্ !!
আর মূল বর্ননাকারী হলেন হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একজন সুপ্রসিদ্ধ সাহাবী। বুখারী ও মুসলিম শারীফের উনার থেকে বর্ণিত অনেক হাদীস আছে।
সুতরাং বুঝা গেল। হাদীসটির সকল রাবীই নির্ভরযোগ্য এবং উনাদের সূত্রে বুখারী ও মুসলিম শারীফেও হাদীস বর্ণিত আছে। সুতরাং বলা যায়, ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উভয়ের হাদীস শর্তানুসারে হাদীসটি সহীহ।
সুবহানাল্লাহ্ !!
এখন অনেকে মূল কিতাব দেখতে চাইতে পারেন। তাদের সুবিধার জন্য মূল কিতাবের স্ক্যান কপি নিম্মে দেয়া হলো–
নিচের লিঙ্কে গিয়ে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকের মূল আরবী কিতাব দেখুন—->>>
http://wajahat-hussain.blogspot.com/2011/12/hadeeth-e-nur-of-jabir-bin-abdullah.html
আলহামদুলিল্লাহ ! আমরা পরিস্কার এবং বিশুদ্ধ সনদের মাধ্যমে হাদীস শরীফটির গ্রহনযোগ্যতা জানতে পারলাম।
এবার আসুন আমরা দেখি উক্ত হাদীস শরীফ সম্পর্কে মুহাদ্দিস এবং হাদীস শরীফ বিশারদগন কি বলেছেন।
উক্ত বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ খানা নিজ কিতাবে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ইমাম বায়হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে বলা হয়-
” ইমাম বায়হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন স্বীয় যুগের হাদীস শরীফ এবং ফিক্বাহ শাস্ত্রের অপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তিত্ব। উম্মত যাদের মাধ্যমে খুব উপকৃত হয়েছে এবং হাফিজে হাদীস এমন সাত ব্যক্তি ছিলেন তাদের যাদের গ্রন্থ সবচাইতে উৎকৃষ্ট বলে স্বীকৃত। সেই সাত জনের একজন হলেন, ইমাম বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ।”
দলীল-
√ আসমাউর রেজাল-বাবু আইম্মাতুল হাদীস।
এই জগৎবিখ্যত মুহাদ্দিস ইমাম, আল্লামা বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে বর্ননা করেন–
ان الله تعالي خلق قبل الاشياء نور نبيك
“….. নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম উনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার “নূর” মুবারক সৃষ্টি করেন।”
দলীল-
√ দালায়েলুন নবুওয়াত লিল বায়হাক্বী ১৩ তম খন্ড ৬৩ পৃষ্ঠা।
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস, যিনি এই উপমহাদেশে হাদীস শরীফের ব্যাপক প্রচার প্রসার করেছেন, সু দীর্ঘ সময় মদীনা শরীফে যিনি ইলিম চর্চা করেছেন। যিনি প্রতিদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাত লাভ করতেন, ইমামুল মুহাদ্দিসীন শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত হাদীসে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বা নূর সংক্রান্ত হাদীস শরীফকে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি উনার কিতাবে লিখেন-
درحديث صحيح وارد شد كه اول ما خلق الله نوري
অর্থ: “সহীহ হাদীস শরীফে” বর্নিত হয়েছে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন!”
দলীল-
√ মাদারেজুন নবুওয়াত ২য় খন্ড ২ পৃষ্ঠা।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস, আরেফ বিল্লাহ, সাইয়্যিদিনা আব্দুল গনী নাবেলসী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে সরাসরি সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন-
قد خلق كل شيي من نوره صلي الله عليه و سلم كما ورد به الحديث الصحيح
অর্থ: নিশ্চয়ই প্রত্যেক জনিস হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি হয়েছে, যেমন এ ব্যাপারে ‘সহীহ’ হাদীস শরীফ বর্নিত রয়েছে।”
দলীল-
√ হাদীক্বায়ে নদীয়া- দ্বিতীয় অধ্যায়-৬০ তম অনুচ্ছেদ-২য় খন্ড ৩৭৫ পৃষ্ঠা।
ইমামুল মুফাসরিরীন, মুফতীয়ে বাগদাদ, হযরত আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে নির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি উনার কিতাবে লিখেন-
ولذا كان نوره صلي الله عليه و سلم اول المخلوقات ففي الخبر اول ما خلق الله تعالي نور نبيك ياجابر
অর্থ : সকল মাখলুকাতের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্টি হলো, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেমন- হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আপনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন।”
দলীল-
√ রুহুল মায়ানী ১৭ তম খন্ড ১০৫ পৃষ্ঠা।
বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন,আল্লামা ইমাম মুহম্মদ মাহদ ইবনে আহমদ ফার্সী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে সহীহ বলে নিজের কিতাব মুবারকে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বর্ননা করেন-
اول ما خلق الله نوره ومن نوري خلق كل شءي
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন এবং আমার নূর মুবারক থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেন।”
দলীল-
√ মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃষ্ঠা ।
উক্ত হাদীস শরীফের সমর্থনে বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ছহীবে মেরকাত, ইমামুল মুহাদ্দিসীন মুল্লা আলী কারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
وامانوره صلي الله عليه و سلم فهو في غاياة من الظهور شرقا و غربا واول ما خلق الله نوره وسماه في كتابه نورا
অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক পূর্ব ও পশ্চিমে পূর্নরুপে প্রকাশ পেয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন। তাই নিজ কিতাব কালামুল্লাহ শরীফে উনার নাম মুবারক রাখেন ‘নূর’।”
দলীল-
√ আল মওযুআতুল কবীর ৮৩ পৃষ্ঠা।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস,আল্লামা আবুল হাসান বিন আব্দিল্লাহ আল বিকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন–
قال علي رضي الله عنه كان الله ولا شيء معه فاول ما خلق نور حبيبه قبل ان يخلق الماء والعرش والكرسي واللوح والقلم والجنة وانار والحجاب
অর্থ: হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বলেন, শুধুমাত্র আল্লাহ পাক ছিলেন, তখন অন্য কোন অস্তিত্ব ছিলো না। অতঃপর তিনি পানি,আরশ,কুরসী, লওহো,ক্বলম,জান্নাত, জাহান্নাম ও পর্দা সমূহ ইত্যাদি সৃষ্টি করার পূর্বে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন।”
দলীল-
√ আল আনওয়ার ফী মাওলিদিন নাবিয়্যিল মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫ পৃষ্ঠা।
বিখ্যাত তাফসির কারক,ইমামুল মুফাসসিরীন, আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
ان الله تعالي خلق جميع الاشياء من نور محمد صلي الله عليه و سلم ولم ينقص من نوره سيء
অর্থ: এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সকল মাখলুকাত “নূরে মুহম্মদী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সৃষ্টি করেছেন। অথচ “নূরে মুহম্মদী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে কিঞ্চিত পরিমানও কমে নাই।”
দলীল-
√ তাফসীরে রুহুল বয়ান ৭ম খন্ড ১৯৭-১৯৮ পৃষ্ঠা।
হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত হাদীস শরীফ খানা অত্যন্ত সহীহ।
আর সহীহ বলেই সকল জগৎ বিখ্যাত মুহাদ্দিসগন উনাদের কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা বলিষ্ঠ ভাবে বর্ননা করেছেন। আমরা উপরে কিছু ইমামদের মতামত উল্লেখ করেছি। এছাড়াও আরো যারা উক্ত হাদীস শরীফকে বিশুদ্ধ বলে নিজেদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন তাদের কথা উল্লেখ করা হলো–
→ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকারক, হাফিজে হাদীস আল্লামা কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া” কিতাবের ১ম খন্ড ৯ পৃষ্ঠা।
→ হাফিজে হাদীস,আল্লামা যুরকানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “যুরকানী আলা শরহে মাওয়াহেব” কিতাবের ১ম খন্ড ৪৬ পৃষ্ঠা।
→ বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজর হায়তামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া” কিতাবে ১৮৯ পৃষ্ঠা ।
→ মুহাদ্দিস আলী ইবনে ইব্রাহীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “সিরাতুল হলবীয়” কিতাবে ১ম খন্ড ৩০ পৃষ্ঠা।
→ হাফিজে হাদীস, হযরত ইবনে হাজার মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “আফদ্বালুল কোরা” কিতাবে।
→ বিশিষ্ট আলেম, শায়খুল আল্লামা, হযরত দিয়ার বাকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “তারীখুল খামীস” কিতাব সহ শতশত কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা বর্ননা করা হয়েছে ।
প্রত্যকেই উক্ত হাদীস শরীফ এর উপর আস্থা স্থাপন করেছেন বিনা দ্বিধায়।
সুবহানাল্লাহ্ !!
যেটা উছুলের কিতাবে বলা হয়েছে-
فان الحديث يتقوي بتلقي الاءمة بالقبول كما اشر اليه الامام التر مذي في جامعه وصرح به علماءنا في الاصول
অর্থ: কোন হাদীস শরীফকে ইমামগন নিঃসংকোচে কবুল করে নেয়াই উক্ত হাদীস শরীফ খানা শক্তিশালী বা সহীহ হওয়ার প্রমান। ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “জামে” তে এদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন আর আলেমগন তা উছুলের কিতাবে সুস্পষ্ট ভাবে বর্ননা করেছেন।”
সূতরাং এরপরও যারা বলবে, উক্ত হাদীস শরীফ খানা সহীহ নয়, তারা হাদীস শরীফের উছুল সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ।
উক্ত হাদীস শরীফ খানা হাফিজে হাদীস ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব “মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক” কিতাবে সহীহ সনদে বর্ননা করেছেন এবং পৃথিবীর সকল ইমাম,মুহাদ্দিস গন উক্ত হাদীস শরীফের প্রতি আস্থা স্থাপন করে স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
সূতরাং প্রমান হলো উক্ত হাদীস শরীফ খানা সর্বোচ্চ মানের সহীহ একটি হাদীস শরীফ।
এখন মজার ব্যাপার দেখুন, যেসকল ওহাবী দেওবন্দীরা উক্ত হাদীস শরীফ নিয়ে আপত্তি করে তাদের অন্যতম গুরু আশরাফ আলী থানবী নিজেই উক্ত হাদীস শরীফকে তার কিতাব “নশরুত তীব” উল্লেখ করেছে।
এবার দেখুন থানবী তার এই কিতাবে কি লিখেছে–
থানবী এই কিতাবে প্রথম যে অধ্যায় রচনা করেছে তার নাম দিয়েছে ” নূরে মুহম্মদীর বিবরন”।
যাইহোক, এখানে প্রথমেই যা লিখেছে তা হলো- ” আব্দুর রাজ্জাক তাঁর সনদসহ হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ননা করেছেন যে, আমি আরজ করলাম : ইয়া রসূল্লাল্লাহ আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কোরবান হউক, আমাকে এই খবর দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন বস্তুটি সৃষ্টি করেছেন?
প্রিয়নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! আল্লাহ পাক সবকিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন…………………. “”””
অর্থাৎ হাদীসে জাবির বর্ণনা করেছে দেওবন্দী আশরাফ আলী থানবী নিজ কিতাবে। মজার কথা হলো থানবী মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাকে হাদীসের সনদ খুজে পেল আর বর্তমানে তারই অনুসারী ওহাবী দেওবন্দীরা সনদ খুজে পায় না।
কত হাস্যকর লজ্জাজনক বিষয় নিজেরাই চিন্তা করুন।
শুধু তাই নয়, আশরাফ আলী থানবী উক্ত “নশরুত্বীব” কিতাবের প্রথম অধ্যায়ে “নূরে মুহম্মদীর বিবরন” শীর্ষক বর্ননায় আরো একটি হাদীস শরীফ উল্লেখ করেছে-
ইমাম জয়নুল আবেদীন আলাইহিস সালাম উনার পিতা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম থেকে এবং তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ননা করেন যে, হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি আদম আলাইহিস সালাম উনার জন্মের ১৪ হাজার বছর পূর্বে আমার পরওয়ারদিগারের দরবারে একটি “নূর” ছিলাম।”
সুবহানাল্লাহ্ !!!
দেওবন্দী/কাওমীরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম নূর হিসাবে সৃষ্টি এই হাদীস অস্বীকার করলে কি হবে এদের একমাত্র অবিভাবক ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ আবার এই হাদীস স্বীকার করে ফতোয়া দেয়। সবাই দেখুন ভারতের দেওবন্দীরা আশরাফ আলি থানভি সাহেবের কিতাব থেকেই তাদের ওয়েবসাইটে ফতোয়া বিভাগে দলীল দিচ্ছে–>
Question: 3126 >Is the Prophet peace be upon him’s nur the first thing to be created? Also, was it created before Adam alayhis salam’s?
Answer: 3126 Jan 29,2008 (Fatwa: 903/876=D)
Hazrat Hakimul Ummah, Maulana Ashraf Ali Thanwi has mentioned a Hadith in his book ﻧﺸﺮ ﺍﻟﻄﯿﺐ ﻓﯽ ﺫﮐﺮ ﺍﻟﻨﺒﯽ ﺍﻟﺤﺒﯿﺐ ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ with reference of Ahkam bin Al- Qattan that Hazrat Ali bin Al- Hussain (Zainul Abdeen) narrated from his father Hazrat Hussain ( ﺭﺿﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻨﮧ ) and he narrated from his father (Hazrat Ali ﺭﺿﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻨﮧ ) that the Prophet ( ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ) said: ?I was a noor (light) in front of my Lord some forty thousand years before the birth of Hazrat Adam ( ﻋﻠﯿﮧ ﺍﻟﺴﻼﻡ )?. There are some more traditions which prove that the noor of the Prophet ( ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ ) was created in the earliest time, some traditions say that his noor was created before the Tablet, the Pen, earth, sky and even before all creatures. Allah (Subhana Wa Ta’ala) knows Best Darul Ifta, Darul Uloom Deoband
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক – ->>>
http://darulifta-deoband.org/showuserview.do?function=answerView&all=en&id=3126
আবার উক্ত হাদীসে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু দেওবন্দীদের আরেক মৌলবী দেওবন্দীদের মৃত শায়খুল হদস আজিজুল হক তার বুখারী শরীফের অনুবাদে ৫ম খন্ড ৩ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছে।
অর্থাৎ বিরোধিতা কারীদের কিতাবেও উক্ত হাদীস শরীফ খানা নির্ভরযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমানে দুই পয়সার বাজাইরা ওহাবী মৌলবীরা উক্ত হাদীস শরীফের বিরোধিতা করে কেন ?????
যাইহোক, উপরোক্ত আলোচনা থেকে দিবালোকের মত প্রমান হলো, আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। এবং সেই নূর মুবারক থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেন।
এটাই হলো আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা, এবং এর বিপরীত আক্বীদা পোষন করা কুফরী।
আল্লাহ পাক আমাদের সত্য বোঝার তৌফিক দান করুন। আমীন

৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১১

আহলান বলেছেন: @ হানিফ ঢাকা, আপনার বুঝার জন্য দেই নাই, আমি যেটা বুঝেছি, সঠিক মনে করেছি, সেটার পক্ষে আপনাকে নিম্নোক্ত রেফারেন্স গুলো দিলাম। তর্ক বিতর্কের জন্য নয়। ধন্যবাদ -

হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বপ্রথম “নূর” হিসাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।
বর্তমান জামানা হচ্ছে ফিৎনার জামানা। আজ মুসলমান সমাজের বিভিন্ন বাতিল বাহাত্তর ফির্কার লোকে পরিপূর্ণ। এদের সাথে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের মূল এবং প্রধান পার্থক্য হচ্ছে আক্বীদাগত পার্থক্য। বাতিল ফির্কার লোকেরা সাধারন মানুষদের বিভ্রাম্ত করতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মাটির সৃষ্ট মানুষ বলে বিভিন্ন বই পুস্তকে, ওয়াজ মাহফিলে অপপ্রচার চালায়। নাউযুবিল্লাহ !!!
এই সকল বাতিল ফিরর্কার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে এবং সুন্নী আক্বীদার সাধারণ সকল মানুষদের দলীলের প্রয়োজন মিটাতে এই নোটটা লিখা হচ্ছে। আশাকরি সবাই উপকৃত হবেন।
আলহামদুলিল্লাহ ! হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি “নূরে মুজাসসাম”। মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম উনাকে সবকিছু সৃষ্টির পূর্বে নূর হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।
আমরা সহীহ হাদীস শরীফ থেকে প্রমান করে দেখাবো আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার “নূর” মুবারক সৃষ্টি করেছেন।
আমাদের প্রিয় নবীজী হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূর এ মুজাস্সাম। সর্ব প্রথম আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন।
এ প্রসঙ্গে সহীহ হাদীস শরীফে বর্নিত আছে। হাদীস শরীফখানা বর্ননা করেন ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের উস্তাদের উস্তাদ। ইমাম আহমদ বিন হাম্মল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উস্তাদ,ইমামে আযম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাত্র, বিখ্যাত মুহাদ্দিস , তাবে তাবেয়ী, হাফিজে হাদীস, আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত হাদীস শরীফ গ্রন্থ “মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক” ১ম খন্ড ৯৯ পৃষ্ঠায় ১৮ নং হাদীস শরীফে।
ইমাম হযরত আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফ বর্ননা করেন হযরত মা’মার বিন রশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি বর্ননা করেন মুহম্মদ বিন মুনকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি বর্ণনা করেন বিখ্যাত ছাহাবী জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে।
হাদীস শরীফ-
عن جابر رصي الله عنه قال قلت يا رسول صلي الله عليه و سلم بابي انت و امي اخبرني عن اول شييء خلق الله تعالي قبل الاشياء قال يا جابر ان الله تعالي قد خلق قبل الاشياء نور نبيك من نوره فجعل ذالك النور يدور بالقدرة حيث شاء الله تعالي ولم يكن في ذالك الوقت لوح ولا قلم ولا جتة ولا نار ولا ملك ولا سماء ولا ارض ولا شمس ولا قمر ولا جني ولا انسي ….الي اخر
অর্থ: হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবানি হোক, আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন? তিনি বলেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম সব কিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই নূর মুবারক আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা অনুযায়ী কুদরতের মাঝে ঘুরছিলো।আর সে সময় লওহো, ক্বলম, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশতা, আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য, মানুষ ও জ্বিন কিছুই ছিলো না। ”
দলীল সমুহ —
(১) মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক ১/৯৯, হাদীস ১৮
(২) দালায়েলুন নবুওয়াত ১৩/৬৩
(৩) মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া ১/৯
(৪) মাদারেজুন নবুওয়াত ২/২
(৫) যুরকানী ১/৪৬
(৬) রুহুল মায়ানী ১৭/১০৫
(৭) সিরাতে হলবীয়া ১/৩০
(৮) মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃ
(৯) ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া ১৮৯ পৃ
(১০) নি’ মাতুল কুবরা ২ পৃ
(১১) হাদ্বীকায়ে নদীয়া ২/৩৭৫
(১২) দাইলামী শরীফ ২/১৯১
(১৩) মকতুবাত শরীফ ৩ খন্ড ১০০ নং মকতুব
(১৪) মওজুয়াতুল কবীর ৮৩ পৃ
(১৫) ইনছানুল উয়ুন ১/২৯
(১৬) নূরে মুহম্মদী ৪৭ পৃ
(১৭) আল আনোয়ার ফি মাওলিদিন নবী ৫ পৃ
(১৮) আফদ্বালুল ক্বোরা
(১৯) তারীখুল খমীস ১/২০
(২০) নুজহাতুল মাজালিস ১ খন্ড
(২১) দুররুল মুনাজ্জাম ৩২ পৃ
(২২) কাশফুল খফা ১/৩১১
(২৩) তারিখ আননূর ১/৮
(২৪) আনোয়ারে মুহম্মদীয়া ১/৭৮
(২৫) আল মাওয়ারিদে রাবী ফী মাওলীদিন নবী ৪০ পৃষ্ঠা ।
(২৬) তাওয়ারীখে মুহম্মদ
(২৭) আনফাসে রহীমিয়া
(২৮) মা’ য়ারিফে মুহম্মদী
(২৯) মজমুয়ায়ে ফতোয়া ২/২৬০
(৩০) নশরুতত্বীব ৫ পৃ
(৩১) আপকা মাসায়েল আওর উনকা হাল ৩/৮৩
(৩২) শিহাবুছ ছাকিব ৫০
(৩৩) মুনছিবে ইছমত ১৬ পৃ
(৩৪) রেসালায়ে নূর ২ পৃ
(৩৫) হাদীয়াতুল মাহদী ৫৬পৃ
(৩৬) দেওবন্দী আজিজুল হক অনুবাদ কৃত বুখারী শরীফ ৫/৩
আমাদের সমাজের অনেক দেওবন্দী/ খারেজী/ওহাবী/লা মাযহাবী/ তাবলীগি ইত্যাদি বাতিল ফির্কা এই হাদীস শরীফকে নিজেদের সার্থ চরিতার্থ করার জন্য জাল/দুর্বল বলে থাক। আসুন আমরা সত্যতার মাপকাঠিতে হাদীস শরীফটির সনদ যাচাই করে দেখি।
যিনি এ হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন তিনি হচ্ছেন হাফিজে হাদীস,ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হলেন মুসলিম উম্মাহের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীস ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর দাদা উস্তাদ। যদি বিতর্কের খাতিরে ধরেই নেই আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কিতাবে দুর্বল হাদীস উল্লেখ করেছেন তাহলে বলতে হয় বুখারী শারীফেও দুর্বল হাদীস আছে যেহেতু ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হাদীস শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেছেন আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর কাছ থেকে। কিন্তু বুখারী শারীফে দুর্বল হাদীস আছে সেটা কেউই বলেন না। তাই “হাদীসটি দুর্বল/জাল” কথাটি ভুল প্রমাণীত হল।
হাদীসের সনদটি নিম্নরূপ :
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু

মুহাম্মাদ বিন মুঙ্কদার রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

মা’মার বিন রাশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি

আব্দুর রাজ্জাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।
সুবহানাল্লাহ্ !!!
এবার দেখা যাক বর্নিত হাদীস শরীফ উনার রাবীদের সম্পর্কে মুহাদ্দীগণের মন্তব্য :
হাফিজে হাদীস,তাবে তাবেয়ীন ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি :
আহমাদ ইবন সালীহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “আমি একবার আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি হাদীস শাস্ত্রে আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে নির্ভরযোগ্য আর কাউকে পেয়েছেন? আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, না”।
দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব লি হাফিয ইবনে হাজর আসক্বলানী ২/৩৩১
হাদীস শরীফ উনার অপর রাবী মা’মার বিন রাশীদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি :
উনার সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি বাসরার সকল হাদীস শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞের থেকে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকে মা’মার বিন রাশীদ এর সূত্রে পাওয়া হাদীসগুলো পছন্দ করি। ইবন হাজর আসকলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে প্রখর স্বরনশক্তি সম্পন্ন এবং নির্ভরযোগ্য বলেন।
দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব ১/৫০৫
√ আসমাউর রেজাল।
উক্ত মা’মার বিন রাশীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে বর্ণিত বুখারী শারীফের হাদীস সংখ্যা প্রায় ২২৫ এবং মুসলিম শারীফে বর্ণিত হাদীস সংখ্যা প্রায় ৩০০ টি।
সুবহানাল্লাহ্ !
হাদীসটির আরেক রাবী হলেন মুহাম্মাদ বিন মুকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি :
ইমাম হুমায়দি রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মুকদার রহমতুল্লাহি আলাইহি একজন হাফিজ,ইমাম জারাহ তাদীলের ইমাম ইবন মা’ঈন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উনি নির্ভরযোগ্য।
দলীল-
√ তাহজিবুত তাহজিব ০৯/১১০৪৮
√ আসমাউর রেজাল ।
হযরত মুনকদার রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা বুখারী শারীফে ৩০টি এবং মুসলিম শারীফে ২২টি।
সুবহানাল্লাহ্ !!
আর মূল বর্ননাকারী হলেন হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একজন সুপ্রসিদ্ধ সাহাবী। বুখারী ও মুসলিম শারীফের উনার থেকে বর্ণিত অনেক হাদীস আছে।
সুতরাং বুঝা গেল। হাদীসটির সকল রাবীই নির্ভরযোগ্য এবং উনাদের সূত্রে বুখারী ও মুসলিম শারীফেও হাদীস বর্ণিত আছে। সুতরাং বলা যায়, ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উভয়ের হাদীস শর্তানুসারে হাদীসটি সহীহ।
সুবহানাল্লাহ্ !!
এখন অনেকে মূল কিতাব দেখতে চাইতে পারেন। তাদের সুবিধার জন্য মূল কিতাবের স্ক্যান কপি নিম্মে দেয়া হলো–
নিচের লিঙ্কে গিয়ে মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকের মূল আরবী কিতাব দেখুন—->>>
http://wajahat-hussain.blogspot.com/2011/12/hadeeth-e-nur-of-jabir-bin-abdullah.html
আলহামদুলিল্লাহ ! আমরা পরিস্কার এবং বিশুদ্ধ সনদের মাধ্যমে হাদীস শরীফটির গ্রহনযোগ্যতা জানতে পারলাম।
এবার আসুন আমরা দেখি উক্ত হাদীস শরীফ সম্পর্কে মুহাদ্দিস এবং হাদীস শরীফ বিশারদগন কি বলেছেন।
উক্ত বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ খানা নিজ কিতাবে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ইমাম বায়হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে বলা হয়-
” ইমাম বায়হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন স্বীয় যুগের হাদীস শরীফ এবং ফিক্বাহ শাস্ত্রের অপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তিত্ব। উম্মত যাদের মাধ্যমে খুব উপকৃত হয়েছে এবং হাফিজে হাদীস এমন সাত ব্যক্তি ছিলেন তাদের যাদের গ্রন্থ সবচাইতে উৎকৃষ্ট বলে স্বীকৃত। সেই সাত জনের একজন হলেন, ইমাম বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ।”
দলীল-
√ আসমাউর রেজাল-বাবু আইম্মাতুল হাদীস।
এই জগৎবিখ্যত মুহাদ্দিস ইমাম, আল্লামা বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবে বর্ননা করেন–
ان الله تعالي خلق قبل الاشياء نور نبيك
“….. নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম উনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার “নূর” মুবারক সৃষ্টি করেন।”
দলীল-
√ দালায়েলুন নবুওয়াত লিল বায়হাক্বী ১৩ তম খন্ড ৬৩ পৃষ্ঠা।
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস, যিনি এই উপমহাদেশে হাদীস শরীফের ব্যাপক প্রচার প্রসার করেছেন, সু দীর্ঘ সময় মদীনা শরীফে যিনি ইলিম চর্চা করেছেন। যিনি প্রতিদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাত লাভ করতেন, ইমামুল মুহাদ্দিসীন শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত হাদীসে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বা নূর সংক্রান্ত হাদীস শরীফকে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি উনার কিতাবে লিখেন-
درحديث صحيح وارد شد كه اول ما خلق الله نوري
অর্থ: “সহীহ হাদীস শরীফে” বর্নিত হয়েছে যে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন!”
দলীল-
√ মাদারেজুন নবুওয়াত ২য় খন্ড ২ পৃষ্ঠা।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস, আরেফ বিল্লাহ, সাইয়্যিদিনা আব্দুল গনী নাবেলসী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে সরাসরি সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন-
قد خلق كل شيي من نوره صلي الله عليه و سلم كما ورد به الحديث الصحيح
অর্থ: নিশ্চয়ই প্রত্যেক জনিস হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি হয়েছে, যেমন এ ব্যাপারে ‘সহীহ’ হাদীস শরীফ বর্নিত রয়েছে।”
দলীল-
√ হাদীক্বায়ে নদীয়া- দ্বিতীয় অধ্যায়-৬০ তম অনুচ্ছেদ-২য় খন্ড ৩৭৫ পৃষ্ঠা।
ইমামুল মুফাসরিরীন, মুফতীয়ে বাগদাদ, হযরত আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে নির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি উনার কিতাবে লিখেন-
ولذا كان نوره صلي الله عليه و سلم اول المخلوقات ففي الخبر اول ما خلق الله تعالي نور نبيك ياجابر
অর্থ : সকল মাখলুকাতের মধ্যে সর্বপ্রথম সৃষ্টি হলো, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেমন- হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আপনার নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন।”
দলীল-
√ রুহুল মায়ানী ১৭ তম খন্ড ১০৫ পৃষ্ঠা।
বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন,আল্লামা ইমাম মুহম্মদ মাহদ ইবনে আহমদ ফার্সী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত হাদীস শরীফকে সহীহ বলে নিজের কিতাব মুবারকে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বর্ননা করেন-
اول ما خلق الله نوره ومن نوري خلق كل شءي
অর্থ : মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন এবং আমার নূর মুবারক থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেন।”
দলীল-
√ মাতালেউল মাসাররাত ২৬৫ পৃষ্ঠা ।
উক্ত হাদীস শরীফের সমর্থনে বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ছহীবে মেরকাত, ইমামুল মুহাদ্দিসীন মুল্লা আলী কারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
وامانوره صلي الله عليه و سلم فهو في غاياة من الظهور شرقا و غربا واول ما خلق الله نوره وسماه في كتابه نورا
অর্থ: হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক পূর্ব ও পশ্চিমে পূর্নরুপে প্রকাশ পেয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন। তাই নিজ কিতাব কালামুল্লাহ শরীফে উনার নাম মুবারক রাখেন ‘নূর’।”
দলীল-
√ আল মওযুআতুল কবীর ৮৩ পৃষ্ঠা।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস,আল্লামা আবুল হাসান বিন আব্দিল্লাহ আল বিকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন–
قال علي رضي الله عنه كان الله ولا شيء معه فاول ما خلق نور حبيبه قبل ان يخلق الماء والعرش والكرسي واللوح والقلم والجنة وانار والحجاب
অর্থ: হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওয়া আলাইহিস সালাম বলেন, শুধুমাত্র আল্লাহ পাক ছিলেন, তখন অন্য কোন অস্তিত্ব ছিলো না। অতঃপর তিনি পানি,আরশ,কুরসী, লওহো,ক্বলম,জান্নাত, জাহান্নাম ও পর্দা সমূহ ইত্যাদি সৃষ্টি করার পূর্বে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন।”
দলীল-
√ আল আনওয়ার ফী মাওলিদিন নাবিয়্যিল মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৫ পৃষ্ঠা।
বিখ্যাত তাফসির কারক,ইমামুল মুফাসসিরীন, আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
ان الله تعالي خلق جميع الاشياء من نور محمد صلي الله عليه و سلم ولم ينقص من نوره سيء
অর্থ: এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সকল মাখলুকাত “নূরে মুহম্মদী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সৃষ্টি করেছেন। অথচ “নূরে মুহম্মদী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে কিঞ্চিত পরিমানও কমে নাই।”
দলীল-
√ তাফসীরে রুহুল বয়ান ৭ম খন্ড ১৯৭-১৯৮ পৃষ্ঠা।
হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত হাদীস শরীফ খানা অত্যন্ত সহীহ।
আর সহীহ বলেই সকল জগৎ বিখ্যাত মুহাদ্দিসগন উনাদের কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা বলিষ্ঠ ভাবে বর্ননা করেছেন। আমরা উপরে কিছু ইমামদের মতামত উল্লেখ করেছি। এছাড়াও আরো যারা উক্ত হাদীস শরীফকে বিশুদ্ধ বলে নিজেদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন তাদের কথা উল্লেখ করা হলো–
→ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকারক, হাফিজে হাদীস আল্লামা কুস্তালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া” কিতাবের ১ম খন্ড ৯ পৃষ্ঠা।
→ হাফিজে হাদীস,আল্লামা যুরকানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “যুরকানী আলা শরহে মাওয়াহেব” কিতাবের ১ম খন্ড ৪৬ পৃষ্ঠা।
→ বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজর হায়তামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “ফতোয়ায়ে হাদীসিয়া” কিতাবে ১৮৯ পৃষ্ঠা ।
→ মুহাদ্দিস আলী ইবনে ইব্রাহীম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “সিরাতুল হলবীয়” কিতাবে ১ম খন্ড ৩০ পৃষ্ঠা।
→ হাফিজে হাদীস, হযরত ইবনে হাজার মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “আফদ্বালুল কোরা” কিতাবে।
→ বিশিষ্ট আলেম, শায়খুল আল্লামা, হযরত দিয়ার বাকরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “তারীখুল খামীস” কিতাব সহ শতশত কিতাবে উক্ত হাদীস শরীফ খানা বর্ননা করা হয়েছে ।
প্রত্যকেই উক্ত হাদীস শরীফ এর উপর আস্থা স্থাপন করেছেন বিনা দ্বিধায়।
সুবহানাল্লাহ্ !!
যেটা উছুলের কিতাবে বলা হয়েছে-
فان الحديث يتقوي بتلقي الاءمة بالقبول كما اشر اليه الامام التر مذي في جامعه وصرح به علماءنا في الاصول
অর্থ: কোন হাদীস শরীফকে ইমামগন নিঃসংকোচে কবুল করে নেয়াই উক্ত হাদীস শরীফ খানা শক্তিশালী বা সহীহ হওয়ার প্রমান। ইমাম তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “জামে” তে এদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন আর আলেমগন তা উছুলের কিতাবে সুস্পষ্ট ভাবে বর্ননা করেছেন।”
সূতরাং এরপরও যারা বলবে, উক্ত হাদীস শরীফ খানা সহীহ নয়, তারা হাদীস শরীফের উছুল সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ।
উক্ত হাদীস শরীফ খানা হাফিজে হাদীস ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব “মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক” কিতাবে সহীহ সনদে বর্ননা করেছেন এবং পৃথিবীর সকল ইমাম,মুহাদ্দিস গন উক্ত হাদীস শরীফের প্রতি আস্থা স্থাপন করে স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
সূতরাং প্রমান হলো উক্ত হাদীস শরীফ খানা সর্বোচ্চ মানের সহীহ একটি হাদীস শরীফ।
এখন মজার ব্যাপার দেখুন, যেসকল ওহাবী দেওবন্দীরা উক্ত হাদীস শরীফ নিয়ে আপত্তি করে তাদের অন্যতম গুরু আশরাফ আলী থানবী নিজেই উক্ত হাদীস শরীফকে তার কিতাব “নশরুত তীব” উল্লেখ করেছে।
এবার দেখুন থানবী তার এই কিতাবে কি লিখেছে–
থানবী এই কিতাবে প্রথম যে অধ্যায় রচনা করেছে তার নাম দিয়েছে ” নূরে মুহম্মদীর বিবরন”।
যাইহোক, এখানে প্রথমেই যা লিখেছে তা হলো- ” আব্দুর রাজ্জাক তাঁর সনদসহ হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ননা করেছেন যে, আমি আরজ করলাম : ইয়া রসূল্লাল্লাহ আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কোরবান হউক, আমাকে এই খবর দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন বস্তুটি সৃষ্টি করেছেন?
প্রিয়নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! আল্লাহ পাক সবকিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন…………………. “”””
অর্থাৎ হাদীসে জাবির বর্ণনা করেছে দেওবন্দী আশরাফ আলী থানবী নিজ কিতাবে। মজার কথা হলো থানবী মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাকে হাদীসের সনদ খুজে পেল আর বর্তমানে তারই অনুসারী ওহাবী দেওবন্দীরা সনদ খুজে পায় না।
কত হাস্যকর লজ্জাজনক বিষয় নিজেরাই চিন্তা করুন।
শুধু তাই নয়, আশরাফ আলী থানবী উক্ত “নশরুত্বীব” কিতাবের প্রথম অধ্যায়ে “নূরে মুহম্মদীর বিবরন” শীর্ষক বর্ননায় আরো একটি হাদীস শরীফ উল্লেখ করেছে-
ইমাম জয়নুল আবেদীন আলাইহিস সালাম উনার পিতা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম থেকে এবং তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ননা করেন যে, হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি আদম আলাইহিস সালাম উনার জন্মের ১৪ হাজার বছর পূর্বে আমার পরওয়ারদিগারের দরবারে একটি “নূর” ছিলাম।”
সুবহানাল্লাহ্ !!!
দেওবন্দী/কাওমীরা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম নূর হিসাবে সৃষ্টি এই হাদীস অস্বীকার করলে কি হবে এদের একমাত্র অবিভাবক ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ আবার এই হাদীস স্বীকার করে ফতোয়া দেয়। সবাই দেখুন ভারতের দেওবন্দীরা আশরাফ আলি থানভি সাহেবের কিতাব থেকেই তাদের ওয়েবসাইটে ফতোয়া বিভাগে দলীল দিচ্ছে–>
Question: 3126 >Is the Prophet peace be upon him’s nur the first thing to be created? Also, was it created before Adam alayhis salam’s?
Answer: 3126 Jan 29,2008 (Fatwa: 903/876=D)
Hazrat Hakimul Ummah, Maulana Ashraf Ali Thanwi has mentioned a Hadith in his book ﻧﺸﺮ ﺍﻟﻄﯿﺐ ﻓﯽ ﺫﮐﺮ ﺍﻟﻨﺒﯽ ﺍﻟﺤﺒﯿﺐ ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ with reference of Ahkam bin Al- Qattan that Hazrat Ali bin Al- Hussain (Zainul Abdeen) narrated from his father Hazrat Hussain ( ﺭﺿﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻨﮧ ) and he narrated from his father (Hazrat Ali ﺭﺿﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻨﮧ ) that the Prophet ( ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ) said: ?I was a noor (light) in front of my Lord some forty thousand years before the birth of Hazrat Adam ( ﻋﻠﯿﮧ ﺍﻟﺴﻼﻡ )?. There are some more traditions which prove that the noor of the Prophet ( ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ ) was created in the earliest time, some traditions say that his noor was created before the Tablet, the Pen, earth, sky and even before all creatures. Allah (Subhana Wa Ta’ala) knows Best Darul Ifta, Darul Uloom Deoband
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক – ->>>
http://darulifta-deoband.org/showuserview.do?function=answerView&all=en&id=3126
আবার উক্ত হাদীসে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু দেওবন্দীদের আরেক মৌলবী দেওবন্দীদের মৃত শায়খুল হদস আজিজুল হক তার বুখারী শরীফের অনুবাদে ৫ম খন্ড ৩ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছে।
অর্থাৎ বিরোধিতা কারীদের কিতাবেও উক্ত হাদীস শরীফ খানা নির্ভরযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমানে দুই পয়সার বাজাইরা ওহাবী মৌলবীরা উক্ত হাদীস শরীফের বিরোধিতা করে কেন ?????
যাইহোক, উপরোক্ত আলোচনা থেকে দিবালোকের মত প্রমান হলো, আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। এবং সেই নূর মুবারক থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেন।
এটাই হলো আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা, এবং এর বিপরীত আক্বীদা পোষন করা কুফরী।
আল্লাহ পাক আমাদের সত্য বোঝার তৌফিক দান করুন। আমীন

৫| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ২:০৬

নতুন বলেছেন: ভাই আপনি কোন পীরের মুরিদ??

০৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:১২

আহলান বলেছেন: কোন একজন সূফী ব্যাক্তিকে অবশ্যই পীর হিসাবে মানি , তিনি আজ পৃথিবীতে নাই তো তাই , আমাকে তাঁর মুরিদ হিসাবে কবুল করেন কিনা জানি না .... কারণ মুরিদ হতে গেলেও বহুত কিছু হিসাব কিতাব করে করতে হয়, পীরের কাছে গেলাম আর সাথে সাথে মুরিদ হিসাবে কবুল করে নিলেন, এটা হাক্কানী আলেম বা পীর বা আওলিয়াদের বৈশিষ্ট্য নয়। তবে আমি যাঁকে আমার পীর হিসাবে মানি তাঁর পীর ছিলেন হযরত আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ), ফুরফুরা শরীফ, হুগলী, কলকাতা। ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ (রহঃ)ও ছিলেন তাঁর খেলাফত প্রাপ্ত মুরিদ। .... ধন্যবাদ

৬| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:৫৭

নতুন বলেছেন: আপনি যাকে পীর বলে মানেন তিনি জীবিত নেই.... তবে আপনি কি ভাবে তার থেকে শিক্ষা নেবেন??

আপনার পীরের সাথে এই পযন্ত কত সময় শিক্ষা নিয়েছেন? - মানে যেমন প্রাইভেট শিক্ষক যেমন আপনাকে সপ্তাহে ২ দিন ২ ঘন্টা করে পড়ায় সেই ভাবে?

কারন আমরা পীরের কাছে শিখতে যাবো.... তা কিভাবে পাবো? আর যদি পীরের লেখা/বক্তব্য শুনেই যদি সব শিক্ষা হয়ে যায়...

তবে রাসুল সা: এর হাদিস থেকেও তো শিক্ষা নেওয়া যায় তাই না?


তাহলে সরাসরি রাসুল সা: এর থেকে শিক্ষা নিতে সমস্যা কোথায়?

৭| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:৫৬

হানিফঢাকা বলেছেন: Brother you give lotsssssss of reference, but forgot to give the reference from Quran- What Alllah says about Muhammad (S). Haven't you read Quran or afraid to give reference from it? What Allah says about the prophet?

Even if the whole universe says anything that go against Quran, I follow the Quran- the divine command.

make a list from Quran what Allah says about the prophet, then prove your point-if you dare.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.